নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করব,মানবতার সমাজ গড়বো ইনশাআল্লাহ।

মোঃ হৃদয় মোল্লা

বিএসসি অনার্স(রসায়ন)নরসিংদী সরকারি কলেজ

মোঃ হৃদয় মোল্লা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্ঞানী মানুষই চিন্তা করে।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৮

এ সুরাহ টির নাম ‘সূরাহ্ আল ফাতিহা। কোন কিছু আরম্ভ করার নাম ‘ফাতিহা’ বা উদ্ঘাটিকা। কুর’আনুল কারীমের প্রথমে এই সূরাহ্ টি লিখিত হয়েছে বলে একে ‘সূরাহ্ আল ফাতিহা বলা হয়। তাছাড়া সালাতের মধ্যে এর দ্বারাই কিরা’আত আরম্ভ করা হয় বলেও একে এই নামে অভিহিত করা হয়েছে। উম্মুল কিতাবও এর অপর একটি নাম। জামহূর বা অধিকাংশ ইমামগণ এ মতই পোষণ করে থাকেন। তবে হাসান বাসরী (রহঃ) এবং ইবনু সীরীন (রহঃ) এ কথা স্বীকার করেন না। তাদের মতে লাওহে মাহফূয বা সুরক্ষিত ফলকের নামও উম্মুল কিতাব। হাসান বাসরী (রহঃ) এটাও বলেন যে, আয়াতুল মুহকামাত বা প্রকাশ্য ও স্পষ্ট আয়াতগুলোই উম্মুল কিতাব।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ

الْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أُمُّ الْقُرْآنِ وَأُمُّ الْكِتَابِ وَالسَّبْعُ الْمَثَانِى والقرآن العظيم.

الْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ এই সূরাহ টি হলো উন্মুক্ত কুর’আন, উম্মুল কিতাব, সাব‘আ মাসানী এবং কুর’আনুল ‘আযীম। (হাদীস সহীহ। জামি‘ তিরমিযী ৫/৩১২৪, ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। আবূ দাউদ ২/ ১৪৫৮, দারিমী ২/৪৪৬, মুসনাদ আহমাদ ২/৪৪৮, সনদ সহীহ) এই সুরাহ টির নাম ‘সূরাহ্তুল হামদ’ এবং সূরাতুস সালাতও বটে।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেনঃ “আমি সালাতকে অর্থাৎ সূরাহ্ ফাতিহাকে আমার মধ্যে এবং আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক করে ভাগ করে দিয়েছি। যখন বান্দা বলে ﴿اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ﴾ তখন মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে।” (সহীহ মুসলিম ১/৩৮, ২৯২, জামি‘ তিরমিযী ১/২৯৫৩, নাসাঈ ২/৪৭৩, হাঃ ৯০৮, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক ১/৩৯, ৮৪, মুসনাদ আহমাদ ২/২৪১, ২৮৫,৪৬০, বায়হাক্বী ২/৩৮, ১৬৭, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ ১/২৫২, হাদীস ৫০২, তাফসীর তাবারী ১/১৪৫, হাদীস ২২১, ২২৪)। এই হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, সূরাহ্ ফাতিহার নাম সূরাহ্ সালাতও বটে। কেননা এই সূরাহ টি সালাতের মধ্যে পাঠ করা আবশ্যক রয়েছে। এই সূরার আরেকটি নাম সূরাহ্তুশ্ শিফা।

আবু সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) মারফূ‘ রূপে বর্ণনা করেন যে, সূরাতুল ফাতিহা প্রত্যেক বিশ ক্রিয়ায় আরোগ্যদানকারী। (হাদীস য‘ঈফ। মুসনাদুল ফিরদাউস ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা নং ১৫৭, হাদীস ৪২৬৪, বায়হাক্বী ফি শু‘আবিল ঈমান ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা নং ৪৫০, হাদীস ২৩৬৮, দারিমী ২/৪৪৫, য‘ঈফুল জামি‘ ৩৯৫৪,৩৯৫৫)। এর আরেকটি নাম ‘সূরাহ্তুর রুকিয়্যাহ। আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) সাপে কাটা রুগীর ওপর ফুঁ দিলে সে ভালো হয়ে যায়। এ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ وَمَا يُدْرِيكَ أَنَّهَا رُقْيَةٌ

‘এটা যে রুকিয়্যাহ অর্থাৎ পড়ে ফুঁক দেয়ার সূরাহ্ তা তুমি কেমন করে জানলে? (ফাতহুল বারী ৪/৫২৯। সহীহুল বুখারী হাঃ ২২৭৬, ৫০০৭, ৫৭৩৬, ৫৭৪৯, সহীহ মুসলিম ৩৯/২৩, হাঃ ২২০১, মুসনাদ আহমাদ হাঃ ১১৩৯৯, আ.প্র. হাঃ ২১১৫, ই.ফা. হাঃ ২১৩২)

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এ সূরাহকে ‘আসাসুল কুর’আন’ অর্থাৎ কুর’আনের মূল বা ভিত্তি বলতেন। আর এই সূরার ভিত্তি হলো بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ।

সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ (রাঃ) বলেন যে, এই সূরার নাম ওয়াফিয়াহ। আর ইয়াহ্ইয়াহ ইবনু কাসীর বলেন, এর নাম কাফিয়াও বটে। কেননা এটা অন্যান্য সূরাহকে বাদ দিয়েও একাই যথেষ্ট হয়ে থাকে। কিন্তু এটাকে বাদ দিয়ে অন্য কোন সূরাহ যথেষ্ট হয় না। কতিপয় মুরসাল হাদীসেও বর্ণিত আছে যে, উম্মুল কুর’আন সবারই স্থলাভিষিক্ত হতে পারে। কিন্তু অন্যান্য সূরাহ গুলো উম্মুল কুর’আনের স্থলাভিষিক্ত হতে পারে না। অত্র সূরাহ কে সূরাতুস সালাত এবং সূরাতুল কানজও বলা হয়েছে।

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ), কাতাদাহ (রহঃ) এবং আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) বলেন যে, এই সূরাহ টি মাক্কী। কেননা এক আয়াতে আছেঃ ﴿وَ لَقَدْ اٰتَیْنٰكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِیْ وَ الْقُرْاٰنَ الْعَظِیْمَ﴾
“আমি তো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয় এবং দিয়েছি মহান কুর’আন।” (সূরা হিজর, আয়াত নং ৮৭) আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

কুরতুবী (রহঃ) আবু লাইস সমারকান্দী (রহঃ)-এর একটি অভিমত বর্ণনা করেছেন যে, এই সূরাহটির প্রথমাংশ মাক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর শেষ অর্ধাংশ মাদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে। তবে হাদীস শাস্ত্রের পরিভাষায় এ কথাটিও সম্পূর্ণ গারীব বা দুর্বল।

সূরাহ্ ফাতিহায় আয়াত, শব্দ ও অক্ষরের সংখ্যা

এ সূরার আয়াত সম্পর্কে সবাই একমত যে এগুলো ৭টি। بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ এ সূরাহ টির পৃথক আয়াত কি-না তাতে মতভেদ রয়েছে। সকল কারী, সাহাবী (রাঃ) এবং তাবি‘ঈ (রহঃ)-এর একটি বিরাট দল এবং পরবর্তী যুগের অনেক বয়োবৃদ্ধ ‘আলিমে দ্বীন একে সূরাহ্ ফাতিহার প্রথম ও পূর্ণ একটি পৃথক আয়াত বলে থাকেন। কেউ কেউ একে সূরাহ ফাতিহারই অংশ বলে মনে করেন। আর কেউ কেউ একে এর প্রথমে মানতে বা স্বীকার করতেই চান না। যেমন মাদীনার ক্বারী ও ফাক্বীহগণ থেকেই এমন মত পরিলক্ষিত হয়। মহান আল্লাহ চাহেতো এর বিস্তারিত বিবরণ সামনে দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
এই সূরাহ টির শব্দ হলো পঁচিশটি এবং অক্ষর হলো একশ তেরোটি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.