নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমখোর

আমার ঘুম আসে না রে -

ঘুমখোর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইভ টিজিং ও পশ্চিমা মৌলবাদ

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

August 9, 2015 at 3:56am
এক ঢিলে তিন পাখি
’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’’
মৌলবাদ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে এনসাইক্লোপেডিয়া বা অন্যান্য সোর্স ঘেঁটে যা পাওয়া যায় তা নেট ব্যবহারকারী যে কেউ গুগলে সার্চ করে খুঁজে পেতে পারেন। সেগুলি খুবই একাডেমিক এবং অনেকেই বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় সে পথে না গিয়ে এ আলোচনাটি সম্পূর্ণরূপে অন্যভাবে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে।উদ্দেশ্য, কোন কিছু গ্রহণ করার আগে যেন তা জেনে বুঝে গ্রহণ করি। যাতে পরে সে বিষয়ে কেউ প্রশ্ন করলে উত্তরের জন্য অন্যের দ্বারস্থ হতে না হয়

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কবিতার দুটি লাইন দিয়ে আমার লেখাটি আরম্ভ করতে চাই।

এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

কবি’র উপরের কথা যে কতোখানি সত্যি তা আমরা সকলেই অবহিত হতে পেরেছি। ভৌগলিকভাবেই পৃথিবী নামক এই মানব বসতিতে আমাদের পশ্চিমে অবস্থানরত অধিবাসীগণ সুপিরিয়র অবস্থানে রয়েছেন। আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সম্পদ ইত্যাদিতে তারাই শ্রেয়তর। এই শ্রেষ্ঠত্বের আকাঙ্ক্ষা এতোই অসীম যে, প্রাধান্য বিস্তারের সকল চেষ্টা ওদিক থেকেই হয়েছে যুগে যুগে। পশ্চিমের আরবী হলো মাগরিব। মাগরিব অর্থ প্রস্থানের দিক নির্দেশক। গারব অর্থ চলে যাওয়া, প্রস্থান করা বা অদ্ভূত হওয়া। মাগরিব দিনের শেষ এবং আরম্ভ। যদিও ঘড়িতে দেখানো হয় মধ্যরাত ১২:০০ টায় দিনের শেষ এবং আরম্ভ। অথচ ঐ সময়ে আমরা কি দিনের শেষ এবং আরম্ভ দেখতে পাই ? মাগরিবের সময়ই আমরা দিনের সমাপ্তি স্বচক্ষে দেখে থাকি এবং পরমুহূর্ত্য থেকে পরবর্তী দিনের আগমন প্রত্যাশা করি। সূচনা ও সমাপ্তির এই মহাস্থান তাই গর্বিত। এই গর্বের শেষ নেই। নেই তার পরিসমাপ্তি।

গারব এর আরেক অর্থ তেজ। মাগরিবের বাসিন্দারা তেজস্বী হয়। তেজস্বীরা একটু বেশিই অহংকারী হয় বুঝি ! আর অহংকার পতনের মূল। সকল থিওরী ওদিক থেকেই উত্থিত হয়, আবার নাকচও হয় ওদিক থেকেই। আমরা সেগুলি নিয়ে কখনো নাচানাচি, কখনো হানাহানি, কখনো কাঁদা-কাঁদি করে থাকি। যাহোক, মাগরিবে আরম্ভ মাগরিবে শেষ। সবচেয়ে বেশি নবী এসেছে পশ্চিমে। পথভ্রষ্ট মানুষকে সুপথে আনার জন্য মহামহিম নবী-রাসুল প্রেরণ করে থাকেন জেনেছি। তাহলে কি যুগে যুগে পথভ্রষ্টের সংখ্যা সেখানেই বেশি ছিলো ? ওখানের মানুষের আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। প্রাপ্তির চরম শিখরে উঠেও তারা আরও চায়। পৃথিবীকে শাসন শোষন করার জন্য তারা একাধিক উপায় উদ্ভাবন করেছে। আর সেই উপায় বা পথ বা দর্শন বাস্তবায়নের জন্য কখনো কোমল, কখনো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। এ জন্য প্রচুর রক্তপাতও হয়েছে। তারাই আবিষ্কার করেছে ডিভাইড এন্ড রুল (Devide and rule)। এই ভাগ করার কাজটি করেছে তারা বিভিন্নভাবে। শিক্ষা-দীক্ষায়, আভিজাত্যে, সম্পদে, মানুষের গায়ের রংয়ে। এমন কি ধর্মেও । গায়ের রঙের উপর বিভেদের দেয়াল টেনে কী বিভৎস্য রাজনীতি পশ্চিমা দেশসমূহ করেছে মানুষ তা দেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়।

বীজ রোপন আর বৃক্ষের পরিচর্যা এক কথা নয়। আমরা দেখেছি, কি মানুষ- কি বৃক্ষ জীব বৈশিষ্ট্যের তাড়নায় এক সময় না এক সময় পরিবেশের প্রতিকূলতাকে জয় করেই ছেড়েছে। এবং তারা বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে ও বংশ বিস্তারও করেছে। প্রাকৃতিক নিয়মে তা সম্পন্ন হলে একটি সংক্ষিপ্ত ও নির্দিষ্ট এলাকায় হয়েছে। আর পরিকল্পিতভাবে যে গুলি পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার ব্যাপ্তি বিশাল থেকে বিশালতর হয়েছে।পশ্চিমারা এই বীজ রোপনের কাজটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করে চলেছে নিরন্তর। আর সেই বীজে উৎপন্ন বৃক্ষের পরিচর্যার ভার বহনের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য উন্নয়নশীল তৃতীয় বিশ্বের উচ্ছিষ্টভোগীরা সবসময়ই সদাপ্রস্তুত অবস্থায় ছিলো, আছে এবং থাকবেও। এর জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, আত্মপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা জড়িত। সুযোগ সন্ধানীরা যথাসময়েই হাজির হয়েছে অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত, অগ্রহণযোগ্য মতামত বাস্তবায়নে নিজেদের উৎসর্গ করতে। টাকা দেখলে যেমন কাঠের পুতুল হা করে, সেইরূপ।

প্রযুক্তি, শিক্ষা-দীক্ষা এবং পৃথিবীর মানুষের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টিতে পারদর্শী পশ্চিমারা খুবই ধূর্ত ও বুদ্ধিমান। একটু খেয়াল করুন- পৃথিবীটা চলছিলো বেশ। সামান্য যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাও ছিলো। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ বাধছিলো না কিছুতেই। পৃথিবীর সমস্ত মানুষের ভাগ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিৎ হচ্ছিল না। তো কি করা যায় ? উনবিংশ শতাব্দীর শেষ এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে তারা খুব সুকৌশলে একটা বীজ তৈরী করলো। নাম দিলো মৌলবাদ। নিজেদের মধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা করলো। তারপর, তা ছড়াতে লাগলো। যার বিষবাষ্পে ৬০ লক্ষ ইহুদী ধর্মালম্বীকে জীবন দিতে হয়েছে ইতিহাস সাক্ষী। সেই প্রতিহিংসার আগুন আজও নেভেনি। আবার ওরা তা নিভতেও দিতে চায় না। প্রথমে মৌলবাদী শব্দের অর্থ করা হলো- যে কোন নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর মূলনীতিগুলো মেনে চলা। যদি কোন লোক বিজ্ঞানী হতে চায়, তাহলে তাকে বিজ্ঞানের মূলনীতিগুলো মেনে চলতে হবে। যদি সেই লোক বিজ্ঞানের বিষয়ে মৌলবাদী না হয়, সে তাহলে ভাল বিজ্ঞানী হতে পারবে না। সেই হিসাবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একজন উন্নত মৌলবাদী শ্রেষ্ঠ ধর্মাবলম্বী। উন্নত ধর্মাবলম্বীর লকব কে না চায়! মুসলমানেরা শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকার কারণে ধরা খেলো আগে। যত বড়ো মৌলবাদী, তত বড়ো মুসলিম। বেহেশতে হুর, বিশাল জমিদারী গিলে ফেললো হরহর করে। কিন্তু এই মৌলবাদ শব্দটি যখন লতা-পাতা-শাখা-পল্লবে বেড়ে উঠলো, অধিকাংশ মুসলিমরা নিজেকে মৌলবাদী পরিচয় দিয়ে গর্ব বোধ করতে লাগলো- ঠিক তখনি মৌলবাদী শব্দ ব্যবহারের তাৎপর্য দিলো পাল্টে! এখন মৌলবাদী শব্দটি একটি গালিতে পরিণত হয়েছে। আর এই গালির শিকার হচ্ছে শিক্ষা-দীক্ষায় সবচেয়ে পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী মুসলমান। তারা না পারছে সঠিকভাবে এই অপবাদের যুক্তিসংগত জবাব দিতে, না পারছে নিজেদের শরীর থেকে এই অপবাদটা মুছে ফেলতে। এই দেশে এ কথা বলার মানুষ নেই, যে বুক উঁচিয়ে বলবে- মৌলবাদী ধারণাটি পশ্চিমের আবিষ্কার। আর এ কথাও বলে না যে, পশ্চিমারাই সু-কৌশলে ভারতীয় উপমহাদেশে মৌলবাদী ধারণার বীজ রোপন করেছে।

পাক-ভারত উপমহাদেশীয় অঞ্চলের মানুষ খুব মিলে মিশে বাস করায় অভ্যস্ত ছিলো। তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন এক অবস্থানে ছিলো যে, একটি সড়কের এ পাড়ে মসজিদ ওপারে মন্দীর। মসজিদের আজান শুনে যেমন একজন ব্রাহ্মণ বিরক্ত হতো না, একইভাবে মন্দীরের ঘন্টা শুনেও মোল্লা সাহেব নাক উঁচু করতো না। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তারা মিলে মিশে কাজ করতো। একজন মুসলমান ছেলে যেমন সুন্দরী সীতার চরিত্রে কিংবা মা মনসার চরিত্রে যাত্রাপালায় অভিনয় করেছে, ঠিক তেমনি একজন হিন্দু ছেলে নবাব সিরাজ উদ্দৌলা চরিত্রে অভিনয় করতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। এখন কি সেই চিত্র আছে কোথাও ? কোথায় গেলো মানুষের সেই সহনশীল মন ! কোথায় গেলো তাদের ভালোবাসাপরায়ণ মানসিকতা ! ওরা এই অঞ্চলকে তাদের চিরস্থায়ী বাজার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য এখানের মানুষের সেন্টিমেন্টের সাথে কাবাডি খেলার কাজটি করেই চলেছে ধারাবাহিকভাবে। যার পরিণতিতে, অনেক সময় দেখা যায় হিন্দু মুসলিমের বন্ধসুলভ আচরণ খুবই মেকি, এবং অন্তসারশূন্য।

এখানে একটা তাৎক্ষণিক অনুভূতির কথা বলে রাখি। আর তা হলো- বর্ণিত বিষয়ে যদি ক্বোরানিক কোন উদাহরণ এখানে টানা যায়, তাহলে- লেখাটা পণ্ডশ্রম হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করি। কারণ ক্বোরআন নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে এতো এলার্জি সৃষ্টি করতে তারা সক্ষম হয়েছে, যা কল্পনা করতেও ইতস্তত লাগে। সে কারণে অন্তত এই বিষয়ে ক্বোরানিক কোন দৃষ্টান্ত দেওয়া থেকে বিরত রইলাম।
মজার ব্যাপার হলো- বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণীয় ক্বোরআনের যেই ইংরেজি তরজমা বাজারে চালু রয়েছে- তা করেছেন, পশ্চিমের জনৈক দুই খৃস্টান ভদ্রলোক। একজন মুসলমান বাইরে কোন কথা বলতে পারবে না। কারণ ? কারণ ঐ তরজমার স্বপক্ষে ছাতা ধরার লোক আগে থেকেই এ দেশে তৈরী হয়ে আছে, যা আগেও বলেছি।যারা মাসোহারা নিয়ে সে সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করে থাকেন। যিনি বা যারা ঐ তরজমার বিরুদ্ধে কথা বলবেন- তাদেরকে ফতওয়া দিয়ে কাফের ঘোষণা করা হবে। সুযোগ পেলে ---- বুঝতেই পারছেন। Devide and Rule. শাসন করতে যা করা লাগে তা থেকে পিছু হটে না ? মুসলমানের হাতে মুসলমান মার খাচ্ছে। অপরাধ ? তাদের দেওয়া তরজমার উপর আস্থা আনতে পারছে না। ক্বোরআনের পক্ষে যাদের প্রথম দাঁড়ানোর কথা রাজ্যভার হারানোর ভয়ে টু শব্দটি করছে না। রাজনীতির মাইর, বড়ো মাইর !

আরেকটি কথা, পাক-ভারত মহাদেশ কাদা-মাটির দেশ। এখানের মানুষ অত্যন্ত লজ্জাশীল। বিনম্র, অতিথি পরায়ন। ঈশ্বরভীরুতা তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তারা কি ২০০ বছর ধরে কোন যুদ্ধ করেছে ? ১০০ বছর ? না কোনটিই করেনি। কিন্তু পশ্চিমাদের এহেন ক্রিয়াকলাপ ইতিহাসের পাতা ঘাটলেই পাওয়া যাবে। পর্ণ ছবির আবিষ্কারক কে ? এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ সব চলচ্চিত্রের পরিচালক হয়ে গেছে। পৃথিবীর কোথাও ছয় ঋতু নেই। কেবলমাত্র বাংলাদেশে ছয় ঋতু কার্যকরভাবে বিদ্যমান। এই প্রকৃতির রুপ-রস-গন্ধে ভরপুর সাহিত্য কোথায় গেলো ? নেটে চ লিখলে যেই সাহিত্যের ভূবন চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়, এটাতো কখনো আমাদের সংস্কৃতিতে ছিলো না। বাংলা ভাষায় এ গুলো রচনা করে কারা ? একবার নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুনতো ? বর্তমানে মৌলবাদ, চটি সাহিত্য এতদঞ্চলের রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে গেছে। কংগ্রেস সরকার এগুলো আমদানী করেছে বলে সন্দেহ করা হয়। ভারতের জনগণ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই বিজেপিকে এতো বড়ো বিশাল ম্যাণ্ডেট দিতে বাধ্য হয়েছে। মোদী সরকারও জনগণের পালস বুঝতে পেরে পর্ণো ওয়েব সাইট বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণা এমনি এমনি তিনি দেন নি! আমরা কি এখনো কংগ্রেসের দেখানো পথেই হাঁটবো ?

ইতিহাসের বড়ো শিক্ষা হলো- ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না।মুসলমানদের জন্য বড়ো লজ্জার কথা যে, ক্বোরআন রেখে বাইরে থেকে তাদেরকে নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। আমার আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে ক্বোরআনের একটি সুরায় ইঙ্গিত আছে। আমি সে কথাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।

বুঝবার সুবিধার্থে অনলাইন থেকে উক্ত সুরাটির প্রচলিত তরজমা আগে উল্লেখ করলাম। সুরার নাম “লাহাব”।

১. ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দু হাত এবং সে নিজেও ধ্বংস হোক।
২. তার ধন-সম্পদ এবং যা সে অর্জন করেছে তা তার কাজে আসবে না।
৩. অচিরেই সে দগ্ধ হবে লেলিহান আগুনে।
৪. আর তার স্ত্রী লাকড়ি বহনকারী,
৫. তার গলায় পাকানো দড়ি।
গ্রন্থনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

ধন্যবাদ মাওলানা মিরাজ রহমানকে। তিনি যথার্থভাবেই প্রচলিত বঙ্গানুবাদ গ্রন্থনা করেছেন। এই তরজমা পাঠ করলে আমি এবং যে কেউ বুঝবেন- একজন মানুষ, তার ধন সম্পত্তি এবং তার স্ত্রী সবাইকে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য অভিশম্পাৎ করা হচ্ছে। যদি তাই হয়- তাহলে, ক্বোরআন মানব কল্যাণের জন্য একটি জীবন বিধান, এই বক্তব্য রইলো কিভাবে ? মানুষ কিভাবে সুপথে আসবে, সৎ জীবন যাপন করবে, সমাজের উপকারে আসবে এ সবইতো থাকার কথা ক্বোরআনে। অভিশাপ কেন ? রহস্যটা ওখানেই। মূল বক্তব্যকে খণ্ডিতাকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। চলুন, আমরা যারা মাওলানা নই, ভাষাবিদও নই। ডিকশনারী দেখে, এবং ক্বোরআনিক ভাবধারা নিয়ে- ঐ পাঁচটি বাক্য বুঝবার চেষ্টা করি।

প্রথমে মনটাকে এই বলে প্রস্তুত করি যে, বর্ণিত বাক্য পাঁচটি মানুষকে তথা আমাকে বলা হয়েছে। যা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমি সৎ থাকবো, সৎ চলবো, সৎ কর্ম করবো, এবং আমার জীবনের পরিসমাপ্তিও হবে সৎ ভাবে। যদি তা মেনে না চলি তাহলে ফলাফল হবে তার উল্টো।
[দ্রষ্টব্য: কবর আযাব, হাশর, মিজান, দোযখ, বেহেশত এসব ভাবার দরকার নেই]।

প্রথমে আমরা জেনে নিই “লাহাব” শব্দের অর্থ। লাহাব শব্দের অর্থ অগ্নি পুজারী বা অগ্নি উপাসক। উপাসনা করা মানে- আমি যার উপাসনা করছি আমার মনের মধ্যে তাকে আসন দেওয়া। প্রথম বাক্যে আরবীতে “আবি লাহাব” বলা হয়েছে। আবু’ অর্থ পিতা।আবি অর্থ আমার পিতা। তাহলে প্রথম বাক্যের সম্পূর্ণ অর্থ দাঁড়ায়- ধ্বংস হোক আমার অগ্নি পুজারী পিতা এবং তার হস্তযুগল। অর্থাৎ আমি আমার অগ্নি পুজারী পিতা এবং তার বাহুদ্বয়ের ধ্বংস চাইলাম। ধরুন, আমার পিতা নেই, তাহলে ? মূলতঃ এখানে পিতা বলতে- আমাকে পরিচালিত করার শক্তি বা স্বভাব যা আমি আমার পিতার নিকট থেকে পেয়েছি। সেই পিতা যদি অগ্নি পুজারী হয় তাহলে তা ধ্বংস হোক। এখানে অগ্নির সাথে তুলনীয় কোনকিছুকে মনের মধ্যে আসন দেওয়াই অগ্নির উপাসনা করা, তা আমরা জেনেছি। তাহলে অগ্নির সাথে কোন কোন বিষয়ের সাদৃশ্যতা রয়েছে ? ভালো করে লক্ষ করুন, আমরা বলে থাকি- রূপের আগুন, অর্থের গরম, রাগের তাপ, হিংসার আগুন ইত্যাদি।মূলত এ সকল স্বভাবের ধ্বংস চাওয়া হয়েছে। আর হাত বলতে ঐ বিষয়গুলো অর্জনের উপকরণের কথা বলা হয়েছে। আমি যদি ঐ আগুনে বশীভূত হই, অবশ্যই দগ্ধ হবো।আমার মধ্যে বিরাজমান নারী স্বত্ত্বা (স্নেহ, প্রেম, ধৈর্য, মায়া) তা নিষ্পাণ জড় পদার্থ (লাকড়ী) হয়ে যাবে এবং আমার মধ্য থেকে এক সময় সেই স্বত্ত্বার মৃত্যু হবে। এটা জেনে বুঝে যদি উক্ত কর্ম থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি তাহলে অবশ্যই আমি সৎ, সুন্দর ও প্রেমময় জীবনযাপন করতে পারবো।

মুসলমান ক্বোরআনে বর্ণিত নিজেকে সংশোধন করার এমন উত্তম শিক্ষা রেখে পশ্চিমাদের দেওয়া ইভটিজিং আন্দোলনে নিজেদেরকে সংযুক্ত করে চলেছে। এবং এ কাজটি তারা ভালোভাবেই করছে। কারণ সম্পূর্ণ শিক্ষার অভাব। আপন ধর্ম গ্রন্থের বক্তব্য মুসলমান বুঝে না। পুরুষের স্বভাব যদি ভালো হয়ে যায়, তাহলেতো সে মেয়েদের দিকে ভোগবাদী দৃষ্টিতে তাকাবেই না! আসলে- ওরা মুসলমানকে ওদের মতো করে ক্বোরআন বুঝতে বাধ্য করছে। আর এ কাজে তাদেরকে সহযোগিতা করে ক্বোরআনের ঠিকেদারী প্রাপ্ত স্বার্থান্বেষী দেশ/রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

পশ্চিমা উন্নত বিশ্ব ইভটিজিং কর্মসূচীর পেছনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। ইভটিজিং বন্ধ না হোক- ইভটিজিং শব্দটিকে শিশু-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার অন্তরে খোঁদাই করে বসিয়ে দিতে চায় ওরা। এটি নিয়েও ওরা রাজনীতি করবে। এই ইভটিজিং শব্দটি হবে ওদের তুরুপের তাস। আরও কিছু কথা বলার আগে চলুন ইভটিজিং কি সে সম্পর্কে উইকিপিডিয়া কি বলে জেনে নিই।

ইভ টিজিং প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি, পথে ঘাটে উত্যক্ত করা বা পুরুষ দ্বারা নারী নিগ্রহ নির্দেশক একটি কাব্যিক শব্দ যা মূলত ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালে ব্যবহৃত হয়। ইভ দিয়ে পৌরাণিক আদিমাতা হাওয়া অর্থে সমগ্র নারী জাতিকে বোঝানো হয়।

ইভ টিজাররা নানান সৃজনশীল কৌশলে মেয়েদের উত্যক্ত করে থাকে। ফলে এ অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন। এমন কি অনেক নারীবাদী একে “ছোটখাটো ধর্ষণ” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

কেউ কেউ ইভ টিজিং থেকে রেহাই পেতে নারীদের রক্ষণশীল পোশাক আশাক পরতে উৎসাহিত করেন। তবে রক্ষণশীল পোশাক পরিহিত নারীরাও ইভ টিজিং এর শিকার হচ্ছেন এমন উদাহরণও অগণিত।

বন্ধুরা, উপরের তিনটি অধ্যায় হুবহু এভাবেই উইকিপিডিয়াতে বর্ণিত রয়েছে। এই বাক্য পাঠ করে আপনার কি মনে হয় ? ইভ টিজিং বীজ তাদেরই সৃষ্টি। অথচ দেখুন ইভ টিজিংকে ইতোমধ্যেই ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপাল এই স্থানগুলির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই এলাকায় অশান্তি চিরস্থায়ী করার জন্যই এ রূপ করা হচ্ছে। ইভি টিজিং যদি কেবলমাত্র ভারত, পাকস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালে থেকে থাকে সে বিষয়ে আগে মাথা ব্যথা থাকবে এই সকল দেশের। তারা কেন এর পেছনে এতো ডলার ব্যয় করছে ? এই এলাকার মুল ভাষা ইংরেজি নয়। বাংলা, হিন্দী ও উর্দু। অথচ টিজিং শব্দটি ইংরেজি। বলা হয়েছে পৌরাণিক কোরান। ক্বোরআন পৌরাণিক নয়। পৌরাণিক সনাতন ধর্ম গ্রন্থ বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। আদি মাতা হাওয়ার কথা বলা হয়েছে। মুসলিমদের বিশ্বাসও তাই। কিন্তু অঞ্চল হিসাবে যেই এলাকার কথা বলা হয়েছে সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো হিন্দু। আর হিন্দু ধর্ম বলতে আদি মাতা হাওয়া নয়। আসলে বিষয়টি অন্য জায়গায়। হিন্দু মুসলমানের ভাতৃত্ব, সম্পৃতি নষ্ট করাই বর্ণিত কাজের উদ্দেশ্য। দুদিন বাদে যখন দাঙ্গা প্রকট আকার ধারণ করবে তারা আসবে মিমাংসা করার জন্য।

এখানেই রাজনীতি। প্রকৃতপক্ষে বাইবেল মতে আদি পিতা এ্যাডাম এবং আদি মাতা ইভ। এখানে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুসলমান মেয়েদের একদিকে বোরকা খুলে উচ্ছৃঙ্খল পোশাকে সজ্জিত করার চেষ্টা, অন্যদিকে মুসলিম ছেলেরাই ইভ টিজিং করে থাকে তার প্রচারণা চালানো। মাঝখানে বাইবেলে বর্ণিত ইভ’কে ক্বোরআনের হাওয়া বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ক্বোরআনের কথা বললে কি হবে- তারা তো হাওয়া জানছে না, জানছে আদি মাতার নাম ইভ। কোন একদিন ইভ আসবে কল্যাণের মঙ্গল দ্বীপ হাতে। আদি মাতাকে কি অবজ্ঞা করা যায় ! আবার পৌরাণিক শব্দটির সাহায্যে সনাতন ধর্মকে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর নাম পশ্চিমা মৌলবাদ। এক ঢিলে তিন পাখি। মুসলিম নিধন ফাও।
-
০৯-০৮-২০১৫

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


এই উপন্যাসটি ২১শের বই মেলায় প্রকাশ করবেন প্লিজ।

২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৬

ঘুমখোর বলেছেন: যা বলেছেন ! খুশি হয়ে গেলাম !

৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯

আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার চমৎকার সময়োপযুগী পোষ্টের জন্য। অনেক ধৈর্য্য নিয়ে আপনার পোষ্টটা পড়লাম। অতি সত্য কথন। কিন্তু হৃদয়াঙ্গম করার মতো লোকের অভাব আমাদের দেশে।

৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক গভীর থেকে ভেবেছেন।

তারা এমনই। আর আমরাও এমনই!

কোরআনকে বোঝার চেষ্টা যে করেছে সে পেয়েছে। আর না পেরে/বুঝতে না চেয়ে তাসলিমিয় অনুভবের লোক সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়! তারা আবার ঢোলের বাড়ি পায় পশ্চিমা ভিক্ষায়!!! একটা ভিসায় বা অর্থ সহায়তায়!!!!

তারপরও সত্যের আলো জ্বলছে.. ইনশাল্লাহ জ্বলবে! তারাই হারিয়ে যাবে কালের গহীন অন্ধকার অতলে!

২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪

ঘুমখোর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০৬

তাজা কলম বলেছেন: ইভটিজিং বন্ধ করার বিষয়ে একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করার প্রয়াস পাওয়া হয়েছে। ইসলামের আলোকে। ভিন্নতর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে সুরা লাহাবের। কিন্তু ইতিহাসের আলোকে এবং সুরাটির শানে নজুলের দিকে চোখ ফেললে নিঃসন্দেহে আবু লাহাব ছিলো রক্তমাংসের মানুষ। যিনি ছিলেন মোহাম্মদে (সঃ)-র আপন চাচা। ধবধবে ফর্সা কিংবা সূর্যের মতোন লালাভ গাত্রবর্ণ ছিলো বলেই তার নাম রাখা হয়েছিলো আবু লাহাব।
মোহাম্মদ (সঃ)-এর জন্মের সময় তিনি এত খুশী হয়েছিলেন যে তিনি তার একজন ক্রীতদাসকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিপত্তি দেখা যায় মোহাম্মদ(সঃ) যখন নবুয়ত্ব দাবি করেন। আবু লাহাব কোরায়েশ বংশের বড় নেতা। আপন ভাতিজা হলেও তিনি তার প্রপিতামহ হতে প্রাপ্ত তার গোত্রের প‌্যাগান ধর্মকে ত্যাগ করতে পারেননি। ফলতঃ তিনি নবীজির চরম শত্রুতে পরিণত হোন। বস্তুতঃ মদীনায় হিজরত করার আগ পর্যন্ত আবু লাহাব নবীজিকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। এর প্রেক্ষিতেই এই সুরা নাজেল হয় -


শানে-নুযূল

আল্লাহ্‌ একটি আয়াত অবতীর্ণ করলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) সাফা পর্বতে আরোহণ করে কোরাইশ গোত্রের উদ্দেশে "আবদে মানাফ" ও "আবদুল মোত্তালিব" ইত্যাদি নাম সহকারে ডাক দিলেন। এভাবে ডাক দেয়া তখন আরবে বিপদাশংকার লক্ষণ রূপে বিবেচিত হত। ডাক শুনে কোরাইশ গোত্র পর্বতের পাদদেশে একত্রিত হল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বললেনঃ "যদি আমি বলি যে, একটি শত্রুদল ক্রমশঃই এগিয়ে আসছে এবং সকাল বিকাল যে কোন সময় তোমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে, তবে তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে কি?" সবাই একবাক্যে বলে উঠলঃ "হাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করব।" অতঃপর তিনি বললেনঃ "আমি (শিরক ও কুফরের কারণে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নির্ধারিত) এক ভীষণ আযাব সর্ম্পকে তোমাদেরকে সতর্ক করছি।" একথা শুনে আবু লাহাব বললঃ "ধ্বংস হও তুমি, এজন্যেই কি আমাদেরকে একত্রিত করেছ?" অতঃপর সে রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-কে পাথর মারতে উদ্যত হল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়।[১]

লেখক কেন একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নাজিল হওয়া সুরাটি ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন তা বোধগম্য হলো না।



৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩

ঘুমখোর বলেছেন: আপনার মতামত সত্য। কোরআনের বিষয়ে কোন অসত্য নেই। সব কিছু আল্লাহর পরিকল্পনা মাফিক হয়ে থাকে। আবু লাহাব নামটি পরবর্তীতে দেওয়া হয়েছে। জন্মের কতদিন পরে দেওয়া হয়েছে, তা যুক্তি তর্কের বিষয়। আবু লাহাবের মুখ দিয়েই বা কেন উক্ত বাক্যটি আল্লাহ পাক উচ্চারণ করালেন ?

যাহোক, লেখাটিতে মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি নিজেও অধ্যয়নরত। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য কৃতজ্ঞতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.