নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুতবা বনাম চাপাতি: সত্যি কি বলেছিলেন ইমাম?

১২ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১:২৭


চাঁদপুরের প্রফেসর পাড়া। বাইতুল আমিন মসজিদ। মিম্বারে দাঁড়িয়ে ৭৫ বছরের এক প্রবীণ আলেম, যিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী শিক্ষায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সারা দেশের হাজার হাজার আলেম যার ছাত্র। কুরআন-হাদিসের খাঁটি ভাষ্যকার, নম্র স্বভাবের পরহেজগার মানুষ। তিনি ইমাম নুরুল আমিন মাদানী। কিন্তু সেই আলেমের খুতবা পছন্দ হয়নি এক ‘সত্যিকারের ঈমানদার’ যুবকের। অতএব, হাদিয়া বা সমালোচনা নয়, প্রশ্ন বা বিতর্ক নয় প্রত্যুত্তরে সে মসজিদে ঢুকে খুতবার মাঝখানে চাপাতি চালায়। যেন মিম্বারে দাড়িয়ে থাকা একজন আলেম নয়, বরং কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়ানো ‘শত্রু’ যার ঈমান রক্ষার্থে হত্যা জরুরি!

ঘটনার পরে পুরো সমাজ যেন একসাথে নীরব। কেউ জিজ্ঞেস করল না, “একজন আলেমের উপর খুতবার সময় চাপাতি?” গণমাধ্যম চুপ, মানবাধিকার সংগঠন চুপ, নামধারী প্রগতিশীলরাও চুপ। কারণ হামলাকারীর পরিচয় ‘সঠিক দলে’ পড়ে। তিনি কোনো ‘বিতর্কিত চিন্তাবিদ’ বা ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী’ নন—বরং ঘরোয়া, পরিচিত, ধর্মীয় আবেশে মোড়া এক তরুণ, যার হাতে ধারালো চাপাতি আর মুখে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর দায়!

এরপর শুরু হয় খুতবার ফরেনসিক।
“ইমাম সাহেব খুতবায় কী বলেছিলেন?”
“তিনি কি ভুল আকীদা প্রকাশ করেছিলেন?”
“কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছিল কি?”
এই প্রশ্নগুলো এখন এমনভাবে তোলা হচ্ছে যেন হামলার যৌক্তিকতা বিচার করতে গেলে খুতবার প্রতিটি শব্দ বিশ্লেষণ করতেই হবে।ভাবুন একবার যদি হামলাকারীর পরিচয় হতো ভিন্ন ঘরানার, কিংবা কোনো ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠনের কেউ হত, তাহলে কি এমন চুপ থাকত সবাই ? না, তখনই হতো মানববন্ধন, তীব্র প্রতিবাদ, বিচার দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়। কিন্তু এখন ? এখন হামলাকারী সেই দলে, যারা নিজেদের ‘আকীদার রক্ষাকর্তা’ ভাবে, তাই চাপাতি চালালেও তা হয়ে যায় ঈমানের বাহক।

এখন এমন একটা বাস্তবতা দাঁড়িয়েছে, যেখানে আলেমরা খুতবার আগে ভাবছেন আমার কথা কেউ ভুলভাবে নিলে চাপাতি আসবে না তো ?”মসজিদে ইলমের চর্চা করতে গিয়ে যদি রক্ত ঝরতে হয়, তাহলে তো মিম্বারও একদিন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়াবে। আজ একজন ইমামের খুতবায় কারো ‘ধর্মীয় অনুভূতি’ আহত হয়েছে, তাই তাকে কোপানো গেল। কাল আরেকজনের কণ্ঠস্বর পছন্দ হবে না, পরশু হয়তো কোনো ফতোয়া ! এই পথের শেষ কোথায়? চাপাতি দিয়ে ঈমান প্রমাণের এই সংস্কৃতি কি ইসলামের কোন জামানায় ছিল?

এমন একটি জাতি আমরা দাঁড় করিয়ে ফেলেছি, যারা একজন আলেমের রক্ত ঝরার পরও প্রথমে খোঁজে “উনি ঠিক কী বলেছিলেন?” কারণ তাদের কাছে আলেমের জীবন নয়, তাদের নিজেদের ব্যাখ্যাই বড়। আল্লাহ জানেন, এমন দিনে খুতবা নয়, চাপাতিই সবচেয়ে বড় যুক্তি হয়ে দাঁড়ায় ।

ইমাম সাহেব মারা গেছেন ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১:৫৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: এই জাতীয় ছবি শেয়ার না করার অনুরোধ থাকছে। ধন্যবাদ।

১২ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:৩২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ লেখা পড়েছেন সময় নিয়ে তাই।

২| ১২ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:৫০

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: কি চলছে এসব?

১২ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৪:০০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: হোম এডভাইজার হারানো গিয়েছে ।

৩| ১২ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:২৭

জনান্তিকে বলেছেন: ইহাই শান্তির ধর্ম যেখানে ভিন্ন মতাদর্শ বা মতবাদ থেকে শুরু করে সাধারণ কথা পছন্দ না হলেই শান্তির ধর্মের অনুসারীগণ খুনোখুনি কোপাকুপি করিতে ভালোবাসেন।

১২ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:১৬

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইমাম কি আলাদা ধর্মের নাকি ? এগুলো পাওয়ারে করছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.