![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিক্রিয়ায় বিক্রিত একটি মনুষ্য আমি। মনুষ্য হয়ে জন্মেছি মনুষ্যকে ভালবেসে বরণ করে বেঁচে আছি।সৃষ্টিকর্তার লীলায় ঘেরা এই পৃথিবীতে,রোজ সকালে যখন প্রাকৃতিক নেশাগ্রস্থ অবস্থায় চোখ মিট মিট করে সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে দেখি, তখন বুঝতে পারি স্বপ্ন দেখার মনটি এখনো নুয়ে পরে নি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে আরোও একবার সৃষ্টির স্বাধ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন।অলস দুপুরে ঘামের পানি গুলো টপ টপ করে তখন একটু ছায়ার আশায় নিবৃত্ত থাকি , বটতলায় দাড়িয়ে থাকা শিশু গাছটি তার ঢাল পাতা দিয়ে আমায় সূর্যি মামার রাগান্বিত রুপ থেকে রক্ষা করে।দিনশেষে আমরা সবাই একা, সূর্যি মামাও তার কোমল রুপে আমাদের ত্যাগ করে । জীবন জাগ্রত থেকে জাগ্রত হই স্বপ্ন দেখার।হইতো বা দুনিয়ার পাঠশালার সাথে সামলে নিতে না পেরে এই এসিড একদিন উবে যাবে।হইতো বা দুনিয়ার এই এসিডের বিক্রিয়া সকল বিক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। সবই আমরা সৃষ্টির লীলা খেলায় বেঁচে থাকার তীব্র চেষ্টায় উজ্জীবিত থাকি এক সত্যেকে আঁকড়ে ধরে
প্রথম দেখা হতেই তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। কেন জানি না আমার দু'চোখ পানিতে ভরে গেল। আমি নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না। তিনি এক সন্তানহারা মা আর আমি এক মা -বাবা ভাই হারা, ব্যথিত হৃদয় নিয়ে তাঁর কাছে গিয়েছি। কেউ কাউকে সান্তনা দিতে পারি না। কোন কথা বলতে পারছি না। শুধু চোখের পানির মধ্য দিয়েই না বলা অনেক কথা যেন বলা হয়ে গেল। উনি আমাকে শোবার ঘরে নিয়ে বসালেন। অনেকক্ষণ দুজন দুজনকে ধরে কাঁদলাম। উনি আমাকে বললেন " তোমার মনকে আরো শক্ত হতে হবে " অনেক কঠিন দায়িত্ব তোমার।
আমি তাঁর দোয়া চাইলাম। সমব্যথার ব্যথী একসাথে হয়েছিলাম।
৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে প্রথম জনসভা হল। উনি আমাকে সেই সভায় বক্তব্য রাখতে আহবান করলেন এবং জনসমাগম যাতে ভাল হয় তার জন্য ব্যবস্থা করতে বললেন।
তারপর গণ-আদালত , ঘাতক দালাল নির্মূল সমন্বয় কমিটির আন্দোলন চলাকালীন তিনি যখনই আমার কাছে ছুটে এসেছেন, তাঁর মধ্যে আমি দৃঢ়তা দেখেছি।
তিনি সবসময় বলতেন , ' আমি তোমার সাহায্য ছাড়া এগোতে পারবো না। যে যত কথা বলুক , ' আমি জানি তুমি এ আন্দোলনে আমার সঙ্গে আছো।
( লেখক শেখ হাসিনা বেগম জাহানারা ইমাম কে নিয়ে: ৮৪ পৃষ্ঠা বই *শেখ মুজিব আমার পিতা )
জাহানারা ইমাম যে চেতনা জাগিয়ে দিয়ে গেছেন, আজকের প্রজন্ম এতদিন যাদের মিথ্যা স্তব্যকে ভুলেছিল - আজ তারা নিজেদের ইতিহাসকে খুঁজে বের করবে। নিজেদের আত্নপরিচয়কে চিনে নিবে - এ চেতনা তিনি জাগ্রত করে গেছেন। ( একই বইয়ের ৯০ পৃষ্টা থেকে) ।
কিছু মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসা এমনেই জাগে। আমৃত্যু যিনি লড়ে গেছেন ঐ নরপশুদের বিরুদ্ধে, আর মৃত্যুর আগে যার কাঁধেচাপানো হয়েছিল দেশদ্রোহী মামলা!
৭৫ এর পর বাঙালি তার অতীত ভুলে যায়, একে একে দালাল আইন উঠিয়ে ফেলা হয়। গোলাম আযমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। সাম্প্রদায়িক বিষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। আর এর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ যে করে তিনিই আমাদের শহীদ জননী জাহানারা ইমাম।
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যদিন আজ। আর আমরা ফিরে পেয়েছি পেয়েছি 'জয় বাংলা ' স্লোগানের স্পৃহা। মা, আমরা তোমার পথেই হাটছি। গোলাম আযমের বিচার হয়েছে এই বাংলায়, আমরা পেরেছি।
বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা তাঁর বইয়ে যে কথা লিখেছেন তার প্রত্যক শব্দের মধ্যে আছে একজন বাঙালি মায়ের তেজ প্রতিবাদী চেতনা।
আর আমরা ভুলে নি, ভুলব না। শহীদ জননী তুমিই জাগিয়েছিলে আমাদের সেই ' জয় বাংলার ' চেতনা।
©somewhere in net ltd.