![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ছবি তুলি আর সিনেমা বানাই ।
২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে একশ্রেণির রাজনৈতিক মহল, তথাকথিত সুশীল সমাজ এবং প্রোপাগান্ডা-নির্ভর বুদ্ধিজীবী বারবার অভিযোগ তুলেছে যে, শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি করেছেন। “ভারতের দালাল”, “গদ্দার”, “দেশ বিক্রি করে দিয়েছে”- এসব শব্দযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের কূটনৈতিক অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে দীর্ঘকাল।
কিন্তু সময়ের সবচেয়ে নির্মম উত্তর হলো এই:
শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে গঠন করা ইউনুস গং এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকলেও ভারতের সঙ্গে করা এসব তথাকথিত “দেশবিরোধী” চুক্তির একটিও বাতিল করতে পারেনি। বরং তারা নির্বিঘ্নে আগের সরকারের সব কূটনৈতিক কাঠামোই ব্যবহার করছে।
প্রশ্ন জাগে:
যদি সত্যিই দেশবিরোধী হতো, তাহলে বাতিল করতে এত দ্বিধা কিসের?
ভারতের সাথে শেখ হাসিনার সময়কালে আলোচিত চুক্তিসমূহ:
১. স্থলসীমান্ত চুক্তি (Land Boundary Agreement - ২০১৫)
১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর করা মূল চুক্তির বাস্তবায়ন শেখ হাসিনা করেন ২০১৫ সালে। এটি ভারতীয় পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়। ছিটমহল সমস্যা সমাধানে মানবিক ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
প্রায় ৫১,০০০ মানুষ নাগরিকত্ব পায়; সীমান্তে নিরাপত্তা ও মানবিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।
“এই চুক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে কূটনৈতিক সাহসিকতার একটি দৃষ্টান্ত।” Foreign Affairs Journal, 2016[^1]
২. বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি (২০১৩ এবং পরবর্তীকালে):
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তির ফলে আজ দেশের বিদ্যুৎ খাতে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে।
পায়রা, রামপাল, সন্ত্রাসী মুক্ত সঞ্চালন লাইনের মতো প্রকল্প ভারতীয় বিনিয়োগে বাস্তবায়িত। গুজব ছড়ানো হয় “ভারতকে বিদ্যুৎ দিয়ে দেশ অন্ধকারে ডুবাচ্ছে”, অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত।
২০২৩ সালেই বাঙলাদেশ ভারত থেকে ১,১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে দেশের চাহিদা পূরণ করেছে।[^2]
৩. চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারে ভারতের ট্রানজিট সুবিধা (২০১৮):
“বাঙলাদেশ ভারতের করিডর হয়ে গেছে”- এই প্রপাগান্ডা চালানো হয় ব্যাপকভাবে। কিন্তু বাস্তবে বাঙলাদেশকে দেওয়া হয় উন্নত অবকাঠামো, সড়ক, কাস্টমস এবং বন্দরের আধুনিকায়নের প্রতিশ্রুতি ও কার্যকর বাস্তবায়ন। বিনিময়ে পণ্য পরিবহন বাবদ কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয়।
“Bangladesh gains from India's transit as much as India does from access.” — The Economic Times, 2019[^3]
৪. রেলওয়ে ও যোগাযোগ পুনঃসংযুক্তিকরণ (২০১৪–২০২৩):
বঙ্গবন্ধুর সময়কার ৬টি বন্ধ রেললাইন চালু করা হয় শেখ হাসিনার সময়। বেনাপোল-পেট্রাপোল, আখাউড়া-আগরতলা, হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল সংযোগ পুনরায় চালু। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ভ্রমণ সহজ হয়।
৫. তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির চেষ্টাগুলো:
শেখ হাসিনা বহুবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে রাজি করাতে ভারত সরকারকে চাপ দিয়েছে। কিন্তু ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকার ‘রাষ্ট্রীয় সম্মতির’ শর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আপত্তিতে থমকে দাঁড়ায়।
এরপরও শেখ হাসিনা আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক অবস্থান ধরে রাখেন।
রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মূল চেহারা:
যে গোষ্ঠী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে “দেশবিরোধী” চুক্তির বুলি আওড়ায়, তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক অভিসন্ধি খুবই স্পষ্ট। তারা বাঙলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী, মুজিববিদ্বেষী চক্রের প্রতিনিধিত্ব করে। তাদের লক্ষ্য শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা খর্ব করা এবং ভারতবিরোধী আবেগ উসকে দিয়ে জনমত প্রভাবিত করা। বাস্তবতা হলো- তারা নিজেরা ক্ষমতায় গিয়েও কোনো চুক্তি বাতিল করেনি।
প্রশ্ন: “যদি দেশবিরোধী হয়—তাহলে বাতিল করো। তা তো করলে না।”
ইউনুস গংয়ের দ্বিচারিতা:
২০২৪ সালের তথাকথিত “দেশ পুনরুদ্ধার” করতে যারা এসেছিল, তারা আজ সেই একই চুক্তির ছায়াতলে বসে আছে। তাদের একজনও “ভারতীয় আগ্রাসন” বা “দেশবিক্রি” সংক্রান্ত অভিযোগে আইনি, কূটনৈতিক বা নীতিগত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এর মানে কি শেখ হাসিনার করা চুক্তিগুলো আদতে দেশের জন্য উপকারী ছিল? উত্তর: হ্যাঁ।
শেখ হাসিনার দেশপ্রেম একটা বংশানুক্রমিক রাজনৈতিক আদর্শ:
যার পিতা জাতির জনক, স্বাধীনতার স্থপতি, তিনি নিজে কখনো দেশবিরোধী হতে পারেন না। শেখ হাসিনা দেশ চালিয়েছেন ‘দেশ আগে, রাজনীতি পরে’ নীতিতে। তিনি বুঝেছেন “ভূগোল যেমন বদলায় না, প্রতিবেশীকেও তেমন বদলানো যায় না।” তাই ভারতের সাথে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করেছেন।
যারা মনে করে, চুক্তি মানেই আত্মবিক্রয়- তাদের কূটনৈতিক জ্ঞান প্রশ্নবিদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা চুক্তি করেছেন দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য, কখনো আত্মসমর্পণের জন্য নয়। আর যারা চুক্তিগুলোকে “গদ্দারি” বলেছে, আজ তারাই সেই গদ্দারি আঁকড়ে ধরে ক্ষমতায় বসে আছে- এটাই ইতিহাসের নির্মম প্রতিশোধ।
“চুক্তিতে দেশ বিকোয় না, চরিত্রে বিকোয়। শেখ হাসিনার চরিত্রে কখনো দেশবিরোধী কিছু ছিল না। থাকবেও না।”
জয় বাঙলা। জয় শেখ হাসিনা।
ফুটনোট ও রেফারেন্স:
[^1]: “India-Bangladesh Land Boundary Agreement: A Historic Resolution”, Foreign Affairs Journal, June 2015.
[^2]: Bangladesh Power Development Board (BPDB) Annual Report, 2023.
[^3]: “India’s access to Bangladesh ports: Mutual economic gains”, The Economic Times, May 2019.
[^4]: Ministry of Foreign Affairs, Bangladesh: India-Bangladesh Bilateral Relations Overview (2019–2023).
[^5]: “Reopening of Old Rail Routes Boosts Connectivity”, The Hindu BusinessLine, March 2022.
[^6]: “Teesta Water Sharing Agreement: Deadlock Continues Due to State-Level Objections”, The Telegraph India, 2022.
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: হাসিনা না থাকাতে খারাপ মানুষ গুলো উজাইছে।