![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারা জীবন শুধু পথের সন্ধানে ছুটে চলেছি আমি, সত্যের সন্ধান আর মেলেনা। পথ অনেক দূরের। মানুষের দেয়া কষ্টগুলো জমিয়ে এখন ভীষণ একলা চলি আমি। অন্যের কাছে আশা করি না। শুধু বিশ্বাস করি নিজের বাবা-মাকে। পৃথিবীর মানুষগুলো শুধু কষ্ট দেয় আমায়। তাই এখন আর অন্যের ওপর ভরসা না করে নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে চলা। আসলেই কি যোগ্য আমি। কোথাও কোন বন্ধু নেই। সহযোগীর চেয়ে শত্রু বেশী। যেখানে যাই শত্রু কুড়াই। কর্মক্ষেত্রে, নিজ জীবনে সব জায়গায়। মানুষের মুখ দেখে মানুষ সত্যি চেনা দায়। মানুষ ক্ষণে ক্ষণে গিরগিটির মতো রং বদলায়। আমি মানুষকে সত্যি বিশ্বাস করতে চাই। কিন্তু বিশ্বাস করা বড়ো দায় হয়ে দাড়ায়। পিছন থেকে ছুরি মারা সদা প্রস্তুত মানুষগুলো বড়ো ভাবায়। একটু আগের সবচেয়ে বড় বন্ধু ক্ষণিকের মাঝে অচেনা হয়ে যায়। সবাই যার যার মতো আখের গোছায়। আর আমি চেয়ে থাকি। নাকি ওরাই ঠিক। আর আমি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে জানি না। চোখের পলকে নিজের চেহারা পাল্টাতে পারি না। আমি আসলে বোকার দলে। সময় থেকে পিছিয়ে পড়েছি। আমার মধ্যে আজকাল অবিশ্বাস গুলো আনাগোনা করে। অথচ মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।তারপরও মনে হয় আলোর সন্ধান আমি পাবোই।ফারজানা
বন্ধু রেশমার চিঠির আরেকটি অংশ আজ ছাপালাম
''১৯৯১ সালে আমি যখন ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হই, সেই সময় থেকে ৪/৫ জন বান্ধবী মিলে এক সংগে বের হতে শুরু করলাম। আমাদের সংগে সাহসী একটি মেয়ে ছিল। সে সংগে থাকলে আমাদের সাহস অনেক বেড়ে যেত। সম্ভবত ১৯৯৩ সালে, ঈদের কেনাকাটা করার জন্য বন্ধুবান্ধব মিলে প্ল্যান করে এক সংগে বের হই। সংগে সেই সাহসী বান্ধবী রিপা ছিল। চাঁদনীচক মার্কেটের মধ্যে হাটছি। হঠাৎ করে রিপা আমাদের সতর্ক করে দিয়ে বললো, তোরা তৈরি থাকিস। ঠিক জায়গা মত ঘা দিতে আসছে। বড় একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারলাম। বুকে ধাক্কা দিতেই রিপা লোকটিকে ধরে ফেললো। সেইদিন আমরা সেই লোকটাকে সবাই মিলে রাস্তায় ফেলে আচ্ছা মত জুতো পেটা করেছিলাম। সেই দিনের পর থেকেই আমরা সবাই সাহসী হয়ে গেলাম। যে কাজটি একা একটি মেয়ের পক্ষে করা সম্ভব ছিল না, সবাই মিলে সেই অসম্ভব কাজটি সম্ভব করে ফেললাম। যদিও এতে সমস্যা সমাধান হলো না তবে মনের মাঝে কেমন যেন এক ধরনের তৃপ্তি পেয়েছিলাম।
২০০৬ সালের দিকে, বিশেষ একটা কাজে আমাকে একাই বাংলাদেশে যেতে হয়। টরেন্টো থেকে এ্যামিরাতস এয়ার লাইন্সে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। আমার এই যাত্রাটি বেশ ভয়াবহ। বিশেষ করে দুবাই থেকে ঢাকা পর্যন্ত। পরিবার নিয়ে এর আগে অনেক বার যাওয়া হলেও, এই প্রথম বাধ্য হয়ে একা যাওয়া। একটা মেয়ের পক্ষে দেশের বাইরে যতটা নিরাপদে যাতায়াত করা সম্ভব, নিজের দেশের মানুষের মধ্যে আসা ঠিক ততটাই বিপদজনক। হিথরো এয়ারপোর্টে এসে আরো দুই বাঙ্গালী মেয়ের সংগে পরিচয় হয়। তারাও একাই দেশে যাচ্ছে। একটি মেয়ে, সে কানাডায় পড়াশুনা করে। সে আমাকে জানালো দুবাই এর পর থেকে যাত্রা কিন্তু নিরাপদ নয়। কারন আমাদের সংগে কোন পুরুষ মানুষ নেই। তাই প্ল্যান করলাম দুবাই থেকে আমরা তিনজনে এক সংগে সিট নিবো। দুবাইতে বাংলাদেশী অনেক শ্রমিক কাজ করে। তারাও একই প্লেনে উঠবে। মেয়ে মানুষ একা দেখলেই পিছু নিতে পারে। দুবাইতে বাংলাদেশি যে শ্রমিক গুলো কাজ করতে আসে তারা প্রায় সবাই গ্রাম থেকে আসা ভাগ্যান্নেষী মানুষ। তাদেরকে যে ভয় পাওয়ার ব্যাপার আছে তা আমার জানা ছিল না। অল্পবয়স্ক মেয়েটি আমাকে জানালো দুবাই এর এই শ্রমিক গুলো একেবারেই অন্যরকম।আমরা যখন দুবাইতে যাত্রা বিরতি নিলাম তখন একজন লোক এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো আপা আপনি কোথায় যাবেন? আমি কোন উত্তর দিলাম না। প্লেনে উঠার সময় আমার সমস্যা বেধে গেল। তিনজনে এক সংগে সিট পেলাম না। বাধ্য হয়ে আমাকে বুকিং সিটে বসতে হলো। আর আমার সিটটি ছিল দুবাই ফেরত কয়েকজন শ্রমিকের ঠিক মাঝখানে, যেখানে কোন মেয়ে মানুষ ছিল না। আমাকে একা পেয়ে তাদের মধ্যে উল্লাস দেখতে পেলাম। আমার পাশের সিটটি খালি ছিল। সেই সিটে কে বসবে তা নিয়ে এক প্রকার প্রতিযোগিতা শুরু হলো শ্রমিকদের মধ্যে। আমি ইমারজেন্সিতে কল দিলাম। ইন্ডিয়ান এয়ার ক্রু এসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেন। আমি তাকে জানালাম –''I don’t feel safe here'' . তিনি তখন জানালেন যে তিনিই আমার পাশের সিটে বসবেন। এই বলে তিনি সামনে এগিয়ে গেলেন কিছু একটা কাজ শেষ করার জন্য। সেই সু্যোগে ২০/২৫ বছরের একটি ছেলে নিজের সিট রেখে দ্রুত আমার পাশের সিটে এসে বসে পড়লো। তাদের সঙ্গীরা হাতে তালি আর শিশ দিতে শুরু করলো। প্লেনের মধ্যে এরকম, ঘটনা ঘটতে পারে তা ছিল সত্যি অবিশ্বাস্য। এদের মধ্যে একজন মধ্যবয়স্ক লোক আমাকে লক্ষ্য করে বললো, '' ম্যাইয়া হইছেন, চাপাচাপি খাইবেন না, তা কি কইরা হয়?'' এর মধ্যে কেউ কেউ স্মোকিং শুরু করছে, মাইকিং করেও তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। আমি আবারো ইমারজেন্সীতে কল দিলাম। ইন্ডিয়ান ফ্লাইট ক্রুটি এসে এবার এক প্রকার জোর করেই সেই ছেলেটাকে আমার পাশের সীট থেকে তুলে দিলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞ্যেস করলেন- আপনার দেশের লোকগুলো এরকম কেন ? '' They behaved like animal.'' এই কথা শুনে লজ্জায় আমার মুখ লুকানোর মতো অবস্থা। মনে মনে ভাবি,এই মানুষ গুলো শিক্ষার আলো থেকে অনেক দূরে। এরা শিক্ষার সুযোগ ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তাই হয়তো তারা সভ্য হতে পারেনি। এই দায়িত্বটা কাদের ছিল? স্বাধীনতার এত বছর পরেও মেয়েরা স্বাধীন দেশে চলাফেরা করতে পারছেনা। কেন শফী হুজুরদের মুখ থেকে লালা ঝরে? মেয়ে মানুষ দেখলেই যে পুরুষের মুখে লালা আসে, সেই সব পশুতে দেশ আজ ছেয়ে গেছে। মেয়েরা নিরাপত্তার জন্য বোরখাকে অবলম্বন হিসাবে বেছে নিয়েছে। ধর্মীয় বোরখার থেকে দেহকে রক্ষা করার বোরখার সংখ্যাই আজ বেশি।''
(চলবে)
২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৩
আকরাম বলেছেন: ++++++++আমি এজন্যই বলি, সারা দুনিয়া ঘুরতে যত না সমস্যা; ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে গুলিস্তান যেতে তার চেয়ে বেশী ঝামেলা!
৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৩
আকরাম বলেছেন: আমি এজন্যই বলি, সারা দুনিয়া ঘুরতে যত না সমস্যা; ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে গুলিস্তান যেতে তার চেয়ে বেশী ঝামেলা!
৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৫৬
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:৪০
খেয়া ঘাট বলেছেন: প্লেনের অংশটুকুপড়ে তাজ্জব বনে গেলাম।