নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইনোসেন্স

জাতি - মুসলিম, জাতীয়তা - বাংলাদেশী, ভাষা - বাংলা, চেতনা - ৫২,৭১

ইনোসেন্স

জাতি - মুসলিম, জাতীয়তা - বাংলাদেশী, ভাষা - বাংলা, চেতনা - ৫২,৭১

ইনোসেন্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাহুর কবলে দেশ এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে প্রত্যশা

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:০৩

"বাংলাদেশ এখন বিশ্ব বেহায়ার কবলে”- ৯০ এর গণ আন্দোলনের বিখ্যাত বচন। এখনকার অবস্থা দেখলে মনে হয় "বাংলাদেশ এখন রাহুর কবলে”। বিশ্ব বেহায়া জামাত, বি.এন.পি, আওয়ামীলীগ, বামপন্থী, তথাকখিত সুসিল সমাজ, অতিশয় চালাক-ধূর্ত কিছু মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, কিছু সাংবাদিক, বোকা আমজনতা আর তরুণ প্রজন্মের কবলে পথহারা। একমাত্র ক্ষমতার জন্য রাজনৈতিক আদর্শ জলাঞ্জলী দিয়ে আওয়ামীলীগ, বিএনপি জামাতের মত বিষধর সাপকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দাবিদার আওয়ামীলীগ এবং মুক্তিযোদ্ধোর দল দাবিদার বিএনপি উভয় দলই চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে সবুজের বুকে লাল সূর্য্য খচিত বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে দেয়। মেনন, ইনু, বাদল সাহেবরা নৌকার উপড় চড়ে এমপি, মন্ত্রী হয়ে আমাদের বামপন্থীদের আসল চেহারা দেখিয়েছেন।সুশীল সমাজ মিডিয়ার কল্যাণে আবেগী বক্তব্য আর উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। মনে হয় মিডিয়ায় চেহারা দেখিয়ে জনপ্রিয়তা পেলেই মহাখুশি। অথচ তারা মহাজোট সরকারের অংশীদার হয়েও এককভাবে দেশের জন্য কিছু করে দেখাতে পারছেনা। ইনু সাহেব আরও এক ডিগ্রি উপড়ে উঠে গিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কে লাগামহীন গালি দিয়ে যাচ্ছেন। যেরকম গালি সাধারণত সভা-সমাবেশে তৃতীয় শ্রেণীর নেতারা দিয়ে থাকেন। পূরস্কার স্বরূপ মোখ্খম মন্ত্রীত্ব বাগিয়ে নিয়েছেন। দিলিপ বাবু এমপি না হয়েও টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রী হয়ে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্লট, দামী গাড়ী উপহার নেয়ার অভিযোগ আছে। আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র দূর্নীতির খবর আমরা সবাই খুব বেশী করে জানি।



শাহবাগে এখন বর্তমান তরুণ প্রজন্ম আবেগের জোয়ারে ভাসছে। শাহবাগের তরুণ প্রজন্ম যারা ৭১ দেখেনি তারা ৭১ অনুভব করছে গগণবিদারী শ্লোগান, প্রতিবাদী গান ইত্যাদির মাধ্যমে। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই এবং তাদের কর্মসূচির প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। তবে আমার কিছু প্রশ্ন আছে বর্তমান তরুন সমাজের কাছে। ১৯৭১ শতকোটি আলোক বর্ষে একবারই আসে। আমরা যারা একাত্তর দেখিনি তা কখনো অনুভব করতে পারবনা এ সত্যটা আমরা জানলেও স্বীকার করতে চাইনা। আবেগ দিয়ে কখনও যুদ্ধ জয় করা যায়না। বুদ্ধিমান শত্রু কে বুদ্ধি দিয়েই মোকাবিলা করতে হয়। ছাত্রজীবনে বাম ভাব নিয়ে পরের জীবনে বুর্জোয়া হলে তো কোন লাভ নেই। শহড়ে বসে চেগুয়েভারার ছবি অংকিত গেঞ্জি পরলে আর মিছিল করলে কখনো মাটির কাছে যাওয়া যায় না। ফেসবুকে, ব্লগে লিখলে আর ধর্মকে গালাগাল করলেও যুদ্ধ জয় করা যায় না। তারুণ্যের জোয়ারত কম দেখলাম না। ২০০১ সালে ও ২০০৮ সালে তথাকথিত তরুণ প্রজন্মের ভোটেই জোট আর মহাজোট ক্ষমতায় আসলো। ২০০৮ এ অবশ্য ” না” ভোটের বিধান থাকায় চ্যালেঞ্জ করার একটা সুযোগ ছিল । কোটি কোটি তরূণ ভোটের মধ্যে মাত্র ৩ লক্ষ না” ভোট পড়ল। এটাই আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্মার্টনেস। ৪২ বছরে তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশ কে কত টুকো এগিয়ে নিয়েছে? কেউ কি জবাব দিবেন? জানি কেউ দিতে পারবেন না। নিউজে দেখলাম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল শাহবাগে গিয়েছে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনে সংহতি জানাতে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও তরুণ প্রজন্মের এক ক্রিকেটার জাতীয় দল উপেক্ষা করে ভারতে আইসিএল খেলতে গিয়েছিলেন। পরে বিসিবি’র কাছে ক্ষমা চেয়ে পেয়ে গেছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে আমার প্রশ্ন- কেন শাহবাগে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য দিতে দেয়া হয়নি? তারা আলীগ-বিএনপি;র সাধারন সম্পাদক- মহাসচিব কে আমন্ত্রণ করে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করা যেত - কেন স্বাধীনতার পরপরই রাজাকারের বিচার হলোনা? কেন জামাত ১৯৭৮ সালে আবার নিবন্ধিত দল হয়েছিল? কেন পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদের ছেড়ে দেয়া হয়েছিল? কেন জামাত কে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন হয়েছিল? কেন জামাত কে সরকারের অংশীদার-মন্ত্রী করা হয়েছিল? করবেন কিভাবে? আমাদেরতো গোল্ড ফিসের মেমোরী। আমরা আমজনতাই ধোকাবাজদের ভোট দিয়ে বার বার সংসদে পাঠাই।



শিবিরের তরুণ প্রজন্মের কাছে আমার প্রশ্ন- কেন আপনাদের বিতর্কিত নেতাদের পাপের অংশীদার হবেন? আপনাদের নেতারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্ষমাহীন মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, রাজনীতি করে আপনাদের ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা, অঢেল সম্পত্তি, প্রতিপত্তি বানিয়েছে। তাদের অপরাধের শাস্তি থেকে বাচাঁতে কেন আপনারা নিজেদের তরতাজা প্রাণ দিয়ে দিচ্ছেন? দেশ-জাতি, পরিবারের প্রতি কি আপনাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই? প্রকৃত ঈমানদার হতে হলে, ইসলামী চেতনা ধারণের জন্য জামাত-শিবির করতে হয়না। নিজের আত্নউপলব্ধি’ই যথেষ্ট।

আবার শাহবাগের গণজাগরণ প্রসঙ্গে আসি। সাধারণত প্রতিবাদের বিশাল গণজমায়েত সরকারের বাধা-বিপত্তি, দমনপীড়ন উপেক্ষা করে হয়। শাহবাগে তারুণ্যের গণজমায়েত উল্টো সরকারের সহযোগীতায়, সরকারের নিরাপত্তায়, সম্পূর্ন শ্রোতের অনুকূলে নির্বিঘ্নভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এরকম সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় নির্বিঘ্ন গণজমায়েতের উপস্থিতি নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রক মিডিয়ায় তুলকালাম কান্ড ঘটনার মত করে উপন্থাপন করে যাচেছ। এরকম সরকারী সহযোগীতায়, সরকারের নিরাপত্তায় নির্বিঘ্ন গণজমায়েতের মাহাত্ব্য/হিম্মত কতটুকো তা আমার জানা নেই। তারপরও বলছি এ আন্দোলনের ফসল জন সাধারণের ঘরে উঠোক। দেশের কলঙ্কিত দূর্ণাম ঘুচে যাক।



যার যার অবস্থান থেকেই আমরা নিজেদের পরিবার, পরিচিত জন কে ভালবাসি, নিজেদের কাজ সততার সাথে করি, রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিক দায়িত্ব পালন করি। আমরা যদি সবাই দেশকে ভালবাসি, দল-মত, জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষকে ভালবাসি, সব কাজ সবাই মিলে সততার সাথে করি তাহলেই সমাজ পাল্টাবে, দেশ পাল্টাবে-আমার ক্ষুদ্র মাথা বলে এটুকুই যথেষ্ট। লেখাটা পড়ে অনেকেই আমাকে গালি দিবেন হয়ত। কারণ আমি সবাইকে উদ্ধেশ্য করে বলেছি। তারপরও আমি বলব- কিছু মানুষের প্রতারণার শিকার আমরা হতেই থাকবএবং প্রতারিত হয়ে আমরা খুব সন্তুষ্ট থাকব। কারণ-আমরা নিজেদের ভাল-মন্দগুলো বুজতে চাইনা, নিজেদের ভালবাসিনা, আবেগ দিয়ে সব জয় করতে চাই। কাজের চেয়ে চিল্লাই বেশী। ঘরে বসে অন্যে দোষ খুজঁতে থাকি। নিজেদের দোষ স্বীকার করতে চাইনা। আমরা জাতীয়তা নিয়ে গর্ব করে তাত্বিক হয়ে যাই, মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে, জনদূর্ভোগ সৃস্টি করে ভাবি অনেক কিছু করে ফেললাম.....শুধু নিজেদের কাজটা ঠিকমত করিনা। আমি নিজেও এর ব্যতিক্রম না। এখন আমার প্রত্যাশা এসব রাহু থেকে কি দেশ কে মুক্ত করতে পারবে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম? কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.