পাঠসূত্র

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫০

জ্ঞান ও ক্ষমতা সম্পর্ক নিয়ে পৃথিবী জুড়ে লেখালেখির ঐতিহ্য বেশ পুরানো।এমনকি উপনিবেশের শেষ পর্যায়েই অনেকে এ দুয়ের জোটবদ্ধ কুকর্মের আভাসটা ধরতে পেরেছিলেন। তবে এ বিষয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও অনুসন্ধিৎসা নিয়োজিত হয় আরো পরে,ক্রমান্বয়ে,যার ফলে আমরা সি. রাইটস মিলস্,আনওয়ার আবদেল মালেক,মিশেল ফুকো,নোয়াম চমস্কি,এডওয়ার্ড সাঈদের রচনার মতো অসামান্য কাজের সাক্ষাৎ পাই।ক্ষমতার তাবেদার প্রাতিষ্ঠানিক পন্ডিত,পক্ষপাতমুখি বুদ্ধিজীবী,চরম জাতীয়তাবাদী ও জাত্যাভিমানী লেখকরা সচেতন বা অসচেতনভাবে তাদের জ্ঞান ও বুদ্ধিকে যেভাবে ক্ষমতার প্রয়োজনে নিয়োজিত করেন তা আমাদের কাছে আর কোন রহস্য নয়,পুরো বিষয়টি এখন উন্মোচিত,নগ্ন,ঘৃণিত।
ক্ষমতার তাত্ত্বিক দিক নিয়ে যাঁর কাজ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়,সেই মিশেল ফুকো মনে করেন ক্ষমতা সর্বব্যাপী,তা ছড়িয়ে পড়ে সকল কিছুতেই।তাঁর তাত্ত্বিক সিদ্ধান্তের একটা প্রমাণ হতে পারে আজকের প্রচার মাধ্যমের মতিগতির বিশ্লেষণ,বিশেষত পশ্চিমা প্রচার মাধ্যম এবং তাদের অনুকরণে তৃতীয় বিশ্বের প্রচার মাধ্যমের একটা অংশ।পন্ডিত,শিক্ষক,কবি-সাহিত্যিকদের কুক্ষিগত করার পাশাপাশি ক্ষমতা প্রচার মাধ্যমকেও দলভুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়।এই চেষ্টা বিশ্বজনীন,নির্বিশেষে মানবীয়;স্থান ও কাল ভেদে এর রূপ ভিন্ন হতে পারে-কিন্তু মূল প্রবণতায় কোন ফারাক নাই।ক্ষমতার স্বার্থে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য প্রচার মাধ্যমের উপর যে চাপ পর্যায়ক্রমে আরোপ করা হয়েছে সম্ভবত এখনই তা সর্বোচ্চ বিন্দু ছুঁয়ে আছে।
কিভাবে তা ঘটে? কী কারণে,কোন প্রেক্ষিতে? তার প্ররোচক পরিস্থিতিগুলো কী কী?...
এসব জিজ্ঞাসাও জবাব নিয়েই রচিত এডওয়ার্ড সাঈদের প্রখ্যাত গ্রন্থ 'কাভারিং ইসলাম'।
(অনুবাদকের ভূমিকা থেকে)

বইটি নিয়ে দু'চারটি মন্তব্য করবার মতো সামষ্টিক উপলব্ধি কিংবা জ্ঞানগত অভিজ্ঞতা কোনটিই আমার নেই।তবে ইসলাম প্রশ্নে জ্ঞানের বহুমাত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে একথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি।

(কাভারিং ইসলাম-মূল:এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাঈদ,অনুবাদ-ফয়েজ আলম,সংবেদ)

০ টি +০/-০