নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখার সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।
চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলতে যাব, হঠাৎ দেখি সিড়িতে একটা লোক বসে আছে।
বিশাল জ্যাম পেরিয়ে অফিস থেকে বাসায় আসতে প্রতিদিন দেরী হয়ে যায়। ক্লান্তিকর যাত্রা শেষে বাসায় পৌছে কোনরকমে বিছানার ওপর উঠতে পারলেই বাঁচি।এরকম পরিস্থিতিতে আশেপাশে তাকানোর মত মুড কখনও হয় না।
তারপরও আজকে কিভাবে যেন সিড়িতে বসে থাকা লোকটা চোখে পড়ে গেল। অপরিচিত লোকজনের দিকে সাধারণত তাকাই-ই না, তাদের ভাল করে লক্ষ্য করাতো পরের কথা। তবুও এই লোকটার মধ্যে কি যেন ছিল, অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে রইলাম। ফর্সা গাল, ক্লিন শেভড, মাথার চুলগুলো পরিপাটি করে আঁচড়ানো। গায়ে গাঢ় মেরুন রং-এর শার্ট, সাথে কালো প্যান্ট, ইন করা। টোটাল ফর্মাল লুক।
আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে লোকটাই প্রথম কথা বলল।
-কিছু বলবেন?
-আপনি কি আমাদের বিল্ডিং-এ থাকেন? আমি জানতে চাইলাম।
-ঠিক থাকি বলা যায় না, তবে এখন থেকে থাকব। লোকটা হেসে জবাব দেয়।
-মানে?
-মানে আমি সালাম সাহেবের ছেলে। এতদিন দেশের বাইরে ছিলাম, এখন পার্মানেন্টলি চলে এসেছি।
সালাম সাহেব আমার প্রতিবেশি, একই ফ্লোরে পাশাপাশি দুটো ফ্ল্যাটে থাকি আমরা। সালাম সাহেবের ছেলে মানে মুনিয়ার
ভাই।ওহ, এই সুযোগইতো খুজছি এতদিন ধরে।
-আপনি সালাম আংকেলের ছেলে? মানে মুনিয়ার ভাই?
-হ্যা, আপনি চেনেন মুনিয়াকে?
-কি যে বলেন ভাই, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকি।নিজের প্রতিবেশিদের না চিনলে চলে নাকি? বিপদেআপদে উনারাইতো সবার আগে কাজে আসে।
-তা ঠিক। সবাই কোথায় গেছে বলতে পারেন?
-মানে?
-আসলে আমি কাউকে জানিয়ে আসিনি। ইচ্ছা ছিল হঠাৎ এসে সবাইকে চমকে দেব, আর দরজা তালা দেখে নিজেই চমকে গেছি। গত এক ঘন্টা ধরে এই সিড়িতে অপেক্ষা করছি আমি।
-আজকেই দেশে এসেছেন?
-হ্যা।
-আপনার লাগেজ?
-বন্ধুর বাসায় আছে।ওকে আগেই আসার কথা জানিয়েছিলাম। ঢাকা শহরে লাগেজ নিয়ে চলাফেরা করা ঝামেলার ব্যাপার।
তাই ওর গাড়িতে মাল তুলে দিয়ে আমি এদিকে এসে পড়েছি।
-যদি আপত্তি না থাকে আমার বাসায় অপেক্ষা করতে পারেন।এতবড় জার্নির পর বিশ্রাম দরকার নিশচয়ই।
ভদ্রলোকের মুখে হাসি ফুটল।
-থ্যাংক ইউ ব্রাদার। আমার সত্যিই খুব বিশ্রাম দরকার।
-সালাম আংকেলকে ফোন করে বলব আপনার কথা?
-প্লিজ এই কাজ করবেন না ভাই। তাহলে পুরো সারপ্রাইজটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
-ওকে ব্রাদার। আসুন, ভেতরে আসুন।
দুজন বাসায় ঢুকলাম।
-আপনি কি ফ্রেশ হয়ে নেবেন? আমি এই সুযোগে ডিনারের এরঞ্জমেন্টটা করে ফেলি।
-আপনি এত কষ্ট করবেন কেন ভাই?
-কি যে বলেন। একদিনইতো।
-আচ্ছা, তাহলে এক কাপ চা। ডিনারটা বাসায় গিয়েই করব।
-ওকে ব্রাদার। ওয়াশরুমটা ওইদিকে।
ভদ্রলোক ফ্রেশ হতে চলে গেলেন।
আমি তাড়াতাড়ি গলির শেষ মাথার রেস্টুরেন্টটায় ফোন দিলাম।যদিও জানি ভদ্রলোক ভারী কিছু খাবেন না, তবুও এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই ভাল আয়োজন করে ফেলতে হবে।
এই সুযোগে পাঠককে জানিয়ে দেই কেন এই ভদ্রলোককে ইমপ্রেস করার এত চেষ্টা। মুনিয়াকে আমি পছন্দ করি অনেকদিন থেকেই, ইন্ডিরেক্টলি প্রস্তাবও পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু কোন এক বিচিত্র কারণে সালাম আংকেল আমাকে অপছন্দ করেন। তাই মুনিয়ার বড় ভাইকে নিজের দলে আনাটা খুব জরুরী।
বেলটা বেজে উঠল।দরজা খুললাম। দারোয়ান, হাতে একটা পলিথিন।
-স্যার, খানার অর্ডার দিছিলেন?
বাহ, ইদানীং বেশ অল্প সময়ের মধ্যেই এরা ডেলিভারি দিয়ে দিচ্ছে।সার্ভিসের উন্নতি হচ্ছে।
-হ্যা। এই নাও টাকা। ওদের লোক নীচে দাড়িয়ে আছে না?
-জ্বি।স্যার, যদি কিছু মনে না করেন, বাসায় কি গেস্ট আসছে? বলেই একটা কুৎসিত হাসি দিল মতি মিয়া।
কথাটা শুনেই ইচ্ছা করল চড় কষাই। হারামজাদা, ব্যাচেলরের ঘরের গেস্ট মানেই কি ওইসব?
-তুমি যা ভাবছ তা ঠিক না মতি মিয়া। বাসায় সালাম আংকেলের ছেলে এসেছেন। সালাম আংকেলরা বাসায় নেই, তাই আমার বাসায় অপেক্ষা করছেন।
আমি পুরো কথা শেষ করার সুযোগ পেলাম না,মতি মিয়ার মুখটা হঠাৎ ফ্যাকাসে হয়ে গেল।
-আপনের পাশের ফ্ল্যাটের সালাম সাব?
-তো আর কে হবে?
-এইসব কি কন স্যার?
-কেন?
-সালাম স্যারের পোলাতো পেলেন এক্সিডেন্টে মারা গেছে দুইদিন আগে। আইজকা দেশে লাশ আইসা পৌছাইছে, তারা সবাই গেছে লাশ আনতে।
-দেখ মতি মিয়া, আমার সংগে তামাশা করবা না একদম।
-আপনের সাথে তামাশা করুম কেন? আমার দিলে কি ডর ভয় নাই?
'ওরে বাবারে ' বলে মতি মিয়া হঠাৎ সিড়ি দিয়ে দৌড় দেয়।
হঠাৎ আমি কাধে একটা শীতল হাতের স্পর্শ অনুভব করি।
'এত রাত হয়ে গেল, তবুও ওরা আসছে না কেন বলুনতো ব্রাদার?'
==========================================
আমার লেখা অন্যান্য ভৌতিক গল্পগুলোঃ
১.পিশাচ কাহিনীঃ রক্তখেকো ডাইনী পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩
২.পিশাচ কাহিনীঃ জানোয়ারের রক্ত (১৮+)
৩.পিশাচ কাহিনীঃ অন্ধকারে বিলীন
৪.পিশাচ কাহিনীঃ হোটেল একশ তলা
৫.পিশাচ কাহিনীঃ একশ তলায় আবার
৬.পিশাচ কাহিনীঃ রাতের আঁধারে
৭.পিশাচ কাহিনীঃ কন্ঠ
৮.পিশাচ কাহিনীঃ অতিথি
৯.পিশাচ কাহিনীঃ কান্নার শব্দ
১০.পিশাচ কাহিনীঃ শয়তানের পাল্লায়
১১.পিশাচ কাহিনীঃ নির্ঘুম রাত
১২.পিশাচ কাহিনীঃ জঙ্গল মঙ্গলপুর
১৩.পিশাচ কাহিনীঃ একটি ফটোগ্রাফ
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৭
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় পুলহ। অভিনন্দন ও শুভকামনা
২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩৫
হাবিব শুভ বলেছেন: ভাল লেগেছে
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৮
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম হাবিব।শুভকামনা
৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪৪
কালীদাস বলেছেন: লেখাটা ঝরঝরে এবং চমৎকার তবে এটাকে পিশাচ কাহিনীর চেয়ে বরং ভৌতিক মনে হচ্ছে।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আসলে পিশাচ কাহিনী বলতে শুধু ডাকিনীবিদ্যারর চর্চা বা পিশাচ সাধনা যদি হিসেব করেন, তাহলে এটা পিশাচ কাহিনীর মধ্যে পড়ে না। তবে আমি অতিপ্রাকৃতিক বা ভৌতিক ব্যাপার বোঝাতেও পিশাচ কাহিনী শব্দ দুটোই ব্যবহার করি।
গল্পপাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রিয় কালীদাস
৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৩৩
সুমন কর বলেছেন: ছোট গল্প হিসেবে ভালো লাগল। +।
লাইন ভেঙে ভেঙে গেল কেন? দেখতে বা পড়তে খারাপ লাগে।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৯
আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্পটা মোবাইল থেকে পোস্ট করার কারণে সম্ভবত সমস্যাটা হয়েছিল। এডিট করে দিলাম।
গল্পপাঠে ধন্যবাদ সুমন ভাই
৫| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৫২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মুনিয়া যে ভাল লাগার সেটা, " মুনিয়ার ভাই " কথাটিতেই প্রস্ফুটিত!!
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৩
আমি তুমি আমরা বলেছেন: প্রথমে ভেবেছিলাম গল্পকথক ও মুনিয়ার ভাই-দুজনেরই নাম দেব। পরে মনে হল প্রয়োজন নেই। একজন মুনিয়ার ভাই, আরেকজন তার সিক্রেট এডমায়রার- এভাবেই গল্প এগিয়ে যাক
৬| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৩:৫২
ফাহমিদা বারী বলেছেন: বাঃ! চমৎকার লাগলো! অনেক ভালোলাগা রেখে গেলাম!
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৪
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ধন্যবাদ ফাহমিদা বারী
৭| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১৪
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: খারাপ লাগে নাই।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৫
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বেশ লাগল...
ভুই পাই নাই হা হা হা
+++++
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪০
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আমি জানতাম আপনি ভুই পাবেন না।এগুলা পুলাপানের জন্য লেখা, আপনার জন্য জবরদস্ত কিছু লিখতে হবে
৯| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪২
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লেগেছে।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৩
আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্পপাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সুজন
১০| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০৩
রাতুল_শাহ বলেছেন: এত তাড়াতাড়ি শেষ করে দিলেন। আরেকটু ভৌতিক কিছু ঘটাইতেন।
যাইহোক গাঢ় মেরুন রং চিনতে পারছি না। মনে মনে গুগলে ইয়াহুতে সার্চ করছি। কোন সে রং যার নাম মেরুন।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৭
আমি তুমি আমরা বলেছেন: চুলের রংটা লক্ষ্য করুনঃ
ইহাই মেরুন।
আশা করি ভাল আছেন ভাই
১১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৮
রাতুল_শাহ বলেছেন: আচ্ছা এটা মেরুন। অনেকটা খয়েরি কালারের মত।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৩৬
আমি তুমি আমরা বলেছেন: হ্যা, মূলত লাল রঙের একটা শেড এটা
১২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২২
আলোরিকা বলেছেন: আঁই ভুঁই পাঁইছি
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩১
আমি তুমি আমরা বলেছেন: হাউ মাউ খাউ ...
১৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: শেষটা অসাধারণ । বেশ ভাল লেগেছে ।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩২
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ধন্যবাদ কথাকথিকেথিকথন
১৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১২
একজন আরমান বলেছেন:
সুন্দর ছোটগল্প।
ভালো লাগা রইল।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩৩
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ধন্যবাদ আরমান ভাই।অনেকদিন পর আপনাকে ব্লগে দেখলাম
১৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৭
নূর-ই-হাফসা বলেছেন: এইটা ও ভালো হয়েছে ।তবে কম ভয়ংকর ।ধন্যবাদ আপনাকে
২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৩
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম
১৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৪৫
অজানিতা বলেছেন: চমৎকার!
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২৪
আমি তুমি আমরা বলেছেন: ধন্যবাদ অজানিতা
১৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১১
অজানিতা বলেছেন: আপনার সব পিশাচ কাহিনি পড়ে ফেলেছি ভাইয়া!
ধন্যবাদ লেখার জন্য! আরো লেখা আশা করছি!
শুভকামনা রইলো।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১৫
আমি তুমি আমরা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। সামনে আরো লেখার চেষ্টা থাকবে। সাথে থাকুন
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:১৩
পুলহ বলেছেন: সলিড লেখা। কাহিনী যদিও খুব একটা এক্সট্রা অর্ডিনারি নয়, কিন্তু উপস্থাপনা খুবই সাবলীল আর চমকপ্রদ হয়েছে।
সব মিলে +++