![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-'আমাদের এলাকার এক মেয়ে গণিত বিভাগ থেকে সারা দেশে প্রথম হয়েছে।'
-'প্রতিবছরই তো কেউ না কেউ তার নিজের বিভাগে প্রথম হয়।নতুন করে বলার কি আছে এর মধ্যে।'
-'আরে মেয়েটা গণিতে প্রথম হয়েছে।গণিতে..'
-'ইসলামের ইতিহাস বিভাগে গিয়ে দেখ,ঐ বিভাগেও একজন প্রথম হয়েছে।'
-'আরে গণিতে প্রথম হওয়া আর ইসলামের ইতিহাসে প্রথম হওয়া এক বিষয় না।গণিতে প্রথম হতে গেলে ওভার-ট্যালেন্ট হতে হয়।ইসলামের ইতিহাসে ঐ বিভাগের গবেট স্টুডেন্টিও ফার্স্ট ক্লাস পাই।'
আজকে সকালে আমার আর আমার এক ব্যাচমেটের মধ্যকার তর্কটি শুরু হয় এভাবেই।বলাই বাহুল্য,এখানে দ্বিতীয় জনটি আমি।
মানুষের মেধাকে ক্লাসিফিকেশনের ক্ষেত্রে আমার ঐ ব্যাচমেটের যুক্তিবোধ দেখে আমি রীতিমত অবাক হয়েছি।
তার ধারণা 'সাম্প্রতিক বিবেচনায় গণিতের (বিজ্ঞানের) স্টুডেন্টদের চাহিদা বেশি।অর্থাৎ বিজ্ঞানের স্টুডেন্টরা প্রাইভেট পড়িয়ে পড়িয়ে মাসের শেষে মোটা অংকের টাকা কামায় করতে পারে।কিন্তু ইসলামের ইতিহাসের ছাত্ররা সেটা পারে না।তাদের কাছে কেউ পড়ে না।'
তাছাড়া 'ইসলামের ইতিহাস সবাই বুঝে।এটা কোন বিষয় হল'!
'পৃথিবীর তাবৎ মেধা বিজ্ঞানের স্টুডেন্টরাই তাদের মাথার মধ্যে ধারণ করতে পারে।আর কেউ পারে না।এই মেধাকে ধারণ করার অধিকার একমাত্র তাদেরই আছে।আর কারো নেই।'
এমন একটা ভাবও তার চাঁদ-মুখখানার উপর ঝিলিক দিয়ে উঠছিল বারবার!
তার দাবি 'বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ম্যাথ অলিম্পিয়াড,ফিজিক্স অলিম্পিয়াড,কেমিস্ট্রি অলিম্পিয়াড হয়।কিন্তু 'ইসালামের ইতিহাস' নিয়ে কোন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ তো দূরের কথা,পুরো পৃথিবীতে কোথাও হয় কিনা সন্দেহ!
তাই এই বিভাগের স্টুডেন্টরা অ-মেধাবী।'
তার এসব ফ্যালাসি শুনতে শুনতে রীতিমত বিরক্ত হয়ে যখন দু'চারটি কথা বলতে যাব;এমন সময় পাশে বসে থাকা এক কলাবিজ্ঞানি আওয়াজ দিয়ে উঠল।
সে আমার ব্যাচমেটকে উদ্দেশ্য করে তার পুরানো বেদবাক্যটি শুনিয়ে দিল-'আরে ওর সাথে তর্ক করিস না।ও এমনিতে এরকম।'
তখন কলাবিজ্ঞানির ভাবখানা ছিল অনেকটা এরকম-'আমার ব্যাপার আমি বুঝব।আর অ-মেধাবী হওয়াটা আমার জন্য রীতিমত গর্বের ব্যাপার!
তাতে তোমার কি?'
এসব দেখে তাদের সাথে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।
অগত্যা একসময় ফেসবুকে ঢুকে এই লেখাটা লিখতে শুরু করি...
১৯/০২/২০১৮ইং
©somewhere in net ltd.