![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব সৃষ্টি করলো যে জন তারে সৃষ্টি কে করেছে [email protected] 01818897430
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতা-নেত্রীরা প্রায় প্রতিদিনই সভা-সমাবেশে গরম বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। তাঁদের এই বক্তৃতা-বিবৃতি যদি যুক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে হতো, নিজ নিজ রাজনীতির আদর্শকে এগিয়ে নিতে পারত, তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু ছিল না। কিন্তু মাঝেমধ্যেই শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা বক্তৃতা-বিবৃতিতে শিষ্টাচারের সীমা ছাড়িয়ে ফেলেন, যা জনমনে উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দেয়।
রামুসহ কক্সবাজারের কয়েকটি এলাকায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর যে ঘৃণ্য হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাতে সারা দেশের মানুষই বিচলিত। ঘটনার মাসাধিক সময় পর হলেও আক্রান্ত সব বৌদ্ধবিহার মেরামত করা যায়নি, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর পুনর্বাসনকাজও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় আমাদের নেতা-নেত্রীদের বক্তৃতা-বিবৃতিতে আক্রান্ত মানুষগুলোর প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের চেয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রবণতাই বেশি। এটি দুর্ভাগ্যজনক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতাকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, তিনি সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়েন। এর জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেছেন, সরকারের দংশনে গোটা দেশই নীল হয়ে গেছে। দেশের মানুষ এই সাপ ও ওঝার বিতণ্ডা শুনতে চায় না, তারা নেতা-নেত্রীদের কাছ থেকে ভালো কিছু চায়। এই বাদানুবাদে কি কক্সবাজারের বৌদ্ধপল্লিগুলোতে হামলায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের কষ্ট ও বেদনা এতটুকু উপশম হবে?
বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে বৌদ্ধপল্লিতে হামলার ঘটনার বিচার করা হবে। নির্বাচন হওয়ার এখনো এক বছর বাকি। সেই এক বছর কি আক্রান্ত মানুষগুলো অপেক্ষা করবে? আর আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি জয়ী না হয়, তাহলে এই ঘৃণ্য হামলার বিচার হবে না? নির্বাচন কিংবা কারও ক্ষমতায় আসা না-আসার সঙ্গে এই জঘন্য হামলার ঘটনার বিচারের সম্পর্ক থাকতে পারে না। আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। অন্যদিকে সরকার হামলার সব দায়দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপর চাপালেও সরকার গঠিত তদন্ত প্রতিবেদন কিন্তু তা সমর্থন করে না। সেই প্রতিবেদনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি প্রশাসন ও গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতার কথাও বলা হয়েছে। এখন সরকারের উচিত রাজনৈতিক বাদানুবাদে সময়ক্ষেপণ না করে বৌদ্ধপল্লিতে হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনা অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
দেশে হাজারো সমস্যা আছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। ঘরে-বাইরে মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বিদ্যালয়গামী ছোট্ট শিশুও রেহাই পাচ্ছে না। ইতিমধ্যে বিরোধী দল ডিসেম্বরে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আবার সরকারি দলও ‘বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র নস্যাতে’ মাঠে নেমেছে। দুই পক্ষের এই রণপ্রস্তুতিতে সাধারণ মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতএব, বাগ্যুদ্ধে একে অপরকে ঘায়েল না করে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করুন। তাতে দেশও বাঁচবে, গণতন্ত্রও রক্ষা পাবে।
সূত্র: প্রথম আলো
©somewhere in net ltd.