নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ছবি তুলি আর সিনেমা বানাই ।
বাঙলাদেশে ভালোবাসা দিবসের আমদানি বিএনপি জামাতের তালিকাভুক্ত শীর্ষ বুদ্ধিজীবী বিএনপি নেত্রীর উপদেষ্টা শফিক রেহমানের হাত ধরেই । ১৯৯৩ সালের শুরুর দিকে শফিক রেহমান ভিনদেশী এই সংস্কৃতি বাঙলাদেশে আমদানি করে তার প্রত্রিকার মাধ্যমে ।
বাঙলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র- বইলা দাবি করা হইলেও মূলত বিএনপি জামাত জোট সরকার বাঙলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোর জন্য সকল ধরনের চেষ্টা অব্যহত রাখছিলো তখনও এখনো । শফিক রেহমান সেক্যুলার কিংবা ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার হইলেও সে দেশীয় রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের মদদদাতা দল বিএনপির একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ বুদ্ধিজীবী ছিলো । সাম্প্রদায়িকতার চাদরে মুড়ে থাকা বিএনপির প্রায় সকল নীতি নির্ধারণ তার মগজ থেকে নিঃসৃত হইতো বইলা ধারণা করা হয় ।
ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভালোবাসা দিবসের যে কনসেপ্ট শফিক রেহমান আমদানি করছে তা ঘৃণিত এবং বিবর্জিত । ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শফিক রেহমানের ব্যক্তিগত জীবন যাপনও ঘৃণিত এবং বিবর্জিত । কিন্তু তারপরেও শফিক রেহমান ধর্মের লেবাসে আবৃত দল বিএনপির একজন একনিষ্ট সমর্থক ছিলো ।
১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত মানে শফিক রেহমানের হাত ধরে আমদানিকৃত ভিনদেশী সংস্কৃতির ভালোবাসা দিবস আসার আগ পর্যন্ত এই দেশের তরুণেরা চৌদ্দই ফেব্রুয়ারিকে "স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস" হিশেবেই পালন করতো । ১৯৯৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের বাকশাল সমর্থিত ছাত্রনেতা রাউফুন বসুনিয়াকে স্বৈরচার এরশাদের প্রতিষ্টিত ছাত্রসংগঠনের নেতারা কাটা রাইফেল থেকে গুলি করে হত্যা করে । তারপর থেকে বাঙলার তরুণ সমাজ ১৪ ফেব্রুয়ারিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিশেবেই পালন করা শুরু করে । কিন্তু শফিক রেহমান ভিনদেশী সংস্কৃতি ভালোবাসা দিবস এই দেশে আমদানি করলে বাঙলার তরুণ প্রজন্মের মগজ আস্তে আস্তে ধ্বংস হতে শুরু করে । আস্তে আস্তে ভুলে যায় ১৪ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস এবং গণতন্ত্রের জন্য শহীদ হওয়া রাউফুন বসুনিয়াকে ।
শফিক রেহমানের ভালোবাসা দিবসকে আজকের প্রজন্ম চোদন দিবসে রুপান্তরিত করেছে । আজকের তরুণেরা দীর্ঘদিন থেকে অপেক্ষায় থাকে ১৪ই ফেব্রুয়ারি কবে আসবে । কবে তারা ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে উপলক্ষ্য করে যৌনতায় মিলিত হইতে পারবে । আর এই বিষয়টাকে মাথায় রাইখা মারজুক রাসেল ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে আখ্যায়িত করেছে "চোদবই ফেব্রুয়ারি" বইলা । বাঙলাদেশের আজকের প্রেক্ষাপটে মারজুক রাসেলের এই নামকরণ যথার্থই । আসলেই শফিক রেহমানের আমদানিকৃত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের পরিবর্তে তরুণদের কাছে "চোদবই ফেব্রুয়ারি" হিশেবে বেশি গুরুত্ব পাইছে ।
ধারণা করা হয় , স্বৈরাচার এরশাদ তরুণ প্রজন্মের মগজকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে শফিক রেহমানকে এস্তেমাল করেছিলো কোটি টাকার বিনিময়ে । যাতে তরুণদের মগজ থেকে রাউফুন বসুনিয়ার নাম এবং স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসটা হারিয়ে যায় । তরুণরা ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে রাগে ক্ষোভে এরশাদের বিরুদ্ধে ফেটে না পরে যৌন উন্মাদনায় আদিম খেলায় মেতে থাকতে পারে । এরশাদ ছিলো একজন সেক্সম্যানিক আর তাই সে এমন একজন লোককে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজতে ছিলো যে তরুণদের মগজে প্রতিরোধ প্রতিবাদের পরিবর্তে যৌনতার উন্মাদনা ঢুকাতে পারে । শফিক রেহমানই এই জন্য পারফেক্ট লোক । কারণ শফিক রেহমানও সেক্সম্যানিয়াক এবং পাকামগজওয়ালা আদমি এই দেশে । শফিক রেহমান এরশাদের ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছে বলতেই হয় । কারণ এই দেশের তরুণ প্রজন্মের বৃহৎ একটা সংখ্যা ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের পরিবর্তে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিশেবেই পালন করছে ।
শফিক রেহমান কেনো স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসটাকে ভুলিয়ে দিতে ভালোবাসা দিবসের আমদানি করেছিলো ? মূলধারার বুদ্ধিজীবীরা এর ব্যাখ্যা দিয়েছে এইভাবে । শফিক রেহমান যেহেতু শেখ মুজিবের বাকশালকে সমর্থন করতো না তাই সে বাকশাল নিয়ে যেকোন আন্দোলন সংগ্রামের বিরোধী ছিলো । আর রাউফুন বসুনিয়া ছিলো শেখ মুজিবের বাকশাল সমর্থিত একজন ছাত্রনেতা । ১৯৮৭ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি রাত এগারোটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাকশালের সমর্থনে আর স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে মিছিল করতেছিলো তখন এরশাদের প্রতিষ্ঠিত ছাত্র সংগঠনের নেতা কাটা রাইফেল থেকে গুলি করে রাউফুন বসুনিয়াকে হত্যা করে । তরুণ প্রজন্ম যদি রাউফুন বসুনিয়াকে মনে রাখে তাহলে মনে রাখবে বাকশালকে মনে রাখবে এরশাদের স্বৈরাচার নীতিকে । শফিক রেহমান চাইছিলো তরুণ প্রজন্মের মগজ থেকে শেখ মুজিব নিঃসৃত বাকশালের বিপ্লবী চিন্তা হারিয়ে যাক । তরুণ প্রজন্মের মগজে প্রতিরোধ প্রতিবাদের পরিবর্তে যৌনতার উন্মাদনা ঢুকুক ।
শফিক রেহমান এবং এরশাদ সফল হয়েছে- এ কথা বলাই যায় । কারণ শফিক রেহমানের আমদানিকৃত ভালোবাসা দিবস এই বাঙলাদেশের তরুণদের মাঝে চোদবই ফেব্রুয়ারি হিশেবেই আজ বেশি সমাদৃত হচ্ছে । এই দিনে তরুণেরা যৌনতার লালসায় হোটেল মোটেল রেষ্টুরেন্ট ফ্ল্যাট রিকশা সিএনজি কার মাইক্রো এমনকি পার্কে ভিড় করে !
অথচ কথা ছিলো , এই ভুখন্ডে তরুণদের মাঝে ১৪ই ফেব্রুয়ারি হবে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস । চোদবই ফেব্রুয়ারি কিংবা ভালোবাসা দিবস নয় । কারণ ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট একটা দিনের প্রয়োজন কখনোই হয় না । আর চোদনের জন্যতো নয়ই ! কারণ যেকোন সময় ভালোবাসা যায় যেকোন সময় ইচ্ছা থাকলেই চোদন যায় !
তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুরোধ থাকবে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিশেবে পালন করতে । রাউফুন বসুনিয়াকে শ্রদ্ধার সহিত মনে করতে আর শেখ মুজিবের বাকশালকে হৃদপিণ্ডে নিতে । কারণ শেখ মুজিব বাকশাল কায়েম করতে চাইছিলো যেনো এই দেশের মাটি থেকে দুর্নীতিবাজ , কালোবাজারি আর ঘুষখোরদের উত্থান চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় । বাকশাল মানে একনায়কতন্ত্র- এটি বাকশালের ভুল ব্যাখ্যা । বাকশাল হলো শেখ মুজিবের মগজ নিঃসৃত গণতান্ত্রিক একটা সমাজতন্ত্র । শেখ মুজিব বাকশালের ভাষণে বলেছিলো বাঙলার মাটি থেকে দুর্নীতিবাজ , কালোবাজারি আর ঘুষখোরদের খতম করতে হবে । আজকের দিনে আমরা সাধারণ জনগণের মুখেও এই কথাই শুনি , সরকার যদি দুর্নীতিবাজ , কালোবাজারি আর ঘুষখোরদের খতম করতো তাইলে বাঙলাদেশটা ঠিক হয়ে যেতো ! সাধারণ মানুষের এই উক্তিই প্রমাণ করে শেখ মুজিবের মগজ নিঃসৃত বাকশালনীতি সঠিক এমন যথার্থই ছিলো ।
দ্যাটস অল ইউর অনার ।
২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: বাঙ্গালীরা মূলত দুঃখী। এরা ভাতে দুঃখী, কাপড়ে দুঃখী, প্রেম ভালোবাসায় দুঃখী। এখন এরা যদি কোনো বিশেষ উপলক্ষ্য কিছুটা আনন্দ করে সেটা নিশ্চয়ই দোষের নয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কে শোনে কার কথা
কারো নাই মাথা ব্যাথা্।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসা দিবস নয়, সৈরাচার প্রতিরোধ দিবস