নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় জাতিসংঘে শেখ হাসিনার চিন্তাচেতনা

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৫০

গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় জাতিসংঘে শেখ হাসিনার চিন্তাচেতনা

ফকির ইলিয়াস

===========================================

এই সময়ে নিউইয়র্ক দেখা যায় অন্য রূপে। জাতিসংঘ অধিবেশন শুরু হলেই বদলে যায় এই নগরের চেহারা। নিউইয়র্ক এখন নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। ৩৪ সড়ক থেকে ৪৮ সড়ক আর এভিনিউগুলো গোয়েন্দাদের দখলে। বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান আর সরকার প্রধানরা এখন নিউইয়র্কে। জাতিসংঘের অধিবেশন চলছে। বিশ্বে সন্ত্রাস ও মৌলবাদ নির্মূলে কী ভূমিকা থাকা দরকার, গণতন্ত্রের উন্নয়নে কী ভূমিকা রাখা দরকার সে বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ‘সাউথ সাউথ পুরস্কার’। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অবদান এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ। ওই পুরস্কারের নাম দ্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন (আইওএসএসসি)। গেলো সোমবার সন্ধ্যায় আইওএসএসসির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। পুরস্কার গ্রহণের পর শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের জনগণ ও বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের স্বীকৃতি। এছাড়া বাংলাদেশসহ বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলো যারা দারিদ্র্য বিমোচনে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার গ্রহণ করে আমি গর্বিত।’ দক্ষিণ-দক্ষিণ অঞ্চলের দেশগুলোর ত্রিমুখী সহযোগিতায় জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আইওএসএসসি গঠিত হয়।



সাউথ-সাউথ সদর দপ্তরের প্রেসিডেন্ট ও সাউথ-সাউথ নিউজ এম্বাসেডর ফ্রান্সিস লরেঞ্জো সংস্থাটির সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য এ পুরস্কার দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী আইওএসএসসি এবং বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী, ফার্স্টলেডি এবং আইওএসএসসিভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের ধন্যবাদ জানান।



অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দারিদ্র্যবিরোধী লড়াই বিশেষ করে ২০১৫ সাল নাগাদ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে আরো কঠোর ভূমিকা পালনে এ পুরস্কার বাংলাদেশকে উৎসাহিত করবে। এছাড়া ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের উন্নয়নে যে সব লক্ষ্য ঠিক করা আছে, তা অর্জনে সমভাবে নিরলস কাজ করতেও এটি আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’ বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউএনডিপিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদারদের সমর্থনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তারও ব্যাপক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, পৃথিবীকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে এবং জনগণ যাতে আরো উন্নত জীবন যাপন করতে পারে, সে লক্ষ্যে বিশ্ব নেতারা তার দেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবেন এবং একযোগে কাজ করবেন। পুরস্কারটি বাংলাদেশের জনগণকে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।



এদিকে গেলো মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ‘লিডার্স ডায়ালগ : হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরাম-ফ্রোম ভিশন টু অ্যাকশন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫ সাল পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডা নির্ধারণ এবং ২০২০ সাল পরবর্তী জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি আইনি রূপরেখায় পৌঁছাতে হবে। ‘বিশ্ব নেতাদের এই দুটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে এবং বিশ্বের টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে দূরদর্শী নেতৃত্ব ও আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে।’ আমাদের মনে আছে, জনগণকে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার ‘শান্তির মডেল’ সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছিল জাতিসংঘের সেকেন্ড কমিটিতে। সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়েছে ‘পিপলস এমপাওয়ারমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট’ শিরোনামে। সিদ্ধান্তের মূল বক্তব্য হচ্ছে- মানুষের ভোটের অধিকার, কর্মসংস্থান, শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করা, সর্বস্তরে বৈষম্য দূর করা, প্রত্যেক গোষ্ঠীকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত হবার পথ সুগম করা, দারিদ্র্য বিমোচন, মানবিকতার উন্নয়ন ঘটানো এবং সন্ত্রাস নির্মূল করা। অর্থাৎ সমাজ ব্যবস্থার সর্বস্তরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা। এসব কাজ করতে সমগ্র জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করার নিরন্তর একটি প্রয়াস থাকতে হবে।



এই জাতিসংঘে একাধিকবার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি তার ভাষণে বলেছেন, ‘গত অর্ধশতাব্দী ধরে আমি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছি। পুরো সময় জুড়ে আমি ছিলাম শান্তির পক্ষে একজন অগ্রণী ও নির্ভিক যোদ্ধা। আমি মনে করি জবরদস্তি এবং আইনের শাসনের অনুপস্থিতির মতো অবিচার নিরসনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। অসাম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য, বঞ্চনা, দারিদ্র্য, সাম্প্রদায়িকতা, নারী এবং ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকারহীনতা এবং সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করে।’ শেখ হাসিনা বিশপরিম-লে যখন গণতান্ত্রিক শান্তির আহ্বান জানাচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে চলছে নারকীয় তা-ব। এর নেপথ্যে কারা, তাদের উদ্দেশ্য কী- তা মানুষের অজানা নয়। দেশে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের চূড়ান্তপর্ব চলছে, তখন এমন আচরণ মনে করিয়ে দিচ্ছে ঐ চক্রটি এখনো একাত্তরের পরাজয় ভোলেনি।



জাতিসংঘে শেখ হাসিনার সফর ও ভাষণ অবশ্যই জাতির জন্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাষ্ট্রের অর্জন ও প্রত্যাশাগুলো বিশ্বের দরবারে তুলে ধরছেন। আর একই সময়ে বাংলাদেশে তা-ব চালাচ্ছে মৌলবাদীরা। আর এসব মৌলবাদীদের সরাসরি উসকে দিচ্ছে বিএনপি। তারা বারবার হরতাল তারা ডেকেছে, তা মূলত রাজাকার-আলবদরদের বাঁচানোর জন্যই। গেলো পাঁচ বছরে নানা মওকা তারা খুঁজছিল। এখন মৌলবাদী ক্যাডারদের মাঠে নামিয়ে তারা ফায়দা নিতে তৎপর হয়েছে। পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, এই মৌলবাদীরা খুব পরিকল্পিতভাবে এই দেশে বেড়ে উঠেছে। বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ৪৭৩টি স্থানীয় ও ২৫টি বিদেশী এনজিওকে এনজিও ব্যুরোর তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এসময় জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন জামাতে ইসলামীর সেক্রেটারি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মুজাহিদ। খালেদা জিয়ার কাছ থেকে চেয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও কৃষি এবং পরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন মুজাহিদ ও আরেক কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী জামাতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। যাদের মূল টার্গেটই ছিল সাধারণ জনগণের পর্যায়ে গিয়ে এনজিওর মাধ্যমে অর্থ প্রদান করে ইসলামি জঙ্গি তৈরি করা এবং তাদের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে দেশের চূড়ান্ত ক্ষমতা দখল করা। এ সময় খালেদা জিয়ার সরকার ৯০ হাজার কোটি টাকা যা আমেরিকান ১৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশী সাহায্য ১১ হাজার এনজিওর নামে আসে। অর্থ প্রদানকারী দেশসমূহের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, এমনকি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব অর্থের তদারকির জন্য ইসলামিক প-িত, ধর্মীয় রাজনৈতিক নেতা, মাদ্রাসার প্রধান ব্যক্তিরা থাকতেন। ধর্মীয় নেতা বলতে জামাতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। মাদ্রাসার প্রধান বলতে ফজলুল হক আমিনীর নেতৃত্বাধীন কওমি মাদ্রাসার নেতারা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ থেকে অর্থ আসতো মূলত জাকাত, ফেতরা, ধর্মীয় শিক্ষা ও অরফানেজের নামে। অনাধুনিক ও ধর্মীয় গোঁড়ামির আদলে গড়ে ওঠা কওমি মাদ্রাসার নামে টাকা এনে কোমলমতি কিশোরদের ধর্মীয় শিক্ষাদানের পাশাপাশি তাদের জেহাদির জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।



চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর দুর্গতদের জন্য অন্যান্য সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কিছু ইসলামিক এনজিও সাহায্য দেয়ার নামে তাদের কার্যক্রম শুরু করে বলে অনেকেই মনে করেন। এরপরে আন্তর্জাতিক ইসলামি এনজিওগুলো শক্তিশালীভাবে কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের মধ্যে ছিল- বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, জনসেবামূলক যেমন: বসতবাড়ি নির্মাণ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, সেনিটেশন মা ও শিশু স্বাস্থ্য ইত্যাদি। এরপরেই ইসলামিক এনজিওগুলো শুরু করে তাদের মূল কার্যক্রম অর্থাৎ সন্ত্রাসী জঙ্গি তৈরির মাধ্যমে সন্ত্রাসী কায়দায় ক্ষমতারোহণে। এজন্য তারা প্রথমেই বেছে নেয় রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো। তারা জঙ্গি তৈরির জন্য সামরিক প্রশিক্ষণের গোপন আস্তানা গড়ে তোলে। এজন্য ব্যবহার করে মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলো। এ সময় রাজশাহীতে আত্মপ্রকাশ করে জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-সংক্ষেপে জেএমবি। সৌদি আরব-ভিত্তিক ইসলামিক এনজিও আল হারমাইন ইসলামিক ফাউন্ডেশন সে সময় রাজশাহী অঞ্চলে বিশ কিছু মসজিদের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সাহায্য প্রদান করে বলেও সেই সময় খবর বের হয়। এছাড়াও রমজান মাসে মসজিদে ইফতার পার্টির নামেও অর্থ আনয়ন করে। এর নেতৃত্ব দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষক আসাদুল্লাহ গালিব। তথ্য আছে তিনি, ইফতারের জন্য প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করেন রাজশাহীর বিভিন্ন মসজিদে। পরবর্তীতে খুলনা-সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামিক এনজিওগুলো তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করে। পাশাপাশি আল মারকাজুল, রাবিতা আল ইসলামসহ কয়েকটি এনজিও বিপুল অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন খাতে।



গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সাল থেকে ইসলামি এনজিওগুলো মূল টার্গেটে পৌঁছে যায়। অর্থাৎ বিন লাদেনের স্টাইলে অর্থাৎ তালেবানি শাসন কায়েম করার নিমিত্তে সার্ভেন্টস অব সাফারিং হিউমিনিটি ইন্টারন্যাশনাল সংক্ষেপে এসএস এইচআই-এনজিওটি প্রতিষ্ঠা করা হয়- যার অর্থায়ন করেন লাদেন স্বয়ং। এ সময় একটি গোয়েন্দা সংস্থা উল্লিখিত এনজিওটির কার্যক্রম অর্থাৎ জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনাকারী কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। বিভিন্ন ইসলামি এনজিওগুলোর তৎপরতায় সারা দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আকাশচুম্বী হয়। ১৯৭১ সালের কায়দায় সাধারণ মানুষকে নির্যাতন, হত্যা, বোমা হামলাসহ আতঙ্কিত করে তোলে বাংলাদেশকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা বিশেষ করে ১৭ আগস্ট একযোগে দেশের ৬৩ জেলায় বোমা বিস্ফোরণ করে তারা জানিয়ে দেয়- তাদের ক্ষমতা পাহাড় সমান। সূত্রমতে জঙ্গিদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সহায়তা করে কুয়েতভিত্তিক এনজিও রিভাইভেল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটি এবং যুক্তরাজ্যের একটি মসজিদের ইমাম আতাউর রহমান। এই ইমামের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন জিএমবি নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলাভাই। জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তারা দেশের যে সব জায়গায় বৈঠক করে তার মধ্যে ছিল- নওগাঁ, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও ঢাকা। এই বৈঠকগুলো তারা করে এপ্রিল থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত। তিনি ২০ আগস্ট বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-জিএমবি ও জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ- জিএমজি বি- শীর্ষে থাকা এই দুটি জঙ্গি সংগঠনের নেতা ১৭ আগস্টের বোমা হামলার খরচকৃত অর্থ উত্তোলনের জন্য ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রাম শাখা ব্যবহার করেন। যুক্তরাজ্যের ঐ জঙ্গি মওলানা আতাউর রহমান বাংলাদেশে অবস্থানকালেই একযোগে বোমা হামলাটি হয়। ঢাকা থেকে পাঠানো টাকা চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে উত্তোলন করেন মোহাম্মদ নামক এক জঙ্গি। যার ফলে এই সকল মৌলবাদী এনজিওর কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বারবারই দেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা। খুব ভালো করে বলা যায়, বাংলাদেশকে একটি ‘উপযোগী’ ভূমি মনে করেই অগ্রসর হচ্ছে এই মৌলবাদী চক্র। তাই শেখ হাসিনা বিশ্বশান্তির যে বাণী গণমানুষকে শোনাতে চাইছেন, তা বাস্তবায়নে দেশীয় এই মৌলবাদী চক্রের শেকড় উৎপাটন করা খুব জরুরি। আর এর জন্য সকল ত্যাগ দেশবাসীকে স্বীকার করতেই হবে। সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচনই জানিয়ে যাবে, কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ। যারা এই দেশকে আবারো জঙ্গিবাদীদের হাতে তুলে দিতে চাইছে, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে দেশবাসীকে। শেখ হাসিনা বিশ্বশান্তির যে মডেল দেখাতে চাইছেন তা শুরু করতে হবে নিজঘর থেকেই। আর এজন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয় প্রয়োজন। যারা এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, এদের সঙ্গে কোনো আপোস হতে পারে না। প্রজন্মকে কথাটি মাথায় রেখেই এগোতে হবে।

----------------------------------------------------------------

দৈনিক ভোরের কাগজ // ঢাকা ।: শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০১৩



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.