![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ছবি তুলি আর সিনেমা বানাই ।
১. ধর্মীয় রাষ্ট্র মানেই একচেটিয়া ব্যাখ্যার ভয়ংকর ফাঁদ:
যখন রাষ্ট্র ধর্ম দিয়ে পরিচালিত হয়, তখন সেটি ধর্মের একটি নির্দিষ্ট ব্যাখ্যাকেই রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপিয়ে দেয়। ইসলাম যেমন "ইজতিহাদ", মতভেদ, মাযহাব বৈচিত্র্যের কথা বলে, কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা সেখানে একটি গোষ্ঠীর ব্যাখ্যাকে চূড়ান্ত ও অব্যর্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
উদাহরণ:
ইরানে শিয়া চিন্তাধারাই রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত, সুন্নিদের প্রতি বৈষম্য রয়েছে।
সৌদি আরবে হানবলি-মতবাদই প্রাধান্য পায়, অন্যান্য মতবাদ দমন করা হয়।
অতএব, ধর্মীয় রাষ্ট্র মানেই একক মতবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ধর্মের প্রকৃত বহুবাচনিকতাকে খুন করা।
২. "মদীনা সনদ" আদর্শ; কিন্তু তা রাষ্ট্রীয় কাঠামো নয়:
হ্যাঁ, রাসূল মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় একটি শাসন কাঠামো গড়েছিলেন, যা ইতিহাসে "মদীনা সনদ" নামে পরিচিত। কিন্তু এটি ছিল একটি ছোট সম্প্রদায়ের চুক্তিনির্ভর ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, আধুনিক রাষ্ট্রের মতো জটিল, অর্থনীতি, বৈদেশিক সম্পর্ক, করব্যবস্থা, নাগরিক অধিকারের একটি পরিপূর্ণ কাঠামো নয়।
২১ শতকের রাষ্ট্রব্যবস্থা বহুজাতিক, বহুধর্মী, বৈশ্বিক বাণিজ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর, যেখানে মদীনা সনদের মতো একটি আদর্শকে পূর্ণাঙ্গভাবে রাষ্ট্রীয় মডেল হিসেবে বাস্তবায়ন করা বাস্তবতা নয়, বরং প্রতীকী অনুপ্রেরণা মাত্র।
৩. ধর্মীয় রাষ্ট্র মানেই নারীর অধিকার সংকুচিত:
ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগুলোতে নারীর অধিকার ধর্মীয় ব্যাখ্যার শিকলে বাঁধা। নারী কী পরবে তা রাষ্ট্র বলে দেবে (ইরান)। নারীর ড্রাইভিং, ভোটাধিকার, চাকরি—সব কিছুতে সীমাবদ্ধতা (সৌদি আরব, তালেবান-আফগানিস্তান)। ধর্মীয় রাষ্ট্রের কাঠামো নারীর ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করে ধর্মের ব্যাখ্যার ছুতোয়।
৪. ধর্মীয় রাষ্ট্র "অবিশ্বাসী"দের জন্য নিরাপদ নয়:
একটি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র কখনোই সব মত ও অবিশ্বাসের প্রতি সমান সহনশীল হতে পারে না। ইতিহাস ও বর্তমান বলছে, ধর্মান্তর (conversion) শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ধর্মনিরপেক্ষ আর ধর্মহীন নাগরিকরা "রাষ্ট্রশত্রু"।
উদাহরণ :
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনের অপব্যবহার। আফগানিস্তানে হিন্দু-শিখদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলা।
ধর্মীয় রাষ্ট্র সবার রাষ্ট্র নয়। এটি একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় বিশ্বাসীদের রাষ্ট্র।
৫. ধর্মীয় রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও মুক্তচিন্তার শত্রু:
ধর্মীয় রাষ্ট্রে যুক্তিবাদ, নাস্তিকতা, দর্শন, লিঙ্গ বৈচিত্র্য সবই “ধর্মবিরোধী” হিসেবে চিহ্নিত হয়। ফলে বিজ্ঞানমনস্কতা, মুক্ত মতপ্রকাশ, শিল্পসাহিত্য ব্যাহত হয়। সৌদি আরবে একসময় মিউজিক, সিনেমা, নাটক নিষিদ্ধ ছিল। আফগানিস্তানে তালেবান মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। ধর্মীয় রাষ্ট্র মানুষের জ্ঞানচর্চার ও সৃজনশীলতার শত্রু হয়ে দাঁড়ায়।
৬. ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই ধর্মবিদ্বেষ নয়:
ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়, বরং "রাষ্ট্র থাকবে নিরপেক্ষ; নাগরিকরা থাকবে স্বাধীন"। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে আপনি চাইলে নামাজ পড়ুন, না চাইলে পড়বেন না। আপনি রোজা রাখুন, উপবাস করুন, পূজা করুন রাষ্ট্র আপনার পাশে থাকবে। আপনি নাস্তিক হলেও রাষ্ট্র আপনার নাগরিক অধিকার কেড়ে নেবে না। এটি সব ধর্ম, অধর্ম ও মতের সহাবস্থানের গ্যারান্টি দেয়।
৭. ধর্ম দিয়ে রাষ্ট্র চালানো যায় না, কারণ ধর্ম প্রশ্ন করে না, প্রশ্নে ভয় পায়:
রাষ্ট্রে আইন, বিচার ও নীতিনির্ধারণে প্রশ্ন করা, তর্ক করা, পরিবর্তন করা এসব মৌলিক গুণ। কিন্তু ধর্ম এক ধরনের চূড়ান্তত্বের দাবি করে। যেমন “এটি আল্লাহর আইন, প্রশ্ন করো না।” যেখানে প্রশ্ন নিষিদ্ধ, সেখানে উন্নতি অসম্ভব।
৮. বাস্তব ইতিহাসই প্রমাণ করে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যর্থ:
তালেবান আফগানিস্তান: সন্ত্রাস, দারিদ্র্য, নারীবিদ্বেষ।
ইরান: নৈতিক পুলিশ, গণআন্দোলন দমন, নারীদের হিজাব আন্দোলনে হত্যা।
পাকিস্তান: ধর্মান্ধতা, সংখ্যালঘু নিপীড়ন, আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা।
সৌদি আরব: ইচ্ছামতো শরিয়া ব্যাখ্যা, গণতন্ত্রহীন রাজতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা সংকুচিত।
এসব উদাহরণই যথেষ্ট প্রমাণ করে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র আসলেই ব্যর্থ। ধর্ম ব্যক্তিগত, রাষ্ট্র সামষ্টিক
একবিংশ শতাব্দীর রাষ্ট্রব্যবস্থা হচ্ছে:
সকল ধর্ম ও অধর্মের প্রতি সহনশীলতা।
নারী, শিশু, লিঙ্গ সংখ্যালঘু, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সমান অধিকার নিশ্চয়তাকারী।
বিজ্ঞান, যুক্তি ও মানবিকতা-নির্ভর।
এই ব্যবস্থা কেবল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রেই সম্ভব।
পরিশেষে বলতে চাই, ধর্ম দিয়ে মানুষ বাঁচে, কিন্তু রাষ্ট্র চলে যুক্তি, ন্যায় ও জবাবদিহিতায়। ধর্ম আপন ঘরে রাখুন, রাষ্ট্রে রাখুন মানবরচিত সংবিধান। যেটা সময়ের এবং মানুষের প্রয়োজনে সংশোধন সম্ভব।
২| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:০৩
কাঁউটাল বলেছেন: আর চেতনা ঢুকিয়ে দিন হাউয়ামি ভাদাদের োয়ার ভিতরে......
৩| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ধর্ম মূলত আফিম। আফিমে মগজহীণ জাতি বুধ হয়ে আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৩৫
আমি নই বলেছেন: বিগত সরকারের আমলেও শুধু মাত্র বিরোধী মতের কারনে অনেককে হত্যা করা হয়েছিল, নিজের ইচ্ছামত পোশাক পরতে বাধা দেয়া হয়েছিল, জ্ঞান-বিজ্ঞানে কোনোই অগ্রগতি হয় নাই, প্রশ্ন করার অধিকার ছিলনা, দারিদ্রতা কমে নাই বরং বেড়েছে।
বিগত সরকারোতো রাষ্ট্রে সংবিধান রেখেছিল, লাভটা কি হয়েছিল?