নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার চাই

ফারজানা৯৯

সারা জীবন শুধু পথের সন্ধানে ছুটে চলেছি আমি, সত্যের সন্ধান আর মেলেনা। পথ অনেক দূরের। মানুষের দেয়া কষ্টগুলো জমিয়ে এখন ভীষণ একলা চলি আমি। অন্যের কাছে আশা করি না। শুধু বিশ্বাস করি নিজের বাবা-মাকে। পৃথিবীর মানুষগুলো শুধু কষ্ট দেয় আমায়। তাই এখন আর অন্যের ওপর ভরসা না করে নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে চলা। আসলেই কি যোগ্য আমি। কোথাও কোন বন্ধু নেই। সহযোগীর চেয়ে শত্রু বেশী। যেখানে যাই শত্রু কুড়াই। কর্মক্ষেত্রে, নিজ জীবনে সব জায়গায়। মানুষের মুখ দেখে মানুষ সত্যি চেনা দায়। মানুষ ক্ষণে ক্ষণে গিরগিটির মতো রং বদলায়। আমি মানুষকে সত্যি বিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু বিশ্বাস করা বড়ো দায় হয়ে দাড়ায়। পিছন থেকে ছুরি মারা সদা প্রস্তুত মানুষগুলো বড়ো ভাবায়। একটু আগের সবচেয়ে বড় বন্ধু ক্ষণিকের মাঝে অচেনা হয়ে যায়। সবাই যার যার মতো আখের গোছায়। আর আমি চেয়ে থাকি। নাকি ওরাই ঠিক। আর আমি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে জানি না। চোখের পলকে নিজের চেহারা পাল্টাতে পারি না। আমি আসলে বোকার দলে। সময় থেকে পিছিয়ে পড়েছি। আমার মধ্যে আজকাল অবিশ্বাস গুলো আনাগোনা করে। অথচ মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।তারপরও মনে হয় আলোর সন্ধান আমি পাবোই।ফারজানা

ফারজানা৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কোরাণ শিক্ষা

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

আমার কোরাণ শিক্ষা



ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হওয়ার পর, আমরা ঢাকা শহরের মালিবাগে নতুন বাসা নিলাম। পাশের বাসার আন্টি এসে আম্মুকে জিগ্যেস করলেন, আপনার মেয়েকে কোরাণ শিক্ষা দেন না? আম্মু বললো, ওতো এখনো অনেক ছোট। আন্টি বললেন, যত তাড়াতাড়ি ধর্ম-কর্মের শিক্ষা দিবেন, সেটা মেয়ে মানুষের জন্য ততো ভালো। আমাদের বিল্ডিং-এ একজন হুজুর আসেন ছোট ছোট মেয়েদেরকে পড়াতে। সবাই মিলে পড়লে বেতন কম লাগতো। অর্থ্যাৎ মূল উদ্দেশ্য... হলো, কম টাকায় সন্তানকে কোরাণ শিক্ষা দেয়া আর আরবী শিখানো। প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী আরবী আর কোরাণ বুঝুক আর না বুঝুক তাকে তা গিলতেই হবে।



এবার আসি এই হুজুর প্রসঙ্গে,

যিনি আমাদের ভবনে রোজ এসে আমি সহ আর কিছু মেয়েকে কোরাণ পড়াতেন, এক একদিন এক একজনের বাসায়। সেই সময় হুজুরের জন্য থাকতো স্পেশাল নাস্তার ব্যাবস্থা। নাস্তাটা সামনে আসলে হুজুরের চোখ খুশীতে চকচক করতো। যদিও তিনি বলতেন টিভি দেখা হারাম, কিন্তু সার্কের আর ভোটের সময় সকালে টিভি চললে, তিনি আমাদের ঘুরিয়ে বসিয়ে কোরাণ পড়তে দিয়ে সিনেমা দেখতেন। ( ঐ সময় বাংলাদেশে শুধু বিটিভি ছিলো, এবং স্পেশাল প্রোগ্রাম না থাকলে সকালের কোন অধিবেশন ছিলনা।)



হুজুরেরর হাতে সবসময় একটা জালিবেত থাকতো। কেউ যদি একটা উচ্চারণ ভুল করতো, তাহলে তিনি সেই জালি বেত দিয়ে পিটানো শুরু করতেন। একদিন হুজুর আমাদের ভবনের একটি মেয়ের উপর ক্ষেপে গিয়ে ভয়ঙ্কর ভাবে জালি বেত দিয়ে পিটানো শুরু করলেন। মেয়েটির অপরাধ ছিলো, উচ্চারণ ভুল এবং নামাজ পড়ানো শিখানোর সময়, হুজুর দেখলেন তার পায়জামার এক পায়ের অংশ উপরে উঠে গেছে। হায়রে, ঝপাৎ , ঝপাৎ তিনটা বেত মারার পর সেই মেয়েও অজ্ঞান হওয়ার ভান করলো। ভান করলো বুঝতে পারলাম এই কারনে, হুজুর ঠিক রুম থেকে বের হওয়ার পর মেয়েটি এক চোখ খুলে কানায় দেখলো হুজুর সত্যি সত্যি গ্যালো কিনা। আন্টি (মেয়েটির মা) এসে ঘোষণা দিলেন , এই হুজুরের কাছে আমার মেয়ে আর কোরাণ পড়বে না। যদিও আন্টি কন্যাকে দিনে চারবার বেত্রাঘাত করে পাড়া মাতাতেন।



[বিঃ দ্রঃ সেই আপুর ঐ হুজুরের কাছে কোরাণ পড়া বন্ধ হলেও আমার হয় নাই :( ]



পাশের বাসার আন্টি বললেন, হুজুর যেই জায়গায় মারবে, সেই জায়গা নাকি বেহেস্তে যাবে এবং একজনের জন্য অন্যদের কোরাণ শিক্ষা গ্রহণ বন্ধ হবে না। সুবাহানল্লাহ। সত্যি ধর্মান্ধতা বিশাল বড় রোগ। হুজুর মারলেও শরীরের সেই অংশ বেহেস্তে যায়. এই শিক্ষা আমার ছোটবেলায় পাওয়া।



একদিন হুজুর আমাকে জিগ্যেস করলেন, তোমার আব্বা কি ঢাকায় কোথায় জমি-জমা কিনেছেন? আমি বললাম, না হুজুর। উনি বললেন, ঢাকা শহরে একজন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে তোমার আব্বা একটি বাড়ি বানাইতে পারলেন না, বাড়ি তো দূরের কথা জমিও নাই। আমি মুখ কাচুমাচু করে বললাম, নাই হুজুর। তিনি বললেন, আর আমি মসজিদের ছোট হুজুর হইয়াও ( তিনি তিন বেলা কয়েকটা বাসায় পড়াতেন। ঐ বাসাগুলোতেই তার খাওয়া-দাওয়ার ব্যসস্থা ছিলো আর মসজিদে চাকুরী করতেন, দুপুর তিনটা থেকে ৬টা পর্যন্ত মসজিদে বাচ্চাদের আরবী পড়াতেন) রামপুরার ঝিলে একখান জমি কিনে ফেলছি। তোমার আব্বা পারলো না। উনারে বইলো, উনি চাইলে ঐ ঝিলে উনার জন্য জমির ব্যবস্থা করতে পারি শুধু কিছু কমিশন লাগবে।



এই ছিলো আমার হুজুর, কোরাণ শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার কেন ঢাকায় জমি কিনবেনা না কেন তা নিয়ে তার মাথা ব্যাথা!! আমার বাবা সারা জীবন সৎ মানুষ আর তার ঢাকায় জমি বা বাড়ি কেনার আগ্রহ কোনদিনই ছিলো না। তার একটাই স্বপ্ন, ছেলে-মেয়েরা বড় হবে, নিজেদের মতো ক্যারিয়ার গড়ে নিবে আর তিনি অবসর নিলে, তার স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামে গিয়ে শেষ জীবনটা পার করবেন।



তারপর থেকে সারাজীবনই দেখেছি, আমাদের হুজুররা মুখে যতই পরকালের কথা বলেন, আসলে ওনারা পরকালের চেয়ে ইহকালই বেশি ভোগ করেন।



ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা)

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১৮

বেকার মানুষ বলেছেন: হাহা ;) ;) =p~ =p~ =p~ =p~

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৫৮

ফারজানা শিরিন বলেছেন: আপু এই ধরণের মানুষকে হুজুর বলাটা আমাদের শিক্ষার ভুল । এরা বড় জোর আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত বলা যায় ।

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

অ্যামাটার বলেছেন: টিপিকাল মোল্লা। হুজুরেরা ক্যারেকটারিস্টিকালি এ'ধরনেরই হয়।
অবশ্য দুই-এক জন ভালমানুষও থাকে।

৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২১

ফকির সাইঁ বলেছেন: ডেয়ার,

ঠিক পয়েনটে আঘাত করেছেন।
আমি সাইদীর এনড গং দের কারনে ৪/৫ নাচতিক ছিলাম ।
কোরআন আমার কাছে মনে হত মেন মেইড,বাট আমি আমার লাইফের একটা বাকে এসে কোরআন নিয়ে রিসারস করা শুরু করেছিলাম খুব ভালোভাবে ---শুধু ইমপেরেসট ই হোই নাই, পেয়েছি আলো পথ।
সো মাই আরজি টু ইউ, গিভ-আপ দিস সো কলড মোললা এনড সারস দা রিয়েল টুথ।
ভালো থাকবেন----- আর একটা কথা আপনি যেটা নিয়ে লিখছেন সেটা কমন একটা বিষয়, আমরা নিউ জেনারেশ কিনতু আর এগুলা নিয়ে পরে নাই, কিভাবে এই পোবলেম সলভ করা যায় রিতিমত সেটা নিয়ে লেগেগেছি বলতে পারেন নিজ নিজ উদদেগে, আপনাকেও ইনভাইট করছি।

৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৮

একজন আরমান বলেছেন:
হুম। অনেক ক্ষেত্রে এক হলেও সবাই কিন্তু এক না !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.