নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাছের মানুষ

The mind is in its own place, and in itself/ Can make a Heaven of Hell, a Hell of Heav’n

অসীম পাল

অসীম কুমার পাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যয়নে মাস্টার্স করছি। কিছু লেখালেখির সুবাদে পরিচিত জনদের কাছে কবি নামে খেতাব পাই(আদৌ কিন্তু কবিতা বুঝি না!)। তথাপি লেখালেখির করার দুঃসাহস করি।

অসীম পাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হতাশার মাঝে বসবাস

৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ৯:৪৭

ইদানিং এক সুক্ষ্ম ধরনের তীব্র ব্যথা বুকের মাঝে অনুভব করি। সবসময় আমাকে সে ব্যথা আমাকে তাড়া করে ফেরে। যখনই সে ব্যথা অনুভব করি, টের পাই আমি আসলে একটা অতল সমুদ্রের মাঝে তলিয়ে যাচ্ছি। হাত বাড়াই। কিন্তু আর কোন হাত এগিয়ে আসে না আমাকে উদ্ধারের জন্য।



অবশেষে...... সুতীব্র ব্যথা নিয়ে ডুবে যেতে থাকি হতাশার অতল গহবরে। যেখানে শুধুই হতাশার বসবাস। আর ভালবাসা, আশা, স্বপ্ন নামক বস্তু গুলো কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করে।



হয়তো আমার এ কথাগুলো বাস্তবতাবিবর্জিত অতি কাব্যিক কিংবা কল্পনার কথা মনে হচ্ছে। হয়তো আমি সত্যিই কাব্যিক ঢঙে কথাগুলো বলছি কিন্তু কোনটাই বাস্তবতাবিবর্জিত নয়।



আসলে সত্যিই আমি তীব্র হতাশার মাঝে বসবাস করছি। জানি, হতাশা মানুষকে কুরে কুরে খায়। তার সৃজনশীলতাকে বিনষ্ট করে। এতসব জানার পরও কেন হতাশার মাঝে বসবাস করছি তা আমি জানি না।



আমি আসলেই হতাশার মাঝে বসবাস করতে চাই না। চাই হতাশামুক্ত স্বপ্ন, ভালবাসা ও আশার জীবন। কিন্তু ওই যে বললাম আমি আসলে একটা অতল সমুদ্রের মাঝে তলিয়ে যাচ্ছি। হাত বাড়াই। কিন্তু আর কোন হাত এগিয়ে আসে না আমাকে উদ্ধারের জন্য।



মাঝে মাঝে মরিচিকার পিছনে দৌড়াই। মানে মনে হয় ওই বুঝি কেউ একজন হাত বাড়িয়ে দিলো আমাকে হতাশার রাজ্য থেকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু পরক্ষণই দেখি আসলে সব মরিচিকা।



আমি যদিও সাহিত্যের শিক্ষার্থী এবং আমার এক বড় ভাই আমার হতাশার কথা শুনে আমাকে বলেন যে সাহিত্যের শিক্ষার্থী হয়ে কখনোই হতাশ হবি না। তুই যদি হতাশাগ্রস্থ হোস, তবে কে আশার পাদপ্রদীপ জ্বালাবে?



আমি তার কথা বুঝি, বুঝে চেষ্টা করি হতাশা কাটিয়ে উঠতে। কিন্তু পারি না।



আমার হতাশার মাল্টি কালার আছে। মানে আমি কখনোই একটি বিষয় নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হই না। আমার পেছনে সবসময় একাধিক হতাশা লেগে আছে। একটা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটা এসে চেপে ধরে। উদাহরণ দেই।



আমার প্রথম হতাশা আমার শিক্ষাসংক্রান্ত। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। এই নিয়ে আমার হতাশার অন্ত নেই। আমার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে পড়বো। তখন বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হয়েও বিজ্ঞান পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। যাই হোক, স্বপ্ন প্রায় পূরণ হয়েছিল। শুধু কিছু ভুলের কারণে তা পূর্ণ হয়নি।



আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭ তম হয়েও ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে পারি নি কেবল বিষয় মনোনয়ন হিসেবে বাংলাটা দেবার জন্য। আবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইভা ফেস করতে পারি নি এক বন্ধুর দেয়া ভুল তথ্যের জন্য। অতঃপর.......জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি।



দ্বিতীয়ত, আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছি। বুঝতে পারছি না, কী করবো? অনার্স শেষ হলে পেশা জীবনে ঢুকবো। কিন্তু কোন পেশায় ঢুকবো? যখন আমার বন্ধুদের কথা ভাবি, তারা আজ ইন্জিনিয়ারিং শেষ করে আজ কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে। অথচ আমি......? কী করব এই চিন্তায় রাত্রে ঘুম আসে না। পড়ালেখাতেও মন বসাতে পারছি না। ভাবি, উচ্চ মাধ্যমিকের পর যদি ইন্জিনিয়ারিং এ পড়তাম, তবে আজ হয়তো প্রতিষ্ঠিত হতে পারতাম আর বাবাকে তার কাজ করা থেকে ছুটি দিতাম। কিন্তু হায়! সবই বৃথা মনে হয়। সবকিছু ধূসর লাগে।



তৃতীয়ত, গত কয়েকদিন থেকে নিজেকে খুব একাকী মনে হয়। কারো সাথে আমার কষ্টগুলো শেয়ার করবো, সে আমার কষ্টগুলো বুঝবে, আমাকে বন্ধুর মতো পাশে থেকে উৎসাহ দেবে সামনে এগিযে যাবার জন্য। আমার হতাশাগুলো দূর করবে, একাকীত্ব থেকে আমাকে মুক্তি দেবে। আমার খোজ নেবে। একইভাবে, আমিও তার সবকিছু শেয়ার করবো। এক কথায়, নির্মল বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু কেউ নেই। প্রতিদিন অপেক্ষা করি, কেউ হয়তো আমাকে বলবে অসীম, আর মন খারাপ করিস না। দেখ, আমি আছি না! তোকে আর একা থাকতে হবে ন। প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হয়। কিন্তু কেউ আসে না।



এভাবে আমার দিন গুলো কাটছে। কিন্তু আর পারছি না। এত বড় কষ্টের বোঝা আমি আর বহন করতে পারছি না। সামনে তাকাই। আলো দেখতে পাই না। গাঢ় অন্ধকারে আমার স্বপ্নগুলোর সমাধি রচনা দেখতে পাই।





বি.দ্র. আমার একান্ত কষ্টগুলো ব্লগে ছড়িয়ে দিলাম শুধুমাত্র নিজেকে হালকা করার বৃথা প্রয়াসে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ৯:৫৪

রাতমজুর বলেছেন:
হতাশার মাঝে বসবাস করতে কেই বা চায় বলুন? আর একাকীত্ব থেকে মুক্তি যতই চাইবেন ততই বরং বাঁধা পড়বেন একাকিত্বের জালে।

আশার বাণী কেউ শোনাবে না, যতক্ষননা আপনি একটা কিছু হয়ে উঠছেন, মানে সফল মানুষ হয়ে উঠছেন। তখন আর কারো জন্যে হাপিত্যেশ করবার সময় থাকবেনা, তবু দেখবেন, সবাই তখনই বরং মিস্টি মিস্টি কথা শোনাবে।

গা ঝাড়া দিয়ে উঠুন, নিজের দুটো হাত আছে না? মাথা খাটিয়ে, নিজের হাতদুটোর জোরে উঠে দাঁড়ান। সব ঠিক হয়ে যাবে।

৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ৯:৫৮

অসীম পাল বলেছেন: হতাশার মাঝে বসবাস করতে কেই বা চায় বলুন? আর একাকীত্ব থেকে মুক্তি যতই চাইবেন ততই বরং বাঁধা পড়বেন একাকিত্বের জালে।

রাতমজুর ভাইয়া, সব ঠিক হয়ে যাবে, এই প্রতীক্ষায় থাকলাম।

২| ৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ১০:০৪

রাতমজুর বলেছেন:

সুমনের গান শোনেন নি? "হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে..."

অন্জন, নচিকেতা, সুমন এদের গান শুনবেন...

৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ১০:০৬

অসীম পাল বলেছেন: গান শুনে মন আরো খারাপ হয়ে যায়। নস্টালজিয়ায় ভুগি।

৩| ৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ১০:২৮

নাজিম উদদীন বলেছেন: আমার এক বড় ভাই আমার হতাশার কথা শুনে আমাকে বলেন যে সাহিত্যের শিক্ষার্থী হয়ে কখনোই হতাশ হবি না। তুই যদি হতাশাগ্রস্থ হোস, তবে কে আশার পাদপ্রদীপ জ্বালাবে?

বড় ভাই ঠিক কথা বলছে, সাহিত্য যারা পড়ে তাদের মন হবে উদার, বিশ্বসাহিত্যের ভিতরে ডুবে গেলে সময়ই থাকবে না এতসব মন খারাপ করা চিন্তাভাবনার।

কবি মোহিতলাল মজুমদার ঢাবি'র শিক্ষক ছিলেন, উনি ছিলেন মাত্র বি এ পাশ, ডক্টরেট ছিল না, কিন্তু অনেক ডক্টরেট তার ধারেকাছে আসতে পারত না।

এরকম উদাহরণ হাজার হাজার পাবেন, শিক্ষার সাথে ডিগ্রীর কোন সম্পর্ক নাই, সাহিত্যের সাথে তো আরও নাই।

৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ১০:৩০

অসীম পাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আমার মনে হচ্ছে আমার লেখাটা সার্থক হয়েছে।

৪| ৩০ শে জুন, ২০০৯ রাত ১১:০১

কালপুরুষ বলেছেন: পড়েছি আপনার লেখা। হতাশ হবার কিছু নেই। আজকাল সবকিছুই বাঁধা ধরা ছকের বাইরেই চলছে। কে কিসে ভাল করবে বলা মুশকিল। তবে বর্তমান বিশ্বে চাকরীর বাজারে এ্যাকাউনট্যান্সীর যথেষ্ট ডিমান্ড আছে। চেষ্ট করে দেখতে পারেন। কর্পোরেট বিজনেসের যুগে হিসেব কষার মানুষ খুব দরকার।

০১ লা জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৫

অসীম পাল বলেছেন: কালপুরুষ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আজকাল সবকিছুই বাঁধা ধরা ছকের বাইরেই চলছে। কে কিসে ভাল করবে বলা মুশকিল।

এটাই আমাকে হতাশায় ফেলে দেয়। সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগায়। কী করবো, কোন সাইডে গেলে ভালো হবে বুঝতে পারিনা।

ভালো থাকবেন।

৫| ০১ লা জুলাই, ২০০৯ রাত ১২:৪৮

দিপক কুমার বলেছেন:
হতাশা থেকেই বেরিয়ে আসে আশার আলো। তাই হতাশাকে চ্যালেন্জ জানাতে হবে এবং তাকে জয় করতে হবে।

ঝড়ের পরবর্তী দিনগুলোতে দেখবেন সূর্যের আলো খুব তীব্র হয়। জীবনের ক্ষেত্রে ও তাই। হতাশাকে জয় করেই মানুষ অর্জন করে তীব্র মানসিক শক্তি বা আত্মবিশ্বাস। এবং এই আত্মবিশ্বাস তাকে করে তোলে বিজয়ী।

ধন্যবাদ--আপনার জীবনে ও সেই আলো আসুক।।।।।

০১ লা জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৭

অসীম পাল বলেছেন: হতাশা থেকেই বেরিয়ে আসে আশার আলো। তাই হতাশাকে চ্যালেন্জ জানাতে হবে এবং তাকে জয় করতে হবে।

সেই প্রত্যাশায় থাকবো। ভালো থাকবেন।

৬| ০২ রা জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৪

রাজ মো, আশরাফুল হক বারামদী বলেছেন: নারে ভাইয়া হতাশার কিছু নাই। জীবনে অনেক সময় এমন অবস্থাও হয় যে রাস্তা দিয়ে হাটার সময় মনে হয় আমি হাটু ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছি। কে কিভাবে কখন কি অবস্থায় থাকে তা অনুমান হয়তো করা যায় কিন্তু নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায় না। আপনি কিসে শান্তি পাচ্ছেন সেটাই বড় কথা। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে হয়তো আপনি এখন সংসারকে সুখে রাখবেন আর ইংরেজী পড়ে হয়তো তিন বছর বেশী লাগবে আপনার সংসারকে সুখে রাখতে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে আপনার সারা জীবন হয়তো আফসোস থাকত হায় সাহিত্য পড়তে পারলাম না। সারা জীবনের আফসোস ভাল নাকি তিন বা চার বছরের আফসোস ভাল। জীবনের পথ মসৃণ নয়। হোচট খাবেন আবার উঠে দাড়াবেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চলতে থাকবে এই হোচট খাওয়া আর উঠে দাঁড়ানো।

আর আপনার ভাই সঠিক কথাই বলেছে। আপনি যদি হতাশ হন তাহলে বাকীরা কি করবে? ঠান্ডা মাথায় আপনার কাজ করে যান। গীতার শ্লোকটা অবশ্যই জানেন, "তোমার অধিকার কর্মে, ফলে নয়"।

০২ রা জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৪

অসীম পাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে হয়তো আপনি এখন সংসারকে সুখে রাখবেন আর ইংরেজী পড়ে হয়তো তিন বছর বেশী লাগবে আপনার সংসারকে সুখে রাখতে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে আপনার সারা জীবন হয়তো আফসোস থাকত হায় সাহিত্য পড়তে পারলাম না।

আপনার এ কথার সাথে সহমত পোষণ করছি। কিন্তু বিদ্যুতের ঝলকানি দেখে আলোর তীব্র অভাব অনুভব হয়। তাই তো হতাশাও চেপে ধরে।

ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.