![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভিতরের ঘরের দরজার শিকল তোলা- গৃহবন্দি আমি
উদাস নয়ন তাকিয়ে আছি দূর প্রান্তরে।
ধাতব ঝংকারের মত ভরাট কণ্ঠের একজন চুপি চুপি পিছনে এসে দাঁড়ান,
জিজ্ঞেস করলেন- কিরে, বাইরে তাকিয়ে কি দেখিস, বৃষ্টি?
হুম।
কেমন আউলা ঝাউলা বৃষ্টি, তাই না?
হুম।
ভিজতে মন চাইছে, বাইরে যাবি?
বিষাদ পরিবর্তিত হয়ে যায় অপার্থিব আনন্দে
চোখে, মুখে খেলে যায় আনন্দলোকের অনাবিলতা।
আনন্দলোকে বসবাসটা খুব বেশি দীর্ঘস্থায়ী হলোনা
মায়ের কঠোর নির্দেশের প্রতিধ্বনি শুনতে লাগলাম-
‘বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বেরুবি তো ঠ্যাং ভেঙ্গে দেব।’
বাবা চাপা হাসিটা মুখে ঝুলিয়েই আছেন
আমার চোখে, মুখে নীরব, অপ্রকাশিত প্রচণ্ড রাগ
বাবার হাসিটাকে চরম নিষ্ঠুরতার স্থুল বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হচ্ছে।
আমি প্রায় আর্তচিৎকারের মত করে বললাম- আমি বাইরে যাবনা, কখনও যাবোনা।
বেরিয়ে যাবার মুহূর্তে কোমল কণ্ঠে বাবা বললেন-
‘পাগল ছেলে আমার, তুই এত বোকা কেন?’
আজ বহুবছর পর আচমকা মনে হলো-
আরে, আমার মা তো এতোটা নির্বোধ ছিলেন না।
প্রতিটা কাজে যার সতর্কতার ছোঁয়া,
তিনি কেন বাইরে বেরুবার দরজাটা বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করলেন না!
বাবাকেও এতোটা নিষ্ঠুর হতে দেখা যায় নি কখনও।
এত বছর, এতগুলো বছর পর আজ বুঝতে পারলাম
বাবার হাসিটা ছিল প্রশ্রয়ের।
বাবা-মায়ের ভালবাসায় রচিত মমতার ষড়যন্ত্রটা বুঝতে এতোটা বছর কেটে গেলো !
সেই আউলা ঝাউলা বৃষ্টি আজ আবার ফিরে এসেছে
জানালার গ্রীল ধরে বাইরে তাকিয়ে আছি
অপলক চোখে খোলা মাঠে চেয়ে দেখি পাড়ার সব পোলাপান জড়ো হয়ে গেছে
কাদা ছোড়াছুড়ি, জড়িয়ে ধরে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে লুটোপুটি, দৌড়ঝাঁপ, দাপাদাপি।
সেই থেকে আর কখনও বৃষ্টি ভেজার খেলাটা হয়না।
অমোঘ আকর্ষণের তীব্রতাটা নিজের ভিতর টের পাচ্ছি
বৃষ্টিতে না ভেজার প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গার আয়োজনটা কি সেরে ফেলবো?
বাবা-মা, যুগ পূর্বে মমতা না বুঝার অক্ষমতার অসহায়ত্ব থেকে বের হতে পারছিনা।
অদৃশ্যলোক থেকে যদি পার ক্ষমা করো;
তোমাদের দেওয়া স্বাধিনতাকে উপভোগের,
গ্লানি আর অবসাদ মুক্তির জন্য বৃষ্টিস্নাত হতে খুব মন টানে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৫০
হুয়ায়ুন কবির বলেছেন: বৃষ্টি ও মমতা