![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছেলেটার সাথে অামার পরিচয় শুভ্রনীল ফেজবুকের দুনিয়াতেই।
একদিন অামার লেখা নিয়ে ইনবক্সে সমালোচনা করেছিল।সেদিন থেকেই অামাদের শত্রুতা...
কোন ভূমিকা ছাড়াই একটা ভিন্ন সম্পর্কের শুরু...।
ছেলেটা খুব যত্ন করে গুছিয়ে ঝগড়া করতে পারতো। ব্যাপারটা অামার কাছে খুব মজাদার মনে হত।ফেজবুকের ঝগড়া সাধারনত ব্লকের মাধ্যমে সমাপ্ত হলে ও অামাদের ভেতর কেউই কেন জানি ঐ অপশনটা ইউজ করিনি।
রোজ নিয়ম করে একটা মেসেজ।তাও অাবার হয়তো কোন পচানী বা খোচা মুলক। ব্যস! এতটুকুই ছিল দুজনের সম্পর্ক।
বরাবরই অাবেগের প্রশ্রয় অামার কাছে খুবই কম,তাই ভার্চুয়াল জগতের কোন সম্পর্কই অামায় খুব বেশি স্পর্শ করে না।
ছেলেটার সাথে খুব বেশি কথা হত না। ইনফ্যাক্ট কখন ওর নামটা ও জানা হয়নি। "রঙিন ঘুড়ি" ছিল ওর অাইডি নেম। যখনই কথা হত পুরাাতন কথার রেশ ধরেই একটা ঝগড়ীয় কনর্ভাসেশন । এভাবে চলতে থাকা একটা শত্রুতাপুর্ন সম্পর্ক কিভাবে যেন ধীরে ধীরে সখ্যতায় রুপ নিয়েছিল তা হয়তো দুজনের অজানা।
দেখতে শুনতে বেশ ভালোই ছিল। না অামি কখন ওর প্রেমে পড়িনি।তবে হ্যা ভালো লাগতো না বলার মত মিথ্যাচার করাটা বোধয় ঠিক হবে না।
একদিন জিজ্ঞেস করেছিলামঃচেহারা তো মাশায়াল্লাহ! এক সংগে কয়টা কে মেনেজ কর??
ও শুধুু হো হো করে হেসেছিল। এই হো হো হাসিরও অামি কয়েকটা মিনিং বের করেছিলাম।
একটা হতে পারে "অারে কি যে বল!! অামি তো খুব ই ভদ্র ছেলে।" অাবার হতে পারে '"কত গুলার কথা বলবো? ব্যস মেনেজ করে ফেলি "
মিনিং যাই হোক এ নিয়ে অামাদের অার কোন কথা কখন হয়নি।
ছেলেটার প্রতিটি স্টাটাস ছিল জীবন নিয়ে লেখা। লেখা গুলো পড়লেই বোঝা যায় সে জীবনের প্রতিটি নেনো সেকেন্ডেও উপভোগ করে...।অামি তার লেখার বেশ বড় সড় একজন ভক্ত হলেও কখন প্রকাশ করতাম না। কখনো কোন লেখার প্রশংসা ও করতাম না, পাছে কোন ঝগড়ায় হেরে যাবো!!
ছেলেটা বড় অদ্ভুত ছিল।ওর নাকি লাল রং বড় অপছন্দের,নাম্বারের ভেতর ২৫৮ টা ও নাকি অপছন্দ। ডাক্তারদের দুচোখে একদম সহ্য করতে পারতো না। কি জানি কোন কারনে এ এগুলো অপছন্দ !! অপছন্দের কারন গুলো কখনো জানতে চাওয়া হয়নি। অামি বরাবই প্রশ্ন কম করতাম।ও ই সব সময় উদ্ভট প্রশ্ন করতো। প্রায় অামাকে গেস করতে বলতো ও কোথায় অাছে? অামি অান্দাজে ঠিল মারতাম,কোনদিন সঠিক হত কিনা ও কখনো বলতো না।
মাঝে মাঝে বড় অদ্ভুতুড়ে লাগতো ছেলেটাকে।
কিন্তু একদিন ও অামাকে যা বললো অামি স্বপ্নেও কখনো ভাবিনি।
প্রথমে খুব ভনিতা করছিল,কিছু মনে করবে না তো! কিভাবে নিবে! রাগ করবে না তো! ব্লা ব্লা ব্লা! রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছিল। কেন জানি মনে হচ্ছিল ও প্রোপোজ করে বসবে।তখনই ঠিক করে ফেলেছিলাম এমন কিছু বললে শক্ত একটা জবাব দিয়ে ব্লক দিয়ে দিব।ছেলে মানুুষ মানেই এমন।মেয়ে মানুষ একটু বন্ধুত্ব করেছে অার কি! প্রেম ভাবা শুরু করে দিয়েছে। কত অাকাশ পাতাল ভেবে ফেলেছিলাম ওর এক ভনিতায়।
কিন্তু সব ধারনা পাল্টে গেল!! ঠিক ঐ মুহুর্তে অামার কি করনীয় বুঝতে পারছিলাম না। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছিল সময়টা থেমে গেছে......।
কি অবলিলায় গড় গড় করে বলে ফেললো কথা গুলো...
ওর নাকি ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে,গত তিনমাস হল ধরা পড়েছে, একটা ক্যান্সার হসপিটালে ৮২৫ নাম্বার রুমে জীবনের শেষ দিন গুলো পার করছে। ডেইলি ২ ব্যাগ রক্ত চেন্জ করতে হয়, রক্ত দেখতে দেখতে এখন নাকি রক্তিম লালিমা ওর অার ভালো লাগে না।
কথা গুলো শুনে অামার কেমন লেগেছিল অামি জানি না,অনুভুতি শুন্য হয়ে পড়েছিলাম।
শুধু এতটুকু জানি অাম্মু সকালে ভেজা বালিস দেখে খুব অবাক হয়েছিল।
তারপর দুদিন অার অনলাইনে অাসি নি।নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করেছি মাত্র। অার মনে মনে ঠিক করে রেখেছি
এটা যদি ওর করা একটা মজা হয় তবে এখানেই সব সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে....।
দুদিন পরে অনলাইনে এসে অার রঙিন ঘুড়িকে অনলাইনে পাইনি। প্রতি দিন অাসি অার রঙিন ঘুড়ি এক্টিভ নাউ লেখাটা দেখার জন্য ওয়েট করতে থাকি.....।
মাঝে মাঝেই মনের ভেতর কেমন জাানি করে ওঠে, কি সব উল্টা পাল্টা চিন্তা মাথায় ভর করে বসে।ওর বলা কথা গুলোকে সত্য ভাবতে মন চায়।
কিন্তু না,অামি ওসব কথায় কান দেই না। ছিহ! অামি কিসব অলক্ষনে কথা বার্তা ভাবি। ও অাসবে অনলাইনে, অবশ্যই অাসবে। হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে,হয়তো অামার মত পাসওয়ার্ড ভুলে গেছে, কিংবা ফোনটা চুরি হয়ে গেছে!! যাই হোক রঙিন ঘুড়ি অাবার ও এক্টিভ হবে, অাবার ও হৃদয় জুড়ানো স্টাটাস দিবে। অামার সাথে অসমাপ্ত ঝগড়া সমাপ্ত করতে অাসবে............।
©somewhere in net ltd.