![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম ওয়া ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তর্জ-তরীক্বা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেন-
“হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষ্যদাতা, সু-সংবাদদাতা ও ভয়প্রদর্শনকারীরূপে। অতএব, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনো এবং উনার খিদমত মুবারক করো, তাযীম-তাকরীম মুবারক করো ও ছানা-ছীফত মুবারক অর্থাৎ প্রশংসা করতে থাকো সকাল থেকে সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে”। (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮-৯)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানে পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করার ৩টি খাছ তর্জ-তরীক্বা জানিয়ে দিয়েছেন।
১) খিদমত মুবারক করা,
২) উনার তাযীম-তাকরীম মুবারক করা,
৩) উনার ছানা-ছীফত মুবারক করা। সুবহানাল্লাহ!
আর এই ৩ টি আখাছছুল খাছ তর্জ-তরীকা বান্দা কতক্ষণ করবে, এটিও মহান আল্লাহপাক তিনি জানিয়ে দিয়ে বলেছেন- এই তর্জ-তরীক্বা পালন করতে হবে সকাল থেকে সন্ধ্যা অর্থ্যাৎ সারাক্ষণ তথা দায়িমীভাবে। সুবহানাল্লাহ।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক, উনার তাযীম-তাকরীম মুবারক, উনার ছানা-ছীফত মুবারক তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন করেছেন দুইভাবে; আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অনুষ্ঠান ছাড়া দায়িমীভাবে।
১) খিদমত মুবারক: সকল আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সদাসবর্দা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার জন্য সর্বস্ব দিয়ে হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের খিদমত করেছেন। এ প্রসঙ্গে “আনওয়ারুল আরিফীন” কিতাবে হযরত রবি বিন সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটি বেমেছাল খিদমত মুবারকের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি হজ্জে যাওয়ার পথে একজন মহিলা আওলাদুর রসূল আলাইহাস সালাম উনার পরিবারের অসহায় অবস্থা দেখে ব্যথিত হয়ে নিজের হজ্জে যাওয়ার সমস্ত টাকা উনাদের খিদমতে হাদিয়া করেছিলেন। এই খিদমত মুবারকের ফলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার ছূরতে একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম সৃষ্টি করেন, যিনি ঐ বছর থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত হজ্জ করবেন; যার ছাওয়াব উনার আমলনামায় জমা হতেই থাকবে। শুধু তাই নয় তিনি উনাদের মুবারক খিদমতে রৌপ্য মুদ্রা হাদিয়া করেছিলেন তার বিনিময়ে উনাকে স্বর্ণ মুদ্রা হাদিয়া করা হয়েছিল এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সুসংবাদ দিয়ে বলা হয়েছিল যারা আমাদের সাথে ব্যবসা করে তারা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। (সুবহানাল্লাহ)
২) তাযীম-তাকরীম মুবারক: হযরত আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে বর্ণনাতীত মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শনের নজীর স্থাপন করেছেন ইমামুল আ’যম, হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। একবার তিনি একস্থানে বসে স্বীয় ছাত্রদেরকে তালীম দিচ্ছিলেন আর কিছুক্ষণ পরপর তালীম বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তালীম শেষে ছাত্ররা জানতে চাইলে তিনি তাদের জানালেন, “তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ যে, আমাদের পাশেই কিছু ছেলেরা দৌঁড়াদৌঁড়ি করছিলেন। তন্মধ্যে অমুক ছেলেটি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুন নাজাত মুবারক উনার সম্পর্ক রয়েছে। সে জন্য যখনই তিনি আমাদের নিকটবর্তী হয়েছেন তখনই আমি উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়েছি। সুবহানাল্লাহ!
৩) ছানা-ছিফত মুবারক: হযরত ইমাম আবু জোরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি অনেক বড় মুহাদ্দিস ছিলেন। উনার বিছাল শরীফ লাভ করার পরে একজন বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি হযরত ইমাম আবু জোরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি সাত আসমানের উপরে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমাম হয়ে নামায পড়াচ্ছেন। তখন স্বপ্নদ্রষ্টা বুযুর্গ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আবু জোরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি কিভাবে এত ফযীলত বা মর্তবা ও মর্যাদা হাছিল করলেন? যার ফলে আপনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমাম হয়েছেন। হযরত ইমাম আবু জোরআ রহমতুল্লাহি তিনি বললেন, আমার জীবনে আমি দশ লক্ষ হাদীছ শরীফ লিখেছি। আমি প্রত্যেকবার হাদীছ শরীফ লিখার পরে নিজ হাতে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ অত্যন্ত শুদ্ধ করে, সুন্দর করে আদবের সাথে লিখেছি। যার বদৌলতে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমাম মনোনীত করেছেন।’ সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে দায়িমীভাবে অনন্তকালব্যাপী মহান আল্লাহপাক উনার তর্জ-তরীক্বা মুতাবিক পবিত্র খিদমত মুবারক, সম্মানিত তাযীম-তাকরীম মুবারক, ছানা-ছীফত মুবারক করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক দান করুন। (আমীন)
©somewhere in net ltd.