![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময় আর ভৌগলিকত্ব ভেদে সকল তৃষিত যাযাবরই বৃষ্টি নির্ভর বর্ষার কাছে এক ফোঁটা জল চায় । .......................অগ্রথিত এ অণির্বান আমার বংশানুক্রমিক ।।
আতর আর আগরের গন্ধে মফস্বলের বাতাসে বাতাসে লেপ্টে থাকে মাঙ্গলিক উৎসবের আমেজ । সে আমেজের সাথে আমাদের ঢাকা শহরের বিশাল ফারাক । আয়োজনিক প্রক্রিয়াগুলো ঠিকঠাক একই রকম থাকার পরও সেবারের শবে বরাতটা বেশ ভিন্ন ছিল । আর সেই ভিন্নতার জন্যেই বিষয়টা এখনও খুব স্পষ্ট । শৈশবের সবকিছুতেই থাকে ভাললাগার মিশেল । রুটি, হালুয়া, নামাজের জন্য রাতে পুকুরে ঝাপাঝাপি করে গোসল । সে রাতে কে কত বেশী নামাজ পড়বে কি ভীষন প্রতিযোগীতা ! অথচ সারা বছর কেউই এর ধারে কাছে ঘেষতাম না ।
এমন এক শবে বরাতের রাতে রাত্রি জাগরনে প্রচুর আয়োজন শেষে যখন নামাজের সময় হলো, তখন আমাদের পাশের বাসার হিন্দু প্রতিবেশীদেরও কোন একটা বিশেষ পূজা ছিল । যথারীতি তারাও তাদের জীবন পদ্ধতির স্বাভাবিক চন্দন আর ফুলের সুবাসে ভরিয়ে তুলল আঙ্গিনা । এখানে উল্লেখ্য যে আমাদের দু’বাড়ির মাঝখানে কোন দেয়াল ছিলনা । মাঝখানে বড় উঠানের দু’পাশে দুই সম্প্রদায়ের বাস । তাতে এতদিন কারো কোন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি । কিন্তু সেদিন যখন আমাদের প্রয়োজন ছিল খুব বেশী নিরবতা । যেখানে আমরা নিরবতা, স্থিরতা দিয়ে আমাদের প্রার্থনা সম্পন্ন করি । সেখানে তারা ঢাকের আওয়াজ আর উচ্চকন্ঠের কীর্তন দিয়ে তাদের প্রার্থনা সম্পন্ন করে । কোলাহলশূণ্য রাত্রির গভীরে তাদের কোরাস আরও শব্দবহুল হতে থাকে । এখনো আমার মনে পড়ে সেদিন বড়দের সাথে সাথে আমরাও খুব অপ্রস্তুত হযে পড়েছিলাম উপদ্রুত এমন বিরক্তিতে । শীতল চোখের নিশ্চুপ প্রতিবাদে বিরাজ করেছিল এক থমথমে পরিবেশ ।
এর কয়েকমাস পর কুরবানী ঈদ । আমাদের উঠানেই কুরবানী হয় । অথচ উঠানের অন্য পাশে যাদের বাস তাদের জন্য এটা অসূচী । কুরবানীর আগেই তারা তাদের দরজার খিল এটেঁ দেয় । দিন যত বাড়তে থাকে মাংশ বিষয়ক অনুষদগুলো তত বাড়তে থাকে । সারাদিন আমরা এটা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত আর তারা পুরোটা দিন গৃহবন্দি হয়ে থাকে । এ পাড়ায় অনেক হিন্দু পরিবারের বাস । তাদের প্রত্যেকের একই অবস্থা । তারাও সেদিন খুব অপ্রস্তুত হযে পড়েছিল উপদ্রুত এমন বিভক্তিতে । যথারীতি পরবর্তী কয়েকদিন আবারো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে ।
দুটি ঘটনাই খুব সংবেদনশীল হওয়া সত্ত্বেও এগুলো নিয়ে পরবর্তীতে কোন শালিসি বা নালিশী কোন কিছুই ঘটেনি ।দু’পড়শীই বিরক্ত ছিল কিন্তু এগুলোকে কেন্দ্র করে কোন তিক্ততা হয়নি, হয়নি কোন হানাহানি অথবা নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও কোন বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়নি । যা কিছু তিক্ত সেটা প্রত্যেকে নিজেদের মধ্যেই সীমাবন্দী করে রেখেছিল। এটা কোন উদারতা নয়, একটি নৈমত্তিক অভ্যাস, একটি লৌকিক শিক্ষা। এ বাসার তৈরী পিঠা তার ঘরে আবার তাদের বাসার তৈরী আচার এ ঘরে । দুপক্ষ মনেও নিয়েছিল, মেনেও নিয়েছিল । এরপর দুই বাসার ছেলেমেয়েরা একসাথে স্কুলে গিয়েছে, একই শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে, বিকেল হলে বৌচি, দড়িলাফ, ডাংগুলি খেলতে খেলতে বড় হয়েছে । তাতে দুপক্ষের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় নৈতিকতায় অথবা মানবীয়তায় কোন প্রভাব পড়েনি। প্রত্যকের স্বাতন্ত্র্য ঠিক ঠিক রক্ষিত হয়েছে ।
হয়তো এমন উদাহরন আমাদের এই বাংলার প্রত্যন্ত অনেক গ্রামে বা শহরেই আছে । আমি নিশ্চিত আমরা অধিকাংশ সবাই এভাবেই বেড়ে উঠেছি । সেদিন সেই অপরিণত বয়সে একটি পরিণত বোঝাপড়া হয়েছিল আর তা হলো আসলে যারা শেকড়ের পর্যায়ে তারা অনেক শক্তিশালী, যা সকল সময়ের প্রবাহেই খুব গুরুত্বপূর্ণ । আমাদের পারষ্পরিক ভালো মন্দ বিষয়গুলো শেযার করতে পারি কিন্তু চাপিয়ে দিতে পারিনা । তা পারিবারিক বা সামাজিক যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন? কিছু দূর্বল এবং অনুর্বর মস্তিস্কের দূষিত চিন্তায় তলিয়ে যায়না প্রিয় পৃথিবী। ঝড়ো হাওয়ার অস্থির ধূলায় গ্রীষ্ম বর্ষা এক হয়ে গেলেও পৃথিবী তার দারুন শক্তি নিয়ে অখন্ডই থেকে যায় ।
সম্প্রতি সাওতাল প্রসঙ্গে আমার সে বোধ আর শিক্ষার সুতোয় বড্ড টান পড়ছে ...............
১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২১
কানিজ ফাতেমা বলেছেন: শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান একটি সহজ অনুষদ, এতটুকু মগজ যদি না থাকে তবে আর মানুষ কিসে ?
২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: ইদানিং এসব ঘটনা এত বেশি ঘটছে! এত অস্থিরতা আর অদূরদর্শীতা!
Where Have all the Flowers Gone
১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৪
কানিজ ফাতেমা বলেছেন: আমাদের জানাশোনা বা বোঝাপড়ার পরিধিটা ক্রমশ: সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে । মন্তব্যে ধন্যবাদ ।
৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৮
রমজান আহমেদ সিয়াম বলেছেন: শান্তি আসুক ফিরে
এই বাংলার প্রতিটি নীড়ে
২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫
কানিজ ফাতেমা বলেছেন: মন্তব্যে ভালালাগা । শুভ কামনা রইল ।
৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪০
ধ্রুবক আলো বলেছেন: সেদিন সেই অপরিণত বয়সে একটি পরিণত বোঝাপড়া হয়েছিল আর তা হলো আসলে যারা শেকড়ের পর্যায়ে তারা অনেক শক্তিশালী, যা সকল সময়ের প্রবাহেই খুব গুরুত্বপূর্ণ ।
এই কথাটায় ++++ যা খুবই শক্ত একটা কথা বলছেন... অভিনন্দন।
আর এখনকার দিনে এমনই ঘটছে যা খুব কষ্টদায়ক! তবুও আশা রাখি প্রার্থনা করি বাংলাদেশে ভরপুর শান্তি ফিরে আসুক....
শুভ কামনা জানবেন। লেখায় ভালো লাগা রেখে গেলাম...
ব্যস্ত থাকি তবুও আপনার লেখাগুলো পড়া চেষ্টা করবো....
৫| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৯
কানিজ ফাতেমা বলেছেন: পাঠ এবং প্রতিক্রিয়ায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ।
আমরা আশাবাদি ভাল থাকায় যেন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠি ।
শুভ কামনা ।
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:২৬
অতৃপ্তচোখ বলেছেন: আসলে যারা শেকড়ের পর্যায়ে তারা খুব শক্তিশালী। কথাডায় গর্ববোধ করছি। আমিও শেকড়ের বাসিন্দা কিনা।
খুব সুন্দর যুক্তি আর বাস্তিক লোকশিক্ষার বিষয় তুলে ধরেছেন। ভাল লাগলো পোষ্টটি পড়ে।
সম্প্রতি সাওতাল আর নাসিরনগর ঘটনায় আমিও খুব আশাহত,
মানবতাবোধ জেগে উঠুক সবার অন্তরে
শুভকামনা আপনার জন্য
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৩
কানিজ ফাতেমা বলেছেন: মন্তব্যে একরাশ কৃতজ্ঞতা ।
আপনার সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই মানবতাবোধ জেগে উঠুক সবার অন্তরে ।
শুভ কামনা রইল ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৩
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: যখন হিন্দু শাষণ ছিল তখন মুসলিম নির্যাতিত ছিল আর এখন হিন্দু।
আর সাঁওতালরা এ দেশে অনেক আগের জাতি।
শান্তি ফিরে আসুক।