নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করব,মানবতার সমাজ গড়বো ইনশাআল্লাহ।

মোঃ হৃদয় মোল্লা

বিএসসি অনার্স(রসায়ন)নরসিংদী সরকারি কলেজ

মোঃ হৃদয় মোল্লা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুরা ফাতিহার ফযীলত

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৫

মুসনাদ আহমাদে আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ ‘আমি সালাত আদায় করছিলাম, এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডাক দিলেন, আমি কোন উত্তর দিলাম না। সালাত শেষ করে আমি তাঁর নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ এতোক্ষণ তুমি কি কাজ করছিলে?’ আমি বললামঃ ‘হে মহান আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি সালাত আদায় করছিলাম।’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ তা‘আলার এই নির্দেশ কি তুমি শোনোনি?

﴿یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِیْبُوْا لِلّٰهِ وَ لِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَا﴾

“হে মু’মিনগণ! তোমরা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের জীবন সঞ্চারের দিকে আহ্বান করেন।” (৮ নং সূরাহ্ আনফাল, আয়াত নং ২৪) মাসজিদ থেকে যাওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি, পবিত্র কুর’আনের মধ্যে সবচেয়ে বড় সূরাহ্ কোনটি। তারপর তিনি আমার হাত ধরে মাসজিদ থেকে চলে যাবার ইচ্ছা করলে আমি তাঁকে তাঁর অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিলাম। তিনি বললেনঃ ‘ঐ সূরাহ টি হলো ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল ‘আলামীন’। এটাই সাব‘আ মাসানী এবং এটাই কুর’আনুল ‘আযীম যা আমাকে দেয়া হয়েছে। (সহীহুল বুখারী, হাঃ ৪২০৪, ৪৪২৬, ৪৭২০, মুসনাদ আহমাদ ৪/২১১, ১৫৭৩, ১৫৭৬৮, ১৭৮৫১, ১৭৮৮৪, সুনান বায়হাকী ২১৩৮, সহীহ ইবনু খুযায়মা, ৮৬২, সুনান নাসাঈ, ২/৯১২, সুনান দারিমী, ২/৩৩৭১, হাদীস সহীহ) এভাবেই এই বর্ণনাটি সহীহুল বুখারী, সুনান আবূ দাঊদ, নাসাঈ এবং ইবনু মাজায়ও অন্য সনদে বর্ণিত হয়েছে।

ওয়াকিদী (রহঃ) এই ঘটনাটি উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর বলে উল্লেখ করেছেন। অন্য এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-কে ডাক দিলেন, তখন তিনি সালাতে মগ্ন ছিলেন। সালাত শেষে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাক্ষাত করলে মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর হাতে রেখে মাসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন আর বলছিলেন, আমার ইচ্ছা যে, তুমি একটি সূরাহ জ্ঞাত না হয়ে মাসজিদ হতে বের হবে না। সূরাটি এমন যে, এর সমতুল্য কোন সূূরাহ তাওরাত, ইনজীল এমন কি স্বয়ং কুর’আন মাজীদেও অবতীর্ন হয়নি। উবাই (রাঃ) বলেন, সূরাটি জানার বাসনায় আমি ধীরে ধীরে চলতে লাগলাম। অতঃপর আমি বললাম, হে মহান আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! যে সূরাটি জানাতে চেয়েছিলেন তা কোন সূরাহ? তিনি বললেন, তুমি সালাত আরম্ভ করার পর কিরূপে কির’আত পড়ো? উবাই বলেন, আমি সূরাহ ফাতিহা اَلْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ হতে শেষ পর্যন্ত পড়ে শুনালাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এটাই সেই সূরাহ যে সূরার কথা বলেছিলাম। এ সূরার নামই সাব‘আ মাসানী ও কুর’আনুল ‘আযীম, যা আমাকে প্রদান করা হয়েছে। (মুওয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদীস নং ২৭৫) অত্র হাদীসের বর্ণনা কারী আবূ সা‘ঈদ দ্বারা আবূ সা‘ঈদ ইবনু মু‘আল্লা উদ্দেশ্য নয়। যেমনটি জামি‘উল উসূল প্রণেতা ইবনুল আসীর ও তার অনুসারীগণ মনে করেন। আবূ সা‘ঈদ ইবনুল মু‘আল্লা তিনি একজন আনসারী সাহাবী। তার বর্ণিত হাদীস মুত্তাসিল। আর অত্র হাদীসের বর্ণনা কারী আবূ সা‘ঈদ হলেন খুযা‘আ গোত্রের একজন কৃতদাস। তিনি যদি সরাসরি উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর নিকট শোনে না থাকেন তাহলে হবে মুনকাতি‘ বা বিচ্ছিন্ন সূত্র বিশিষ্ট। আর যদি শোনে থাকেন তাহলে ইমাম মুসলিম (রহঃ)-এর শর্তানুযায়ী তা সহীহ হবে। সঠিকটি মহান আল্লাহই ভালো জানেন। তবে হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।

মুসনাদ আহমাদে আরো রয়েছে, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর নিকট যান যখন তিনি সালাত আদায় করেছিলেন। তারপর তিনি বলেনঃ ‘হে উবাই (রাঃ)! এতে তিনি তাঁর ডাকের প্রতি মনোযোগ দেন, কিন্তু কোন উত্তর দেননি। আবার তিনি বলেনঃ ‘হে উবাই! তিনি বলেনঃ ‘আস্সালামু ‘আলাইকা।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘ওয়া ‘আলাইকাস সালাম।’ তারপর বলেনঃ ‘হে উবাই! আমি তোমাকে ডাক দিলে উত্তর দাওনি কেন?’ তিনি বলেনঃ ‘হে মহান আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি সালাত আদায় করছিলাম।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন উপর্যুক্ত আয়াতটিই পাঠ করে বলেনঃ

তুমি কি یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِیْبُوْا لِلّٰهِ وَ لِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ لِمَا یُحْیِیْكُمْ এই আয়াতটি শুনোনি?

তিনি বলেনঃ ‘হে মহান আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হ্যাঁ আমি শুনেছি, এরূপ কাজ আর আমার দ্বারা হবে না।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ

তুমি কি চাও যে, তোমাকে আমি এমন একটি সূরার কথা বলি যার মতো কোন সূরাহ্ তাওরাত, ইনজীল এবং কুর’আনেও নেই? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ অবশ্যই বলুন। তিনি বলেনঃ এখান থেকেই যাওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে তা বলে দিবো।’ তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার হাত ধরে চলতে চলতে অন্য কথা বলতে থাকেন, আর আমি ধীর গতিতে চলতে থাকি। এই ভয়ে যে না জানি কথা বলা থেকে যায়, আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাড়ীতে পৌঁছে যান। অবশেষে দরজার নিকট পৌঁছে আমি তাঁকে তাঁর অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেই।’ তিনি বললেনঃ ‘সালাতে কি পাঠ করো? আমি উম্মুল কুরা’ পাঠ করে শুনিয়ে দেই। তিনি বললেনঃ

‘সেই মহান আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, এরূপ কোন সূরাহ্ তাওরাত, ইনজীল, যাবুরের মধ্যে নেই যা কুর’আনে রয়েছে। এটাই হলো ‘সাব‘আ’ মাসানী। (মুসনাদ আহমাদ ২/৪১২, জামি‘ তিরমিযী ৮/২৮৩, মুসতাদরাক হাকিম ১/৫৬০। হাদীস সহীহ)

জামি‘উত তিরমিযীতে আরো একটু বেশি বর্ণিত আছে। তা হলো এই যেঃ ‘এটাই মহাগ্রন্থ আল কুর’আন যা আমাকে দান করা হয়েছে।’ এই হাদীসটির সংজ্ঞা ও পরিভাষা অনুযায়ী হাসান ও সহীহ। আনাস (রাঃ) থেকেও এ অধ্যায়ে একটি হাদীস বর্ণিত আছে। মুসনাদ আহমাদেও এভাবে বর্ণিত আছে। ইমাম তিরমিযী (রহঃ) একে পরিভাষার প্রেক্ষিতে হাসান গারীব বলে থাকেন।

মুসনাদ আহমাদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘একবার আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গমন করি। সে সময় সবেমাত্র তিনি শৌচক্রিয়া সম্পাদন করেছেন। আমি তিনবার সালাম দেই, কিন্তু তিনি উত্তর দিলেন না। তিনি বাড়ীর মধ্যেই চলে গেলেন। আমি দুঃখিত ও মর্মাহত অবস্থায় মাসজিদে প্রবেশ করি। অল্পক্ষণ পরেই পবিত্র হয়ে তিনি আগমন করেন এবং তিনবার সালামের জবাব দেন। তারপর বলেন, ‘হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাবির! জেনে রেখো, সম্পূর্ণ কুর’আনের মধ্যে সর্বোত্তম সূরাহ্ হলো اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ এ সূরাহটি। (মুসনাদ আহমাদ ৪/১৭৭, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক - ১/৮৪) এর সনদ খুব চমৎকার। এর বর্ণনাকারী ইবনু ‘আকীলের হাদীস বড় বড় ইমামগণ বর্ণনা করে থাকেন। ইবনুল জাওজী (রহঃ)-এর মতে, এখানে ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাবির বলতে আবদী সাহাবীকে বুঝানো হয়েছে। আর হাফিয ইবনু ‘আসাকির (রহঃ)-এর মতে, ইনি হলেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু জাবির আনসারী বিয়াযী (রাঃ)।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ মহান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.