![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিক্রিয়ায় বিক্রিত একটি মনুষ্য আমি। মনুষ্য হয়ে জন্মেছি মনুষ্যকে ভালবেসে বরণ করে বেঁচে আছি।সৃষ্টিকর্তার লীলায় ঘেরা এই পৃথিবীতে,রোজ সকালে যখন প্রাকৃতিক নেশাগ্রস্থ অবস্থায় চোখ মিট মিট করে সৃষ্টির দিকে তাকিয়ে দেখি, তখন বুঝতে পারি স্বপ্ন দেখার মনটি এখনো নুয়ে পরে নি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে আরোও একবার সৃষ্টির স্বাধ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন।অলস দুপুরে ঘামের পানি গুলো টপ টপ করে তখন একটু ছায়ার আশায় নিবৃত্ত থাকি , বটতলায় দাড়িয়ে থাকা শিশু গাছটি তার ঢাল পাতা দিয়ে আমায় সূর্যি মামার রাগান্বিত রুপ থেকে রক্ষা করে।দিনশেষে আমরা সবাই একা, সূর্যি মামাও তার কোমল রুপে আমাদের ত্যাগ করে । জীবন জাগ্রত থেকে জাগ্রত হই স্বপ্ন দেখার।হইতো বা দুনিয়ার পাঠশালার সাথে সামলে নিতে না পেরে এই এসিড একদিন উবে যাবে।হইতো বা দুনিয়ার এই এসিডের বিক্রিয়া সকল বিক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। সবই আমরা সৃষ্টির লীলা খেলায় বেঁচে থাকার তীব্র চেষ্টায় উজ্জীবিত থাকি এক সত্যেকে আঁকড়ে ধরে
'বাবা আল্লাহর নাম নিয়ে তুমি কোরআন তেলাওয়াত করো। আল্লাহ তোমাকে পাঠিয়েছেন এই কোরআন তেলয়াওয়াতের জন্য'
--- অধ্যাপক ইউসুফ আলী ১৭ এপ্রিল ১৯৭১।
মেহেরপুরে স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকারের শপথ বাক্যের সময় এই কথা বললেন।
বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ বাক্য পাঠ করানো হবে। চারপাশে আনন্দের রব রব।
উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, স্বরাষ্ট্র ও ত্রাণ মন্ত্রী কামরুজ্জামান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্ডকার মোস্তাক এবং প্রধান সেনাপতি ওসমানী এলেন আনুষ্ঠানিক শপথ অনুষ্ঠানে সকালে।।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হবে পবিত্র কোরআন শরীফ তেলওয়াতের মাধ্যমে।। কিন্তু সেখানে কোন ক্বারি, মাওলানা, ইমাম বা হুজুর পাওয়া গেলো না। কারণ কি জানেন? এটা নাকি বিধর্মী, কাফের মুরতাদের ইন্ধনের হচ্ছে। কোন মতে পাওয়া গেলো না কোন হুজুর।। চারদিকে উৎসুক জনতার ভীড় , সবাই দেখতে এসেছে তাদের প্রথম সরকারকে। দেশি বিদেশী সাংবাদিক, ইস্ট বেঙ্গল রাইফেলের সদস্যরা কড়া নিরাপত্তা হিসেবে রয়েছে।
কিন্তু এমন ক্রাইসিস অবস্থায় কে পবিত্র কোরআন পাঠ করবে? ভীড়ের মধ্যে থেকে জনতা এক সুদর্শন কিশোর কে তুলে নিয়ে আসলো। বয়স কত আর? ১৫ বা ১৬ কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র।
অধ্যাপক ইউসুফ আলী তাকে গ্রহণ করলেন এবংমাইকে দাঁড়িয়ে বললেন 'বাবা তোমাকেই এই কাজ করতে হবে '।
ছেলের নাম বাকের আলী, সে এসেছে মিছিল করে বাংলাদেশের নব গঠিত সরকার দেখতে।
এখন তারই সুরেলা কন্ঠ ধ্বনিতে পাঠ হলো পবিত্র কোরআন শরীফ।।।
বিবিসি, আকাশ বাণি, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গুলো যখন শপথ বাক্যের অনুষ্ঠানের ঘটনা প্রচার করলো ,ঠিক তখনই আকাশপথে স্থল পথে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে এলো পাক সেনারা। মেহেরপুরের কেয়ামতের দিন এলো ২৭ এপ্রিল।। পাক আর্মির বিরাট বাহিনী এগিয়ে আসতে থাকে ধ্বংশ চালাতে থাকে চারদিকে তাদের ক্ষোভ ঐ একজায়গায় কোন সাহসে তারা সরকার গঠন করলো মেহেরপুরে!
এমন কোন বাড়ি ছিলো না সেদিন যেখানে রক্তের দাগ দেখা যায় নি, হত্যা শুধুমাত্রই হত্যা। এক নীতিতে পাকিরা এগিয়ে গেলো।।
কিভাবে যেন পাকিরা জানতে পারলো যে বাকের নামে এক কিশোর ছেলে স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেছিলো। তাকে ধরা হলো, কিন্তু না তাকে গুলি করা হলো না উপহাস করে তাকে মারতে হবে নির্মম ভাবে।।
কোরআন তেলওয়াতের অপরাধে তাকে ধরার প্রথমে জিজ্ঞাসা করা হলো :
>তুই মুসলমান কিনা....
>খোল লুঙ্গি খোল, মুসলমানি হইছে কিনা দেখা ...
ভাগ্যের পরিহাস শুধুমাত্র সে স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন দেখতো এই কি তার অপরাধ? পবিত্র কোরআন পাঠ করেছে এই কি তার অপরাধ?
তাকে আমগাছের গুঁড়িতে বাধা হলো, ছুরি দিয়ে তার শরীরে চিরে দেওয়া হলো এরপর সেখানে দেওয়া হলো লবণ এবং মরিচ। যন্ত্রণায় কাতর বাকের তার মুখস্থ সব সূরা পাঠ করতে লাগলো,
না তাকে মারতে হবে আরো পাশবিক ভাবে একেবারে নতুন কায়দায়। । স্থানীয় রাজাকারদের (জামাতের রাজনীতিতে যুক্ত) সাহায্য নিয়ে পাক সেনারা শত শত পিঁপড়ার বাসা ভেঙ্গে ছড়িয়ে দিতে থাকে বাকেরের শরীরে, প্রায় দু ঘন্টা চলছে এই অত্যাচার। একসময় লক্ষ লক্ষ পিঁপড়ার আবরণে ঢেকে যায় তার মুখ। পাকি সেনারা বলতে থাকে, 'তুঝছে গুলিছে নেহি মারুঙ্গা, বুলকে চুটিয়েছে খাওয়াঙ্গা '।।
একসময় নির্জীবতা দেখে পাকিরা ভাবে, এই বার মরছে। তাই তারা চলে যায়, এই ফাঁকে গ্রামের কিছু দু:সাহসী ছেলে অর্ধমৃত বাকেরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।। যখন বাকের কে তারা পাই তারা দেখে একটি পিঁপড়া ও বাকেরের পবিত্র শরীরকে কামড়াইনি। । মহান আল্লাহতালা হইতো সেদিন তার বান্দাকে রক্ষা করেছিলো সে কুৎসিত পাকি হায়েনাদের অত্যাচার থেকে।।
৭১ এর ইন্টারের ছাত্র বাকের বহু কষ্টে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স করেছিলো, কিন্তু দরিদ্র কৃষক সন্তান বাকের টাকার অভাবে এমএ আর পড়তে পারলো না।। চাকরির জন্য স্বাধীন বাংলার রাস্তায় তাকে ভিখারির মতো ঘুরতে হয়েছে।।। এই মূহুর্তে বাকের কোথায় কিভাবে আছে আমার জানা নেই, যদি বেঁচে থাকেন হইতো ভাবছেন স্বাধীন বাংলায় আমরা কি না দেখেছি? আজব দেশে রাজাকাররা দেশ শাসন করেছে আর মুক্তিযুদ্ধের কথা বললে প্রজন্ম অদ্ভুত আড় চোখে তাকিয়ে থাকে। । জানি না স্বাধীন ,মুক্তিযুদ্ধ এই সব কার কাছে কি? শুধু বলতে জানি 'জয় বাংলা এবং শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর জয় বাংলা '।
[ তথ্যসূত্র :আজকের কাগজ, ১৮।৪।১৯৯৪ ইং]
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০১
হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদেরই জানাতে হবে
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১০
আজমান আন্দালিব বলেছেন: সন্ধান করা উচিত এই বীরের।
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০২
হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: ফেসবুকে লিখাটা শেয়ার করার পর একজন বলল, তিনি এখনো বেঁচে আছেন একজন শিক্ষক হিসেবে, খুবই সাধারণ জীবনযাপন করে
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১
আজমান আন্দালিব বলেছেন: সন্ধান করা উচিত এই বীরের।
১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫
হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: অবশ্যই। যতটুকু জানি উনি এখন শিক্ষক
৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:১০
যোগী বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম। অনেক রেয়ার একটা স্টেটমেন্ট!
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯
হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।।।
৫| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৪০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
স্বাধীনতার এমন ঘটনা কেন চাপা পড়ে থাকে ?
কেন বাকের ভাইদের রাষ্ট্র সম্মান দিলনা ? ওনাকে সেলুট।
এরকম বীরদের খুজে বের করে তাদের দায়িত্ব রাস্ট্রের নেয়া উচিৎ।
ধন্যবাদ এরকম ইতিহাস তুলে ধরার জন্য।
১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫১
হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: আমাদের ইতিহাস আমাদেরই একমাত্র তুলে আনতে হবে
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০১
সাকিব৭৮৯ বলেছেন: চোখে পানি ধের রাখতে পারলামনা। ধন্যবাদ লেখককে