নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাওয়াহিরির ভিডিওবার্তা ও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৫:২২

জাওয়াহিরির ভিডিওবার্তা ও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ

ফকির ইলিয়াস

_______________________________________________



বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের প্রশংসা করতেই হয়। আইটি ট্র্যাক করে তারা একজন অপরাধীকে ধরতে পেরেছেন। তার নাম রাসেল বিন সাত্তার খান। বাংলাদেশী মুসলমানদের জিহাদের ডাক দিয়ে প্রচারিত আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির অডিও প্রচারকারী রাসেল বিন সাত্তার খানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের ভাষ্যমতে, রাসেল আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত। দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিল। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে অডিও প্রচারের প্রমাণাদি। রাসেলও অবলীলায় বার্তা প্রচারের বিষয়টি স্বীকার করেছে। পাকিস্তানের মাধ্যমে তার সঙ্গে আল-কায়েদার বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সরাসরি যোগাযোগ থাকার প্রমাণ মিলেছে। গত বছরের ৭ মে হেফাজত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইরানের রাষ্ট্রপতি বরাবর ই-মেইলে পাঠায়। সে নিজেও আল-কায়েদার অনুসারী এবং ছাত্রশিবিরের কর্মী বলে প্রাথমিকভাবে অনেকটাই নিশ্চিত গোয়েন্দারা।

হঠাৎ করেই আবার আলোচনায় আল-কায়েদা। এখন টার্গেট বাংলাদেশ! ভারতীয় উপমহাদেশ ও পশ্চিমাদের ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজকে উদ্দেশ করে ইন্টারনেটে একটি ভিডিওবার্তা ছাড়া হয়েছে। এতে আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবি সংযুক্ত রয়েছে। মিসরের আল-কায়েদার এই শীর্ষ নেতার ভিডিওবার্তা উল্লেখ করে তা প্রচার করেছে কাতারের আল-জাজিরা টেলিভিশন। নিজেকে জাওয়াহিরি পরিচয় দিয়ে আরবিতে ওই বার্তাটি পড়া হয়। তার কথার ইংরেজি সাবটাইটেলে দেয়া হয়েছে।

ওই ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার বাংলাদেশের মুসলিম ভাইরা, ভারতীয় উপমহাদেশ ও পশ্চিমারা ইসলামের বিরুদ্ধে, ইসলামের নবীর বিরুদ্ধে এবং সকল মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ধর্মীয় যুদ্ধের ঘোষণা করেছে, তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাই। এ যুদ্ধের মাধ্যমে তারা আপনাদের অবিশ্বাসীদের দলে এবং চরম ক্ষমতাশালীর অনুগত দাসে পরিণত করতে পারে।’ বাংলাদেশকে ‘বিরাট জেলখানা’ উল্লেখ করে ওই বার্তায় বলা হয়, এই দেশের মুসলমানদের সম্মান ও সততা আজ হুমকির মুখে। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় এজেন্ট, পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সেনা সদস্যদের নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতক ও ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদদের ষড়যন্ত্রের শিকার বাংলাদেশ।’ অনেকবার তিনি বাংলাদেশে গোপন সফরে এসেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনারা ইসলামের সত্যিকার জ্ঞানীদের চারদিকে সমবেত হোন এবং তাদের রক্ষা করুন। সেই সঙ্গে ইসলামবিরোধীদের উত্থান রুখতে দেশজুড়ে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলুন।’

ভিডিওবার্তাটি ছড়িয়ে পড়ার পর, তা নিয়ে অনেক কথা বলছেন এক্সপার্টরা। ভারতের সংবাদ মাধ্যম এশিয়া টাইমসে এ বিষয়ে লিখেছেন বি রমন। তিনি এই ভিডিওবার্তাটি জাওয়াহিরির নয় বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। রমন বলেন, এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আল-জাজিরা আল-কায়েদার এই নেতার ভিডিওবার্তা প্রকাশ করলো। প্রথম বার্তাটি দেয়া হয়েছিল গত বছরের ৬ অক্টোবরে।

ভারতের কাউন্টার টেরোরিজম এক্সপার্টরা আল-জাওয়াহিরির কণ্ঠ ও উচ্চারণভঙ্গি সম্পর্কে সচেতন। জাওয়াহিরির সত্যিকার কণ্ঠ রক্ষিত রয়েছে মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে। সাম্প্রতিক ভিডিওবার্তাটির কণ্ঠ জাওয়াহিরির কণ্ঠের চেয়ে অনেক কম বয়সী কোনো ব্যক্তির বলেই মনে হয়। তা ছাড়া তার বাচনভঙ্গি জাওয়াহিরির মতো নয়। এ ধরনের বার্তার সত্যতা যাচাইয়ের উপায় বক্তার কণ্ঠ এবং বাচনভঙ্গির পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এশিয়া টাইমসে। কণ্ঠ যারই হোক না কেন, একটি ধান্ধা লাগাবার চেষ্টা করছে একটি মহল। এরা কারা? কী তাদের উদ্দেশ্য?

হেফাজতে ইসলামের সমর্থনে আল-কায়দা নেতা জাওয়াহিরির ভিডিওবার্তা সংগঠনটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংস্থাটির যোগাযোগের প্রমাণ বলে অভিযোগ করেছেন ধর্মভিত্তিক ইসলামিক ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন।

বিএনপি বলছে, সরকার যদি খতিয়ে দেখতে চায় তা হলে বিএনপি-জামাতকে দোষ দিচ্ছে কেন? অন্যদিকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার হুমকি সংবলিত বার্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারকে সতর্ক ও জঙ্গি দমনে কঠোর অবস্থানে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক, সাংবাদিক এমনকি ইসলামি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ বিশেষজ্ঞরাই বলছেন, আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির ভিডিওবার্তা বাংলাদেশকে আফগানি তালেবান রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতারই অংশ। ওদের টার্গেট এখন বাংলাদেশ। জাওয়াহিরির ভাষ্যে পরিষ্কার হয়েছে জামাত-হেফাজত আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন। হালকাভাবে দেখলে বাংলাদেশ পরিণত হবে আল-কায়েদার ঘাঁটিতে। জাওয়াহিরির ঘোষণাকে হুমকি মনে না করলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কোথা থেকে কিভাবে বার্তা এসেছে তার পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছেন গোয়েন্দারা। আল-কায়েদার হুমকি বিএনপি-জামাতের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে সোচ্চার আওয়ামী লীগসহ সরকারের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

মনে রাখা দরকার, বিশ্বের কট্টরপন্থী মৌলবাদী শক্তি এখন বাংলাদেশকে তাদের চারণভূমি বানাতে চাইছে। এজন্য যা যা করা দরকার, সবই করতে প্রস্তুত তারা। ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রটির প্রতি আত্মিক দরদ না থাকার কারণেই এরা এই দেশ তামায় পরিণত হোক, তারা তা চায়। এ বিষয়ে নিরাপত্তা ও সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেছেন, বাংলাদেশে যতো জঙ্গি সংগঠনের নেতা আছে, তা জামাত থেকে উৎপত্তি। ৪০ থেকে ৪২টি জঙ্গি সংগঠন আছে। এর মধ্যে ১০ থেকে ১২টি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়। হিযবুত তাহরীর জঙ্গি সংগঠনটির আগে মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ধারণা ছিল। এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এর ধারণা চলে গেছে। আব্দুর রশিদ বলেন, এ দেশের জনগণের মধ্যে ধর্মের উন্মাদনা ছড়ানোর জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা কাজে লাগবে না। সাম্প্রতিক সময়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলা হয়েছে- সাঈদীকে চাঁদে দেখা যায়। পরে জনগণের ভুল ভেঙে যায়। তিনি বলেন, জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে এ দেশের জনগণ খারাপ ধারণা রাখে। তিনি বলেন, বর্তমানে আল-কায়েদার সঙ্গে বিশ্বে যেসব সংগঠনের সম্পর্ক আছে তা আগের চেয়ে দুর্বল। তবে এখন আল-কায়েদার ভাবাদর্শ সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে।

লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলছিলেন, ১৫ বছর ধরে আমরা তথ্য প্রমাণসহ বলে আসছি দেশে আল-কায়েদার হয়ে কাজ করছে জামাতসহ তার সমমনা উগ্রবাদী দলগুলো। কাজেই ঘৃণ্য এই অপশক্তি দেশকে আর একটি আফগানিস্তান বা পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করার আগেই দেশ থেকে তাদের নির্মূল করতে হবে। আজ তথ্যপ্রমাণসহ কর্মকা- পরিষ্কার করে দিয়েছে আল-কায়েদা নেতা। এখন সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে জামাত-হেফাজতসহ সকল উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করা। তা না হলে দ্রুতই বাংলাদেশ আল-কায়েদার ঘাঁটিতে পরিণত হবে। শাহরিয়ার কবির বলেছেন, আল-কায়েদার সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গি ও জামাতের সম্পর্ক নতুন কিছু নয়, এটি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ সম্পর্ক আফগান জেহাদের সময় থেকে। হরকাত-উল-জেহাদের ১১৬ জন শীর্ষ নেতা প্রত্যক্ষভাবে আফগানিস্তানে জেহাদে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ট্রেনিং নিয়েছেন। এর তালিকাও রয়েছে। হরকাত-উল-জেহাদের নেতারা গর্বের সঙ্গে বলেছেন, তারা লাদেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, জামাতে ইসলামী ও হেফাজতের শীর্ষ নেতারা আফগানিস্তানের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, এটি অস্বীকার করার কিছু নেই। এদের নাম এক এক করে বলা যাবে। এ সব নেতা নিজেরাই স্বীকার করেছেন যে, তারা আফগানিস্তান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তখন হেফাজত কী জবাব দেবে? শাহরিয়ার কবির আরো বলেন, জামাতে ইসলামীর নেতারা ১৯৭১ সালে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ইসলাম ও পাকিস্তান সমর্থক। গোলম আযম বলেছেন, পাকিস্তান হচ্ছে আল্লাহর ঘর। আল্লাহর ঘর হেফাজত করার জন্য আমাদের জেহাদ করতে হবে। পাকিস্তান না থাকলে বিশ্বের বুকে ইসলামের নাম-নিশানা থাকবে না। এ সব জামাতে ইসলামীর অফিসিয়াল বক্তব্য। জামাতের আদর্শ, রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক আল-কায়েদা জেহাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমেরিকার সন্ত্রাস বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আল-কায়েদার আদর্শিক বৈশিষ্ট্য জামাতের কাছ থেকে বাংলাদেশ জঙ্গি সংগঠনগুলো পেয়েছে।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনও একই দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলস্বে জামাত-শিবিরসহ সকল জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতেই হবে। আর আল-কায়েদা নেতা যে বার্তা দিয়েছে তা নতুন কোনো বিষয় নয়। আমরা বছরের পর বছর ধরে বলে আসছি জামাত আল-কায়েদার সংগঠন। রাষ্ট্রকে এখন এদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। কেবল সরকার নয়, রাজনৈতিকভাবে এদের দমন করতে হবে।

আদালতে জামাতের উগ্রবাদী গঠনতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়েছেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তিনি বলেছেন, একটা সংগঠন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উদ্ভব ঘটাচ্ছে এবং এর নেটওয়ার্ক, অর্থায়ন বাইরের দেশ থেকে পরিচালিত। আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক দলের হেডকোয়ার্টার বাংলাদেশের বাইরে অবস্থিত, যা বাইরে থেকেই নিয়ন্ত্রণ হয়ে আসছে। তানিয়া আমীর বলেন, বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস রাজনৈতিক সহিংসতা নয়। দুটো মিছিল সামনা-সামনি হওয়া আর ছোট অবস্থায় হাতে বোমা তুলে দেয়া এক বিষয় নয়। খুব ছোট অবস্থায় প্রলোভন দেখিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের হাতে বোমা তুলে দেয়াটা হলো ক্লাসিক্যাল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ।

এই দেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকার। এই দেশের জন্য তিরিশ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। দুলাখ নারী সম্ভ্রম দিয়েছেন। আজ যারা এখানে জঙ্গিবাদের বীজ বপন করতে চাইছে, এরা শহীদদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে মাত্র। আমরা দেখছি একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামাত-শিবির দিনে দিনে আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়ে মাথায় উঠে বসেছে। মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জনকে নষ্ট করছে ষড়যন্ত্র।

আমরা অতীত স্মরণ করলে দেখবো, মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই সৌদি আরব প্রকাশ্যে এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়। পাকিস্তানকে প্রায় সব ধরনের সহযোগিতাই দিয়েছে সৌদি আরব। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অখ-তা রক্ষার অজুহাতে তারা গণহত্যাকে সমর্থন করে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে। ৭১ এর জুনের শেষ সপ্তাহে জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বাইশ জাতি মুসলিম সংস্থার সম্মেলনে পাকিস্তানি আগ্রাসনের সমর্থনে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়- পাকিস্তানের জাতীয় ঐক্য ও আঞ্চলিক অখ-তা রক্ষায় বাইশ জাতি মুসলিম সংস্থা পাকিস্তানের কার্যক্রম সমর্থন করে। পাকিস্তানের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক চুক্তিতেও আবদ্ধ হয় সৌদি আরব। যুদ্ধের নয়টি মাস তারা সব ধরনের আর্থিক সুবিধা দিয়েছে পাকিস্তানকে। সাহায্য করেছে সামরিকভাবেও। সৌদি আরব পাকিস্তানকে বেশ কয়েকটি এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান দেয়।

এমনিভাবে অনেকগুলো মুসলিম দেশই মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মানচিত্রে উজ্জ্বল। জাওয়াহিরির বার্তা তাই এদেশের সাধারণ মানুষকে মোটেই বিচলিত করছে না। আমিন বেগ নামের একজন ফেসবুকার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে যা লিখেছেন এটাই এদেশের আম জনতার কথা। তিনি লিখেছেন- ‘মিঃ জাওয়াহিরি, আপনি ন্যাটো বাহিনী দেখেছেন কিন্তু দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধাদের দেখেননিৃ আপনি অ্যাপানি হেলিকপ্টার দেখেছেন কিন্তু আমাদের শাহবাগে উড়ন্ত বেলুনগুলো দেখেননি। আপনি আমেরিকার ড্রোন দেখেছেন কিন্তু মহাবিশ্বে তাক লাগানো জাফর ইকবালের ড্রোন দেখেননি। আপনি গণতন্ত্রের মানসপুত্র হামিদ কারজাইকে দেখেছেন। কিন্তু গণতন্ত্রের লৌহকঠিন নারী নেত্রীদের দেখেননিৃ। আপনি আফগানে ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনীর প্রধান ডানফোর্ডকে দেখেছেন। কিন্তু আমাদের দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ইমরান এইচ সরকারকে দেখেননি। অতএব, বাংলাদেশে আসার আগে খুব খেয়াল কইরা।’

হ্যাঁ, এদেশ জঙ্গিবাদের ঘাঁটি হবে না। হতে দেয়া হবে না। এদেশের মানুষই তা রুখে দেবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়।

========================================

দৈনিক ভোরের কাগজ ॥ ঢাকা ॥ : শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কে এই জাওয়াহিরি?
Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.