![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে বলার মত তেমন কোনো যোগ্যতা এখন পর্যন্ত অর্জন করতে পারি নি। যদি কখনো পারি তখন ভেবে দেখব।যেহেতু আমি কোন নিয়মিত লেখক নই কাজেই লেখায় ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কাম্য।
ছবিঃ ইন্টারনেট
১.
সাদিয়া ভার্সিটি থেকে এসে বিরক্তি নিয়ে কলিংবেল বাজিয়েই যাচ্ছে কিন্তু বুয়া এসে দরজা খোলার কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। একটু পরেই ভিতর থেকে শোনা গেল ' দাঁড়ান আম্মা আইতেসি' এতে তার বিরক্তির মাত্রা আরও বেড়ে গেল। সে আরও আগেই বুয়াকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তাকে এসব আজেবাজে নামে না ডেকে ম্যাডাম ডাকতে। কিন্তু এই মহিলা বরাবরই একই কাজ করে যাচ্ছে! দরজা খোলার সাথে সাথেই;
- এই মহিলা কই থাক তুমি?? দরজা খুলতে এতক্ষণ লাগে!!
- জে আম্মা ভাতের মার গালতেছিলাম।
- আমি যে কখন থেকে বাইরে দাঁড়িয়ে আছি সে খেয়াল নাই তোমার??
- এইবারের মতন মাফ কইরা দেন আম্মা। আর হইব না।
- এই শোন তোমাকে না কতবার নিষেধ করছি আমাকে আম্মা ডাকতে! যতসব গাইয়া ভূত!
২.
বলতে বলতে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায় সাদিয়া। সাদিয়ার পরিচয় আলাদাভাবে দেয়ার মত কিছু নেই। ব্যবসায়ী ধনী বাবার একমাত্র দুলালি হলে ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে যা হওয়ার কথা এখানেও ঠিক তাই। পার্থক্য শুধু তাকে ৪ বছরের ছোট্ট মেয়েটি রেখে তার মা না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিল। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বাবা দ্বিতীয় কাউকে আসতে দেন নি। সেই তখন থেকেই সাদিয়ার বুয়ার কাছেই বেড়ে উঠা। ভিটেমাটি, স্বামী-সন্তানহারা হালিমাও এতদিনে সাদিয়ার মাঝে নিজের সন্তানকে খুঁজে নিয়েছে। তবুও মেয়েটা কিভাবে যে এমন হয়ে গেল সে রহস্য হালিমার অজানা। সে সব হাসিমুখে মেনে নেয় আর ভাবে আজ যদি নিজের সন্তান এমন করত তবে কি সে পারত তাকে ফেলে দিতে! কক্ষনই না। রান্না শেষ করে সাদিয়ার রুমে গিয়ে দেখে মেয়েটা না খেয়েই দিব্যি ঘুমিয়ে পড়েছে। কিছু না বলে আস্তে করে জানালার পর্দাগুলো ঠিক করে লাইট অফ করে বেরিয়ে যায়।
৩.
- বুয়া... আই বুয়া এক গ্লাস পানি দিয়ে যাও তো।
- আম্মা আমি ইপ্তারি বানাইতাছি। আপনে নিয়া খাইয়া ফালান।
- তোমাকে বলছি দিয়ে যাইতে।
- কেন আপনে কি এক গেলাস পানিও লইয়া খাইবার পারেন না!
- কি বললা তুমি? আই তুমি আমাকে কি বললা??
চিৎকার করতে করতে হাত থেকে ছোলার বাটি কেঁড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। কাড়াকাড়ির এক পর্যায়ে বুয়ার মাথার লম্বা সাদা ঘোমটা পড়ে যায়। সাদিয়া চমকে উঠে দুইপা সরে গিয়ে চোখেমুখে বিস্ময় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না এটা কিভাবে সম্ভব! সামনে যে তার মা দাঁড়িয়ে আছে!!
৪.
সাদিয়া লাফ মেরে ঘুম থেকে উঠে বসে পড়ে। তার সাড়া শরীর থরথর করে কাঁপছে। এক মুহূর্ত দেরি না করে রান্না ঘরের দিকে দৌড়ায়। তাকে এদিকে দেখে বুয়া জিজ্ঞাস করে 'কি আম্মা...কিসু লাগবো আপনের' উত্তরে কিছু না বলেই সে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। বুয়া আর কথা বাড়ায় না। কিছুক্ষণ পরেই হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বুয়াকে জড়িয়ে ধরে;
- আমাকে মাফ করে দাও খালা। আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করে ফেলছি।
- আরে আরে কানতাছেন কেন? কি হইসে আম্মা???
- দেখ আমাকে একদম আপনে করে বলবা না। নিজের মেয়েকে কেউ আপনি করে বলে!!
- (হাসতে হাসতে) আল্লারে কি পাগল মাইয়া।
সাদিয়া আজ নিজ হাতে তার খালার জন্য শরবত বানাচ্ছে। খালাকে এটাসেটা এগিয়ে দিচ্ছে। মেয়ের এসব পাগলামি দেখে হালিমা শাড়ির আঁচলে মুখ লুকায়। চোখের পানিও যেন আজ কিছুতেই বাঁধ মানছে না। হঠাত করেই প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তির ভার বেশি হয়ে গেলে তার প্রাথমিক উচ্ছ্বাসটা বোধ হয় এরকমই হয়। জীবনে আর কিছুই চাওয়ার নেই তার। সুখ নামক সোনার হরিণটি যে নিজে থেকেই এসে ধরা দিয়েছে।
[কিছু কথাঃ সাধুতা বা ভালমানুশি প্রদর্শনের জায়গা থেকে নয় বরং নিজের অবস্থান থেকে দ্বিতীয়বার চিন্তা করেই কথাটা বলছি, আপনার ডিকশেনারি থেকে বুয়া শব্দটি মুছে ফেলুন। এই গরীব মানুষটিকে আজ থেকে জাস্ট 'খালা' বলে ডেকে দেখুন উনি আপনার প্রতি কতটা আন্তরিক আর খুশি হোন! অবশ্যই উনাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয়া আমাদের কর্তব্য বৈকি?]
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। ভাল থাকবেন।
২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: সুন্দর!!!! হৃদয় ছোঁয়া লিখা!!!
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ খালিদ ভাই। দোয়া করবেন আর ভাল থাকবেন সবসময়
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
সুন্দর লিখা ||
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধইন্যা লন ভাই
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৭
এস এইচ খান বলেছেন: সত্যি বলছি, বুয়া শব্দটাই আমার কাছে বৈষম্য আর বিভাজনের প্রতীক মনে হয় যদিও শব্দটি দক্ষিনান্চলে আপন বড় বোনকে অনেক সময় এ নামে ডাকা হয়!
পোস্ট ভাল লেগেছে। +
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: সহমত ভ্রাতা। একটি পজেটিভ পরিবর্তনের অপেক্ষায় রইলাম। ভাল থাকবেন।
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮
তারেক বলেছেন: দারুন
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ তারেক ভাই। ভাল থাকবেন
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৩
আরজু পনি বলেছেন:
মানসিকতার পরিবর্তনটাই খুব দরকার হয়ে পড়েছে।
সুন্দর লেখার জন্যে ধন্যবাদ।
++++++
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৫
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: সহমত আরজু ভাই। কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন।
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৩
লিন্কিন পার্ক বলেছেন:
আমাদের স্কুলের বুয়ারে সবাই খালা ডাকতাম । ত একদিন স্কুলে এক নতুন ম্যাডাম আমাদের সামনে যখন উনারে বুয়া বলে ডাক দিল ক্লাসের স্টুডেন্ট সবাই অবাক হয়ে গেছিল !
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৮
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ছোটদের কাছ থেকেও যে অনেক কিছু শেখার আছে ম্যাডাম তারই উদাহরণ হলেন। এই ধরনের মানসিকতা থেকে দ্রুত আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া। ভাল থাকবেন
৮| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:২৮
টুম্পা মনি বলেছেন: চমৎকার।
২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০৬
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে টুম্পা আপু
৯| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৩
রবিউল ফকির বলেছেন: গল্পটি এক কথায় চমৎকার হয়েছে।'বুয়া ' একসময় ছিল আমাদের দেশের কোন কোন অঞ্চলে দাদিকে বুয়া বলে ডাকতো যুগের আবর্তনে সেটি বিলিন হয়ে বুবু, আজ দাদীতে পরিনত হয়েছে। গৃহপরিচারিককে বুয়া সম্বোধন করাটা অনেকে উদের নিচু শ্রেণীর মনে করে ডাকে। এইটা হয় যাদের অনেক অনেক পয়সা, কিংবা অতি উচ্চ শিক্ষিত মনে করে যাদের তারা। আমি কখনোই এই কাজের মহিলাকে বুয়া বলে ডাকিনা সব সময় খালা বলেই ডেকেআসছি।
২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৫
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ রবিউল ভাই। আমিও আপনার সাথে একমত। ধনিক শ্রেণী এই বুয়া শব্দটা অতিরিক্ত জেনারালাইজড করে নিম্ন বর্গের মানুষগুলোকে চপেটাঘাত করছে। এই অশুভ চর্চা নিপাত যাক। ভাল থাকবেন ভাইয়া।
১০| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮
রুপ।ই বলেছেন: লেখাটা ভালো হয়েছে ।
২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৭
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন
১১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১৮
আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: আজ পর্যন্ত কাউকে বুয়া ডাকিনি, খালা বা আপা ডেকে এসেছি। যাকে খালা ডাকতাম তিনি এখনো আমাকে বাপজান বলে ডাকেন। এছাড়া বয়সে বড় হলে কাজের লোকের নামের সাথে যাতে আপু লাগায় সেটা ছোটবেলায় আব্বু আম্মু শিখাইছেন
সবার এই কাজ টাই করা উচিত
০২ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪২
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই। আমিও আপনার সাথে পুরোপুরি একমত। ভাল থাকবেন
১২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১৪
অশ্রুকারিগর বলেছেন: নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে দেখলাম আপনার এই লেখা আমি শেয়ার দিসিলাম। তখন ব্লগে নিক ছিলোনা তাই ভালোলাগাটা জানাতে পারিনি। আজকে জানিয়ে যাচ্ছিঃ এই লেখাটা আমার অনেক ভাল লাগছিলো। কাজের লোকদের সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত সবার।
০২ রা আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। এই মুহুর্তে সত্যি অনেক ভাললাগা কাজ করছে। অনেকদিন লেখালেখি হয় না। সত্যি বলতে এখন হঠাত করেই অনুপ্রেরণা বোধ করছি।দোয়া রাখবেন।
ভাল থাকুন সব সময়
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮
চটপট ক বলেছেন: গুড ওয়ান