নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় ছাত্র। মাঝে মাঝে লেখালেখি করি। প্রবন্ধ, কবিতা, গল্প প্রভৃতি।

সিদ্দীকিয়া সংসদ

ছাত্র

সিদ্দীকিয়া সংসদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরীক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা

০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৩২

পরীক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা
মুল : আল্লামা আলী তানতবী রহ.
বাংলায় অনুবাদঃ মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান

কিছুদিন পূর্বে মাগরিবের আগের আমার এক বন্ধুর সাথে সাক্ষাত করলাম। কিছুক্ষণ পর তার ছেলে এসে আমাকে সালাম দিল। ছেলেটির শরীর ফ্যাকাশে হয়েছে এবং তার মধ্যে দূর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে। আমি তাকে বললাম, ভালো, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন।
তার বাবা বলল- না, তার কিছু হয়নি। সে একটু ঘুমিয়েছিল তো।
আমি বললাম, সে অসময়ে ঘুমিয়েছিল কেন?
সে বলল- অধিক রাত জাগার কারণে। সে প্রতি রাতে দু’টা পর্যন্ত সজাগ থাকে।
আমি বললাম- কেন?
সে বলল- সে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে?
আমি বললাম- আল্লাহ হেফাজত করুক। এটি হলো পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। আমার শিক্ষাজীবনে আমি অসংখ্য পরীক্ষা দিয়েছি। কোন পরীক্ষায় আমি অকৃতকার্য হয়নি; বরং প্রত্যেক পরীক্ষায় আমি ভালো ফলাফল অর্জনকারীদের সাড়িতে ছিলাম। এজন্য আমি এক ঘন্টাও রাত্রি জাগরণ করেনি। বরং অন্যান্য দিনের চেয়ে পরীক্ষার দিনগুলোতে অধিক ঘুমিয়েছি।
তখন ছেলেটি অবাক হলো এবং বললো- আপনি বেশি ঘুমিয়েছিলেন?
আমি বললাম- হ্যাঁ। কেন নয়? তুমি কি কোন ক্রীড়াবীদ, মুষ্ঠিযোদ্ধা বা মল্লযোদ্ধাকে দেখেছ? তারা কি প্রতিযোগিতার রাতসমূহে জেগে জেগে শরীরকে প্রস্তুত করে, না কি তারা সে দিনগুলোতে ঘুমায়, খায় এবং বিশ্রাম নেয়? যাতে করে তারা প্রতিযোগিতায় সতেজ ও শক্তিশালী হয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে।
এজন্য আমি পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ১ম উপদেশ হিসাবে বলি যে, তারা যেন ভালো ভালো খাবার খায় এবং প্রতিদিন আট ঘন্টা করে ঘুমায়।
সে বলল- কিন্তু সময়?
আমি বললাম- সময়তো ব্যাপক। বিশ্রামরত অবস্থায় এক ঘন্টা পড়া ক্লান্ত ও তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় চার ঘন্টা পড়া থেকে তোমাকে অধিক ফায়দা দিবে। মনে করতেছ- তুমি পড়া মুখস্থ করেছ; কিন্তু কোন পড়া তোমার মুখস্থ হয়নি?
সে বলল- এটি যদি ১ম উপদেশ হয়, তাহলে ২য় উপদেশ?
আমি বললাম- তুমি আগে নিজেকে জানো। তারপর তুমি বুঝবে যে, কিভাবে তুমি পড়বে? কিছু ছাত্র আছে, যাদের রয়েছে দর্শননির্ভর মুখস্থশত্তি। তারা দেখে দেখে পড়ে বেশি মুখস্থ করতে পারে। পরীক্ষার সময় সে বইয়ের পৃষ্ঠা এবং সেখানকার প্রশ্ন হুবহু মনে করতে পারে।
আবার কিছু ছাত্র, যাদের রয়েছে শ্রবণনির্ভর মুখস্থশক্তি। যারা শুনে শুনে বেশি মুখস্থ করতে পারে। সে উস্তাদের কথা হুবহু মনে রাখতে পারে।
যদি তুমি ১ম দলের হও; অর্থাৎ দেখে দেখে বেশি মুখস্থ করতে পার, তাহলে একা একা পড়।
আর যদি তুমি ২য় দলের হও, তাহলে তুমি তোমার মত কোন এক বন্ধুর সাথে পড়। সে তোমাকে পড়ে পড়ে শোনাবে।
সে বলল- কিভাবে আমি নিজেকে চিনব?
আমি বললাম- আমি ১০ টি শব্দ লিখব। যেগুলোর পরস্পরের মাঝে কোন সম্পর্ক নেই। যেমনঃ বই, মিনার, হারুনুর রশিদ প্রভৃতি। তারপর এগুলো তোমার সামনে একবার পড়ব। এবার তুমি তোমার স্মৃতি থেকে শব্দগুলো লিখবে।
আবার আমি অনুরূপ কিছু শব্দ লিখব এবং তোমাকে এক নজর দেখাব। এরপর তুমি তোমার স্মৃতি থেকে শব্দগুলো লিখবে।
এখন যদি তুমি শুনে শুনে বেশি মুখস্থ করতে পার, তাহলে তুমি ২য় দলের। না হলে, তুমি ১ম দলের।
সে বলল- ৩য় উপদেশ?
আমি বললাম- তুমি বিভিন্ন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য করে একটি রুটিন তৈরি করবে।
আমি পড়ার জন্য সর্বোত্তম যে পদ্ধতি পেয়েছি, তা হলো- হাতে একটি কলম নিয়ে পুরো কিতাব দ্রতগতিতে একবার পড়বে। গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য দেখলে আন্ডারলাইন করবে। অপ্রয়োজনীয় টিকা-টিপ্পনীর নিচে হালকা দাগ দিবে। সমন্বিত অনুচ্ছেদের প্রতি তীর চিহ্ন দিবে। এরপর পুনরায় পড়া শুরু করবে। কিতাব সাথে নিয়ে নির্জন রাস্তায় হাটবে এবং কিতাবের অধ্যায়গুলো একটার পর একটা তোমার স্মৃতিতে হাজির করবে। মনে করবে, তুমি পরীক্ষার হলে আছো? যখন তুমি পাঠগুলো তোমার স্মৃতিতে মুখস্থ পাবে, তখন সেগুলো বাদ দিবে। যখন তোমার স্মৃতিতে সেগুলো পাবে না, তখন তুমি কিতাব খুলবে এবং ঐ অনুচ্ছেদটি ও যেগুলোতে তুমি চিহ্ন দিয়েছিলে শুধুমাত্র সেগুলো পাঠ করবে। যা ভুলে গিয়েছিলে, সেগুলো স্মরণ করবে।
যখন কোন কিছু স্মরণ করতে পারবে না, তখন পুরো পাঠটি আবার পড়া শুরু করবে।
যখন তুমি কোর কিছু স্মরণ করতে পারবে না, তখন পুরো পাঠটি আবার পড়া শুরু কর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.