নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথামালা

প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।

মনিরুল হাসান

জাতিস্মর

মনিরুল হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাঠুরিয়ার গল্প

২৮ শে মে, ২০০৭ ভোর ৪:২২

এক কাঠুরিয়া বনে নিয়মিত কাঠ কাটিতে যাইত। ওনার উপার্জনের জন্য ব্যবহৃত কুড়ালটি একবার পাশের হ্রদের পানিতে পড়িয়া গিয়াছিল। কাঠুরিয়াকে অত্যন্ত মন খারাপ করিয়া পানির ধারে কান্নাকাটি করিতে দেখিয়া এক দেবী আসিয়া তাহার দুঃখের কথা জিজ্ঞাসা করিলেন। কাঠুরিয়া ইনিয়ে বিনিয়ে তাহার কুড়াল হারানোর গল্প বলিলেন।



দেবী আশ্বাস দিলেন, "তুমি দুঃখ করিও না, আমি এই পানির ভেতরেই থাকি। দেখি তোমার কুড়াল খুঁজিয়া দিতে পারি কি না।" এই কথা বলিয়া তিনি ভুস করিয়া পানির তলে ডুব দিলেন। একটু পরে হাতে করিয়া একটা সোনার কুড়াল নিয়া আসিয়া বলিলেন, "দেখোতো বাছা, এই কুড়ালটা তোমার কি না?"



কাঠুরিয়া মাথা নাড়িয়া বলিলেন, "হা ভগবান! আমাকে দেখিয়া কি এতই মূর্খ মনে হয় যে আমি সোনার তৈরী কুড়াল দিয়া কাটাকাটির কাজ করিবো? ইহা ছাড়াও আমি অতি দরিদ্র একজন লোক, আমি তো কোনো রাজা কিংবা সওদাগর নই যে আমার কাছে সোনার কুড়াল থাকিবে। হে মহান দেবী, এই সাধারণ জিনিসগুলি আপনি কি একবারও চিন্তা করিয়া দেখেন নাই?"



দেবী তখন লজ্জা পাইয়া পুনরায় পানিতে ডুব দিলেন ও একটু পরে আরেকটা রূপার কুড়াল নিয়া আসিয়া আগের মত জিজ্ঞাসা করিলেন, "দেখোতো বাছা, এই কুড়ালটা তোমার কি না?"



কাঠুরিয়া আবার আগের মত মাথা নাড়িয়া বলিলেন, "না হে মহান দেবী .... এই রূপার কুড়াল আমার নয়। আমি কোন কালেই, কোনখানেই, কোন মানুষকেই রূপার কুড়াল দিয়া কোন কিছু কাটিতে দেখি নাই। সুতরাং, এই রূপার কুড়ালটি কিছুতেই আমার হইতে পারে না।"



দেবী তখন মহা বিরক্ত হইয়া পুনরায় পানিতে ডুব দিলেন ও একটি লোহার কুড়াল তুলিয়া আনিয়া কাঠুরিয়াকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলেন। কাঠুরিয়া তাহার কুড়াল দেখিয়া আহলাদে গদগদ হইয়া বলিলেন, "আহা। এইতো আমার আমার আসল কুড়াল। এই কুড়ালটিই তো আমি বনে গাছ কাটার কাজে ব্যবহার করি। আহা! আমার কী সৌভাগ্য যে, আমি আমার কুড়ালটি ফিরিয়া পাইলাম।"



কাঠুরিয়ার মুখে এই কথা শুনিয়া দেবী চমকাইয়া গিয়া বলিলেন, "কী বলিলে? তুমি জংগলে গাছ কাটো? তোমার এত বড় সাহস! তুমি কি জানো না যে জংগলে গাছ কাটা সরকারীভাবে নিষিদ্ধ।" এই কথা বলিয়া রাগান্বিত ও বিরক্ত দেবী মোবাইল ফোন বাহির করিয়া পুলিশকে ফোন করিয়া দিলেন। ইহার পর পুলিশ আসিয়া কাঠুরিয়াকে ধরিয়া লইয়া গেল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.