নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার চাই

ফারজানা৯৯

সারা জীবন শুধু পথের সন্ধানে ছুটে চলেছি আমি, সত্যের সন্ধান আর মেলেনা। পথ অনেক দূরের। মানুষের দেয়া কষ্টগুলো জমিয়ে এখন ভীষণ একলা চলি আমি। অন্যের কাছে আশা করি না। শুধু বিশ্বাস করি নিজের বাবা-মাকে। পৃথিবীর মানুষগুলো শুধু কষ্ট দেয় আমায়। তাই এখন আর অন্যের ওপর ভরসা না করে নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে চলা। আসলেই কি যোগ্য আমি। কোথাও কোন বন্ধু নেই। সহযোগীর চেয়ে শত্রু বেশী। যেখানে যাই শত্রু কুড়াই। কর্মক্ষেত্রে, নিজ জীবনে সব জায়গায়। মানুষের মুখ দেখে মানুষ সত্যি চেনা দায়। মানুষ ক্ষণে ক্ষণে গিরগিটির মতো রং বদলায়। আমি মানুষকে সত্যি বিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু বিশ্বাস করা বড়ো দায় হয়ে দাড়ায়। পিছন থেকে ছুরি মারা সদা প্রস্তুত মানুষগুলো বড়ো ভাবায়। একটু আগের সবচেয়ে বড় বন্ধু ক্ষণিকের মাঝে অচেনা হয়ে যায়। সবাই যার যার মতো আখের গোছায়। আর আমি চেয়ে থাকি। নাকি ওরাই ঠিক। আর আমি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে জানি না। চোখের পলকে নিজের চেহারা পাল্টাতে পারি না। আমি আসলে বোকার দলে। সময় থেকে পিছিয়ে পড়েছি। আমার মধ্যে আজকাল অবিশ্বাস গুলো আনাগোনা করে। অথচ মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।তারপরও মনে হয় আলোর সন্ধান আমি পাবোই।ফারজানা

ফারজানা৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক রাতের ঘটনা

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩

একবার সন্ধ্যার কিছু আগে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম। ছোটভাইকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম কারণ রাতের বেলা সেখানে থাকবো । মায়ের পক্ষের আত্মীয় তাই বাসা থেকে কোন আপত্তিও করেনি, অনেক অনুরোধে পরে সেখানে যাওয়া। তাছাড়া, ঐ বাড়ির দুই মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বন্ধুত্বের চেয়ে অনেক বেশী। ঐ বয়সে যা হয়, আত্মার সম্পর্ক!! সে কারণেই আরো বেশি করেই বেড়াতে যাওয়া।

ঐ বাড়িতে ঢোকার পর পর ওদের বড় মেয়েটির ( আমার থেকে সাড়ে তিন বছরের বড়) সঙ্গে তার বড় ভাইয়ের কথা কাটাকাটি শুরু হলো। ঐ বাড়িতে ছেলেরা হলো চোখের মনি। বড় ভাইয়ের সঙ্গে ছোটবোনের তর্ক দেখে ওদের মা দৌড়ে এলেন। এসেই কিছুই না শুনে মেয়ের দুই গালে দুটা চড় মারলেন। তারপর জিজ্ঞ্যেস করলেন, তোকে যে কাজটা করতে দিয়েছিলাম ওটা করেছিস? মেয়েটা বললো, অর্ধেক শেষ হয়েছে বাকিটা রাতে শেষ করবো। এই কথা শুনে সেই মহিলা মানে ওদের মা বিশাল এক গাছ কাটা লাকড়ি যার ওজন কমপক্ষে এক কেজি হবে সেটা তুলে নিয়ে মেয়েটিকে পেটানো শুরু করলো। ভয়াবহ অবস্থা। মেয়েটির মুখে মারলেন, গাল আর হাত ফেটে রক্ত বের হওয়া শুরু করলো। আর মেয়েটি ব্যাথায় চিৎকার শুরু করলো। আশেপাশের বাড়ির লোকজন উঠানে এসে হাজির হলো আর এভাবে মেয়েকে মারতে দেখে কেউ কেউ হাসতে থাকলো। কেউ আবার বললো, রোজ রোজ মেয়েকে পিটানোর বাহানা খোঁজে। এসব দেখে আমি রেগে গেলাম। আশে পাশের লোকজনদের রেগে বললাম, এখানে কি? নাটক হচ্ছে? নাটক দেখতে আসছেন? যান এখান থেকে। মেয়েটাকে তখনও ধোলাই চলছে, মা -ছেলে মিলে ধোলাই করতে লাগলেন মেয়েটাকে। ১ ঘন্টা পর যখন ধোলাই শেষে মেয়েটা প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেল তখন তারা থামলেন। তারপর আমার দিকে এগুলেন। মেয়েটার মা বললেন, এইসব শিখেছো তুমি তোমার পরিবারের কাছে? বড়দের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় শিখোনি? ওনার ছেলে আমাকে বললেন, তুমি আশে পাশের লোকজনকে বললা ওরা কি এখানে নাটক দেখে? তোমার এত বড় সাহস? সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আমাকে তাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বললেন। তাদের বাড়ি ঢাকা থেকে অনেক দূরে। রাতের বেলায় রাস্তায় বের হওয়া যায় না। ঘুটঘুটে অন্ধকার !! ঐ রাস্তায় সন্ধ্যার পর তখন কোন গাড়ি বা রিকশা পাওয়া যেতনা। কিছুদূর এগুলে সেখানে একটি এলাকা আছে যেখানে নিয়মিত ডাকাতি হয় রাস্তায়।এসব জেনেও আমি আমার ছোটভাইকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে গেলাম।

তখন ওদের ভাইটা তাড়াতাড়ি আরেক ছোটবোনকে বললো ওকে আটকা। নতুবা, সকালে বিশাল গন্ডগোল লাগবে পুরো পরিবারে। ওর বাবার সামনে মুখ দেখানো যাবেনা। ঐ বাড়ির ছোট মেয়েটা ( আমার চেয়ে এক বছরের ছোট) আমাকে বললো, তুমি চলে যাও, তবে এইটুকু ভেবো আজ যদি এইসময় বের হয়ে যাও তাহলে তোমাদের বাসার সঙ্গে আমাদের বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে। তোমাদের বাসা থেকে তোমার আম্মুকে কথা শোনাবে, কারণ আমরা তোমার মায়ের পক্ষের লোক। আমি মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে সেদিন সেই রাত সেই বাড়িতে না ঘুমিয়ে না খেয়ে কাটিয়ে দিলাম, তবে ছোটভাইকে নিজ হাতে খাওয়ালাম। তারপর কারো ঘুম ভাঙ্গার আগেই ঐ বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকার পথ ধরলাম।

বাসায় আসার সঙ্গে সঙ্গে শুনলাম, আম্মুর কাছে ফোন এসেছে, তোমার মেয়ে অনেক বেয়াদব হয়ে গ্যাছে, বড়দের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় শেখেনি। মেয়েকে মানুষ করতে পারোনি!! এমন মেয়েদের ভাল করে পিটিয়ে শিক্ষা দিতে হয়। আর বেশী পড়ালেখা না করিয়ে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দাও, তাহলেই মঙ্গল।

বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আম্মু জিজ্ঞ্যেস করলো কি হয়েছিলো? তুমি নাকি অনেক বেয়াদবি করেছো? আমি কিছু বলার আগে আমার ছোটভাই বললো, আম্মু জানো নাতো ....... আমার আর কিছু বলতে হয়নি, আমার ছোটভাইটাই তখন ওর বয়েস ১২ হবে সেই সব বুঝিয়ে বললো। এসব শুনে আমার মা আমার দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে রইলো। তার সেই চাহনী আমায় বলে দিলে, তোমার আব্বুর সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলোনা স্নিগ্ধা। তাহলে সমস্যা আরো বাড়বে।

বাবাকে জানালে, ঐসব মানুষেরা আমাদের বাসায় আর কোনদিনও প্রবেশ করতে পারতো না। আমি আমার জননীর দিকে তাকিয়ে, সেই রাতের অপমান হজম করে গেলাম।



ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা)

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮

নিকষ বলেছেন: বিচার চাই।

২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯

রাধাচূড়া ফুল বলেছেন: এইসব মানুষদের মন-মানসিকতা যে কবে পরিবর্তন হবে।


লেখায় ভালো লাগল রইল। :)

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৪

ফারজানা৯৯ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪০

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: পড়লাম, খারাপ লাগল মেয়েটার জন্য

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৫

ফারজানা৯৯ বলেছেন: হুম

৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

ফুরব বলেছেন: আমাদের সমাজে অহরহ এই ধরনের ঘটনা ঘটছে ।অশিক্ষাই মুলতঃ এর জন্য দায়ী।। আর ত্রুটিপুর্ন শিক্ষা ব্যাবস্থা যতদিন না পরিবর্তন হবে ততদিন সমাজ থেকে এই সমস্যা শেষ হবে না।।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৫

ফারজানা৯৯ বলেছেন: মেয়েটার মাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, সেও শিখেছে তার মায়ের কাছে। এভাবেই শেষ হয়ে যায় মেয়েদের জীবন

৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭

রাহুল বলেছেন: তোমাদের বাসা থেকে তোমার আম্মুকে কথা শোনাবে, কারণ আমরা তোমার মায়ের পক্ষের লোক।

মায়ের সবথেকে বড় দুর্বলতা।লেখা ভালো হইছে।পিলাচ++্

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৬

ফারজানা৯৯ বলেছেন: এই জন্যই আমি কিছুই বলিনি

৬| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

ইনফাইনাইট বলেছেন: চরম অমানবিক ।

৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮

বাংলার হাসান বলেছেন: খুব দুঃখজনক

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৬

ফারজানা৯৯ বলেছেন: হ্যা, চরম অমানবিক

৮| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১২

অ্যামাটার বলেছেন: আশ্চর্য্য লাগলেও সত্যি। এরকম পরিবারও আছে। পরিচিত দূরসম্পর্কের কিছু আত্মীয়ের মধ্যেও এরকম দেখেছি।
আরেকটা জিনিস মনেহয় এড়িয়ে গেছেন, যদি আমার ভুল না হয়ে থাকে, নিজস্ব পর্যবেক্ষন, এরকম পরিবার সাধারণত অত্যন্ত গোঁড়া ধার্মিক হয়।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৭

ফারজানা৯৯ বলেছেন: এ পরিবার ভীষণ গোঁড়া ধার্মিক

৯| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

বহুব্রীহি বলেছেন: আপনার বাবা কি খুব রাগী?
আপনার লেখা পড়ে মনে হয় আপনি নিজের অসহায়ত্ব নিয়ে অসহায় বোধ করছেন।
এখন তো বড় হইছেন, এখন নিজের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসছে। এখনো কি চুপ করে থাকেন?

১০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২

বহুব্রীহি বলেছেন: আপনার বাবা কি খুব রাগী?
আপনার লেখা পড়ে মনে হয় আপনি নিজের অসহায়ত্ব নিয়ে অসহায় বোধ করছেন।
এখন তো বড় হইছেন, এখন নিজের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসছে। এখনো কি চুপ করে থাকেন?

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৯

ফারজানা৯৯ বলেছেন: আমার বাবা বদরাগী তবে সবসময় নন। তবে আমি চুপ করে থাকিনা। আমি মুখরা রমনী। নতুবা ঐ রাতে বললাম কিভাবে নাটক দেখছেন সবাই। তবে আমার মা কষ্ট পাবেন বলে চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। মাকে বাবার কাছে ছোট করতে চাইনি।

১১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৩

আরাফাত রহমান বলেছেন: কত দিন আগের ঘটনা ?

এখন তো বাংলালিংকের যুগ। দিন বদলে গেছে।

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৪৬

ফারজানা৯৯ বলেছেন: বাংলা লিংকের যুগ হলেও ঐ দেশটির নাম বাংলাদেশ

১২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৮

বহুব্রীহি বলেছেন: একটা কমেন্ট করছিলাম। হয়ে গেল চারটা। বাকিগুলো মুছে দিয়েন। সামুর বাগ মন্তব্য করলে দেখায় না।

-
একটা তর্ক পোস্ট দেন। তর্ক করবো। :)

১৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:৫৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: একজন মা নিজের মেয়েকে এভাবে পিঠাতে পারে!!!
অবাক হয়ে গেলাম।

১৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: :(

১৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২০

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: আমি হলে বাসায় বলে দিতাম সম্ভবত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.