নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা - ৮

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৫৩

"আমার কথা - ৭" পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুনঃ আমার কথা - ৭

দিনটি ছিলো শুক্রবার, বাংলা ক্যালেন্ডার মোতাবেক ২৩শে আষাঢ়। তখন সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিলো রোববারে, শুক্রবার ছিলো অর্ধদিবস, জুম্মার নামাযের জন্য বেলা ১২টায় অফিস আদালত ছুটি হয়ে যেতো। আমাকে মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে রেখে আসার জন্য আব্বা ঐ দিনটা ছুটি নিয়েছিলেন। সকাল থেকেই আমর মনটা খুব খারাপ ছিলো। কলেজে যাবার দিন যতই ঘনিয়ে আসছিলো, বাসার সবাই আমার সাথে ততই একটু বেশী সদয় আচরণ করা শুরু করেছিলো। এমনকি ভাইবোনদের সাথে সচরাচর যেসব বিষয়ে খুনসুটি হতো, সেসব বিষয়ে তারা আমাকে ছাড় দিতে শুরু করলো। অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশী বেশী পাওয়া এই আদর আপ্যায়ন আমাকে কেন জানি আরও বেশী ব্যথিত করে তুলছিলো। আম্মা সেদিন পোলাও কোর্মা রেঁধেছিলেন। আমি যা যা খেতে পছন্দ করতাম, মেন্যুতে তার অধিকাংশই ছিলো। কিন্তু কি আশ্চর্য, খেতে বসে দেখি আমার সে পছন্দের খাবারগুলো কিছুতেই গলা দিয়ে নীচে নামছেনা। ঢোক গিলে গিলে আর পানি খেয়ে খেয়ে কোনমতে গিলে উঠলাম।

কলেজের নির্দেশানুযায়ী বানানো নতুন পোষাক পড়ে নিলাম। পকেটে নতুন রুমাল। রওনা হবার সময় সবার চোখে পানি। আম্মার দিকে তাকাতে পারছিলাম না। বাসার সবাই একে একে নানা ধরনের মায়া লাগানো উপদেশ দিয়ে যাচ্ছিলো। আমার ঢোক গিলতে কষ্ট হচ্ছিলো। দুপুর দুটোর দিকে আমি আর আব্বা বাসা থেকে রওনা হয়ে ফুলবারিয়া রেল স্টেশনের পেছনে (এখনকার গুলিস্তানের পেছনে) এসে নামলাম। তখন টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের বাসগুলো ওখান থেকেই ছাড়তো। আর টাঙ্গাইল জেলায় কোন রেলপথ ছিলনা। আমার মত আব্বাও এর আগে কখনো টাঙ্গাইল জেলার কোথাও যান নাই। সেজন্য তিনি একদিন আগে এসে সব খোঁজ খবর নিয়ে গিয়েছিলেন, কোথা থেকে বাস ছাড়বে, কিভাবে কিভাবে মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে যেতে হবে। আড়াইটার দিকে বাস ছাড়লো, সেটা ছিলো ইপিআরটিসির (বর্তমানে বিআরটিসি) একটা বাস। তখন আজকের দিনের মত মহাখালী টু এয়ারপোর্ট রাস্তাটা ছিলোনা। টাঙ্গাইল ময়মনসিংহের বাসগুলো ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতো। পুরনো ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন পার হয়ে কুর্মিটোলা দিয়ে এয়ারপোর্ট এর কাছে গিয়ে উঠতো। ওখান থেকেই মোটামুটি নিরিবিলি রাস্তা শুরু হতো। উত্তরার অস্তিত্ব ছিলনা, একেবারে টঙ্গীতে গিয়ে কিছু জনবসতি ছিলো। রাস্তাগুলো খুব সরু ছিলো। বিপরীতমুখী যানবাহনগুলো একে অপরকে অতিক্রমের সময় একটু স্লো হয়ে রাস্তার একপাশে দু’চাকা নামিয়ে অপরকে যেতে দিতো। যানবাহনের স্বল্পতার কারণে কদাচিৎ ওভারটেকিং এর প্রয়োজন হতো।

টঙ্গীর পর থেকেই রাস্তা খালি। জয়দেবপুর (বর্তমানে গাজীপুর) চৌ্রাস্তার পর থেকে সবকিছু একেবারে শুনশান, শুধু বাসের চাকার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিলো। মৌচাক এর কাছাকাছি থেকে শুরু হলো গজারীর বন। আকাশে চলছিলো মেঘ আর রোদের লুকোচুরি খেলা। ধীরে ধীরে এ্যাংজাইটি অব দ্য আনসার্টেন- অজানার আশঙ্কা আমাকে গ্রাস করতে লাগলো। যতই গজারীর বনের গভীরে প্রবেশ করছিলাম, ততই যেন সাইলেন্স অব দ্য গ্রেভ- ক্ববরের নীরবতা আমাকে আচ্ছন্ন করে তুলছিলো। ভাবছিলাম, এই অজ পাড়াগাঁয়ে আমি দিনের পর দিন থাকবো কী করে! গন্তব্য যতই নিকটবর্তী হচ্ছিলো, আমার, এবং সেই সাথে আব্বারও অস্থিরতা তত বাড়ছিলো। তিনি বারে বারে বাসের কন্ডাক্টরকে নানা প্রশ্ন করছিলেন। একটা জায়গায় এসে দেখলাম রাস্তার উপর বাজার বসেছে। তখন আম কাঁঠালের সীজন ছিলো। রাস্তা জুড়ে শুধু আম আর কাঁঠালের ছড়াছড়ি। জায়গাটার নাম কালিয়াকৈর। জানালা দিয়ে দেখলাম, রাস্তার পাশেই একটা সিনেমা হলও ছিলো। সেদিনের দেখা সেই সিনেমা হলের প্রসঙ্গ পরে আবারো আসবে। বাসের কন্ডাক্টর ঘোষণা দিল, ক্যাডেট কলেজ আর দশ মিনিটের পথ। ঘোষণা শুনে আমি নড়ে চড়ে বসলাম।

মাত্র দেড় ঘন্টার মাথায় আমরা সেদিন ফুলবাড়িয়া থেকে পাবলিক বাসে করে ক্যাডেট কলেজ স্টপে পৌঁছেছিলাম। অথচ আজকের এই ডিজিটাল যুগে নিজস্ব গাড়ীতেও সে পথ মাড়াতে কম করে হলেও তিন ঘন্টা সময় গুনতে হয়। অথচ পীচ ঢালা পথ অনেক মসৃণ হয়েছে এবং চারগুণ প্রশস্ত হয়েছে। সত্যিই, মনুষ্য শক্তি আর শ্রম ঘন্টার কি নিদারুন অপচয়! এদিকটায় যদি সমাজবিজ্ঞানীরা একটু খেয়াল দিতেন! যাহোক, বাস থেকে নেমে জানলাম, সেখান থেকে কলেজের অভ্যর্থনা এলাকা অনেকটা পথ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কৌ্তুহলী দৃষ্টি নিয়ে চারিদিকে তাকাতে থাকলাম। একটা ত্রিকোনাকৃতির খোলা প্রাঙ্গণে কংক্রিট নির্মিত একটা সাদা রঙের বিশাল তিরের ফলার (Arrowhead) উপরে লাল রঙে জ্বল জ্বল করে লেখা ছিলো, "MOMENSHAHI CADET COLLEGE"।

ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে ঐ তির টা একটা উল্লেখযোগ্য ভূমিচিহ্ন (Landmark) ছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে গেলো, তবু কোন রিক্সা চোখে পড়লোনা। পথচারীরা জানালো, রিক্সা মাত্র গুটি কয় ছিলো, তবে তারা অভ্যাগতদের ফেরী করতে ব্যস্ত, প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। তাই আমরা ব্যাগ হাতে করে হাঁটা শুরু করলাম। কিছুদের গিয়েই অবশ্য একটা খালি রিক্সা পেয়ে তাতে চড়েছিলাম। কলেজের গেটে দেখলাম খাকী পোষাক পড়া প্রহরী দাঁড়িয়ে। প্রহরীরা আমাদের দেখে গেট খুলে দিলো। সেই বিশাল আবদ্ধ ফটকের পাল্লা খোলা ছিল আমার জীবনের একটা প্রশস্ত ফটকের প্রতীকী দ্বারোদ্ঘাটন।



চলবে…
(ইতোপূর্বে প্রকাশিত)

ঢাকা
১১ জুলাই ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:০৯

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: সাবলীল বর্ণনায় চমৎকার স্মৃতিচারণ। দারুণ ভালো লাগার পাঠ+

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপুনাকে, রুদ্র জাহেদ, প্রথম মন্তব্য এবং প্লাস এর জন্য। ভালো লাগলো।

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:২৭

কলাবাগান১ বলেছেন: সুন্দর সাবলীল লিখা...

কিন্তু এই লেখক ই যখন লিখেন যে "জনতার বিচার" যখন শুরু হবে তখন (এই সরকার) পালাবার পথ পাবে না....তখন বিস্ময় লাগে.......কি কারনে 'বিচার' হবে?? সেকি গ্রেনেড মেরে ৩০ জন কে হত্যা করে জর্জ মিয়াকে ধরেছে?

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৭

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: শুভ সকাল । সুন্দর সৃতিচারন এবং বর্ণনা খুব ভাল লাগছে । ভাল থাকুন সারাখন ,সারা বেলা ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখার প্রশংসায় প্রীত হয়েছি, দৃষ্টিসীমানা। অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো।

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০২

শামছুল ইসলাম বলেছেন: মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে যাওয়ার দিনটা বেদনার ছায়া ফেলেছিলঃ

//অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশী বেশী পাওয়া এই আদর আপ্যায়ন আমাকে কেন জানি আরও বেশী ব্যথিত করে তুলছিলো। আম্মা সেদিন পোলাও কোর্মা রেঁধেছিলেন। আমি যা যা খেতে পছন্দ করতাম, মেন্যুতে তার অধিকাংশই ছিলো। কিন্তু কি আশ্চর্য, খেতে বসে দেখি আমার সে পছন্দের খাবারগুলো কিছুতেই গলা দিয়ে নীচে নামছেনা। ঢোক গিলে গিলে আর পানি খেয়ে খেয়ে কোনমতে গিলে উঠলাম।//

....
//রওনা হবার সময় সবার চোখে পানি। আম্মার দিকে তাকাতে পারছিলাম না।//

নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার দুশ্চিন্তাঃ

//ভাবছিলাম, এই অজ পাড়াগাঁয়ে আমি দিনের পর দিন থাকবো কী করে! //

বহু কাক্ষিতঃ

//লাল রঙে জ্বল জ্বল করে লেখা ছিলো, "MOMENSHAHI CADET COLLEGE"। //

এক নতুন জীবনের শুরুঃ

//লাল রঙে জ্বল জ্বল করে লেখা ছিলো, "MOMENSHAHI CADET COLLEGE"। //

স্মৃতিময় একটা ভিন্ন আমেজের দিন লেখকের সাথে ঘুরে এলাম মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: বেদনার অনুভূতিটুকে যেমন বুঝতে পেরেছেন, তেমনি নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার দুশ্চিন্তাটুকুও আপনি সঠিকভাবে অনুধাবন করেছেন। আমার লেখার প্রতি আপনার মনযোগ আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে, শামছুল ইসলাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮

কিরমানী লিটন বলেছেন: নিরন্তর শুভকামনা ...

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০২

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, কিরমানী লিটন।

৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: শিশুদের জন্য প্রথম ছয়মাস মায়েরা নরম খাদ্য দিয়ে থাকে।

আমার সেই শিশুকাল আজও কাঁটেনি, শক্ত খাবার (লেখা) এখনও হজম করতে পারিনা।
তাই সহ্জ পাচ্য কিছু পেলে তার আস্বাদ টুকু আনন্দের সাথে উপভোগ করতে চাই।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, শামছুল ইসলাম। অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৪

প্রামানিক বলেছেন: সাবলীল বর্ণনায় চমৎকার স্মৃতিচারণ পড়ে খুব ভাল লাগল। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ খাইরুল ভাই।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, প্রামানিক, নিয়মিতভাবে আমার লেখা পড়ে মন্তব্য করে যাবার জন্য।
শুভেচ্ছা জানবেন।

৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: বিদায়ের সময়ের অনুভূতি অনেকের সাথে মিলে যাবে । কান্না কান্না বেদনা।
আচ্ছা গজারির বন কি এখনো সেই সময়ের মত গভীর আছে ?
আর যানজটের কথা কি বলব !
পোষ্টে ভাল লাগা রইল ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: না, মাহমুদ০০৭, গজারির বন এখন অনেক পাতলা। আগেতো দিনের বেলাতেও অন্ধকার অন্ধকার মনে হতো।
মন্তব্যে প্রীত হয়েছি। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৯| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কলাবাগান আমার পছন্দের একজন ব্লগার ।
কারো স্বাধীন মত প্রকাশে উনার '' বিস্ময়'' লাগায় আমি বিস্মিত !

আপনার সৃতি চারণ ভাল লাগছে ।

স্কিপিং করে রিপ্লাই দেয়া শোভন নয় । কাউকে যুতসই উত্তর দিতে না চাইলে অন্তত একটা ধন্যবাদ দিন ।
একটা পোস্ট দেয়ার পর কয়েকদিন সময় নিন , এতে আপনার পাঠকরা আপনাকে খুজে পেতে সময় পাবেন ।

একটু ''মাতব্বরী'' ফলিয়ে গেলাম ! :D আপনিও যদি এমন ভাবেন লজ্জিত হব ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্মৃতিচারণ ভালো লেগেছে, এ কথা জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নীরবতাও একটা বাঙ্ময় ভাষা। এটা বুঝতে হয়তো কারো কারো একটু সময় লাগে, তা জানি।

১০| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

মানবী বলেছেন: "গন্তব্য যতই নিকটবর্তী হচ্ছিলো, আমার, এবং সেই সাথে আব্বারও অস্থিরতা তত বাড়ছিলো।"

- মনে হয়নি 'কোন ভাবে যদি বাস টা থেমে যেতো, যদি শোনা যেতো সামনে আর যাওয়া যাবেনা, বাসায় ফিরে যেতে হবে?' :-)

প্রজাপতির নাচন সুন্দর ফুটে উঠেছে লেখায়। ভালো লেগেছে পড়ে, ধন্যবাদ খায়রুল আহসান।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ মানবী, আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।
এটা স্বাভাবিক কিনা জানিনা, তবে না, আমার মোটেই সেরকমটি মনে হয়নি। আমার মাথায় চিন্তা ছিলো, আমাকে রেখে আব্বাকে আবার বাড়ী ফিরে আসতে হবে। তাই চাচ্ছিলাম, যত দ্রুত সম্ভব, কলেজে পৌঁছে তাকে উৎকন্ঠা থেকে মুক্তি দিতে। আর মিঃ পিট এর সাথে ইন্টারভিউ এর পর থেকে আমার কক্ষনো এটা মনে হয়নি, যে আমি কোন বৈ্রী পরিবেশে যাচ্ছিলাম। তখনো জানতাম না, এ মর্ত্য জীবনে আর কোনদিন তাঁর সাথে দেখা হবার নয়। একজন মানুষ কতটা গভীরভাবে অন্যের মনে তাঁর হাসিমুখ আর সদয় আচরণের দ্বারা তার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে যেতে পারেন!
নিয়মিত ভাবে আমার লেখাগুলো পড়ে যাবার জন্য আবারো আন্তরিক ধন্যবাদ।
আজ আপনার অনেক পুরনো দুটো লেখা পড়লাম। একটা সুশিক্ষিত কারা, অপরটা জেনারেল শাকিল সম্পর্কিত।

১১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২০

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া তোমার লেখা পড়ে তো মুগ্ধ হয়ে গেলাম!:) :) :)

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা, লেখাটা ভালো লেগেছে জেনে আমিও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

১২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩১

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: এত অল্প সময়ে তখন চলে এসেছিলেন?

আর এখন তো ধানমন্ডি থেকে শ্যামলি আসতেই ২ ঘন্টার বেশি লাগে।

আমি হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করেছি। কলেজেই প্রথম হোস্টেল। প্রথম দিন কেঁদেছিলাম। আবার মাঝেমাঝে বাড়ি থেকে এসে হোস্টেলে গিয়ে ফেরত চলে আসতাম।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: হ্যাঁ, তখন এরকমই সময় লাগতো। তখন তো কোন যানজটের জঞ্জাল ছিলনা। গুলিস্তান থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সরাসরি আসলে ২০ মিনিটেই চলে আসা যেতো। ঢাকা থেকে চিঠি ছাড়লে তৃ্তীয় দিনে তা আমাদের হাতে পৌঁছতো। এখন লাগে এক সপ্তাহেরও বেশী।
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ, ফেরদৌসা রুহী। লেখাটা কেমন লাগলো?

১৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬

কাবিল বলেছেন: পরলুম, শুভকামনা।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: জানলুম। পড়ার জন্য ধন্যবাদ কাবিল।

১৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,



.............পীচ ঢালা পথ অনেক মসৃণ হয়েছে এবং চারগুণ প্রশস্ত হয়েছে। সত্যিই, মনুষ্য শক্তি আর শ্রম ঘন্টার কি নিদারুন অপচয়! এদিকটায় যদি সমাজবিজ্ঞানীরা একটু খেয়াল দিতেন!

আত্মকথনের ভেতর মাঝেমাঝে এমন অনুপান দৃষ্টিনন্দন ।
শুভেচ্ছান্তে ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আহমেদ জী এস, এত সুন্দর করে কথাটা বলার জন্য। ভীষণ অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

১৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
// দুপুর দুটোর দিকে আমি আর আব্বা বাসা থেকে রওনা হয়ে ফুলবারিয়া রেল স্টেশনের পেছনে (এখনকার গুলিস্তানের পেছনে) এসে নামলাম। তখন টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের বাসগুলো ওখান থেকেই ছাড়তো। আর টাঙ্গাইল জেলায় কোন রেলপথ ছিলনা। ... তখন আজকের দিনের মত মহাখালী টু এয়ারপোর্ট রাস্তাটা ছিলোনা। টাঙ্গাইল ময়মনসিংহের বাসগুলো ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতো। পুরনো ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন পার হয়ে কুর্মিটোলা দিয়ে এয়ারপোর্ট এর কাছে গিয়ে উঠতো। ওখান থেকেই মোটামুটি নিরিবিলি রাস্তা শুরু হতো। উত্তরার অস্তিত্ব ছিলনা, একেবারে টঙ্গীতে গিয়ে কিছু জনবসতি ছিলো। রাস্তাগুলো খুব সরু ছিলো। বিপরীতমুখী যানবাহনগুলো একে অপরকে অতিক্রমের সময় একটু স্লো হয়ে রাস্তার একপাশে দু’চাকা নামিয়ে অপরকে যেতে দিতো। যানবাহনের স্বল্পতার কারণে কদাচিৎ ওভারটেকিং এর প্রয়োজন হতো। //
//মাত্র দেড় ঘন্টার মাথায় আমরা সেদিন ফুলবাড়িয়া থেকে পাবলিক বাসে করে ক্যাডেট কলেজ স্টপে পৌঁছেছিলাম। অথচ আজকের এই ডিজিটাল যুগে নিজস্ব গাড়ীতেও সে পথ মাড়াতে কম করে হলেও তিন ঘন্টা সময় গুনতে হয়।//


-এবিষয়গুলো আপনার আত্মকথনটি আকর্ষণীয় হবার জন্য প্রধান কারণ। আপনার মাধ্যমে ষাটের দশ, সত্তরের দশককে দেখার সুযোগ পাচ্ছি।

আপনার লেখায় শুধুই নিজের কথা বলেন নি। সময়কে ধারণ করেছেন, যা একটি লেখাকে কালোত্তীর্ণ করে তোলে।


এটি ভাবলে অবাক হই যে, মানুষ বলে যে তারা আরও উন্নত হচ্ছে এবং আর সভ্য হচ্ছে।
কিন্তু মানুষের সেই মানবিক গুণাবলী কোথায়, কোথায় সেই মনুষ্যত্ব? প্রাণের টান... আত্মীয়তার বন্ধন?



শুভেচ্ছা জানবেন :)

২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: এতটা দরদ দিয়ে লেখাটার মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ, মাঈনউদ্দিন মইনুল। ভীষণ অনুপ্রাণিত বোধ করছি।
আপনার একেবারে শেষের প্রশ্নগুলো আমাকে নাড়া দিয়ে গেলো, কারণ আমিও প্রায়ই এই প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবি। আরেকজনকে পাওয়া গেলো, যিনি আমার মতই ভাবেন।
আন্তরিক শুভেচ্ছা.....

১৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৯

রাতুল_শাহ বলেছেন: আমি কয়েকটা পর্ব পড়লাম। কিন্তু আপনার কোন দুষ্টু বন্ধুর কথা পাচ্ছি না। প্রতিটা ব্যাচে তো একটা না একটা এই রকম বন্ধু থাকে। এই রকম বন্ধু না থাকলে মজার মজার ঘটনা ঘটে না।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: ঠিকই বলেছেন, রাতুল_শাহ। তার পরেও লেখাটা 'লাইক' করার জন্য ধন্যবাদ।

১৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৭

আরজু পনি বলেছেন:
আমাদের দেশের সমাজ বিজ্ঞানীরা কি আর দেশ নিয়ে ভাববার এতোটা সময় পান নাকি তাদের ভাবনার কোন মূল্য তারা আদৌও পান ।
বিদায় বেলার দারুন চিত্র পেলাম।
ভালো লাগা রইল ।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: পেছনে এসে লেখাটি পড়ে মন্তব্য করে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ, আরজুপনি।
আসলে বিদায় বেলার চিত্রটা যত করুণ ছিল, ততটা আঁকতে পারিনি।
লেখাটি ভালো লাগায় যথারীতি প্রীত হয়েছি। 'লাইকে' অনুপ্রাণিত হলাম।

১৮| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২৯

কালীদাস বলেছেন: খুব কাছাকাছি এক্সপেরিয়েন্স আমারও আছে, বুঝতে পারছি আপনার তখনকার ফিলিংসটা :(

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, মন্তব্যে প্রীত হ'লাম। আপনার অভিজ্ঞতার কথাটাও জানাতে পারেন।

১৯| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৫:৩০

সোহানী বলেছেন: আহ্ সে দিনগুলো, সে মায়ের ভালোবাসার সময়গুলো..............। মনে করিয়ে দিলেন সুখের সে স্মৃতিগুলো।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৩০

খায়রুল আহসান বলেছেন: এখনো সেসব স্মৃতির কথা মনে হলে মনটা কেমন করে ওঠে। এর পরেও আবার একই রকমের অনুভূতি হয়েছিল যখন আমার বড় ছেলেকে আমরা একই কলেজে দিয়ে আসি।
পুরনো পোস্টে আসার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমার কথা-৭" পর্বটা খুব সম্ভবতঃ ভুলে বাদ দিয়ে গেছেন?
পিছু হেঁটে পড়ে দেখলে খুশী হবো। :)

২০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩

সোহানী বলেছেন: উপস্................. আসলে সব একসাথে না থাকাতে ঝামেলা হয়ে যাচ্ছে। মনে রাখতে হয় কোনটা পড়েছি।.........

২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: মনে করিয়ে দিচ্ছি, আপনি ১১ ক্রমিক পর্যন্ত পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন।

২১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আজ থেকে বাহান্ন বছর আগের এ দিনটিকে স্মরণ করে প্রায় চার বছর আগে লেখা এ স্মৃতিকথনটি আজ পুনরায় পড়লাম। পুনরায় স্মৃতি রোমন্থন করতে ভাল লাগলো।
সোনালী অতীত বড়ই স্মৃতিময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.