![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জমিয়ে রাখা এক সম্পদ যন্ত্রনায় আপন চাচাত ভাই বাল্য বন্ধু তৈয়ব আর আমার কথা নেই দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর। অথচ ছোট বেলায় এক সাথে কত Innocent way তে বড় হয়েছি, উভয়ে খেলেছি ঘুরে বেড়িয়েছি যা ছিল অনেক pure ! আজ সম্পত্তি হল বড় শত্রু, যা না থাকলে হয়তঃ সেই বাল্যবন্ধু আপন ভাইয়ের মতই থাকতাম। তাই আমার খুবই ঘৃনা হয় জমিয়ে রাখা সম্পত্তির প্রতি। অনেক পরিবারেই দেখেছি মা বাপের রেখে যাওয়া সম্পত্তি নীজেদের মধ্যে চরম বিরোধ তৈয়ার করে। আজ দুঃখ লাগে তৈয়বের অবুঝ মেয়ে ও আমার অবুঝ ছেলেরা আমাদের উভয়কেই চিনে না। এর চেয়ে দুঃখ আর কি হতে পারে? কারন একটাই জমিয়ে থাকা পূর্ব পুরুষের সম্পদ। যাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে ঘৃনার চোখে দেখি। তাই ব্যক্তিগতভাবে অনেক সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কোন সম্পদ করিনি এবং করার ইচ্ছাও নেই। আজ হঠাৎ তৈয়ব ও তার মেয়ের এ ছবি দেখে ( আজকে প্রকাশিত ctg based প্রথম আলো) এক দীর্ঘ নিঃশ্বাসই ফেললাম। ছোট বেলার অনেক কিছুই মনে পড়ে। মনে পড়ে ১৯৮৩ সালে আমি আর তৈয়ব আমার মেজ বোনের বিয়ের দাওয়াতের নিমন্ত্রন পত্র দিতে গিয়েছিলাম আমাদেরই অন্য এক চাচাত বোনের শ্বশুর বাড়ী আমাদের পাশের উপজেলার এক গ্রামে। দাওয়াত দিয়ে ফিরার পথে মুষুলধারে বৃষ্টি দুজনেই অনেক বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম মজার বিষয় হল,এক পর্যায়ে পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম ! বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে লোকজনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে করে বাড়ী ফিরেছিলাম। সবাই অনেক হাসাহাসি করেছিল! সেই ছোট বেলার অনেক কিছুই আজ স্মরন করেছি।
ছোট বেলায় গ্রামে অনেক সচ্ছল পরিবারে বড় হয়েছি। আমার জন্মের সময়ই আমি সহ আমরা চার ভাইয়ের জন্য আব্বা (বাংলো টাইপ) একক বাড়ী করেছিলেন। আমার ফ্লাটে ৪৫ বছর বয়সে সব মিলিয়ে ১০/১৫ দিনও ঘুমায়নি। ৪৫ বছর ধরে খালিই পড়ে আছে এখনও তাই, কারণ চার ভইয়ের বড় বড় ১৬ রুমে ঘুমানোর লোকই নেই। এ পরিস্হিতি দেখেছি ৮০ দশকে। যাঁরা অধিক টাকার মালিক তাঁরা বড় বড় বাড়ী করে আর বিল ভর্তি জমি কিনে রাখে। সে সময় হাতে ঘোনা খুব কম লোকেরই এ অবস্হা ছিল। চিটাগাং এর ভাষায় এ সকল সম্পদশালীদের সওদাগর বলা হত ! এলাকার বেশীরভাগ লোকদেরই অবস্হা ছিল ঝীর্নদশা। আশ্চর্যের বিষয় হল এ সকল সওদাগরদের কোন পরিবারেই বর্তমানে ভাইবোনদের মধ্যে শান্তির চিঠেপোটাও নেই। কলহ কলহ ! পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া জমানো সম্পত্তিই তাদের নীজেদের মধ্যে চরম বিরোধের মূল কারণ। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষনে দেখেছি ঊনাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হলেও কলহ আছে, অশিক্ষিত হলেও কলহ আছে। কিন্তু কেন? তাঁদের পৌষ্যরাতঃ অনেক ভাল থাকার কথা ! নেই কেন? প্রথমতঃ ইসলামের প্রণিধান যোগ্য একটি কথা হল অপব্যয়কারীকে শয়তানের ভাই যেমন বলা হয়,যাকাতের বিষয়টিও ভাবার বিষয়। ইহাছাড়াও গ্রামের এ সকল অর্থশালীরা যখন বড় বড় বাড়ী ও জায়গা জমি কিনে কিনে জমিয়ে রাখছিলেন তখন বেশীরভাগ মানুষেরই অবস্হা খুবই খারাপ ছিল। তিন বেলা ভাত ঔষুধ ও চিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে অনেক কষ্টেই ছিল। অন্যদিকে সওদাগরগন তাঁদের জায়গা জমি কিনতেন। আশির দশকের পর পর মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার সুযোগ সে সময়ের দূর্দশাগ্রস্ত বেশীরভাগ পরিবারের ভাগ্য আজ খুলে গেছে। এ সকল পরিবারের কোন ভাই কোথাও কোন সুযোগ পেলে সে তাঁর অন্য ভাইকে সুযোগ দেয়ার প্রানপণ চেষ্টা চালায় ইহাতে চরম আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আলহামদুলিল্লাহ ! অন্যদিকে জমিয়ে রাখা সম্পত্তির ধারকের ছেলেমেয়েরা কলহেই লিপ্ত থাকে। ব্যতিক্রম খুব কম। তৎকালীন সওদাগরের অনেক ছেলেমেয়েরা এখন তাদের বাসায় যাঁরা কাজ করত তাঁদের কাছে জায়গা জমি বিক্রী করছে। আমরা ভাইয়েরাও পড়শী এক নানী যিনি (মৃত) ভোর হলেই কাজ করতে চলে আসতেন আমাদের ঘরে আমাদের খাওয়ার পর কিছু থাকলে তা নিয়ে ছেলেকে খাওয়াতেন। ঊনার ঐ ছেলে এখন দুবাইয়ে অনেকদিন ধরেই আছেন। তাঁর কাছেই আমরা ২ বিঘা জমি বিক্রী করেছি সেই ছেলে ফোনে আমাকে বেশ কয়েকবার বলেছে সে স্বপ্নেও ভাবেনি আমাদের কাছ থেকে জমি কিনবে? সে নীজের নামও লিখতে জানে না। এ রকম হাজারও প্রমান আছে।
ঢাকায় আসার পরও অনেক ধনী পরিবারের সাথে আমার মিশার সুযোগ হয়েছে একটি উদাহরন দিব শুধু দেশের অনেক সনামধন্য জাতীয়ভাবে স্বীকৃত যাঁর ছেলেমেয়েরা উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত মেধা তালিকায় স্হান ছিল যাঁদের তাঁরাও এখন চরম কলহে শুধুমাত্র বাপের রেখে যাওয়া শত শত কোটি সম্পত্তির কারণে। আমার নিকট আত্মীয়দের যাঁদের পৈত্রিক অনেক জমানো সম্পদ আছে তাঁদের কলহের খবর প্রতিনিয়তই পাই।
অশান্তির মূল কারন আমি যেটি দৃঢভাবে মনে করি, ঊনারা যখন এ সম্পত্তিগুলো কারায়ত্ত করে জমা করেন তখন তাঁদের আশেপাশে অনেক ঘরে ধাউ ধাউ করে আগুন জ্বলে যথেষ্ট পানি দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা না দিয়ে হিংস্রের মত তাদের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুম থেকে বের হয়ে অমানুষের মত তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে যা মহান আল্লাহর সহ্য হয় না । অতঃপর তিনি এ সম্পদের মধ্যে বিষধর গোঁখরো সাপ ঢুকিয়ে দেন। তা না হলে এ রকম হবে কেন? তাই বলছি সম্পদ জমিয়ে রাখবেন না, মানব কল্যাণে বিনিয়োগ করুন তা করলে দুনিয়াতে যেমন মজা পাবেন আখেরাতেও মহান আল্লাহ আপনার জন্য মজার স্হান নির্ধারণ করে রেখেছেন !
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:২২
মন্জুরুল আলম বলেছেন: আসলেই, অতিরিক্ত সম্পদ ও সম্পদ জমানোর চেষ্টায় আমরা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত উভয়ই হারিয়ে ফেলতেছি।...