নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবাই যখন নীরব, আমি একা চীৎকার করি \n-আমি অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করি।

গিয়াস উদ্দিন লিটন

এত বুড়ো কোনোকালে হব নাকো আমি, হাসি-তামাশারে যবে কব ছ্যাব্‌লামি। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গিয়াস উদ্দিন লিটন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, এর নেপথ্যে---

২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৫৩



প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় সুচন্দা, খসরু ও বঙ্গবন্ধু অভিনীত মুক্তিযুদ্ধের এ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে।১৯৭৩ সালের একদিন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রটির শুটিং চলছিল। সিনেমার শেষ দৃশ্যের চিত্রনাট্যে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশের সামরিক বাহিনী মার্চপাষ্টে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্যালুট করছে। এই দৃশ্য কিভাবে ধারণ করা যায় তা নিয়ে চিন্তায় পড়লেন ছবির পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম।

স্বাধীনতার আগে খসরু ছিলেন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী । যার হাত ধরেই ১৯৬৯ - এ মুসলিম লীগের এনএসএফ গুণ্ডা বাহিনী ঢাকা থেকে উৎখাত হয়েছিল । বীরত্বের সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এরপর তিনি চলচ্চিত্রে আসেন । বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহের পাত্র ছিলেন তিনি । সেই স্নেহের সম্পর্কের সুবাদেই সিনেমার শেষ দৃশ্যের একটা ব্যবস্থা করার জন্য পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামকে নিয়ে নায়ক খসরু সােজা গিয়ে হাজির হলেন বঙ্গবন্ধুর কাছে । সেই মুহূর্তের কথােপকথন চাষী নজরুল ইসলাম বর্ণনা করেছেন এভাবে --

খসরু : বঙ্গবন্ধু আপনার কাছে একটা কাজে আইছি।
বঙ্গবন্ধু: কী কাজ?
খসরু: আমরা আর্মির মার্চপাস্টের একটা দৃশ্য করব। আপনি স্যালুট নিবেন।
বঙ্গবন্ধু: চুপ আমি ফিল্মে অ্যাক্টিং করব না। (ধমকের সুরে)
খসরু: এটা তো অ্যাক্টিং হইল না।
বঙ্গবন্ধু: অ্যাক্টিং হইল না কী? যা এখান থেকে। (আবারো ধমকের সুরে)
খসরু: না, আপনাকে করতেই হবে। আপনি না হলে সিনেমাটা শেষ করতে পারব না।
বঙ্গবন্ধু: মান্নানরে ডাক দেখি। (তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নান)
(স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নান এসে খসরু ও চাষী নজরুলকে নিজের রুমে নিয়ে গেলেন। রুমে গিয়ে নায়ক খসরু বলছে।
খসরু: বঙ্গবন্ধুরে অ্যাক্টিং করতে হইব।
আবদুল মান্নান: বঙ্গবন্ধু অ্যাক্টিং করব এও সম্ভব?
খসরু: সম্ভব না হইলে কিন্তু আপনারে অ্যাক্টিং এ দাঁড় করাইয়া দিমু। আপনি বঙ্গবন্ধুরে উল্টাপাল্টা কিছু বইলেন না। শুধু বলবেন, অ্যাক্টিং করা যায়। (সবাইকে নিয়ে মন্ত্রী আব্দুল মান্নান আবার ফিরে গেলেন বঙ্গবন্ধুর রুমে)
বঙ্গবন্ধু: কী হইল তাইলে?
আবদুল মান্নান: সব ঠিকই আছে। ছবিতে অভিনয় করবেন কবে?'(স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে বঙ্গবন্ধু রাজি হলেন কাজটি করে দিতে।)
বঙ্গবন্ধু খসরুকে বললেন, “যা, করে দেব”।

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পিলখানায় শুটিংয়ের ব্যবস্থা হল । মার্চপাস্টের বিশাল আয়ােজন । একবার মিস হলে সব শেষ । এক চান্সেই শট ওকে করতে হবে । বঙ্গবন্ধু মঞ্চে গিয়ে দাঁড়ালেন । পেছনে সারি বেঁধে বসলেন কেএম সফিউল্লাহ , জিয়াউর রহমান , খালেদ মােশাররফসহ সেনাবাহিনীর সব শীর্ষ কর্মকর্তারা । মঞ্চের সামনে প্যারেড করে স্যালুট দিয়ে এগিয়ে চলেছে সুসজ্জিত সেনাদল । পরিচালকের কথা মতাে স্যালুট গ্রহণের জন্য কপালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন বঙ্গবন্ধু । অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর অধৈর্যের সুরে পরিচালকের সাথে কথােপকথন - বঙ্গবন্ধু : "এই , কতক্ষণ হাত তুইলা রাখব রে" ।
চাষী নজরুল : "আর অল্প কিছুক্ষণ" ।
বঙ্গবন্ধু : "আরে কী করস না করস তােরা" ।
এভাবেই ধারণ হল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র সংগ্রাম ছবির শেষ দৃশ্য ।

জাবের খানের এ লিখাটি 'বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র' পেজ থেকে নেয়া। তিনি নিচের তথ্যসুত্রটি উল্যেখ করেছেন।
তথ্যসূত্র:: Bangaliana and Kaktarua.

ভিডিও-
সংগ্রাম চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে বঙ্গবন্ধু


মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:২১

আখেনাটেন বলেছেন: অসাধারণ.......বঙ্গবন্ধুর এই দেশি স্টাইলে মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার অবিশ্বাস্য গুণটি একমেবাদ্বিতীয়ম।

তখনকার সময়টাই আসলে অন্যরকম ছিল। সর্বোচ্চ নেতদের কাছে সাধারণের অবাধ যাতায়াত ছিল, আর এখন সবাই সম্রাট নিজের রাজ্যে...

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:১৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: .বঙ্গবন্ধুর এই দেশি স্টাইলে মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার অবিশ্বাস্য গুণটি একমেবাদ্বিতীয়ম। সুন্দর বলেছেন আখেনাটেন

২| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৫৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অসাধারণ তথ্য, অসাধারণ বঙ্গবন্ধু।

ক্লিপটা এখানে জুড়ে দিলে ভালো হতো। এখন ইউটিউবে খুঁজতে হবে।

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:১৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ক্লিপ তো দিয়েছি। ইউটিউবেও পাবেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

৩| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এটা হলো সংগ্রাম ছবির লিংক। নীচে এখানেও পুরা ভিডিও দেয়া হলো। ১ঃ৩৬ঃ৪ থেকে শুরু। খুবই অল্প সময়ের একটা অংশ। বঙ্গবন্ধুকে বোধহয় ৪/৫ সেকেন্ডের জন্য দেখা যায়।

তবে, এ তথ্যটা জেনে খুব ভালো লাগলো। ঐতিহাসিক ঘটনার স্বয়ং জনক একটা ঐতিহাসিক ছবিতে অভিনয় করে আরেকটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:১৭

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: বিষয়টি আমার অজানা ছিল। জেনে ভাবলাম সকলের সাথে শেয়ার করি।
ছবির লিংক টা দিয়ে অনেকের দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

৪| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:১৯

ঢুকিচেপা বলেছেন: বাহ খুব সুন্দর তথ্য এবং পেছনের গল্প জানা হলো।

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:১৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানবেন ঢুকিচেপা

৫| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৪৬

রুমী ইয়াসমীন বলেছেন: ভাইয়া আপনার এই লিখায় অজানা এ তথ্য জেনে খুব ভালো লাগছে এবং অবাক হলাম। বঙ্গবন্ধুর প্রতি রইলো আজীবন অজস্র শ্রদ্ধা....

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:১৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পাঠোত্তর সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জেনো রুমি।

৬| ২০ শে জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: তথ্যটি জানা থাকলো।

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:১৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল১৮

৭| ২০ শে জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মোবাইল থেকে রিপ্লাই দিলে সেটা আলাদা কমেন্ট হয়ে যায়। ল্যাপটপ এ বসে সকল কমেন্টের রিপ্লাই দানের আশা রাখছি।

৮| ২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১০:২৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই কথোপকথন কোন একটা বইয়ে পড়েছিলাম। ভুলে গিয়েছিলাম। আপনার লেখা পড়ে মনে পড়ল। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:২১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ছবিটা টিভিতে দেখেছিলাম। আমার ধারনা ছিল এখানে বঙ্গবন্ধুর কাটপিস জুড়ে দেয়া হয়েছে।
আমি বিষয়টা মাত্র কয়েকদিন আগে জানলাম।

৯| ২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:৩৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




শেখ সাহেব যেমন তেমন মানুষকে তুই করে বলতেন। তাঁর ৩২ নাম্বার বাড়িতে গিয়ে না খেয়ে কেউ বেড়িয়ে এসেছেন এমন ঘটনা কখনো হয়নি। সারাদিন ভাত্ রান্না হতো আর সারাদিন দূর দূর থেকে আগত মানুষ ভাত খেয়ে যেতো।

একজন ব্লগার পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি তার ছোট বোন নিয়ে ৩ে২ নাম্বার বাড়িতে গিয়েছিলেন। আমি জানতে চেয়েছিলাম আর বিশেষ কিছু হয়েছে। তিনি উত্তরে কিছুই জানান নি। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যিনি একবার ঢুকতে পেরেছেন তিনি বিনা আহারে বেড়িয়ে আসতে পারেন নি। বঙ্গবন্ধু তাকে ভাত খাইয়ে দিয়েছেন। (আমি কোনো এক সময় বিস্তারিত লিখবো এ বিষয়ে)

লেখা চমৎকার হয়েছে।
আগামীতে কোনো বই প্রকাশ করছেন?


২১ শে জুন, ২০২১ রাত ১২:১০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মঈনুল আহসান সাবের স্যার আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক।
(আমি কোনো এক সময় বিস্তারিত লিখবো এ বিষয়ে) অপেক্ষায় রইলাম।
সুন্দর দির্ঘ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ জানবেন জনাব ঠাকুরমাহমুদ ।

১০| ২১ শে জুন, ২০২১ দুপুর ২:২২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দারুন এক তথ্য জানলাম। ধন্যবাদ।

০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ জনাব মোঃ মাইদুল সরকার

১১| ০২ রা জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অমূল্য তথ্য বিবরণী; এক টুকরো ইতিহাস!
প্রথম তিনটে মন্তব্যের জন্য আখেনাটেন এবং সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই কে ধন্যবাদ। অমূল্য ইতিহাস তুলে ধরার জন্য আপনাকেও।
পোস্টে অষ্টম ভাললাগা। + +

০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পাঠোত্তর মন্তব্য ও ভাল লাগার জন্য আপনিও ধন্যবাদ নিন জনাব খায়রুল আহসান ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.