নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তখন দুরন্ত কৈশোর। সবে মাত্র ঘুড়ি ওড়ানো শিখেছে হোসেন। প্রথম দিকে ঘুড়ি বেশি উচু তে উঠত না। বাতাসের মাপঝোক, নাটাই এর কারসাজি তে হাত তখন অপরিপক্ক। খোলা মাঠে অনেক খানি দৌড়ে এসে খানিক আকাশে ভাসাতে পারলেই মন খুশি। প্রতিদিন ঘুড়ি নিয়েই পড়ে থাকা। বন্ধুর কাছ থেকে নতুন নতুন কৌশল শেখা আর তা নিয়ে কৌতুহলের সীমানা ছাড়ানোর দিন।
দিন দিন ঘুড়ি ওড়ানো তে হোসেন বেশ হয়ে ওঠে। আগের থেকে এখন অনেক দূরে পৌছে যায়। এক বিকেলে ঘুড়ি উড়ছে। আনমনা হোসেনের আত্নবিশ্বাসী হাত। জানা আছে কখন সুতোয় টান দিতে হবে। কিন্তু জানা নেই ঐ আকাশের সীমানা। জানা নেই ঘুড়ির ক্ষমতা। ভাসতে ভাসতে ঘুড়ি একসময় হোসেনের থেকে অনেক দূরে সরে যায়। হঠাৎ করে এই দূরত্ত চোখে পড়ে না। একটু একটু করে দূরত্ত বাড়ে, চোখের সীমানায় ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়। দৃস্টিসীমানার বাইরে চলে যাবার একটা বিষয় হোলো, তখন আর না পাওয়া যায় কোনো সাড়াশব্দ না বোঝা যায় কোনো অবস্থানের পরিবর্তন বরং আশ্চর্যরকম ভাবে স্থির লাগে সবকিছু। হয়ত নিজ অবস্থানে প্রচন্ড কাপছে, কিন্তু মনে হয় কি শান্ত। বড্ড ভ্রম হয়। মনে হয়, সবকিছু তো হাতেই আছে, চোখের সীমানাতেই তো আছে। বড্ড ভ্রম, বড্ড ভ্রম। একসময় যখন নাটাই এর সুতোও শেষ হয়ে যায়, তখন ঘর ফেরানোর বড্ড তাড়া হয়।
সীমানা পেড়িয়ে যাওয়া ঘুড়ি তখন বড্ড একা, বড্ড দূরে, বড্ড নীরব। মানিয়ে গেছে সে দূরত্ত। হাতের কৌশল হোসেনের আয়ত্তে কিন্তু মাঝ আকাশের মেজাজ জানবার সুযোগ নেই। ভেসে থাকা মেঘ ঘুড়িকে আহবান জানায়, ঘূর্নি বাতাস ঘুড়িকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, নাটাই টানে ঘুড়িকে, অনেক জোড়ে, আংগুলে দাগ বসে যায়, ছড়ে যায়, রক্ত বের হয়, সীমানা পেড়োনো ঘুড়িকে ঘরে ফেরাতে।
ফেরে না ঘুড়ি।
সুতো ছিড়ে যায়।
ঘরপোষা শখের ঘুড়ির সীমানা এখন আর নির্দিষ্ট নয়, গন্তব্য ও নির্দিষ্ট নয়। সব কিছুই ভেসে যায়, কখনো হারিয়ে যায়, দৃষ্টি সীমানার মাঝেই এক জীবনে কত কিছুই অন্তর কে পুড়িয়ে চলে যায় তার সীমানা পেড়িয়ে।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫২
ঘুটুরি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যর জন্য।
২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
ঘুড়ি উড়ানো!! আশ্চর্য এক ভালো লাগার নাম।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৩
ঘুটুরি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যর জন্য।
৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২৪
মিরোরডডল বলেছেন:
কিন্তু জানা নেই ঐ আকাশের সীমানা। জানা নেই ঘুড়ির ক্ষমতা। ভাসতে ভাসতে ঘুড়ি একসময় হোসেনের থেকে অনেক দূরে সরে যায়। হঠাৎ করে এই দূরত্ত চোখে পড়ে না। একটু একটু করে দূরত্ত বাড়ে, চোখের সীমানায় ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়।
......
সীমানা পেড়িয়ে যাওয়া ঘুড়ি তখন বড্ড একা, বড্ড দূরে, বড্ড নীরব। মানিয়ে গেছে সে দূরত্ত। হাতের কৌশল হোসেনের আয়ত্তে কিন্তু মাঝ আকাশের মেজাজ জানবার সুযোগ নেই।
.....
ফেরে না ঘুড়ি।
সুতো ছিড়ে যায়।
জীবনের ঘুড়িও একসময় এভাবে ছেড়ে যায় ।
অনেকসময় অবধি মনে হয়, হয়তো এখনও নাটাইয়ের সুতোর কানেকশন আছে ।
সময় হারিয়ে উপলব্ধি হয়। নাহ ! ঘুড়ি আর ফিরবে না ।
সুতো ছিঁড়ে গেছে ।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৬
ঘুটুরি বলেছেন: জীবনের কত সূক্ষ সূক্ষ ঘটনা কি অনায়েসেই ঘটে যায় তাই না? সব সময় মনে হয় আমার, ছিড়ে যাওয়া কোনো ঘুড়ি যেন আকাশে ভেসে না বেড়ায়, বরং যেনো পাখি হয়ে যায়। কোথাও খুজে নিক বা গড়ে নিক নিজের মত মন পছন্দ এক নীড়।
৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৩০
মিরোরডডল বলেছেন:
ঘুড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো
তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড় !
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১০
ঘুটুরি বলেছেন: পুরো একটা আকাশ যেন শুধু ঘুড়িরই হয়ে ওঠে।
৫| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১০
অঙ্গনা বলেছেন: ঘরপোষা বা শখের জিনিস সীমানা ছাড়িয়ে গেলে মানুষ একা হয়ে যায়।
অল্প বয়সের এইসব ভুল জীবন কে হেল করে দেয়।
হোসেনের ঘুরি যদি অন্য সীমানায় অন্য ঘুরিয়াল এর কাছে ও যায় তবুও কিন্তু সে আগের মত নেই। হোসেনের কাছে যেমন ছিল নতুন চকচকে টানটান খুত বিহীন।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১১
ঘুটুরি বলেছেন: যথার্থ বলেছেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যর জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৭
ইসিয়াক বলেছেন: আপনার ঘুড়ি কথন ভালো লাগলো.....