![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারা বিশ্বে যখন উদ্বেগ-আতঙ্কের উষ্ণ হাওয়া বইছে প্যারিস হামলা নিয়ে, তখন আমরা তথাকথিত চির শান্তিপ্রিয় বাঙ্গালী জাতির জাতকেরা ব্যস্ত আছি ফেসবুক প্রোফাইল পিক বিতর্কে। আমরা অনেকেই এখনো সন্দিহান বিতর্কের পক্ষাবলম্বন নিয়ে, কোন পক্ষে থাকা বেশি সুবিধাজনক এই ভেবে। আমাদের অনেকের মনেই এখনও সংশয়, তিন রঙে রাঙ্গিয়ে ফ্রান্সের পাশে থাকবো নাকি নিজের অতি উচ্চ মানে বিবর্তিত মস্তিষ্ককে ব্যবহার করবো এই মহান কর্মকাণ্ডের বৈধতা অনুসন্ধানে। কেউ কেউ অবতীর্ণ হচ্ছেন নিরব দর্শকের ভূমিকায় কিংবা ভাবছেন রেইনবোর কথা। কেউ আবার নিজেই নিজের গুপ্তকেশ ছিড়ছেন, অন্যের প্রোফাইলে তিন রঙ্গের পিক দেখে। আবার এমন উন্নত প্রজাতির প্রাণীও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর নয় যারা কিনা অ আ কিছু না বুঝেই নির্দ্বিধায় তিন রঙয়ের সঙ সেজে দিব্বি ভাঁড় হয়ে বসে আছেন। তো এমতাবস্থায়, এই নানা রঙ ঢঙয়ের মানুষ আর নানাবিধ মতবাদ এর ভিড়ে ভীমরি খেয়ে শেষমেশ আমিও ফ্রান্সের পতাকার রঙ মেখে নিলাম আমার প্রো পিকে আর তৎক্ষণাৎ বহুবিধ জ্ঞানীগুণীর নানাবিধ জ্ঞানগর্ভ প্রশ্নের তীরে বিদ্ধ হই। আর তাই, “ওনাদের” জ্ঞাতার্থে এবং আমার মত আর সকল প্রশ্নাক্রান্ত আমজনতার কল্যাণার্থেই আজকের এই পোষ্ট প্রসব করা। দাঁড়ান... এত তাড়াতাড়িই সটকে পড়ছেন কেন ?? এতটুকু পড়ে যারা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে আমি ইহুদী-নাছারা সমর্থক, মালাউনদের দোসর কিংবা বহুকথিত সুশীল সমাজ, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক অনুরোধ রইল লেখাটা পুরোটা পড়ে তারপর আমার মুন্ডুপাত কামনা করুন।
অপরাধবিজ্ঞান সম্পর্কে উচ্চতর নিম্নতর বা মধ্যতর কোন ডিগ্রিই আমার নেই, তেমন কোন জানাশোনাও নেই। তবে, আশেপাশের কতিপয় সুনাগরিক ও ফেসবুকীয় প্রতিবেশীদের সংস্পর্শে থেকে একটা বিষয় এখন আমি খুব ভালমত বুঝে গেছি। সেটা হল, অপরাধ আসলে দুই প্রকার। একটা হল ভাল অপরাধ, আরেকটা হল মন্দ অপরাধ। আরও আছে... সব দোষ হয় মন্দ অপরাধ করলে, ভাল অপরাধ করলে কিছুই হয় না, বরং অশেষ নেকী হাসিল হয়, এমনকি সেটা সমর্থন করাও ধর্মীয় মূল্যবোধের মহান বহিঃপ্রকাশ। আর, সর্বশেষ এই প্রো পিক বিপ্লবের যুগে এসে যা শিখলাম, জানলাম তা না জানলে বোধয় বাকী জীবনটাও এমন গন্ড গর্দভ হয়েই থাকতে হত। কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘৃণিত হবে নাকি সমর্থিত (!!!) হবে তা জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই এর পূর্ববর্তী ডজন খানেক ঘটনার উপর পিএইচডি করতে হবে। এমনকি পূর্বে যদি এমন কোন ঘটনার প্রতিবাদ আপনি না করে থাকেন কিংবা তখন যদি আপনি আপনার মায়ের পেটেও থেকে থাকেন, তবে, আপনার জন্য “প্রতিবাদ” শব্দটি চিরকালের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে গেল। এবং কখনো কখনো পূর্বে যদি আপনি এরূপ ঘটনার প্রতিবাদ করেও থাকেন, সৌজন্যতা বজায়ের খাতিরে এখন আর “প্রতিবাদ” কথাটি মুখে আনবেন না, যদি না সেই মহান কাণ্ডখানা আপনার সগোত্রীয় জেহাদি ভাইদের দ্বারা সম্পাদিত হয়ে থাকে। এই হল বর্তমানে আমাদের “আদর্শ প্রতিবাদ থিওরি”। নিন্দুকেরা কিঞ্চিৎ বিতর্ক করলেও, আমার কিন্তু বেশ মনে ধরেছে।
জ্ঞান অর্জন পার্টের এখানেই সমাপ্তি। আসুন এবার অর্জিত জ্ঞানের একটু ব্যবচ্ছেদ করা যাক।
প্রথম কথা হল, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা সন্ত্রাসবাদ বলতে আমরা কি বুঝি ? সহজ ভাষায়, যখন কেউ অন্যায় ভাবে আমাদের উপর নির্যাতন চালায় তখন আমরা সেই কাজকে চিহ্নিত করি ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে। এখন কথা হল, সেই ‘আমরা’ যদি আবির্ভূত হই ‘আক্রমণকারী’ হিসেবে, তবে কি তাকে ‘শান্তি কর্মসূচি’ বলে ?? নাকি ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ কথাটির অর্থ আন্ডারওয়্যারের মত, যখন যেমন খুশি উল্টে-পাল্টে পরা যায়। যাক সে কথা, আন্ডারওয়্যারের নিচে আর নাই বা গেলাম। এতক্ষণে কেউ কেউ হয়তোবা স্ক্রিনের সামনে থেকে মুচকি হাসি হেসে আমার বুদ্ধির দৌড়ের গতিবেগ মাপায় আত্মনিয়োগ করে ফেলেছেন আর বলছেন, “আরে বোকা, এই সব সন্ত্রাসীরা যে কাদের সৃষ্টি তা যদি তুই জানতিস !! এই সব হামলা-টামলা হাবিজাবি সব ওদের সাজানো, সব রাজনৈতিক চাল”। আমার মহাজাগতিক বুদ্ধিধর বড় দাদারা, এই সব ‘হাবিজাবি’ গুলো রাজনৈতিক চাল কি ধান তা আমি জানি না ঠিক, কিন্তু, আমি এটা জানি যে, ইসলাম সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে, তা সে শত্রু হোক আর বন্ধু। তাই, আন্তর্জাতিক আইএসআইএস হোক আর আমাদের পাড়ার আনসারই হোক, তারা যে ইসলামের পক্ষে না বিপক্ষে তা বোঝার জন্য কারো রকেট সায়েন্টিস্ট মানের আইকিউর দরকার হয় না। শুধু অমুসলিমরাই নয়, বিশ্বজুড়ে এদের হাতে নিরীহ মুসলমানদের নির্যাতিত হওয়ার নজিরও আছে ভূরি ভূরি। আইএসআইএস যে কেবল একটা মুখোস, এটা যে সাম্রাজ্যবাদীদের সাম্রাজ্যবাদ আর সংশ্লিষ্ট সব অপকর্মকে বৈধতা প্রদানের নিমিত্তে বানানো একটা কৃত্তিম মূর্তি, তা এখন আর আমার মত আদাবেপারীর জন্যেও খুব বেশি দুর্বোধ্য নয়। কিন্তু, কথা সেটা নয়, কথা হল, কেউ যদি মানবিক দৃষ্টিতে দেখেও আইসিস এর প্যারিস হামলাকে নিন্দিত ঘটনা বলে স্বীকৃতি দিতে নারাজ হন, তাহলে আপনাকে স্বাগতম। আপনি সম্ভবত আমার হাজারো জেহাদি ভাইদের একজন। আপনার সাথে আমার একটা জায়গায় বেশ ভালো রকমের মিল আছে। তা হলো, আমরা দুজনেই চাই ইসলামের মর্যাদা অটুট থাকুক। তাহলে এখন কেবল আর এই একটা প্রশ্নই বাকী থাকে। আইসিস যদি ইহুদী-নাছারাদের চক্রান্ত, তাদের বানানো ইস্যুই হয়, তবে, আইএস কে প্রতিরোধের চিন্তা বাদ দিয়ে তাদের এসব চরমপন্থি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সমর্থন যোগানো কিংবা নিরবতা পালন কি, তাদের চক্রান্তকেই মজবুত করার নামান্তর নয় ? আইসিসের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলা আর এদের শক্ত হাতে দমন করাই আমাদের জন্য সুবিধাজনক নয় কি ??? (যদিও প্যারিস প্রসঙ্গে এটা একটা খুব চরম স্বার্থপর আর নিষ্ঠুর যুক্তি)
একটা প্রশ্ন এখন অনলাইনে খুবই পরিচিত, “......তখন কোথায় ছিল মানবতা ???”। মানবতা সব সময়েই ছিল। কিন্তু, পার্থক্য হল, আজকের মানবতায় আমাদের কারো কারো নাম সর্বস্ব মুসলমানিত্বে, মুসলিম সত্ত্বায় আঘাত হানে। তবে, এমন একটা নৃশংস বর্বরতায় পুলকিত হয়ে এতে সমর্থন যোগালে তখন তাদের মুসলমানিত্ব যে কোথায় গিয়ে ঠেকে, তা নিয়ে এদের কোন মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হয় না। একটা হত্যাকাণ্ড দিয়ে আরেকটা হত্যাকাণ্ডকে বিচার করা আদৌ কোন সুস্থ মানুষের কাজ হতে পারে না। “প্যালেস্টাইনে কিংবা ইরাকে লাখ লাখ মুসলমানকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে বলে প্যারিসে শত শত ইহুদীকে হত্যা করা খুবই সঙ্গত” –এটা একটা বিকৃত মস্তিষ্কের বর্বরোচিত চিন্তা ছাড়া কিছু নয়। যদি এই বাক্যটিতে ‘মুসলমান’ আর ‘ইহুদী’ শব্দ দুটিকে শুধু ‘মানুষ’ দিয়ে প্রতিস্থাপন করি, তবে তা কেমন শোনাবে ? আমি যদি ফিলিস্তিন, ইরাক কিংবা সিরিয়ার জন্য প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতে পারি কন্ঠে তবে, ফ্রান্সের জন্যে কেন নয় ? শুধু “তারা ইহুদী-খ্রিস্টান” এই দোহাই দিয়ে আর কতকাল নিজেকে বন্দী করে রাখবো তলা বিহীন ঝুড়ির আদিম অন্ধকারে। প্রানহীন দেহের কোন ধর্ম-গোত্র থাকে না। প্যারিসের রাস্তায় পড়ে থাকা আইসিসের বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত একটা প্রাণহীন দেহ আর গাজায় ইসরায়েলী মর্টারের শেলে বিদ্ধ একটা মরদেহকে আমি আলাদা করে দেখবো কি করে ? ফ্রান্সের পতাকাটা এখানে কেবলই প্রতিবাদের একটা ভাষা। আজ যদি এই একই ঘটনা ঠিক উল্টো ভাবে ঘটত, ফ্রান্স কিংবা ফ্রান্স কেন্দ্রিক কোন সংগঠন এমন একটা হামলা চালাত অন্য কোন দেশে, হোক সেটা মুসলিম অথবা অমুসলিম। প্রতিবাদের ঝড় কি উঠতো না তখন ? হয়তো এমন প্রো-পিক অলংকরণের ছলে নয়, অন্য কোন ভাবে বা অন্য কোন আঙ্গিকে, প্রতিবাদ কিন্তু ঠিকই হত। পার্থক্য হল, আমরা মুসলিমরা বিশ্বের একচতুর্থাংশেরও কম, তাই, মুসলিম দেশে কিছু হলে প্রতিবাদের ধ্বনি প্রধানত আমাদের মুসলিমদের মধ্য থেকেই প্রতিধ্বনিত হয়, আর এখন সেটা হচ্ছে পুরো বিশ্বজুড়ে। তাই, এখনকার প্রতিবাদ একটু বেশিই জোরালো। কিন্তু তাই বলে, এতে ঈর্ষা করে প্রতিবাদের বদলে সহিংসতার পালে হাওয়া দেয়া কি মোটেও সমীচীন হবে ? আমি প্যারিস হামলার নিন্দা জানাচ্ছি তার মানে তো এই নয় যে, আমি শুধু প্যারিসের জন্যই প্রতিবাদ করছি। আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি সারা পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া এবং ঘটার অপেক্ষায় থাকা সকল সন্ত্রাসবাদী হামলার। আমি ফ্রান্সের জন্যে যতটা সোচ্চার, প্যালেস্টাইনের জন্যেও ততটাই আহত। ফ্রান্সের পতাকার রঙ দিয়ে তো আমি কেবল প্যারীর সেই শোকার্ত পরিবার গুলোর প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। কিন্তু, আমিতো আসলে দাঁড়াচ্ছি সারা পৃথিবীর সকল ধর্মের, সকল বর্ণের, সব দেশের নিরীহ নির্যাতিত মানুষের পাশে। ‘প্যারিস’ তো কেবলই একটা সমসাময়িক ইস্যু, প্রতিবাদের পোষ্টারে আঁকা একটা অস্থায়ী ছবি। কদিন পরেই হয়ত এ জায়গায় আসবে অন্যকোন শহরের নাম, যেমনি করে এসেছে প্যারিস। আর সেটা আমার কিংবা আপনার চিরচেনা ছোট্ট শহরটার নামও হতে পারে। আর তখন পৃথিবীর অন্যকোন প্রান্ত থেকে অন্যকোন দেশের মানুষ যদি ঠিক এমন করেই মুখ ফিরিয়ে নেয়, দাঁত খিঁচিয়ে হাসে, তবে, সে কুলাঙ্গার জাতির জন্য আমাদের অনুভূতি কেমন হবে ? ভালকে ভাল, আর খারাপকে খারাপ বলার সাহসিকতা টুকুও কি আমরা হারিয়ে ফেলেছি ???
লেখাটা এতটুকুতেই শেষ করে দেয়া যেত, বেশ যুতসই একটা সমাপ্তি টাইপ ফিলিংস এসে গিয়েছিল। কিন্তু, আর এই দুটো লাইন না লিখে পারা গেলো না। ইসলামে ধর্মের জন্যে জ্বিহাদ কিংবা নামান্তরে ধর্মের জন্যে যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে এবং তা আমি যথেষ্ট আস্থা আর দৃড়তার সাথে স্বীকার ও বিশ্বাস করি। এখন, শুধু এই বিশ্বাসের বলেই আমি পৃথিবীর সব অমুসলিম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো না। কারন, আমি জানি, সময়ের ককপিঠে চড়ে আমরা আজ সেই ঢাল-তলোয়ারের যুগ ছেড়ে অনেক অনেক দূরে, নতুন এক পৃথিবীতে এসে উপস্থিত হয়েছি। যেখানে সম্পদ হল জ্ঞান আর যুদ্ধ মানে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধির যুদ্ধ। যারা যত বেশি উৎকৃষ্টতার চর্চা করে, তথ্য সমৃদ্ধ আর অবাধ জ্ঞানচর্চায় বিশ্বাসী তারা তত বেশি এগিয়ে। এখানে উগ্রতা আর পেশী শক্তির চেয়ে সুক্ষ কূটনৈতিক বুদ্ধির জয়জয়কারই বেশি প্রতিধ্বনিত হয়। মনে আছে সেই কট্টরপন্থী কার্টুন ম্যাগাজিন শারলী হেবদোর কথা ? ওদের অফিসে হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যার আগে কজন জানতো ওই ম্যাগাজিনের কথা ? অথচ ওই উগ্র হামলার পর তারা যেন সারা বিশ্বময় ইসলাম বিরোধীদের ট্রেডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে যদি তারা ম্যাগাজিনটির দশ হাজার কপি ছাপত, তবে এখন হয়ত সেটা দশ লাখ ছাড়িয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষী অমুসলিমদের সংখ্যার সাথে যোগ হয়েছে নতুন কটা ডিজিট। নতুন কিছু মানুষের ইসলামের সাথে পরিচয় হল তিক্ত স্বাদের মধ্যদিয়ে। তাহলে, ইসলামের ক্ষতিটা আসলে কারা করল ? কাদের কারনে “ইসলামকে তথা মুসলমানদের কটাক্ষ করে কথা বলাই” হয়ে গেলো সস্তায় জনপ্রিয়তা অর্জনের সবচেয়ে ভালো উপায় ?? আমি বলছি না যে তাই বলে আমরা প্রতিবাদ করবো না। অবশ্যই করবো। কিন্তু, প্রতিবাদ যখন প্রতিঘাতে রুপ নেয় তখন তা হিতেবিপরীত হওয়াই স্বাভাবিক। সহিংসতা কখনোই প্রতিবাদ হতে পারে না। বরং একটি সহিংসতা আরো দশটির বীজ বপন করে। মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই মহান আল্লাহ তায়ালা অশেষ নিয়ামতে ভরপুর করে রেখেছেন। কিন্তু, আমাদের মুসলিমদের বর্তমান মানসিকতার আমূল পরিবর্তন ছাড়া, আমরা কখনোই আমাদের সম্মান ফিরে পাবো না। নোংরা বিশ্ব-রাজনীতির পুতুল নাচের আসরে পুতুল হয়ে আর কত ? এই সত্য গুলো খুব দ্রুত উপলব্ধি করতে না পারলে, গত কয়েক শতক ধরে সংস্কার-কুসংস্কারের তীক্ষ্ণ ফলা দিয়ে পায়ের নিচের মাটি আলগা করতে করতে যে গভীর কূপ আমরা খনন করেছি, তা থেকে বের হওয়া হয়ত আর কোন দিনই সম্ভব হবে না। “ইসলাম শান্তির ধর্ম” তা কেবল মুখে বলে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা অনন্তকাল মহাকালের পাতায় একটা ব্যর্থ প্রয়াস হয়ে থেকে যাবে, যদি না আমরা মুসলমানেরা সে শান্তির পরশ সমগ্র পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে না পারি।
সব শেষে বলবো, এই রামায়ণ থেকে মহাভারত এত সব ঘটন-অঘটনের সবিস্তার ফিরিস্তি প্রদান সত্ত্বেও, যেসব অতি উচ্চ বর্গীয় মহাজ্ঞানী গুরুজনেরা মোটামুটি উপসংহারে পৌঁছেই গেছেন যে, আমার তিন রঙয়ের প্রো পিক আর এই পোষ্ট, দুটোই ইহুদী-নাছারা তোষামোদ মূলক ইসলাম বিদ্বেষী প্রচারনা কিংবা ভিসা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরন কার্যক্রমের অংশবিশেষ, “তাহাদের” প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ রহিল, উক্ত পোষ্ট নামক জঞ্ঝালখানাকে আমার অনুর্বর মস্তিষ্কের পচন বলিয়া গন্য করিয়া আমাকে বাধিত করিবেন, তাও ভালো, কিন্তু, দয়া করে কমেন্ট সেকশানে এসে আমার হেদায়েত কামনা করিয়া কোন রুপ শব্দদূষণ করিবেন না। এমনিতেই মানবদূষণে দেশটার বেহাল অবস্থা। এই অধম আর কিছু না পারলেও অন্তত, নিজের হেদায়েত নিজেই চাইতে পারে। আর, দয়া করে, আমার চৌদ্দ পুরুষ উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়ার আগে নিভৃতে আরো একবার লেখাটা পড়ে নিন।
কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে, ধন্যবাদ। কারো ব্যাক্তিগত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগলে আমি বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থী।
বিঃ দ্রঃ লেখাটা একটু ব্যাক ডেটেড মনে হতে পারে। আসলে, প্রোফাইল পিক এ কয়েকটা কমেন্টের উত্তরেই এই লেখাটা লিখার চেষ্টা করা। প্রথমে ফেবুতে একটা নোট হিসেবে লিখেছিলাম। কিন্তু, তারপর কাল একজন অতি পরিচিত মানুষের করা একটা মেসেজ দেখেই মনে হল, এটাকে একটু বড়ো পরিসরে পোষ্ট করা দরকার। তাই, সামুতে আসা।
©somewhere in net ltd.