![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ছবি তুলি আর সিনেমা বানাই ।
বাঙলার রাজনীতিতে অনেক মত, পথ ও ধারা এসেছে; কেউ এসেছে মুক্তির বুলি নিয়ে, কেউ বা এসেছে ক্ষমতার লোভে। কিন্তু যে মানুষটি একটা জাতিকে রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন, সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ১৯৭৫ সালে “বাকশাল” নামক ব্যবস্থা প্রবর্তন করলেন, তখন সেটা নিয়ে যত না চিন্তা হলো, তারচেয়েও বেশি চালানো হলো অপপ্রচার।
বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে, দীর্ঘ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণের পর আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বাকশালই ছিল বাঙলাদেশের জন্য উপযুক্ত রাষ্ট্রচিন্তা, যা বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সংমিশ্রণে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। আমি এই ব্যবস্থাকে “গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র” বলেই বিশ্বাস করি।
বাকশালের প্রেক্ষাপট:
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু যখন বাকশাল গঠন করলেন, তখন বাঙলাদেশ সদ্য স্বাধীন, রক্তাক্ত, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর, প্রশাসনিকভাবে দুর্বল এবং রাজনৈতিকভাবে বিশৃঙ্খল।
স্বাধীনতা-উত্তর বাঙলাদেশে আধিপত্য করছিলো দুর্নীতি প্রশাসন ছিলো দুর্বল, পেছনে টানছিলো পাকিস্তানি ধাঁচ খাদ্য সংকট ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি জনজীবন অসহনীয় করে তুলেছিলো।
বহুদলীয় নামধারী গণতন্ত্রে বিরাজ করছিলো সুবিধাবাদী, বিশ্বাসঘাতক রাজনৈতিক দল ও চক্রান্ত। এই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর “বাকশাল” ছিল একটি রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও সামাজিক ন্যায়ভিত্তিক নতুন পথচিন্তা।
বাকশালের কাঠামো ও দর্শন:
বাকশাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) ছিল একক রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক কাঠামো, যা মূলত নিচের স্তম্ভগুলোর উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল:
১. একদলীয় শাসন নয়;
-রাষ্ট্রীয় ঐক্যের সরকার যার সদস্য ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবীরা।
২. প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন;
-কৃষক, শ্রমিক, খেটেখাওয়া মানুষকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রে আনা।
৩. নতুন অর্থনৈতিক মডেল;
-সমাজতান্ত্রিক ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প, কৃষি ও শ্রমনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তি।
৪. প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা;
-প্রতিটি উপজেলাকে উন্নয়ন ইউনিট বানানোর পরিকল্পনা।
বাকশালকে ঘিরে অপপ্রচার ও বাস্তবতাঃ
-চরম অপপ্রচারের শিকারে পরিণত হয়েছিল বঙবন্ধু ও বাকশাল'কে নিয়ে যা এখনো চলমান আছে লুটেরা মানসিকতার রাজনীতিবিদ ও বঙ্গবন্ধু বিরোধী গুষ্ঠির মধ্যে। বলা হয়েছিল, বাকশালের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু “গণতন্ত্র হত্যা” করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে একটি ক্ষুধার্ত, দরিদ্র, দুর্নীতিগ্রস্ত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রে পশ্চিমা ধাঁচের উদার গণতন্ত্র কি আদৌ কার্যকর হয়?- না। যা এখন আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন, রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রথমে খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও শৃঙ্খলা দিতে হয়, পরে গণতন্ত্র চর্চা করা যায়।
তাঁর রাজনৈতিক জীবন ও বাকশাল গঠনের সিদ্ধান্ত ছিলো “উন্নয়নমূলক গণতন্ত্র” (developmental democracy)'এর উদাহরণ, যা দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর বা চীনের মতো দেশে ফল দিয়েছে।
আজকের প্রেক্ষাপটে বাকশালের প্রয়োজনীয়তাঃ
-বর্তমানে দাঁড়িয়ে আমরা যদি দেশের বাস্তবতা দেখি একদিকে চরম ধনী শ্রেণির দাপট অন্যদিকে সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলের অনুপ্রবেশ। প্রকৃত সমাজতান্ত্রিক ও জনগণের অধিকারভিত্তিক চিন্তার অভাব। জনগণের সঙ্গে রাজনীতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় শক্তির ঘাটতি।- এই প্রেক্ষিতে আজ বাকশালের মতো একটি জনগণমুখী শৃঙ্খলিত রাজনৈতিক কাঠামো অত্যন্ত জরুরি। যেটা প্রতিষ্ঠা করবে একটি রাষ্ট্রীয় আদর্শ, উৎপাদনমুখী সমাজব্যবস্থা, কৃষক ও শ্রমিকের মর্যাদা, আর জাতীয় স্বার্থকে সবার উপরে তুলে ধরবে।
বাকশাল মানেই একনায়কতন্ত্র নয় ; বাকশাল কখনোই ব্যক্তিস্বার্থে গড়া একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছিল না বরং এটা ছিল জনগণের দুঃখ লাঘবে, রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনে এবং শোষণমুক্ত বাঙলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর ব্যতিক্রমী রাষ্ট্রদর্শন। যেটা ইতিহাসের বহু আগেই প্রয়োজনীয়তা চিনে ফেলেছিলো।
আমি মনে করি, এখন সময় এসেছে নতুন করে বাকশাল'কে মূল্যায়ন করার, ভুল বোঝাবুঝির আবরণ সরিয়ে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নকশায় বঙ্গবন্ধুর এই চেতনাকে পুনরায় স্থান দেওয়ার। আমি চাইবো, এইবার আওয়ামী লীগ যদি ফিরে বাকশালি চিন্তা চেতনা এবং আদর্শ নিয়েই যেনো ফিরে তার জন্য যে কয় বছর লাগে লাগুক।
বাকশাল কায়েমই হোক বাঙলাদেশের নতুন শপথ।
জয় বাঙলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:৫১
জিপসি রুদ্র বলেছেন: বদ্দা
জ্ঞ্যানের বিষয় না বাকশালের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি বইলা লেখলাম।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:৫১
কামাল১৮ বলেছেন: বাকশাল ছিলো সমাজতান্ত্রিক শাসনের বাংলাদেশি মডেল।মূল পরিকল্পনাকারী ছিলো মনি সিং।বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির প্রধান।ছাত্র ফ্রন্টে ছিলো মতিয়া চৌধুরী।মতিয়া পরে আওয়ামী লীগে যোগদান করে।
০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩
জিপসি রুদ্র বলেছেন: বাঙলাদেশকে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টে নিয়ে যেতে হইলে বাকশাল কায়েম জরুরি।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:০০
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: বাকশালের কারনেই তাকে হত্যা করেছিল।
৪| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:০১
কামাল১৮ বলেছেন: সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি গনতান্ত্রাীক শাসন ব্যবস্থাই পারে বাংলাদেশকে সঠিক পথে নিতে।
৫| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাকশাল বাংলাদেশে কাজ করত না, তার কারণ আওয়ামী লীগ নিজেই। একটি সিস্টেম চালাতে হলে রাজনীতি বোঝা দল প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ বোঝে শুধু দমন-পীড়ন। তাছাড়া, শেখ হাসিনার শেষ ১৭ বছরের শাসন মূলত ছিল বাকশাল ২.০। তিনি এখন ভারতে পলাতক । বাংলাদেশের মানুষ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পছন্দ করে না। তাই বারবার বাকশাল টাইপ শাসন বা একদলীয় ব্যবস্থা ব্যর্থ হচ্ছে। চীনে একদলীয় শাসন কাজ করলেও, তা বাংলাদেশে কাজ করবে না ।
৬| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:১৫
রবিন.হুড বলেছেন: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দূর করতে এই মশালটা ব্যবহার করতে পারেন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দূর করতে এই মশালটা ব্যবহার করতে পারেন।
বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন নিচের লেখা। দেশটা আমাদের গড়ার দায়িত্বও আমাদের।
https://www.somewhereinblog.net/blog/Munshibest/30377871
৭| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:১৯
রাসেল বলেছেন: একনায়কতন্ত্র, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র - যাই বলেন না কেন, দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্র, রাজনীতি তথা চুরি বাটপারির কাছে সবাই হেরে যায়।
৮| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:৩১
আধুনিক চিন্তাবিদ বলেছেন: @সৈয়দ কুতুব
আমি বর্তমান বাংলাদেশের জন্য একনায়কতন্ত্র সাপোর্ট করি। আমার মতে একনায়কতন্ত্রের কারনেই এই দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মত প্রজেক্ট সম্ভব হয়েছে। তা না হলে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যদি ৫ বছর পর পর সরকার চেন্জ হতো তাহলে এইসব হওয়া সম্ভব হতো না বলে আমি মনে করি। তবে ১৫ বছর ইচ্ছামতো শাসন করার পরে হাসিনার উচিত ছিলো ২০২৪ সালের সকলের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
৯| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আধুনিক চিন্তাবিদ@মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসেনি। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দেশের উপর চাপ বাড়ছে। বিদেশি বিনিয়োগ নেই, মানসম্মত শিক্ষা নেই, নতুন শিল্প নেই। শুধু অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে—যার উপযোগিতার চেয়ে অপকারিতা এখন বেশি। অটোরিকশা আমদানি করে বেকারত্ব দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা এখন সমস্যায় পরিণত হয়েছে। কোনো বিপ্লবিক পরিবর্তন আসেনি যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য ভালো হবে। কিছু কাজ করা হয়েছে শুধু লুটপাট চালিয়ে যাওয়ার জন্য। উদারপন্থী ও দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে তীব্র বিভাজন তৈরি করা হয়েছে। আওয়ামী লুটেরা অর্থনৈতিক মডেল প্রতিষ্ঠা করেছে।
বাংলাদেশের মতো দেশে একনায়কতন্ত্র বিপদজনক ।
১০| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:১০
আধুনিক চিন্তাবিদ বলেছেন: @সৈয়দ কুতুব
হাসিনার আমলটা বাস্তবে একনায়কতান্ত্রিক হলেও কাগজে কলমে গনতান্ত্রিক ছিলো। তাই আপনি যেই সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নতির কথা বলেছেন তা বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের এত ব্যাপকভাবে দূর্ণীতিতে জড়িত হওয়ার পিছনে পাঁচ বছর পর ক্ষমতার পট পরিবর্তন জনিত ভয় অন্যতম কারণ বলে আমার মনে হয়। তাই তারা ক্ষমতায় গিয়েই আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকে। তারা যদি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি পায় তাহলে দেশের উন্নয়ন আরও বেশি হবে বলে আমার মনে হয়। সেই হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত এই দেশে একনায়কতন্ত্র দরকার ছিলো বলে আমার মনে হয়। এখন দেখা যাক ভবিষ্যত গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ কি করে।
১১| ০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আধুনিক চিন্তাবিদ@ শেখ হাসিনা ছদ্মবেশি গণতন্ত্রের আড়ালে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:৪১
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
যাক, বাংলাদেশে কমপক্ষে ১ জন জ্ঞানী মানুষ দেখতে পাচ্ছি!