নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিক্রিয়ায় বিক্রিত মনুষ্য।

হাইড্রোক্লোরাইড এসিড

বিক্রিয়ায় বিক্রিত একটি মনুষ্য আমি। মনুষ্য হয়ে জন্মেছি মনুষ্যকে ভালবেসে বরণ করে বেঁচে আছি।সৃষ্টিকর্তার লীলায় ঘেরা এই পৃথিবীতে,রোজ সকালে যখন প্রাকৃতিক নেশাগ্রস্থ অবস্থায় চোখ মিট মিট করে  সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে দেখি, তখন বুঝতে পারি স্বপ্ন দেখার মনটি এখনো নুয়ে পরে নি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে আরোও একবার সৃষ্টির স্বাধ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন।অলস দুপুরে ঘামের পানি গুলো টপ টপ করে তখন  একটু ছায়ার আশায় নিবৃত্ত থাকি , বটতলায় দাড়িয়ে থাকা শিশু গাছটি তার ঢাল পাতা দিয়ে আমায় সূর্যি মামার রাগান্বিত রুপ থেকে রক্ষা করে।দিনশেষে আমরা সবাই একা, সূর্যি মামাও তার কোমল রুপে আমাদের ত্যাগ করে । জীবন জাগ্রত থেকে জাগ্রত হই স্বপ্ন দেখার।হইতো বা দুনিয়ার পাঠশালার সাথে সামলে নিতে না পেরে এই এসিড একদিন উবে যাবে।হইতো বা দুনিয়ার এই এসিডের বিক্রিয়া সকল বিক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। সবই আমরা সৃষ্টির লীলা খেলায় বেঁচে থাকার তীব্র চেষ্টায় উজ্জীবিত থাকি এক সত্যেকে আঁকড়ে ধরে

হাইড্রোক্লোরাইড এসিড › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মাটি, আমার মা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

আমাদের মাটি, আমাদের মা,  আমাদের একটি দেশ! !!" আহ সেই ১৯৭১.... । ৭১ সালের কথা শুনলে আজকাল প্রজন্মের  কিছু আসে যাই না  , পাকিস্তান এবং জারস জামাতের প্রতি আজকাল তাদের মনের মধ্যে  নরম জায়গা হয়েছে।
ভুল তাদের নয় , ভুল তো আমাদের। বছরের বছর মুক্তিযুদ্ধকে  চিড়িয়াখানার জন্তুজানোয়ারের মতো আটকে রেখেছি, কেউ জানতে চাইনি ৭১ সালটা আসলে কি?
একজন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা হয়ে উঠার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান    কার ছিল? ? কেন বা তারা অস্ত্র ধরেছিল। সেটার উত্তর একটাই পবিত্র শব্দে আকড়ে আছে 'মা '।
আর এইরকম কিছু মাকে খুঁজে পেলাম    যারা সেদিন   তাঁদের ছেলেদের বলেছিল, 'যা তোরা যুদ্ধে যা '।


শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। একজন মা। তাঁর বিখ্যাত লিখা,  ৭১ এর দিনগুলিতে তিনি লিখেছেন, রুমি
যখন তার মায়ের কাছে এসে মুক্তিযুদ্ধে যেতে
চাইল তখন তিনি বলেছিল "যা তোকে দেশের
জন্য কোরবানী করে দিলাম”।এই শেষ কথাটার
জন্য জাহানারা ইমাম সারা জীবন আফসোস
করেছেন।
মহান আল্লাহ তালা, তাঁর কথাটি কবুল করে ফেলেছিলেন। ঢাকার সেই  পাগলা ছেলেগুলো ধরা পরেছিলেন পাকিস্তানিদের হাতে এবং তাদের -নৃশ্যংশ ভাবে হত্যার পিছনে প্রত্যক্ষ ভাবে হাত ছিল রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযম সহ জামাত্যা জারসরা।
আরেক ক্রেক যোদ্ধা শহীদ আজাদ,  ছেলেটার সাথে পরিচয় আনিসুল হকের 'মা ' বইটির মাধ্যমে।


শহীদ আজাদ ছিলেন ঢাকা শহরের সেই সময়
সব থেকে ধনী ইউনুশ আহমেদের একমাত্র পুত্র।
বিপুল অর্থবিত্তের ভিতর বড় হলেও আজাদ
জীবনে তার মাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছে।
শহীদ আজাদ ঢাকায় গেরিলা অপারেশনে
অংশগ্রহন করেন। তাকে তার বাসা থেকে তার
মায়ের সামনে মারতে মারতে থানায় নেয়া
হয়। আজাদ,শহীদ জুয়েল ধরা পরার পর টর্চার
সেলে মিলিটারীদের প্রচন্ড মারে তাকে
সিলিং ফেনের সাথে উলটা করে সারা দিন
ঝুলিয়ে রাখা হয়। সারা শরীরে বেল্ট দিয়ে
পিটানো হয়। তার সারা গা রক্তাক্ত হয়ে যায়
মুখ থেকে রক্ত পরছে কিন্তু তারা কিছুই ফাঁস
করেনি।
আজাদের মনবল ভাঙ্গার জন্য মোহাম্মদ
কামজ্জামান( জাহান্নামের কীট) সাথে
করে আজাদের মাকে সামনে নিয়ে আসে।
রমনা থানায় তার মাকে বলা হয় আজাদকে
তার সিদ্ধিরগঞ্জ আর রাজারবাগ অপারেশনের
অংশ নেয়া বন্ধুদের নাম ঠিকানা বলতে আর
অস্র কোথায় লুকিয়ে রেকেছে তা বলতে।
কিন্তু তাদের সামনেই আজাদের মা পুত্রকে
সাহস দিয়ে বলে "বাবা রে, যখন মারবে, তুমি
শক্ত হয়ে থাকো। সহ্য কোরো। কারো নাম যেন
বলে দিও না।
আজাদ সেই রাতে থানায় মাকে বলল, "মা,
ভাত খেতে ইচ্ছা করে, দুই দিন ভাত খাই না।
কালকে ভাত দিছিল , আমি ভাগ পাই নাই”
আজাদের মা পরের দিন টিফিন ক্যারিয়ারে
করে ভাত, মাংস, আলুভর্তা, বেগুনভাজি হাতে
নিয়ে মা সারা রাত থানার সামনে
দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু তাকে জানান হয়
আজাদ রমনা থানায় নেই । উনি সারা রাত এক
থানা থেকে আরেক থানা, এমপি হোষ্টেল,
কেন্টরম্যান্ট খুজেও কোথাও আজাদকে
পাওয়া যায় নি। আজাদকে আর কখনও খুজে
পাওয়া যায় নি।
স্বাধীনতার যে ১৪ বছর আজাদের মা সাফিয়া
বেগম বেঁচে ছিলেন তিনি সারা দিন দরজার
কাছে দাঁড়িয়ে থাকতেন। ডাকপিয়ন আসলে
দৌড়ে যান তার ছেলের কোনও চিঠি আছে
নাকি দেখতে। একটু শব্দ হলে তার বুক কাঁপত। তখন
শেষ বার সেলে আজাদকে দেখেছিলেন
আজাদ মাটিতে শুয়ে ছিল। মাটিতে খালি
একটা পাটি ছিল কোন বালিশ ছিল না।
আজাদের মা ওই দিনের পর থেকে কোন দিন
বিছানায় ঘুমান নি। উনিও মাটিতে পাটি
বিছিয়ে ঘুমাতেন। আজাদ মৃত্যুর আগে ভাত
খেতে পারে নি তাই তার মা বাকি জীবনে
কোন দিন ভাত খাননি। সুদীর্ঘ ১৪ বছর খালি
রুটি খেয়েছেন দুইবেলা কখনো একবেলা শুধু
পানিতে চুবিয়ে। ৩১সে আগষ্ট,১৯৮৫ আজাদের
এই রত্নগর্ভা নারীর শেষ
নিশ্বাস ত্যাগ করে। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো সেই আমলের সরকার গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে এই পবিত্র মাটিতে নিয়ে আসে। তার কবরে তার ইচ্ছা
অনুযায়ি খালি একটা লাইন লিখা, শহীদ
আজাদের মা”।
প্রজন্ম এটাই বাঙালি মা আর ছেলের সম্পর্ক।  মায়ের কথা সেদিন ছেলে রেখেছিল মুক্তিযুদ্ধের গোপন তথ্য সে সেইদিন কাউকে দেই নি,তাকে মরতে হয়েছে।
আর আল্লাহর কৃপায় আজ আমরা ঐ কামরুজ্জামানের নষ্ট দেহ ফাসির দড়িতে ঝুলাতে পেরেছি।


মেজর রফিককে সবাই চিনেন। ৭১ সালে তাঁর নেতৃত্ব বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ করে ২৪ মার্চে চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ প্রথম শুরু হয়। ৭১ সালে তিনি এক মায়ের দেখা পান  অদ্ভুত এক অবস্থায়।  চারদিকে মানুষের মাংশ পিন্ড,  বোমা পরে আছে। কিছু মহিলা দৌড়াদৌড়ি করছে। একজন
কিশোরের দ্বিখন্ডিত দেহ পরে থাকতে দেখে
উনি থামলেন। একজন মা খুব শান্ত ভাবে সেই
মৃত ছেলের লাশের দিকে একমনে চেয়ে
আছেন। সেই দুঃখি মা চোখ মুছে তাকে
দেখে জিজ্ঞাসা করলেন "তোমরা কারা?
তিনি উত্তর দিলেম "মা, আমরা আপনার
ছেলে”। ছেলের দ্বিখন্ডিত দেহের সামনে
তখন তার মা আল্লার কাছে হাত তুলে
মোনাজাত করল "আল্লাহ আমার প্রানপ্রিয়
ছেলেটিকে নিয়ে গেচ্ছিস সে জন্য আমার
কোন অভিযোগ নেই, আমার ছেলের প্রানের
বিনিময়ে আমি এখন শুধু এই ছেলেটার জন্য
দোয়া চাইছি যারা এই দেশের স্বাধীন তার
জন্য যুদ্ধ করছে”। এই কথাটা তাদের সাহস মনোবল
অনেক বৃদ্ধি করেছিল। পরে মুক্তিযোদ্ধা রফিক
যখন গুলিবিদ্ধ হল তখন তিনি বলছিলেন আল্লাহ
তুমি এক দুঃখি মায়ের মায়ের দোয়া কবুল কর।
আমার আল্লাহ সেদিন দোয়া কবুল করেছিল আর আমরা হারিয়ে দিয়েছিলাম পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীকে যাদের পক্ষে ছিল আমেরিকা এবং চীন।


৭১ সালে গাজী বেশে ফিরে আশা এক মুক্তিযোদ্ধা চট্টগ্রাম ভার্সিটি পড়ুয়া গোলাম মোস্তফা।  একাত্তরে গোলাম মুস্তফা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। যুদ্ধে যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন দেশের তাগিদেই। মায়ের প্রিয় ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায়ও নিজ হাতে খাবার তুলে দেন মা। দেশপ্রেমের অমোঘ টানে হানাদারবধে সেই মুস্তফাই যোগ দিতে চান যুদ্ধে। শুনেই কেঁপে উঠলো মায়ের মন। তবু বাঁধা দিলেন না কিছুতেই। যাবি? যাহ, ফ িরে আসবে বীরের বেশে। যাবার আগে মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করবার সময় মুস্তফা অনুভব করে তার মাথার চুল ভিজে যাচ্ছে মায়ের চোখ থেকে ঝরঝর করে পড়া পানিতে। আর এদিকে ছেলের চোখের পানি এসে পড়ছে মায়ের পায়ে। মা জানেনা ছেলে আর ফিরবে কিনা, পুত্র ভাবছে এটাই কি শেষ দেখা তার মমতাময়ী মায়ের সাথে? একবার কল্পনা করুনতো পুত্র আর মায়ের নিঃশব্দ এই কান্নার দৃশ্যটুকু। ভাবা যায়? এতদিন ধরে যে ছেলেকে নিজ হাতে খাইয়েছেন, স্কুলে পাঠিয়েছেন, বড় করেছেন, সেই ছেলেকেই আজ ঠেলে দিচ্ছেন নিশ্চিত মৃত্যুর পথে? ফেণী মুক্ত হলো ৬ই ডিসেম্বর। বিজয়ী এক বীরের বেশে ফিরে এলেন মুস্তফা মায়ের কোলে। মুস্তফা এখন আর ছোট নয়, মৃত্যু, হত্যা আর জয়ের যুদ্ধ মুস্তফাকে করেছে পরিণত। একদিন হঠাত বাড়ীতে চালের মটকার (বড় পাত্র) ভেতর মুস্তফা আবিষ্কার করে বসলেন অদ্ভুত এক দড়ি। কিছু দূর পর পর গিট দেওয়া সে দড়িতে। টান দেওয়ার পর সে দড়ি বের হতেই থাকে, শেষ নেই তার। গিঁট দেওয়া প্যাঁচানো চিকন সেই দড়িটি মাইলখানেক তো অন্তত হবেই। অদ্ভুত এই জিনিসটি মায়ের সামনে আনতেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে মা। মা যে কিছু লুকোতে চাচ্ছে মুস্তফার তা চোখ এড়ায় না। অবেশেষে মুস্তফার চাপাচাপিত বাধ্য হয়ে মা বললেন, "বাবারে, আল্লাহর কালাম মিথ্যা হতে পারে না।" মুস্তফা যাওয়ার পর তার মা সারা রাত-দিন শুধু দুয়া পড়তেন। এক হাজারবার দুয়া সম্পন্ন হবার পর ছোট সেই দড়িতে একটি গিঁট দিতেন, আর ভাজ করে রাখা পুরো দড়িটি ছিল মাইলখহানেক লম্বা। ছেলে যাবার পর ন'মাসে মা শুধু বসে বসে ছেলের জন্য দুয়া আর ইবাদাতই করেছেন চোখের পানি ফেলে, আর কিছুই তার করা হয়নি। মায়ের ভালবাসা যে কি জিনিস, বুঝতে বাকি রইলো না মুস্তফার মোটেও।

পেয়েছি একটা 'জয় বাংলা ' স্লোগান। লক্ষ লক্ষ বাঙালি মায়েদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি দেশ। বিজয়ের এত বছর পরও আজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ঐ নরপশু জামাতিরা। তারা সক্ষম হচ্ছে যে চার নীতির উপর (গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ,জাতীয়তাবাদী   ,ধর্মনিরপেক্ষতা) ভর করে বাংলার দামাল ছেলেরা যুদ্ধ করেছিল সেগুলোকে ছিড়ে খাচ্ছে ঐ পশুরা।  নতুন এক উদ্দীপনা নিয়ে বলছি মুক্তি যুদ্ধ শেষ হই নি,  ঐ মায়েদের নামে শপথ নিয়ে বলছি
"আমার মাটি আমার মা    ,রাজাকারের হবে না "।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: মা ও মাটিকে নিয়ে অসাধারণ একটা পোষ্ট।
রুমি, আজাদের কথা আগেই পড়েছি, চট্টগ্রামের মুস্তফার কথা জেনে ভাল লাগল।
মুস্তফা যাওয়ার পর তার মা সারা রাত-দিন শুধু দুয়া পড়তেন। এক হাজারবার দুয়া সম্পন্ন হবার পর ছোট সেই দড়িতে একটি গিঁট দিতেন, আর ভাজ করে রাখা পুরো দড়িটি ছিল মাইলখহানেক লম্বা। ছেলে যাবার পর ন'মাসে মা শুধু বসে বসে ছেলের জন্য দুয়া আর ইবাদাতই করেছেন চোখের পানি ফেলে, আর কিছুই তার করা হয়নি। মায়ের ভালবাসা যে কি জিনিস, বুঝতে বাকি রইলো না মুস্তফার মোটেও।

১৩ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:১৮

হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, লিখাটা পড়ার জন্য

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৬

বাকের ভাই রিটার্ন বলেছেন: মাকে নিয়ে লেখা সাথে মাটির ঘ্রান,ভাল লিখেছিস,চালিয়ে যা।শুভকামনা রইল তোর জন্য।

৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:২০

হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: দোয়া করেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.