কাভি আল-বিদা না কেহনা.........।।

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৩০

কণ্ঠশিল্পি আসিফ আকবরের একটি জনপ্রিয় গানের নাম "বিদায়"। খুব সাধারন কথা মালায় সাজানো অসাধারন অর্থবহ এই গানটির গীতিকার ও সুরকার হলেন রাজেস সাহা।

যেতে চাইলে কাউকে ধরে রাখা যায় না,

মন ছুটলে তাকে আর ফেরানো যায় না,

আমাকে ভুলে যদি সুখে থাকা যায়,

বন্ধু তোমাকে জানাই বিদায়।

অতিব সত্য কথা লিখেছেন রাজেস,আর সুরে সুরে প্রচার করেছেন আসিফ। সেই আসিফ আকবর যখন তার এতো শখের প্রিয় বন্ধু (চলচ্চিত্রের ও অডিও অ্যালবামের) গানকে বিদায় জানালেন তখন কিন্তু গান তাকে ধরে রাখতে পারে নাই। অনেকে-ই ব্যারথ চেষ্টা করেছেন। আসিফ সাহেবকে অনুরধ করেছেন এই সিদ্ধান্ত থেকে

বিরত থাকার। আমি জানি না,আসিফ সাহেব তাদের কি বলেছিলেন। কিন্তু আমি হলে তাদের কিছু না বলে শুধু গানটি গেয়ে শুনাতাম। আসলে বিধাতার নিয়মে ঘুরছে ভাগ্য চাকা...। আসিফ সাহেবের ভাগ্যে হয়ত আর (চলচ্চিত্রের ও অডিও অ্যালবামের) গান গাওয়ার সুযোগ ছিল না তাই তিনি গান কে বিদায় বলতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল(চলচ্চিত্রের ও অডিও অ্যালবামের) গান তাকে কি বলেছিল ? আপনারা কেউ না জানলে-ও আমি জানি গান তাকে বলেছিল

"আমাকে ভুলে যদি সুখে থাকা যায়,

বন্ধু তোমাকে জানাই বিদায়।"

আসিফ সাহেব কি (চলচ্চিত্রের ও অডিও অ্যালবামের)গানের এই করুন আর্তনাদ শুনেছিলেন?



বিদায় শব্দটির পূর্বে যদি চির কথাটা যোগ করা হয় তাহলে দুঃখ,কষ্ট,বিরহ,ব্যাথা,বেদনার সোনামি হয় মানব হৃদয়ে । সুখের সোনালি রদ্দুর ঢেকে শোকের ছায়া নেমে আসে চারিদিকে। চির বিদায় কথাটা সব সময়ের জন্য বেদানা দায়ক। কিন্তু বিদায় শব্দটা কখনো কখনো পরম আনন্দ দায়ক হয়ে ওঠে কারো কারো কাছে। গত ফুটবল বিশ্বকাপ থেকে যখন আর্জেন্টিনা জার্মানির কাছে হেরে বিদায় নিল তারপর পত্রিকায় লেখা হল "বিশ্ব কাপ থেকে আর্জেন্টিনার বিদায়" এই বিদায়ে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকরা খুব আনন্দ পেয়েছিল। আর্জেন্টিনার এই বিদায়ে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকরা আনন্দ পেলে-ও লাখো ভক্তের নয়ন ভেসেছিল কিন্তু নোনাজলে। তাই আমারা নির্দ্বিধায় বলতে পারি বিদায় কখনো কখনো আনন্দের-ও হতে পারে।



আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিদায় নিয়ে এভাবে লিখেছেন,

"তুমি অমন করে গো বারে বারে জল-ছল-ছল চোখে চেয়ো না,

জল-ছল-ছল চোখে চেয়ো না।

ঐ কাতর কন্ঠে থেকে থেকে শুধু বিদায়ের গান গেয়ো না,

শুধু বিদায়ের গান গেয়ো না।।"

আর রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর-তো "বিদায়" নামক একটি কবিতা-ই রচনা করেছে। তিনি লিখেছেন,

"তবে আমি যাই গো তবে যাই

ভোরের বেলা শূন্য কোলে

ডাকবি যখন খোকা বলে,

বলব আমি,‘নাই সে খোকা নাই। '

মা গো, যাই।



হাওয়ার সঙ্গে হাওয়া হয়ে

যাব মা, তোর বুকে বয়ে,

ধরতে আমায় পারবি নে তো হাতে।

জলের মধ্যে হব মা, ঢেউ,

জানতে আমায় পারবে না কেউ—

স্নানের বেলা খেলব তোমার সাথে।"



আগমন যে করেছে তাকে একদিন বিদায়-ও নিতে হবে। এই কথাটা লিখার সাথে সাথে আমার বুকটা কেপে উঠল। আমিতো এই পৃথিবীতে আগমন করেছি,তাহলে আমাকে-ও কি একদিন বিদায় নিতে হবে? এই বসুন্ধরা ছেড়ে কি আমাকে চলে যেতে হবে অন্য কোনো দেশে? পরিচিত মানুষগুলোর সাথে কি তাহলে আর কখনো-ই দেখা করতে পারব না? কি করে সম্ভব? আমার বিদায়ে কে কে খুশি হবে? কেউ কি আমার জন্য একফোঁটা চোখের জল ফেলবে? আমি কি জানতে পারব কে কে আমার জন্য কেঁদেছে?

আচ্ছা,আমি পৃথিবীকে বিদায় জানাবো,নাকি পৃথিবী আমাকে বিদায় জানাবে? না,আমি কক্ষনো আমার ইহ জীবনকে বিদায় বলবো না...। হে আমার প্রানপ্রিয় স্বাধের জীবন,কাভি আল-বিদা না কেহনা।





E-mail : [email protected]

৮ টি +০/-০