নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলে যাব- তবু যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল।

হাবিব

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র।

হাবিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের ঘর আমাদের সংসার

০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:১৮



বয়সটা খুব বেশি না।
নয় কি দশ বছর হবে। অথচ শরীরের গঠনে মনে হবে ষোল পেরিয়ে গেছে। রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তীর মতো অবস্থায় পড়েছিলেন হয়তো। মক্তবে আমপাড়ার পাঠ শেষ করার আগেই বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছিল মাকে। পায়ে আলতা আর হাতে মেহেদী মানে যে বিয়ে তা বুঝে উঠার আগেই হলুদ শাড়ি গায়ে জড়াতে হয়েছিল। যে বয়সে ছোট ছোট হাড়িপাতিল নিয়ে খেলা করবার কথা সে বয়সে হাতে হাড়ি পাতিল উঠেছিল ঠিকই কিন্তু সেগুলোর ভার বইবার মতো শক্তি তখনো যে নরম শরীরটাতে হয়ে উঠেনি।

আমার মা-বাবা সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন।
চাচাতো ভাই-বোন হলেও একবাড়ি থেকে আরেক বাড়ির দূরত্ব মাইল দশেক তো হবেই। বিয়ের পর প্রথম প্রথম শ্বশুড় বাড়িতে থাকতে চাইতো না আমার মা। না থাকতে চাওয়ার বড় কারন হলো শ্বশুড় বাড়িতে তিন বেলা ঠিক মতো খেতে পারতো না। আমার বাবা-চাচারা মিলে মোটামুটি একটা ফুটবল টিম গঠন করার মতো সক্ষমতা রাখতো। দাদার একার আয়ে সংসার চালাতে বেশ হিমশিম খেত দাদী। সকালে গমের আটার জাই, আর রাতে এক মুঠো করে ভাত। দুপুরটা পানি খেয়ে কোন মতে পার করতে হতো।

একদিনের ঘটনা।
সকাল বেলা পান্তা ভাত কাচা-মরিচ পেয়াজের নাস্তা ছিল সেদিন। রাগ করে মা ভাত খান নি। রেখে দিয়েছেন মনের দু:খে। এদিকে বেলা বেড়ে যাবার সাথে সাথে ক্ষিদেটাও তরতরিয়ে বাড়ছে। সেদিন আবার আমার ছোট মামা আসছে আমাদের বাড়িতে। ঘরে এমন কিছু নেই যা দিয়ে আপ্যায়ন করা যায়। মা আর উপায় না দেখে সকালের পান্তা ভাত খেতে দিলেন মামাকে। মামা খেয়ে দেয়ে বিকেল বেলা চলে গেলেন। মায়ের পেটে সেদিন আর কিছু পড়লো না। জলের উপর ভরসা করে দিন পার করতে হলো। এরকম উপোস থাকার দিন গেছে যে কত তার হিসেব নেই। সেসময়টাতে আমাদের ঘরে নিত্যদিনই রোজার মতো পার হতো!

আমার জন্মের পর অবশ্য অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।
মায়ের বিয়ের ৮ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ কোন সন্তানের দেখা নেই। পরিবারের সবাই চিন্তিত! তবে কি আর সন্তান হবে না! অনেক কবিরাজি চিকিৎসা করার পর নাকি আমি হয়েছি। আমার যখন জন্ম হয় তখন মায়ের বয়স ১৯ এর কাছাকাছি। বিধাতাও হয়তো চাননি এর আগে আমি দুনিয়ায় আসি। তখনকার লোকেরা সন্তানের জন্য কত কি যে মানত করতো তার হিসেব নেই।

আমার ছোট ভাইয়ের জন্ম হয় আমি হবার ৬ বছর পর।
আমার ছোট ভাইয়ের নাম রাখা হয় হাসান। হাসানের বয়স যখন ৩ বছর তখন ওর খুব পাতলা পায়খানা হয়। সে সময় ২ টাকা দামের ছোট ডিটারজেন্টের প্যাকেট পাওয়া যেত। আমার মা হাসানকে ঐ ডিটারজেন্টের প্যাকেটকে স্যালাইন মনে করে খাওয়াচ্ছিলেন। দু এক চামচ মুখে দেওয়ার পর যখন খেতে চাচ্ছে না, তখন মা মুখে দিয়ে দেখে এ তো গুড়া সাবানের প্যাকেট!! আসলে আমার মা বাংলা পড়া কিছুই পড়তে পারেন না। তার যে স্কুলে যাওয়া হয়ে উঠেনি। স্কুলের বয়সটায় সময় কেটেছে শ্বশুড়বাড়িতে।


নারী শিক্ষার গুরুত্ব বুঝেছি আমরা এইতো ক'বছর হলো।
আগেকার দিনে তো মেয়েদেরকে স্কুলে পাঠানোকে বেকার খরচ ভাবা হতো। মায়েরা এককেকটা ভ্রাম্যমান স্কুল। মায়ের শিক্ষা সন্তানের জন্য জীবন গড়ার প্রথম ফাউন্ডেশন। ভিত মজবুত না হলে স্থাপনার স্থায়িত্ব যে খুব বেশি হয় না। বেগম রোকেয়া হয়তো পেরেছিলেন কিছুটা। কিন্তু আমাদের ঘর পর্যন্ত অবরোধবাসিনীর আওয়াজ পৌঁছতে অনেক দেরী।

ছবি: আরিশের আব্বু
বুননে: আরিশের আম্মু

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩৫

তারেক ফাহিম বলেছেন:

মন খারাপ হয়ে গেল।
মায়ের শিক্ষা সন্তানের জন্য জীবন গড়ার প্রথম ফাউন্ডেশন। ভিত মজবুত না হলে স্থাপনার স্থায়িত্ব যে খুব বেশি হয় না একদম তাই।

শব্দমালা বুননে আরিশের আম্মু ?

০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০১

হাবিব বলেছেন:






উপরের ছবির ডিজাইন করে শোপিচ বুনেছেন আরিশের আম্মু। আমি ক্লিক করেছি।

অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগলো তারেক ফাহিম ভাই। আশাকরি ভালো আছেন।

২| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর করে লিখেছেন। আসলেই মায়েদের শিক্ষার দরকার আছে। সন্তান মানুষ করতে একজন মা এখনকার দিনে কত কষ্ট করেন।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০৪

হাবিব বলেছেন: মেয়েরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলেই আমাদের সমাজ উন্নত হবে।

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: তখনকার লোকেরা সন্তানের জন্য কত কি যে মানত করতো তার হিসেব নেই।

আমার জন্মের আগে নানান মাজারে যাবার মানত ছিলো। যেগুলি আমার দাদীই করেছিলো বেশী।
তার ফলে আমি ছোটবেলাতেই -
আটরশি দরবার, চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, চট্টগ্রামের শেখ ফরিদের চশমা মাজার, সিলেটের শাহ জালালের দরগাহ, সিলেটের শাহ পরানের দরগাহ, বাগেরহাটের খান জাহান আলীর মাজার গেছি। এমনকি বড় হয়ে ভারতের আজমির শরিফেও যেতে হয়েছে এই মানতের জন্য।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০৬

হাবিব বলেছেন: আমাদের বাসার অদূরেই একটা মাজার আছে সেখানেও অনেকে মানত করে। এই আধুনিক যুগে এসেও যে মানুষ কত মানুষ এসবে বিশ্বাস করে !! ভাবতেই অবাক লাগে।

৪| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: জীবন সংগ্রামের গল্প ! অবরোধবাসিনীর আওয়াজ পাঠানর দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।
আরিশের আম্মুর বুননে ভালোলাগা।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০৮

হাবিব বলেছেন:





অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। গ্রামের দিকটা এখনো পিছিয়ে।

আপনার ভালো লাগাতে আনন্দ পেলাম।

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: মায়ের শিক্ষা ছাড়া সন্তানের শিক্ষা সম্ভব না।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১০

হাবিব বলেছেন: তবে সুশিক্ষা দরকার। অবরোধবাসিনী চাইনা আমরা।

৬| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৭

স্প্যানকড বলেছেন: সুন্দর হইছে। সবার শিক্ষিত হওয়া দরকার। তবে খুব খারাপ লাগলো পড়ে। ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকুন।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৮

হাবিব বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই। সবার জন্য শিক্ষা দরকার।
এই কথাগুলো মায়ের কাছ থেকে শুনতাম আর চোখ থেকে পানি পরতো। মায়ের চোখটাও ভিজে উঠতো।

৭| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৩৯

ফড়িং-অনু বলেছেন: মন ছুয়ে গেলো লিখাটি।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৯

হাবিব বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

৮| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আমাদের অনেকেরই জীবনে এমন অভাবের দিন বয়ে গেছে। প্রচন্ড হতাশ হয়ে পড়ি পুরানো দিনগুলোর কথা মনে পড়লে।আজ স্বচ্ছলতা এসেছে ঠিকই কিন্তু বাবা মায়েরা চলে গেছে না ফেরার দেশে। আপনার পারিবারিক কাহিনী খুবই বিষন্নের।বাবা-মাকে আমার সালাম রইল।
আরিশ ও তার আব্বু আম্মুর জন্যও রইলো নিরন্তর শুভকামনা।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪০

হাবিব বলেছেন: বাবা মায়ের কষ্টের কথা গুলো মনে দাগ কেটে যায়। আপনিও ভালো থাকবেন ভাইয়া।

৯| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাবিব স্যার,




"আমাদের ঘর আমাদের সংসার" - মনে হয় বেশীর ভাগ মানুষেরই অমন ঘর অমন সংসার।
খুব টাচি লেখা। একসময়ের অবরোধবাসিনীদের ছবি এঁকেছেন। সাথে উপলব্ধিও।
একজন মা-ই পারেন একটি সমৃদ্ধ সন্তান উপহার দিতে। কিন্তু হায়রে ! আমাদের এইসব অবরোধবাসিনীদের আমরা কোনও সুযোগই যে দিতে চাইনে নানান জিগির তুলে !!!!!!!!!!!!!!
শিক্ষা , একমাত্র শিক্ষাই পারে আমাদের ঘর আমাদের সংসারকে আবাদ করে ফসলি করে তুলতে। সাথের ছবির মতো রঙিন- ঝলমলে করে................

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪২

হাবিব বলেছেন: লেখার প্রশংসায় অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

দিন ফিরুক আবার, পরিবর্তনই একান্ত কাম্য।

অনেক দিন পর আবার আপনার কাছ থেকে দারুণ মন্তব্য পেলাম।

১০| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৩

জটিল ভাই বলেছেন:
উপলব্ধি এটাই, "তোমরা আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো!"
জটিলবাদ জানবেন।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৪

হাবিব বলেছেন: নেপোলিয়ন বোনাপার্ট যথার্থই বলেছেন। আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি বহুবছর পর । জটিলবাদ গ্রহণ করলাম ভাইসাব

১১| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: নারী শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষিত মায়েরা শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে পারেন ।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৫

হাবিব বলেছেন: যথার্থই বলেছেন ভাইয়া। ভালো থাকবেন

১২| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:২৯

শায়মা বলেছেন: আহারে ভাইয়া।

মায়ের জন্য অনেক ভালোবাসা।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৮

হাবিব বলেছেন: আপনারাই দেশের সম্পদ। আপনারা খনির মতো। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ শায়মা আপু

১৩| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
নিজের জন্ম্বের আগের ঘটনা খুব নির্মোহ ভাবে বর্ননা করেছেন।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৫০

হাবিব বলেছেন: মায়ের খুব কাছাকাছি থাকতাম ছোট বেলা থেকেই। আমরা তাইতো মায়ের মুখ থেকে কথাগুলো শুনে মনে হতো সব কিছু আমার চোখের সামনে দেখছি।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ লিটন ভাই

১৪| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১:০৫

ঢুকিচেপা বলেছেন: খুব কষ্টের একটা বর্ণনা।
বাল্য বিবাহের ভয়ংকর দিক এবং নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে চমৎকার আলোকপাত করেছেন।

১০ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৩

হাবিব বলেছেন: এমন আরো অনেক ঘটনার সাক্ষী আমি ভাইয়া। আশা করছি সময় সুযোগ পেলে সেগুলোও তুলে ধরবো।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১৫| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১:৫৪

মেহবুবা বলেছেন: আরিশের আম্মু মনে হচ্ছে গুনী বুনন শিল্পী!
এই মাকে যত্নে রাখবেন।

আপনার আম্মা এখন যেন ভাল থাকেন সেই কামনা করি।

১০ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৭

হাবিব বলেছেন: আরিশের আম্মু আসলেই গুণী বুনন শিল্পী। সময় সুযোগ পেলেই এমন সব কারুকার্যে রাঙিয়ে তুলে ঘর।

ইনশাআল্লাহ, দোয়া চাই আপনাদের। রাবিব্বর হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগীরা।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৬| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৪:৩০

সোহানী বলেছেন: ব্লগে ঢুকেই তোমার লিখা পড়ে প্রচন্ড মন খারাপ হয়ে গেল। তুমি হয়তো জানো আমি আগেও বলেছি, নারীদের নিয়ে আমি বরাবরেই কাজ করি। কারন এ ধরনের গল্পগুলো আমি জানি কিংবা আরো কষ্টের গল্প।

এ বেগম রোকেয়ার মতো চিন্তা কেউই যে করে না এ যুগে এসেও। এত আধুনিক হয়েছি আমরা কিন্তু সত্যিকারে নারী উন্নয়ন হয়েছে কি? না হয়নি। সামান্য যারা সামনে এগিয়েছে তাদের অল্প ক'জনই পিছন ফিরে দেখে। তাই ওরা সে তিমিরেই পড়ে আছে। মাঝে মাঝে আলাদিনের দৈত্যটার প্রয়োজন খুব অনুভব করি। দোয়া করো, খুব ইচ্ছে আছে দেশে ফিরে কিছু করার। জানি না পারবো কিনা, তারপরও ইচ্ছেটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।

তোমার পরিবারের জন্য শুভকামনা। যদি কখনো কোন প্রয়োজনে হয় আমাকে নক করো।

১০ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:০৯

হাবিব বলেছেন:





আপা, আপনার মন্তব্য আগেই পড়েছিলাম। উত্তর দিতে লেট হলো বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

ছোটবেলা থেকেই মায়ের খুব কাছাকাছি থাকতাম। বলতে পাড়েন আচল তলে। খাবার শেষে কিংবা গোছলের পর মায়ের আচলই ছিল আমার জন্য তোয়ালে। আমার কোন বোন না থাকায় মায়ের সাথে ঘরের সব কাজ করতাম। ঘর গোছানো থেকে শুরু করে রান্না, থালা-বাসন পরিষ্কার, সব কিছুতেই মায়ের কাজে সাহায্য করতাম। সেই সুবাদে মায়ের সাথে গল্প করতাম। মা আমাকে কাছে বসিয়ে গল্প করতেন। মা সব সময় বলতো একটা মেয়ের শখ ছিলো, কিন্তু আমি হওয়াতে নাকি সে ছেলে মেয়ে দুটিই পেয়েছে।

মায়ের কষ্টের কথাগুলোতে চোখ ভিজে উঠতো আমার। খেয়াল করতাম মায়ের গলাটাও গল্পের ফাঁকে ভারি হয়ে উঠতো।

সে সব কথা মনে থাকবে আজীবন। এখন ভাতের কষ্ট দূর হয়েছে। ছোটখাটে একটা চাকরী করি। ভার্সিটি শেষ করেছি বেশিদিন হয়নি। আশা করছি দিন আমাদের ফিরবে। মা-বাবাকে একটু আরামে রাখতে পারার ইচ্ছা পূরন হবে একদিন।

আমাদের জন্য আপনার মন থেকে যে আগ্রহ ইচ্ছা প্রকাশ পেল তাতে আমি খুবই কৃতজ্ঞ। কখনো যদি কোন প্রয়োজন পড়ে অবশ্যই নক করবো আপা। ভালো থাকবেন সবসময়।

আপনার ইচ্ছাও পূরণ হোক।

১৭| ১০ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৪৮

জুন বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেল হাবিব স্যার । আসলে আমাদের সমাজে এক সময় নারী শিক্ষার চলন খুব কমই ছিল । তাদের কথা ভাবলে অনেক খারাপই লাগে । আপনার মায়ের কথা পড়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল, লিখেছেনও খুব আবেগ নিয়ে । এখন উনি ভালো আছেন তো ?

১০ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৫৪

হাবিব বলেছেন:




আপা, সে সময়টাতে মুখে দু' বেলা আহার জোটানোই অনেক কষ্টের ছিলো। লেখাপড়া করা মানে তখন বিলাসিতা। তারপরও বাবার বাড়ি থাকলে হয়তো অক্ষরজ্ঞান কিছুটা শেখা হতো।

আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। চেষ্টা করি ভালো রাখার। ভালো একটা জব পেলে তাদের মা-বাবার জন্য কিছু করতে পারবো আল্লাহ চাইলে। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।

জুন আপা, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ রইলো। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.