নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হীরক কণা

হীরক কণা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শবে বরাত ও এর দলীল ভিত্তিক প্রমাণ

০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

১৪ই শা'বান দিবাগত রাতটি হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত বা বরাতের রাত্র। কিন্তু অনেকে বলে থাকে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর কোথাও শবে বরাত বলে কোনো শব্দ নেই। শবে বরাত বিরোধীদের এরূপ জিহালতপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে বলতে হয় যে, শবে বরাত শব্দ দু'টি যেরূপ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর কোথাও নেই তদ্রূপ নামায, রোযা, খোদা,ফেরেশতা, পীর ইত্যাদি শব্দ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর কোথাও নেই। এখন শবে বরাত বিরোধী লোকেরা কি নামায, রোযা ইত্যাদি শব্দ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এ না থাকার কারনে ছেড়ে দিবে? খোদা, ফেরেশতা ইত্যাদি শব্দ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এ না থাকার কারনে মহান আল্লাহ পাক ও ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অস্বীকার করবে? মূলত শবে বরাত, নামায, রোযা , খোদা ,ফেরেশতা , পীর ইত্যাদি ফার্সী ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত। ফার্সী শব অর্থ রাত্রি এবং বরাত অর্থ ভাগ্য বা মুক্তি। সুতরাং শবে বরাত মানে হল ভাগ্য রজনী বা মুক্তির রাত।



মূলতঃ শবে বরাত এবং এর ফযীলত কুরআন শরীফ এ আয়াত শরীফ এবং অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। কুরআন শরীফ এ শবে বরাতকে লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর হাদীছ শরীফ এ শবে বরাতকে লাইলাতুন নিছফি মিন শা'বান বা শা'বান মাসের মধ্য রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।



এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ এ ইরশাদ করেন,

وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ

فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ

أَمْرًا مِّنْ عِندِنَا إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ



অর্থঃ শপথ প্রকাশ্য কিতাবের! নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন নাযিল করেছি। নিশ্চয়ই আমিই সতর্ককারী। আমারই নির্দেশক্রমে উক্ত রাত্রিতে প্রতিটি প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলো ফায়সালা হয়। আর নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী।" (সূরা দু'খান, আয়াত শরীফ ২-৫)



কেউ কেউ বলে থাকে যে, "সূরা দু'খানের উল্লেখিত আয়াত শরীফ দ্বারা শবে ক্বদর-কে বুঝানো হয়েছে। কেননা উক্ত আয়াত শরীফ এ সুস্পষ্টই উল্লেখ আছে যে, নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন নাযিল করেছি........। আর কুরআন শরীফ যে ক্বদরের রাতে নাযিল করা হয়েছে তা সূরা ক্বদরেও উল্লেখ আছে ।"



এ প্রসঙ্গে মুফাসসির কুল শিরোমণি রঈসুল মুফাসসিরীন বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেন,

" মহান আল্লাহ পাক তিনি লাইলাতুম মুবারাকাহ বলতে শা'বান মাসের মধ্য রাত বা শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি এ রাতে প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলোর ফায়সালা করে থাকেন।" (ছফওয়াতুত তাফাসীর, তাফসীরে খাযীন ৪র্থ খন্ডঃ ১১২ পৃষ্ঠা, তাফসীরে ইবনে আব্বাস,তাফসীরে মাযহারী ৮ম খন্ডঃ ৩৬৮ পৃষ্ঠা, তাফসীরে মাযহারী ১০ম খন্ড, তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে খাযিন, বাগবী, কুরতুবী, কবীর, রুহুল বয়ান, আবী সাউদ, বাইযাবী, দূররে মানছূর, জালালাইন, কামলালাইন, তাবারী, লুবাব, নাযমুদ দুরার, মাদারিক)



লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা শবে বরাতকে বুঝানো হয়েছে তার যথার্থ প্রমাণ সূরা দু'খানের ৪ নম্বর আয়াত শরীফ فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ। এই আয়াত শরীফ এর يُفْرَقُ শব্দের অর্থ ফায়সালা করা। প্রায় সমস্ত তাফসীরে সকল মুফাসসিরীনে কিরামগণ يُفْرَقُ (ইয়ুফরাকু) শব্দের তাফসীর করেছেন ইয়ুকতাবু অর্থাৎ লেখা হয়, ইয়ুফাছছিলু অর্থাৎ ফায়সালা করা হয়, ইয়ুতাজাও ওয়াযূ অর্থাৎ বন্টন বা নির্ধারণ করা হয়, ইয়ুবাররেমু অর্থাৎ বাজেট করা হয়, ইয়ুকদ্বিয়ু অর্থাৎ নির্দেশনা দেওয়া হয় । কাজেই ইয়ুফরাকু -র অর্থ ও তার ব্যাখার মাধ্যমে আরো স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা শবে বরাত বা ভাগ্য রজনীকে বুঝানো হয়েছে। যেই রাত্রিতে সমস্ত মাখলুকাতের ভাগ্যগুলো সামনের এক বছরের জন্য লিপিবদ্ধ করা হয়, আর সেই ভাগ্যলিপি অনুসারে রমাদ্বান মাসের লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদরে তা চালু হয়। এজন্য শবে বরাতকে লাইলাতুত্ তাজবীজ অর্থাৎ ফায়সালার রাত্র এবং শবে ক্বদরকে লাইলাতুল তানফীয অর্থাৎ নির্ধারিত ফায়সালার কার্যকরী করার রাত্র বলা হয়। (তাফসীরে মাযহারী,তাফসীরে খাযীন,তাফসীরে ইবনে কাছীর,বাগবী, কুরতুবী,রুহুল বয়ান,লুবাব)



সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি যে সুরা দু'খান-এ বলেছেন, " আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি " এর ব্যাখ্যামুলক অর্থ হল " আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিলের ফায়সালা করেছি "। আর সুরা ক্বদর-এ " আমি ক্বদরের রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি " এর ব্যাখ্যামুলক অর্থ হল " আমি ক্বদরের রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি "।

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি শবে বরাতে কুরআন শরীফ নাযিলের সিদ্ধান্ত নেন এবং শবে ক্বদরে তা নাযিল করেন।



হাদীছ শরীফ এ ও শবে বরাতে সমর্থন পাওয়া যায়। হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, " উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। একদা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম ! আপনি কি জানেন, লাইলাতুন নিছফি মিন শা'বান বা শবে বরাতে কি সংঘটিত হয়? তিনি বললেন, হে আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! এ রাত্রিতে কি কি সংঘটিত হয়? মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এ রাতে আগামী এক বছরে কতজন সন্তান জম্মগ্রহণ করবে এবং কতজন লোক মৃত্যূবরণ করবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়। আর এ রাতে বান্দার (এক বছরের) আমলসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পেশ করা হয় এবং এ রাতে বান্দার (এক বছরের) রিযিকের ফায়সালা হয়"। (বাইহাক্বী, ইবনে মাজাহ্, মিশকাত শরীফ)



হাদীছ শরীফ আরও ইরশাদ হয়েছে, " উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, একদা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোন এক রাত্রিতে রাতযাপন করছিলাম। এক সময় উনাকে বিছানায় না পেয়ে আমি মনে করলাম যে, তিনি হয়ত অন্য কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হুজরা শরীফ এ তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ করে উনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম। সেখানে তিনি উম্মতের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় হুজরা শরীফ এ ফিরে এলে তিনিও ফিরে এলেন এবং বললেনঃ আপনি কি মনে করেন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার সাথে আমানতের খিয়ানত করেছেন? আমি বললামঃ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ধারনা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হুজরা শরীফ এ তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি শা'বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর তিনি বণী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন"। (বুখারী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাযাহ, রযীন, মিশকাত শরীফ)



হাদীছ শরীফ এ আরও ইরশাদ হয়েছে, "হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ননা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি শা'বান মাসের ১৫ তারিখ রাত্রিতে ঘোষনা করেন যে, উনার সমস্ত মাখলুকাতকে ক্ষমা করে দিবেন। শুধু মুশরিক ও হিংসা-বিদ্বেষকারী ব্যতীত।" (ইবনে মাযাহ্, আহমদ, মিশকাত শরীফ)



হাদীছ শরীফ এ আরও ইরশাদ হয়েছে, "হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি বর্ননা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যখন অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলায় রোযা রাখবে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষাণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোন মুছিবগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে সুবহে ছাদিক পর্যন্ত ঘোষাণা করতে থাকেন।" (ইবনে মাযাহ্,মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)

হাদীছ শরীফ এ আরও ইরশাদ হয়েছে, "মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি শা'বানের মধ্য রাতে (শবে বরাত) ইবাদত করবে তারই জন্য সুসংবাদ এবং তার জন্য সমস্ত কল্যাণ"



হাদীছ শরীফ এ আরও ইরশাদ হয়েছে, "মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে এবং অর্ধ শা'বানের রাত তথা শবে বরাতের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করবে, সে ব্যক্তির অন্তর ঐদিন মরবে না বা পেরেশান হবে না যে দিন সকলের অন্তর পেরেশান থাকবে।" (মুকাশাফাতুল কুলুব)



শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, "মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, পাঁচটি রাত এমন রয়েছে যেগুলোতে দোয়া করলে তা রদ বা বাতিল হয়না । (১) পহেলা রজবের রাত (২) শা'বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত (৩) জুমুয়ার রাত (৪) পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত (৫) পবিত্র ঈদুল আযহার রাত।" (দায়লামী শরীফ)



শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল প্রসঙ্গে অন্য হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দোয়া বা মুনাজাত পাঁচটি রাতে কবুল হয়ে থাকে । (১) পহেলা রজবের রাত (২) শা'বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত (৩) ক্বদরের রাত (৪) পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত (৫) পবিত্র ঈদুল আযহার রাত (মা ছাবাত বিস্ সুন্নাহ, গুনইয়াতুত্ ত্বালিবীন, মুকাশাফাতুল কুলুব)



সুতরাং কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত যে, শবে বরাত কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।



অনেকে উপরে উল্লেখিত শবে বরাত সম্পর্কিত কিছু হাদীছ শরীফ দ্বয়ীফ বলে শবে বরাতকে বিদায়ত বলে থাকেন। তাই দ্বয়ীফ হাদীছের ব্যাপারে নিচে আলোচনা করা হলঃ



দ্বয়ীফ হাদীছঃ

যে হাদীছ শরীফ এর রাবী হাসান হাদীছ শরীফ এর রাবীর গুণ সম্পন্ন নন তাকে দ্বয়ীফ হাদীস বলা হয়।

হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন কথাই দ্বয়ীফ নয় বরং রাবীর দুর্বলতার কারণে হাদীছ শরীফ কে দ্বয়ীফ বলা হয়।

দ্বয়ীফ হাদীসের দুর্বলতার কম বা বেশী হতে পারে। কম দুর্বলতা হাসানের নিকটবর্ত্তী আর বেশি হতে হতে মওজুতে পরিণত হতে পারে। এ ধরনের হাদীছ শরীফ আমলে উৎসাহিত করার জন্য বর্ণনা করা যেতে পররে বা করা উচিৎ। তবে আইন প্রণয়নে গ্রহনযোগ্য নয়।

এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম ইবনে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, "দ্বয়ীফ হাদীছ যা মওজু নয় তা ফজিলতের আমল সমূহে গ্রহণযোগ্য" (ফতহুল ক্বাদীর)

বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফক্বিহ হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, "সকলেই একমত যে দ্বয়ীফ হাদীছ ফজিলত হাসিল করার জন্য আমল করা জায়েজ আছে।" (আল মওজুআতুল কবীর, ১০৮ পৃষ্ঠা)



উপরোক্ত বর্ণনার দ্বারা প্রমাণিত হল যে, দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ ফযীলত হাসিল করার জন্য আমল করা জায়েজ আছে। তবে দ্বয়ীফ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত সকল আমল মুস্তাহাব।

যেমনঃ আল্লামা ইব্রাহিম হালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার গুলিয়াতুল মুস্তামালী ফি শরহে মুনিয়াতুল মুছাল্লি কিতাবে উল্লেখ করেছেন, "গোসলের পরে রূমাল (কাপড়) দিয়ে শরীর মোছা মুস্তাহাব। উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে – মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক টুকরা কাপড় (রূমাল) ছিল যা দিয়ে তিনি অযুর পরে শরীর মুবারক মুছতেন" (তিরমিযি শরীফ)

এটা দ্বয়ীফ হাদীছ। কিন্তু ফযীলত হাসিল করার জন্য আমল করা যাবে।

হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার আল মওজুআতুল কবীরের ১০৮ পৃষ্ঠায় বলেন,

"সকলে একমত যে দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ ফযীলত হাসিল করার জন্য আমল করা জায়েজ আছে। এজন্য আমাদের আইম্মায়ি কিরামগণ বলেছেন, অযুর মধ্যে গর্দান মসেহ্ করা মুস্তাহাব।"

তার মানে অযুর মধ্যে গর্দান মসেহ্ করা -এটি দ্বয়ীফ হাদীছ।



সুতরাং যারা শবে বরাতের হাদীছ শরীফ সংক্রান্ত কিছু দলিলকে দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ বলে শবে বরাত পালন করা বিদায়াত বলে তাদের এধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভূল, জিহালত পূর্ণ, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এর সম্পূর্ন খিলাফ।

প্রকৃত পক্ষে শবে বরাতের বিরুদ্ধে বলে এরা হাদীছ শরীফ এর বিরোধীতা করছে।

আর জেনে রাখা দরকারঃ

হাদীছ শরীফ এর বিরোধীতা করা কাট্টা কুফরী।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫

আ.আ.আজাদ বলেছেন: এই ফালতু প্যাঁচাল নিয়ে গতো বছর বহু ত্যানা খরচ হইছে। আবার শুরু করছেন? আপনারা পারেন ও। আজেবাজে বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে কোনো ভালো কাজে মাথা ঘামান। কাজে দিবে।

০৯ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

হীরক কণা বলেছেন: ইসলামী কোন বিষয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা কুফরী।

আপনি মুসলমান হলে তওবা করুন।

ভালো না লাগলে চুপ থাকেন।

২| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:১১

নুহান আহমেদ বলেছেন: ভাই একটু কষ্ট করে দেখে নেন, আল্লাহ আপনাকে সঠিক ভাবে ইসলাম বুঝার তৌফিক দান করুন।

৩| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৫

ইনফা_অল বলেছেন: ১. কিতাবুম মুবীন বা সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ করার উদ্দেশ্য সূরা যুখরুফের ১ নম্বর টীকায় বর্ণনা করা হয়েছে এখানেও যে বিষয়টির জন্য শপথ করা হয়েছে তা হলো এ কিতাবের রচিয়তা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নন, আমি নিজে। তার প্রমাণ অন্য কোথাও অনুসন্ধান করার দরকার নেই, এ কিতাবই তার প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। এর পর আরো বলা হয়েছে, যে রাতে তা নাযিল করা হয়েছে সে রাত ছিল অত্যন্ত বরকত ও কল্যাণময়। অর্থাৎ যেসব নির্বোধ লোকদের নিজেদের ভালমন্দের বোধ পর্যন্ত নেই তারাই এ কিতাবের আগমনে নিজেদের জন্য আকস্মিক বিপদ মনে করছে এবং এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বড়ই চিন্তিত। কিন্তু গাফলতির মধ্যে পড়ে থাকা লোকদের সতর্ক করার জন্য আমি যে মুহূর্তে এই কিতাব নাযিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি তাদের ও গোটা মানব জাতির জন্য সেই মুহূর্তটি ছিল অত্যন্ত সৌভাগ্যময়।
কোন কোন মুফাসসির সেই রাত কুরআন নাযিল করার অর্থ গ্রহণ করেছেন এই যে, ঐ রাতে কুরআন নাযিল শুরু হয় আবার কোন কোন মুফাসসির এর অর্থ গ্রহণ করেন, ঐ রাতে সম্পূর্ণ কুরআন 'উম্মুল কিতাব' থেকে স্থানান্তরিত করে অহীর ধারক ফেরেশতাদের কাছে দেয়া হয় এবং পরে তা অবস্থা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন মত ২৩ বছর ধরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাযিল করা হতে থাকে। প্রকৃত অবস্থা কি তা আল্লাহই ভাল জানেন।

ঐ রাত অর্থ সূরা কদরে যাকে 'লাইলাতুল কদর' বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে আরবী إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ﴾ আর এখানে বলা হয়েছে আরবি.
﴿إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ তাছাড়া কুরআন মজীদেই একথা বলা হয়েছে যে সেটি ছিল রমযান মাসের একটি রাত ................।


এখানে বলা হয়েছে আমি কদরের রাতে কুরআন নাযিল করেছি আবার সূরা বাকারায় বলা হয়েছে ,আরবী -------------------- "রমযান মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে।" (১৮৫ আয়াতে ) এ থেকে জানা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে হেরা গুহায় যে রাতে আল্লাহের ফেরেশতা অহী নিয়ে এসেছিলেন সেটি ছিল রমযান মাসের একটি রাত। এই রাতকে এখানে কদরের রাত বলা হয়েছে। সূরা দুখানে একে মুবারক রাত বলা হয়েছে।বলা হয়েছে :আরবী ------------------------------------ "অবশ্যি আমি একে একটি বরকপূর্ণ রাতে করেছি। "(৩ আয়াত )

সব বিষয়ে আল্লাহই ভাল জানেন। আল্লাহই ভাল জানেন।

বুঝা যাচ্ছে কুরআন রমযান মাসেই নাজিল হয়েছিল। সে যাই হোক কুরআনে যা বলা আছে অর্থ্যাৎ যা মানতে বলা হয়েছে সেটা আমার ঠিকমত মানি কিনা বা পালন করি কিনা সেটাই বড় বিষয়, বেহুদা তর্ক নয়।


সূরা বাকারা:

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ الم﴾


১) আলিফ লাম মীম

﴿ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ﴾

২) এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই ৷* এটি হিদায়াত সেই ‘মুত্তাকী’দের জন্য **

* . এর একটা সরল অর্থ এভাবে করা যায় "নিসন্দেহে এটা আল্লাহর কিতাব । " কিন্তু এর একটা অর্থ এও হতে পারে যে , ওটা এমন একটা কিতাব যাতে সন্দেহের কোন লেশ নেই । দুনিয়ায় যতগুলো গ্রন্থে অতিপ্রাকৃত এবং মানুষের বুদ্ধি-জ্ঞান বহির্ভূত বিষয়বলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো সবই কল্পনা, ধারণা ও আন্দাজ –অনুমানের ভিত্তিতে লিখিত হয়েছে । তাই এ গ্রন্থগুলোর লেখকরাও নিজেদের রচনাবলীর নির্ভূলতা সম্পর্কে যতই প্রত্যয় প্রকাশ করুক না কেন তাদের নির্ভুলতা সন্দেহ মুক্ত হতে পারে না। কিন্তু এ কুরআন মজীদ এমন একটি গ্রন্থ যা আগাগোড়া নির্ভূল সত্য জ্ঞানে সমৃদ্ধ । এর রচয়িতা হচ্ছেন এমন এক মহান সত্তা যিনি সমস্ত তত্ব ও সত্যের জ্ঞান রাখেন । কাজেই এর মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশই নেই । মানুষ নিজের অজ্ঞতার কারণে এর মধ্যে সন্দেহ পোষণ করলে সেটা অবশ্য সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র কথা এবং সে জন্য এ কিতাব দায়ী নয় ।

** . অর্থাৎ এটি একেবারে একটি হিদায়াত ও পথনির্দেশনার গ্রন্থ । কিন্তু এর থেকে লাভবান হতে চাইলে মানুষের মধ্যে কয়েকটি মৌলিক গুণ থাকতে হবে । এর মধ্যে সর্বপ্রথম যে গুণটির প্রয়োজন সেটি হচ্ছে, তাকে "মুত্তাকী" হতে হবে । ভালো ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা তার মধ্যে থাকতে হবে । তার মধ্যে মন্দ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার ও ভালোকে গ্রহণ করার আকাংখা এবং এ আকাংখাকে বাস্তবায়িত করার ইচ্ছা থাকতে হবে । তবে যারা দুনিয়ায় পশুর মতো জীবন যাপন করে, নিজেদের কৃতকর্ম সঠিক কি না সে ব্যাপারে কখনো চিন্তা করে না, যেদিকে সবাই চলছে বা যেদিকে প্রবৃত্তি তাকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে অথবা যেদিকে মন চায় সেদিকে চলতেযারা অভ্যস্ত, তাদের জন্য কুরআন মজীদে কোর পথনির্দেশনা নেই ।

﴿الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ﴾
৩) যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে , * নামায কায়েম করে **

* . কুরআন থেকে লাভবান হবার জন্য এটি হচ্ছে দ্বিতীয় শর্ত। 'গায়েব' বা অদৃশ্য বলতে এমন গভীর সতের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে যা মানুষের ইন্দ্রিয়াতীত এবং কখনো সরাসরি সাধারণ মানুষের প্রত্যক্ষ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় ধরা পড়ে না । যেমন আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী , ফেরেশতা, অহী, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি । এ গভীর সত্যগুলোকে না দেখে মেনে নেয়া এবং নবী এগুলোর খবর দিয়েছেন বলে তাঁর খবরের সত্যতার প্রতি আস্থা রেখে এগুলোকে মেনে নেয়াই হচ্ছে 'ঈমান বিল গায়েব' বা অদৃশ্যে বিশ্বাস । এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আয়াতের অর্থ হচ্ছে এই যে, যে ব্যক্তি মেনে নেয়ার জন্য দেখার , ঘ্রাণ নেয়ার ও আস্বাদন করার শর্ত আরোপ করে এবং যে ব্যক্তি বলে , আমি এমন কোন জিনিস মেনে নিতে পারি না যা পরিমাণ করা ও ওজন করা যায় না—সে এ কিতাব থেকে হিদায়াত ও পথনির্দেশনা লাভ করতে পারবে না ।

** . এটি হচ্ছে তৃতীয় শর্ত । এর অর্থ হচ্ছে, যারা কেবল মেনে নিয়ে নীরবে বসে থাকবে তারা কুরআন থেকে উপকৃত হতে পারবে না । বরং মেনে নেয়ার পর সংগে সংগেই তার আনুগত্য করা ও তাকে কার্যকর করাই হচ্ছে এ থেকে উপকৃত হবার জন্য একান্ত অপরিহার্য প্রয়োজন । আর বাস্তব আনুগত্যের প্রধান ও স্থায়ী আলামত হচ্ছে নামায । ঈমান আনার পর কয়েক ঘন্টা অতিবাহিত হতে না হতেই মুয়াযযিন নামাযের জন্য আহবান জানায় আর ঈমানের দাবীদার ব্যক্তি বাস্তবে আনুগত্য করতে প্রস্তুত কি না তার ফায়সালা তখনই হয়ে যায় । এ মুয়াযযিন আবার প্রতিদিন পাঁচবার আহবান জানাতে থাকে । যখনই এ ব্যক্তি তার আহবানে সাড়া না দেয় তখনই প্রকাশ হয়ে পড়ে যে, ঈমানের দাবীদার ব্যক্তি এবার আনুগত্য থেকে বের হয়ে এসেছে । কাজেই নামায ত্যাগ করা আসলে আনুগত্য ত্যাগ করারই নামান্তর । বলা বাহুল্য কোন ব্যক্তি যখন কারোর নির্দেশে মেনে চলতে প্রস্তুত থাকে না তখন তাকে নির্দেশ দেয়া আর না দেয়া সমান ।
ইকমাতে সালাত বা নামায কায়েম করা একটি ব্যাপক ও পূর্ণ অর্থবোধক পরিভাষা একথাটি অবশ্যি জেনে রাখা প্রয়োজন । এর অর্থ কেবল নিয়মিত নামায পড়া নয় বরং সামষ্টিকভাবে নামাযের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠিত করাও এর অর্থের অন্তরভুক্ত । যদি কোন লোকালয়ে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক ব্যক্তি নিয়মিতভাবে নামায পড়ে থাকে কিন্তু জামায়াতের সাথ এ ফরযটি আদায় করার ব্যবস্থা না থাকে , তাহলে সেখানে নামায কায়েম আছে, একথা বলা যাবে না।


﴿وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ﴾
৪) এবং যে রিযিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে খরচ করে ৷ * আর যে কিতাব তোমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং তোমার আগে যেসব কিতাব নাযিল করা হয়েছিল সে সবগুলোর ওপর ঈমান আনে ** আর আখেরাতের ওপর একীন রাখে ৷***

* . কুরআনের হিদায়াত লাভ করার জন্য এটি হচ্ছে চতুর্থ শর্ত । সংকীর্ণমনা ও অর্থলোলুপ না হয়ে মানুষকে হতে হবে আল্লাহ ও বান্দার অধিকার আদায়কারী । তার সম্পদে আল্লাহ ও বান্দার যে অধিকার স্বীকৃত হয়েছে তাকে তা আদায় করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে । যে বিষয়ের ওপর সে ঈমান এনেছে তার জন্য অর্থনৈতিক ত্যাগ স্বীকার করা ব্যাপারে সে কোন রকম ইতস্তত করতে পারবে না ।

** . এটি হচ্ছে পঞ্চম শর্ত । অর্থাৎ আল্লাহ অহীর মাধ্যমে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পূর্ববর্তী নবীগণের ওপর বিভিন্ন যুগে ও বিভিন্ন দেশে যেসব কিতাব নাযিল করেছিলেন সেগুলোকে সত্য বলে মেনে নিতে হবে । এ শর্তটির কারণে যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য বিধান অবতরনের প্রয়োজনীয়তাকে আদতে স্বীকারই করে না অথবা প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করলেও এ জন্য অহী ও নবুওয়াতের প্রয়োজন আছে বলে মনে করে না এবং এর পরিবর্তে নিজেদের মনগড়া মতবাদকে আল্লাহর বিধান বলে ঘোষণা করে অথবা আল্লাহর কিতাবের স্বীকৃতি দিলেও কেবলমাত্র সেই কিতাবটি বা কিতাবগুলোর ওপর ঈমান আনে যেগুলোকে তাদের বাপ-দাদারা মেনে আসছে যারা এ উৎস থেকে উৎসারিত অন্যান্য বিধানগুলোকে অস্বীকার করে –তাদের সবার জন্য কুরআনের হিদায়াতের দুয়ার রুদ্ধ । এ ধরনের সমস্ত লোককে আলাদা করে দিয়ে কুরআন তার অনুগ্রহ একমাত্র তাদের ওপর বর্ষণ করে যারা নিজেদেরকে আল্লাহর বিধানের মুখাপেক্ষী মনে করে এবং আল্লাহর এ বিধান আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকটি মানুষের কাছে না এসে বরং নবীদের ও আল্লাহর কিতাবের মাধ্যমেই মানুষের কাছে আসে বলে স্বীকার করে আর এই সংগে বংশ , গোত্র বা জাতি প্রীতিতে লিপ্ত হয় না বরং নির্ভেজাল সত্যের পূজারী হয়, সত্য যেখানে যে আকৃতিতে আবির্ভূত হোক না কেন তারা তার সামনে মস্তক অবনত করে দেয় ।

***. এটি ষষ্ঠ ও সর্বশেষ শর্ত । আখেরাত একটি ব্যাপক ও পরিপূর্ণ অর্থবোধক শব্দ । আকীদা-বিশ্বাসের বিভিন্ন উপাদানের সমষ্টির ভিত্তিতে এ আখেরাতের ভাবধারা গড়ে উঠেছে । বিশ্বাসের নিম্নোক্ত উপাদানগলো এর অন্তরভুক্ত।
একঃ এ দুনিয়ায় মানুষ কোন দায়িত্বহীন জীব নয় । বরং নিজের সমস্ত কাজের জন্য তাকে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করতে হবে।

দুইঃ দুনিয়ার বর্তমান ব্যবস্থা চিরন্তন নয় । এক সময় এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং সে সময়টা একমাত্র আল্লাহই জানেন ।

তিনঃ এ দুনিয়া শেষ হবার পর আল্লাহ আর একটি দুনিয়া তৈরি করবেন । সৃষ্টির আদি থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মানুষের জন্ম হয়েছে সবাইকে সেখানে একই সংগে পুনর্বার সৃষ্টি করবেন । সবাইকে একত্র করে তাদের কর্মকান্ডের হিসেব নেবেন । সবাইকে তার কাজের পূর্ণ প্রতিদান দেবেন ।

চারঃ আল্লাহর এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সৎলোকেরা জান্নাতে স্থান পাবে এবং অসৎলোকদেরকে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে ।

পাঁচঃ বর্তমান জীবনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও অসমৃদ্ধি সাফল্য ও ব্যর্থতার আসল মানদন্ড নয় । বরং আল্লাহর শেষ বিচারে যে ব্যক্তি উত্‌রে যাবে সে-ই হচ্ছে সফলকাম আর সেখানে যে উতরোবে না সে ব্যর্থ ।

এ সমগ্র আকীদা-বিশ্বাসগুলোকে যারা মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি তারা কুরআন থেকে কোনক্রমেই উপকৃত হতে পারবে না । কারণ এ বিষয়গুলো অস্বীকার করা তো দূরের কথা এগুলো সম্পর্কে কারো মনে যদি সামান্যতম দ্বিধা ও সন্দেহ থেকে থাকে তাহলে মানুষের জীবনের জন্য কুরআন যে পথনির্দেশ করেছে সে পথে তারা চলতে পারবে না ।


﴿أُولَٰئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾

৫) এ ধরনের লোকেরা তাদের রবের পক্ষ থেকে সরল সত্য পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তারা কল্যান লাভের অধিকারী ৷

======================================

৪| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৮

ছািব্বর বলেছেন: @আ.আ.আজাদ , আপনি কি মুসলমান ? মনে হয়না । আপনি কাকে আজেবাজে বলছেন সে সম্পর্কে আপনি নিতান্তই অজ্ঞ ।
শবে বরাতকে যে অস্বীকার করে সে হাদিস শরীফকে অস্বীকার করে। তাহলে কি করে মুসলমান থাকতে পারে ।
আপনি মুসলমান হলে তওবা করুন।

১০ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

হীরক কণা বলেছেন: গান-বাজনা, বেপর্দাসহ তামাম হারাম কাজে এদের কোন বাধা নেই। কিন্তু নেক কাজে এগুলোর যত সমস্যা।

৫| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:১৪

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: যতদূর জানি, কুর'আন রমজান মাসে নাজিল হয় প্রথম। এইটা তো লেখক এড়িয়ে গেলেন। খুব সম্ভবত সুরা বাকারার ১৮৫ বা ১৮৬ নাম্বার আয়াত। ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী। আবার সুরা ক্কদরে তা বলে দেওয়া হয়েছে। ফলে রমজান মাসের বাইরে কোর'আন নাজিল হয়েছে এবং সেই রাত বরকতপূর্ণ, এই দাবী তো খাটে না। তাহলে শবে বরাত কেন আসল?

এরপরের কথা হল, আমাদের দেশে প্রচলিত ছিল শবে বরাত। কিন্তু সৌদীদের প্রভাবে আরবী করতে গিয়ে খোদা হাফেজকে বিকৃত আরবী করে আল্লাহ হাফেজ করার মত শবে বরাতকেও আরবী করে লাইলাতুল বরাত নাম দিয়ে চালানো হচ্ছে এখন। কিন্তু আরবী ভাষাভাষিদের ভেতরে এই রাতকে আমাদের মত এত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে পালন করতে দেখা যায় না।

তবে তার পরেও কথা থাকে। কিছু উসিলায় বান্দাকে আল্লাহর পথে টেনে আনাটা দোষের কিছু না। তাই বাহানা যাই হোক না কেন, যদি কেউ বিশ্বাস করে কিছু ইবাদত করে, তাতে গোনাহ হবে না। এই সব রাত্রির প্রচারণার চেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রচারনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ধন্যবাদ।

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১৪

হীরক কণা বলেছেন: রমজান মাসেই কুরআন শরীফ নাজিল হয়, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ কারোই নেই।


আপনি পোস্ট টা মনযোগ দিয়ে পড়েন নাই।

মনযোগ দিয়ে পড়ে দেখুন।

“আমারই নির্দেশক্রমে উক্ত রাত্রিতে প্রতিটি প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলো ফায়সালা হয়। ” ---- সূরা দুখানের এই আয়াত শরীফে কি বলা হয়েছে?

আয়াত শরীফের একটু আগেই কুরআন শরীফের কথা বলা হয়েছে।

যেহেতু এই রাতে(১৫ ই শাবান শরীফ) সমস্ত প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলো ফয়সালা করা হয়, সুতরাং কুরআন শরীফ নাযিলের সিদ্বান্ত আল্লাহ পাক এই রাত্রিতেই নেন।

এর পর পবিত্র রমজান শরীফে নাযিল করেন। যা সুরা ক্বদরে ব ির্নত হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.