নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহাবিশ্বে মহাকাল-মাঝেআমি মানব একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে,ভ্রমি বিস্ময়ে।

ইসমাইল হামিম

পাঠক

ইসমাইল হামিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাপ ¦¦ সাব্বির জাদিদ

১২ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:৫২

'পাপ' পড়ে উঠে মনে হলো,এটা কি পড়লাম আমি।
এ আবার কেমন উপন্যাস? যে উপন্যাসের সমাজের সাথে আমি আমার সমাজকে মেলাতে পারি না। যে উপন্যাসের চরিত্রের সাথে আমার কোন পরিচয় নেই।
চরিত্রের নামগুলো যদিও আমাদের পরিচিত;তবে বেশ অদ্ভুত।আকাশ,বাতাসি,পাহাড়,সাগরি,নদী,বৈশাখী,পল্লবী সহ আরো অনেক নাম।এদের আচরণও এদের নামের মতো অদ্ভুত।
ছাউনির নিচে বসবাস হলেও এরা বন-জংগলে অবাধে ঘুরে বেড়ায়।বনের পশুদের সাথেও এদের সখ্যতা রয়েছে।উপন্যাসের জায়গায় জায়গায় পশুপাখির সাথে এদের অদ্ভুত অদ্ভুত আচরণ দেখে অবাক হয়েছি।

আমাদের মতো এরা দলবদ্ধভাবে বসবাস করলেও তাদের সমাজকাঠমো আমাদের থেকে ভিন্নতর।মানুষে মানুষে যে সম্পর্ক,নারী-পুরুষের যে সম্পর্ক এদের কাছে তার একটা অন্যরকম অর্থ রয়েছে!

এটি সময় থেকে ছিটকে পড়া দু'জন প্রেমিক-প্রেমিকার স্বপ্নের ঘোরে বিচরণ করার আখ্যান হলেও তার মধ্যে আমাদের সভ্য সমাজের 'পাপ' করার প্রবণতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে ভিন্নভাবে,আদিম যুগের মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে,যা যুগপৎভাবে আমাদের জানান দেয় মানুষের পদস্খলনের পুনঃপৌনিকতার,বেঁচে থাকার আশ্চর্য সব লড়াইয়ের।

'কাম' মানুষের স্বভাবজাত একটি মনোদৈহিক প্রবৃত্তির নাম।এই কামের সাথে পাপের একটা সম্পর্ক আছে।উপন্যাসে এই কামকে উপজীব্য করে অনেক ঘটনার অবতারণা হয়েছে,যার মধ্যে নর-নারীর পরস্পরকে কাছে পাওয়ার যে বাসনা,তা মূর্ত হয়ে উঠে।

অজ্ঞতা,কল্পনা ও ভয়ভীতি থেকে আদিকালে মানুষ কিভাবে ধর্মের প্রতি ঝুঁকেছে ,আর কিছু মানুষ কিভাবে তার প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে তার একটা ধারণা পাওয়া যায় এই উপন্যাসের শেষের দিকে,যেখানে দেখা যায় প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সাধারণ চুরির ঘটনা থেকে কিভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামে একটি জনপদের মানুষেরা দাংগায় জড়িয়ে পড়ে,কিভাবে রক্তপিপাসু হয়ে উঠে,তার একটা চিত্র।

সিনেমার মতো এই উপন্যাস শুরু হলেও শেষ হয়েছে শ্বাসরুদ্ধকর এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মধ্য দিয়ে।কল্পনার মাধুরী মিশিয়ে পাপের মৌলিক ধারণা থেকে মানুষ ও ফেরেশতার একই সাথে বসবাসের যে জগৎ রচনা করেছেন লেখক,তার মধ্যে একবার ঢুকলে শেষ না করে বের হওয়া যায় না।একধরনের ঘোর লাগা কাজ করে।

এখানে ফেরেশতা-বিষয়ক যে ধারণা ব্যাবহার করা হয়েছে,সেটাকে ইসলাম ধর্ম থেকে নেওয়া হলেও এ ধর্মের ফেরেশতাদের সাথে এই উপন্যাসের চরিত্রদের শারীরিক কিংবা আচরণগত কোন মিল নেই।তাই এটাকে লেখকের উর্বর মস্তিষ্কের কারুকাজ বৈ কিছু বলাটা যুক্তিযুক্ত হবে না।

উপন্যাসের লেখকের গদ্যশৈলী সহজ-সরল,প্রাণবন্ত।শাব্দিক-ভাষিক কিংবা বর্ণনাগত কোন জটিলতাও নেই।একনাগাড়ে পড়ে শেষ করে ফেলা যায় এমন একটি উপন্যাস।
পরিশেষে,এটি পড়ে পাঠক নির্মল আনন্দ পাবে;একথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি।

(পাপ-সাব্বির জাদিদ,ঐতিহ্য)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.