| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দিনের একটা উল্লেখ করার মতো সময় ফেসবুকেই কেটে যায়। আমাদের হয়ত যাওয়ার জায়গা কমে আসছে। দিন দিন আমরা ছোট একটা বাক্সে বন্দি হয়ে পড়ছি! সেই সাথে বরণ করে নিচ্ছি স্ট্রেসে ভরপুর জীবন।
একটা সময় ছিল, আমাদের ছোটবেলার কথা বলছি, হতে পারে সেটা আশির দশকের মাঝামাঝি কোনো সময়। মা মাঝেমাঝে এদিক সেদিক ঘুরতে যেত। মায়ের একমাত্র সঙ্গী হিসেবে আমিই তখন টিকে ছিলাম। বোনরা ততদিনে বড়সড় হয়ে গেছে। বাবা কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আমার ঐ বয়সে পড়ালেখায় তেমন ব্যস্ততা ছিল না। তাই মায়ের সঙ্গী হতাম।
মা আমাকে নিয়ে এখানে সেখানে ঘুরতে যেত। মাঝে মাঝে যেত মার্কেটে। সেই মার্কেট আমাদের এখনকার এসিযুক্ত শপিং মল ছিল না। ছোট ছোট মফঃস্বল শহরে গেলে এখনো সেই মার্কেটের সুবাস ফিরে পাই।
ইদানিং ছুটিছাটায় বোনের বাড়ি দিনাজপুরে যাই। সেখানে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া সেই সময়টাকে হুটহাট খুঁজে পাই।
আমাদের পিতামাতা অর্থশালী ছিল না। অল্পস্বল্প টাকায় সাধ আর সাধ্যের মধ্যে টানাটানি করতে করতেই তারা তাদের জীবনের স্বপ্ন দেখার দিনগুলো হারিয়ে ফেলেছিল। বছর শেষে পুরো পরিবার মিলে নানাবাড়ি দাদাবাড়ি ঘুরতে যাওয়াই ছিল আমাদের একমাত্র বাইরে বেড়াতে যাওয়া। এর বাইরে পাড়া প্রতিবেশী আর কালেভদ্রে বাইরে খাওয়া। একেবারেই কালেভদ্রে।
আমরা কি তখন অসুখী ছিলাম? এই প্রশ্ন মাঝে মাঝেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করি। মনের ইতিউতি আলো ফেলে খুঁজতে চেষ্টা করি, কোথাও কোনো অপূর্ণতা ছিল কী না!
আমার মাকেই মাঝে মাঝে আক্ষেপের সুরে বলতে শুনেছি, 'এটা হলে ভালো হতো' 'এই ঈদে তোকে জামা দিতে পারলাম না!' ... কিন্তু মা জানত না, এসব ছোটখাট না পাওয়াগুলো তাকে ভেতরে ভেতরে পোড়ালেও আমাদের এতটুকু আহত করতে পারেনি! ওই অপ্রাপ্তিগুলো ছিল বলেই হয়ত জীবনে একটা উন্মাদনা ছিল, সামনে কিছু একটা করার আশাটা বেঁচে ছিল। যে জীবন সবকিছু এক ক্লিকেই পেয়ে যায়, জানি না সেই জীবনে মানুষ কীসের আশায় পরের দিনের সূর্যোদয়ের অপেক্ষা করে!
আশা থাকে। আশা থাকে বলেই মানুষ বাঁচতে পারে। বিধাতা এক দিকে দিয়ে আরেকদিকে অপূর্ণতা রেখে জীবনের চাকাটাকে চলমান রাখেন।
অন্য একটা বিষয় নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কী বোর্ডে হাত রাখার পরে সে আমাকে দিয়ে এসব কথাই লিখিয়ে নিলো।
একটু আগে ফেসবুকে একজন ডাক্তারের একটা লেখা পড়ছিলাম। অবিবাহিতা দুজন মেয়ে এসেছে তার চেম্বারে। একজন অসুস্থ। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এসব লক্ষণ। অবিবাহিতা বলে ডাক্তার সরাসরি কিছু জিজ্ঞেস করতে পারছেন না। কিন্তু তিনি ভালো করেই জানেন কী হয়েছে। সনোগ্রামে সেটা ধরাও পড়ল।
সমস্যা হয়ে গেল এবরশনের সময়। ডাক্তার সেটা করবেন না। হাত পা ধরাতে মেয়েটাকে পাশের রুমে পাঠিয়ে দিলেন। মাঝে একটা পার্টিশন দেওয়া পাশের রুমের কথা তিনি পরিষ্কার শুনতে পারছিলেন। এবরশনে তিন হাজার টাকা লাগবে শুনে মেয়েটার সঙ্গে আসা আরেকজন অবিবাহিত মেয়ে বলে উঠল, 'আপনাদের এখানে এত বেশি কেন? গত মাসেই আমি এর চেয়ে কমে করিয়েছি!'
এ যেন অনেকটা এরকম কিছু বলা, 'গত মাসেই তো আমি এর চেয়ে কম দামে কিনেছি। এখন এত বেশি কেন চাইছেন!'
সমাজে গোপন পাপ কী ভীষণ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, আমরা হয়ত তার আসল খবরটাও জানি না!
যখন গোপন পাপ বেড়ে যায়, সমাজটা তখন অসুস্থ হয়ে যেতে শুরু করে। আমাদের এই সমাজটা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ হতে শুরু করেছে। ছোট একটা ঘা বাড়তে বাড়তে গ্রাংগ্রিন হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। হাত পা কাটা শুরু হয়ে গেছে।
কোনদিন মাথাটাই কাটা পড়ে, আমরা হয়ত সেই দিনের অপেক্ষা করছি!
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৪
ফাহমিদা বারী বলেছেন: এক যুগের পরের যুগ খারাপ হবে... এটা তো বলাই আছে! সেই দিকেই যাচ্ছে সবকিছু!
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৭
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: প্রযুক্তি যত উন্নত হবে (সাধারণভাবে) মানুষের ধর্মের প্রতি অবিশ্বাস বাড়বে, এতে নৈতিকতার হচ্ছে চরম অবনতি। অন্যদিকে হারিকেনের আলোর দিনের যে মূল্যবোধ ছিল তার বহুলাংশই অশিক্ষা কুশিক্ষায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এত বছরের শিক্ষকদের এই পর্যায়ে আনা সহজ এবং সম্ভব হয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের ষড়যন্ত্রে আর তার ফল টিচারদের ব্যাং হওয়া, টিরিং টিরিং সাইকেল চালানো এসবে।