নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কথা - ১১

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৫

"আমার কথা - ১০" পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুনঃ আমার কথা -১০

প্রথম “প্রিন্সিপালস ইন্সপেকশন”। নামটা সবার জন্য “প্রিন্সিপালস ইন্সপেকশন” হলেও, আসলে প্রিন্সিপাল, ভাইস-প্রিন্সিপাল আর এডজুট্যান্ট, এই তিনজন মিলে ভাগাভাগি করে তিন হাউসে ইন্সপেকশনে যেতেন। শুক্রবারে কলেজে এসে রোববারেই এই কঠোর “প্রিন্সিপালস ইন্সপেকশন”এর সম্মুখীন হলাম এমসিসির কোলে আসা আমরা এই ৫৬ জন সদ্যজাত শিশু। অনেকের অনেক রকম পরামর্শ শুনে মাঝে মাঝে আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে কেঁপে উঠছিলো। একদিক দিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলাম যে কাপড় চোপড়, জুতো স্যান্ডেল, বই পত্র সবই নতুন। ধোয়াধুয়ির বালাই ছিলনা। প্রথম ইন্সপেকশন এর দিন প্রিন্সিপাল কর্ণেল আনসারী আমাদের হাউসেই এলেন। সাথে হাউস মাস্টার, হাউস টিউটর এবং হাউসের জন্য নির্দিষ্ট এনসিও। বাকী অন্য দুই হাউসে গেলেন একটাতে ভাইস-প্রিন্সিপাল, অপরটাতে এডজুট্যান্ট স্যার। আমাদের রুম ক্যাপ্টেন এ্যটেনশন করানোর পর প্রিন্সিপাল ‘স্ট্যান্ড এ্যাট ইজ’ করালেন। বললেন, কিভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। আমার সামনে এসে বললেন, “ইওর সুজ শুড শাইন সো মাচ দ্যাট ইউ ক্যান সি ইওর ফেস অন ইট। আমি বললাম, ইয়েস স্যার! তিনি মাথা নেড়ে আস্তে আস্তে নিজ হাতের তালুতে ব্যাটনটা দিয়ে মৃদু কশাঘাত করতে করতে চলে গেলেন। যাবার সময় রুম ক্যাপ্টেন আবার ‘এ্যটেনশন এর হাঁক ছুঁড়লেন, আমরা সদর্পে বুক ফুলিয়ে হিল মারলাম। নিরাপদ দূরত্বে চলে যাবার পর হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।

পরে শুনি, প্রিন্সিপাল পাশের রুমে গিয়ে আমার এক সতীর্থকে বুঝিয়েছিলেন, কী করে ময়লা ক্যানভাস সুজ (পিটি সুজ) পরিস্কার করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, “First clean your shoe with water, then apply soap and wash it, then apply white liquid”। এটা বলার পর তিনি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে সে বুঝেছে কিনা। সে ইয়েস স্যার বলাতে কী বুঝেছে তা বলতে বললেন। সে পড়ে গেল মহা ফাঁপড়ে। বুঝেছে তো ঠিকই, তবে বোঝাবে কি করে? চক্ষু ছানাবড়া করে এদিক সেদিক তাকিয়ে ঢোক গিলতে গিলতে কোন রকমে বলতে পেরেছিলো “ওয়াস-ওয়াটার-সাবুন-ক্লীন”! উল্লেখ্য যে সে ‘শ’ কে ‘স’ বলতো, তাই ওয়াশ কে ওয়াস। তবে প্রিন্সিপাল তার এই সরল প্রচেষ্টায় খুশী হয়েই মৃদু হেসে তার পাশের রুমে চলে গিয়েছিলেন। অবশ্য ঐ দিন থেকেই ”ওয়াস-ওয়াটার-সাবুন-ক্লীন”কথাগুলো পরিচিতি চিহ্ন হিসেবে বন্ধুর কপালে স্থায়ীভাবে আঁকা হয়ে যায়। আমাদের এই যে ইংরেজী বলা নিয়ে এত প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা, এসব নিয়ে যারা তখন ইংরেজীতে কথা বলতে পারতো, তারা ভীষণ কৌতুক বোধ করতো। আমাদের ৫৬ জনের মধ্যে মাত্র ১০ জনের মত এসেছিলো ইংরেজী মিডিয়াম স্কুল থেকে, আর তাদের বেশীরভাগই সেন্ট গ্রেগরী’জ হাই স্কুল থেকে। দুইজন বোধহয় ছিলো উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল থেকে। ওদের মুখে যখন ইংরেজীর খৈ ফুটতো, আমি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতাম, আর এ ব্যাপারে নিজের দৈন্যের কথা ভেবে কিছুটা লজ্জিত বোধ করতাম।

তবে আমাদের এই অস্বস্তির কথাটুকু আমাদের বাঙলা শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল আমিন স্যার বেশ সহৃদয়তার সাথে অনুধাবন করতেন। তিনি সব সময় আমাদেরকে অভয় দিয়ে বলতেন, খুব দ্রুতই আমরা আমাদের এই অক্ষমতাকে কাটিয়ে উঠতে পারবো, এমনকি ওদেরকে অতিক্রম করেও যেতে পারবো। তিনি বলতেন, উপরের ক্লাসে উঠলে বাংলা মিডিয়ামের ছেলেরাই ইংরেজী মিডিয়ামে পড়া ছেলেদের চেয়ে ইংরেজীতে ভালো করে। তাঁর কথা শুনে আমি আশ্বস্ত বোধ করতাম। তবে শুধু ইংরেজীতেই নয়, বাংলা মিডিয়াম থেকে আগত বন্ধুরা কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষায়ও চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করেছিলো। ১৯৭৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে মানবিক ও বিজ্ঞান, উভয় বিভাগে প্রথম স্থানটি অর্জন করেছিলো মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজের ছাত্ররা। তারা উভয়ে বাংলা মিডিয়াম থেকে আগত ছিলো এবং উভয়েই ঢাকার বাইরে মফস্বল শহর থেকে এসেছিলো। পরবর্তীতে তারা উভয়ে অর্থনীতিতে অধ্যয়ন করেছিলো। বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম ডঃ নজরুল ইসলাম (কলেজ ক্যাপ্টেন ছিলো) কিছুদিন হার্ভার্ডেও শিক্ষকতা করেছিলো। বর্তমানে সে জাতিসংঘে কর্মরত। আর মানবিক বিভাগের প্রথম ডঃ মোস্তাফিজুর রহমান তো আজকাল আমাদের সকলের অতি পরিচিত মুখ। সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক হিসেবে প্রায় প্রতিদিনই তাকে টেলিভিশনে দেখা যায়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ পলিটিকো-ইকনমিক ইস্যুগুলোর উপর বক্তব্য রাখার নিমিত্তে।

এমসিসিতে এসে প্রথম যে ইংরেজী শব্দ শুনে চমকিত হই, তা হলো ফর্ম। চিরচেনা ‘ক্লাস’শব্দটি হঠাৎ করেই ‘ফর্ম’ এ পরিণত হয়ে গেলো। ক্লাস টীচার হয়ে গেলেন ‘ফর্ম মাস্টার’। প্রথম দিনেই আমাদের ফর্ম মাস্টার জানিয়ে দিলেন যে দিনের পড়া দিনেই শেষ করে রাখতে হবে, কোন কিছুই পরের দিনের জন্য রাখা যাবেনা। প্রতি দু’সপ্তাহ পর পর আচমকা পরীক্ষা নেয়া হবে, যেটার নাম ফোর্টনাইটলি টেস্ট। এটা শুনে আমার ভালোই লাগলো, ছোট ছোট সিলেবাসের উপর ছোট ছোট পরীক্ষা হওয়াই ভালো। বইপত্র হাতে পাওয়ার পর দেখলাম, কেবলমাত্র বাংলা ছাড়া বাদবাকী সব বইই ইংরেজীতে লেখা। পৃষ্ঠা উল্টে পাল্টে দেখলাম, ততটা কঠিন মনে হলোনা, প্রথমে যতটা ভয় পেয়েছিলাম। তবে ইংরেজী শেখার জন্য সবচেয়ে বেশী ভালোবেসে ফেললাম একটা বইকে, যেটা কোন ইংরেজী সাহিত্যের বই ছিলোনা, কোন ইতিহাস ভূগোলেরও না, সেটা ছিল ক্লাস সেভেনের জ্যামিতি বই, যার লেখক ছিলেন যৌথভাবে Hall & Stevens। একসময়ে বাংলা মিডিয়ামে যাদবের পাটিগণিত যেমন নামকরা বই ছিলো, ইংরেজী মিডিয়ামে Hall & Stevens এর জিওমেট্রীও তেমনি নামকরা বই ছিলো। বইটার ইংরেজ়ী ভাষার মাধুর্যের কারণেই আমি প্রথম পাক্ষিক পরীক্ষার সিলেবাসে শুধু প্রথম চ্যাপ্টারটি থাকা সত্ত্বেও পরপর তিনটি চ্যাপ্টার অতি আগ্রহ নিয়ে পড়ে ফেলেছিলাম। কোণ ও বাহুভেদে ত্রিভুজ কত প্রকার এবং তাদের সংজ্ঞা বাংলা স্কুলে পড়ে এসেছিলাম। ইংরেজি বই এ দেখলাম সংজ্ঞা ও উদাহরণগুলো খুব চমৎকার করে লেখা। মাত্র কয়েকবার পড়েই সংজ্ঞা গুলো একেবারে মুখস্থ হয়ে গিয়েছিলো।

নির্দিষ্ট দিনে জীবনে প্রথম ইংরেজীতে অঙ্ক পরীক্ষা দিলাম। পরীক্ষাটা দিয়ে খুব তৃপ্ত বোধ করলাম, যতটা না পরীক্ষা ভালো হবার কারণে, তার চেয়ে বেশী ইংরেজী ভীতি দূর হবার কারণে। তারপর বিভিন্ন দিনে একে একে অন্য বিষয়ের উপরেও পরীক্ষা দিলাম। কোনটাকেই ততটা কঠিন মনে হলোনা, প্রায় সবগুলো পরীক্ষাই ভালো দিলাম। আর বাংলা পরীক্ষাটা ছিলো জলবৎ তরলং। কিন্তু ওটা দিতে গিয়েই আমাদের ইংরেজী মিডিয়াম থেকে আগত বন্ধুদের নাভিশ্বাস উঠেছিলো। একদিন বিকেলে গেমস পিরিয়ড থেকে ফিরে গোসলের জন্য লাইন দিলাম। বাথরুম থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম, সিনিয়র ক্লাসের কয়েকজন ভাই বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে কাকে যেন জিজ্ঞেস করছে, “হু ইজ ক্যাডেট খায়রুল আহসান”? কে একজন বললো, “হি ইজ ইন দ্য বাথরুম”। আমি ভয় পেয়ে একটা দরজার আড়ালে লুকোলাম। বুঝলাম, কোথাও কোন ভুল করে বসেছি, তাই সিনিয়র ভাইএরা খুঁজছেন শাস্তি দেবার জন্য বা সংশোধন করার জন্য। সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে গোসল সেরে বারান্দায় এসে দেখি, তাদের দুই একজন তখনো রুমের সামেনে দাঁড়িয়ে। আমি গোটো সোটো হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে তাদেরকে কোনমতে অতিক্রম করতে চাচ্ছিলাম। হঠাৎ একজন হাঁক দিলেন, কাম হীয়ার! আর ইউ খায়রুল আহসান? আমার মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছিল না। শুধু কোনমতে মাথাটা নাড়লাম। যিনি এই হাঁকটা দিয়েছিলেন, তিনি কোন হাউস ক্যাপ্টেন বা প্রিফেক্ট ছিলেন না। তবে তাঁকে শুধু তাঁর ক্লাসের সহপাঠীরাই নয়, তার উপরের ক্লাসের ভাইএরাও মান্য করতো। কি কারণে জানিনা, তখন থেকেই তার সতীর্থরা তার নামের আগে “কর্ণেল” পদবী যোগ করে সম্বোধন করতেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে যোগদান না করলেও বাংলাদেশ সরকারের একজন জাঁদরেল সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। সেই তিনিই আমার দিকে তার হাত প্রসারিত করে বললেন, “কংগ্রাচুলেশনস! ইউ হ্যাভ গট দ্য হাইয়েস্ট মার্ক্স ইন ম্যাথস ইন ইওর সেকশন”। আমি নিজের কান ও চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।

তখনকার দিনের নিয়মই ছিল, ক্লাস সেভেনে এসেই প্রথম প্রথম যারা পরীক্ষায় ভালো করতো, সিনিয়র ভাইএরা টীচারদের কাছ থেকে খোঁজ খবর নিয়ে তাদেরকে সেই সুসংবাদটা আগেই দিয়ে দিতে চেষ্টা করতেন। অপর সেকশনে হাইয়েস্ট মার্কস পেয়েছিলো ইংরেজী মিডিয়ামের আবদুল্লাহ। তাকেও একইভাবে অভিনন্দন জানানো হয়েছিলো। পরের দিন ক্লাসে গিয়েও প্রথমেই ফর্ম মাস্টার এর প্রশ্ন, “হু ইজ ক্যাডেট খায়রুল আহসান”? তার হাতে তখন আমাদের পরীক্ষার খাতার একটা বান্ডিল ধরা। তিনি সেটা মেলে ধরে প্রথম খাতাটা আমার হাতে দিয়ে অভিনন্দন জানালেন। আমি পেয়েছিলাম ৪৮/৫০। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ইংরেজী isosceles triangle লিখতে বানানে c অক্ষরটা বাদ পড়ে গিয়েছিলো বলে টীচার দু’নম্বর কেটে রেখেছিলেন। এই ত্রিভুজটার নামের বানান বাংলা ও ইংরেজী, উভয় ভাষাতেই বেশ কঠিন (সমদ্বিবাহু এবং isosceles)। অপর সেকশনের আবদুল্লাহ’র ঐ ভুলটা হয় নাই। সে তাই ৫০ এ পুরো ৫০ই পেয়েছিলো। সে সেন্ট গ্রেগরী’জ থেকে এসেছিলো। টীচার আমাকে প্রশ্ন করলেন, “ইউ হ্যাভ কাম ফ্রম হুইচ স্কুল”? আমি জানালাম, "সেন্ট্রাল গভর্ণমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল স্যার”। তখনকার নামী দামী সেন্ট গ্রেগরী’জ হাই স্কুলের পাশে আমার পুরাতন স্কুলের নামটাকে সম্মানের আসনে বসাতে পেরেছিলাম বলে নিজেকে সেদিন খুব ধন্য মনে হয়েছিলো।

চলবে…

ঢাকা
১৫ জুলাই ২০১৫
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪১

মানবী বলেছেন: ক্যাডেট কলেজের প্রিন্সিপালদের অনেকের সম্পর্কে যেধরনের গল্প শোনা যায় সে তুলনায় আপনার প্রথম প্রিন্সিপলাকে বেশ নরম ও ভালো মানুষ মনে হলো।
ভালো লেগেছে ফেলে আসা নিজের স্কুলের প্রতি মমতা ভরা গাঢ় অনুভূতির কথা পড়ে। প্রথম অংক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পাবার জন্য অভিনন্দন খায়রুল আহসান :-)

সুন্দর বর্ণনার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: হ্যাঁ, আমার দৃষ্টিতে উনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। খুব ফাদারলী ছিলেন। এ ব্যাপারে পরের পর্বগুলোতে আরো কিছুটা জানা যাবে। আমি ছোটবেলা থেকে বড়দেরকে ভালো ভাবতে শিখেছি। কে জানে, মনের অজান্তে হয়তো ঐ বোধটুকুও কাজ করতে পারে। আমি যেমনটা দেখেছি, অন্যরা সেরকম নাও দেখতে পারে।
আমার কাছে আপনার মন্তব্যগুলোর একটা বড় আকর্ষণ হলো লাইনের পর লাইন পাঠ করে কোমলতম বোধের জায়গাটাকে খুঁঁজে বের করা আর তার উপর আলোকপাত করা। ভালো লেগেছে ফেলে আসা নিজের স্কুলের প্রতি মমতা ভরা গাঢ় অনুভূতির কথা পড়ে -- এ অনুভূতিটুকু আপনার চোখে ধরা পড়েছে, এটা কম কথা নয়। আমি সত্যিই সেদিন খুব করে আমার ভালো লাগার স্কুলটার কথা স্মরণ করেছিলাম। সেটাকে ছেড়ে আরও বেটার একটা জায়গায় এসেছি, এই ভাবনাটাই আরো বেশী কৃতজ্ঞ করে তুলেছিলো স্কুল, আর তার শিক্ষকদের অবদানের কথা ভেবে।
অভিনন্দন পেয়ে মনে হচ্ছে, নাম্বারটা বোধ হয় আজই পেলাম। অশেষ ধন্যবাদ এজন্য। তবে প্রথম পরীক্ষার ঐ চমৎকার অর্জনটা আমার মত অন্তর্মুখী একজন কিশোরকে অনেক বড় একটা এক্সপোজার দিয়েছিলো। That was a God sent gift.

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব ভালো লাগলো এই পর্বটাও। হাইয়েস্ট মার্কস পেয়ে নিশ্চয়ই খুব ভালো লেগেছিল! ইংরেজিতে আপনাদের বেইজড ছোট বেলা থেকেই খুব ভালো ছিল বুঝা যাচ্ছে।

শুভকামনা রইলো।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: হাইয়েস্ট মার্কস পেয়ে নিশ্চয়ই খুব ভালো লেগেছিল! -- হ্যাঁ, খুবই। প্রথম পরীক্ষার প্রথম রেজাল্ট, হোক না তা ক্ষুদ্র পাক্ষিক পরীক্ষা যার মাত্র ২৫% ফাইনালে যোগ হতো, আমার জন্য একটা মর্যাদার উপলক্ষ হয়েছিলো। ওখান থেকেই শিক্ষকদের এবং কলেজের সিনিয়র ভাইদের "গুড বুক" এ চলে গিয়েছিলাম।
ইংরেজিতে আপনাদের বেইজড ছোট বেলা থেকেই খুব ভালো ছিল বুঝা যাচ্ছে -- আমার বেইজের কথা বলতে পারি, এর জন্য আমি দু'জনার কাছে আজীবন কৃৃতজ্ঞঃ এক, আমার বাবা, যিনি নিজেও ইংরেজীতে খুব ভালো ছিলেন। দুই, আমার এক কিংবদন্তী শিক্ষক, যাঁর কথা এর পরের কোন পর্বে আসবে।
লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩

আরজু পনি বলেছেন:

আমার এক ফুফু ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে পড়েছেন, গার্লস ক্যাডেট কলেজেরে প্রথম দিককার সময়ে । ওর কাছ থেকে ছবি আর অনেক গল্প শুনেছি। কিন্তু এতো বিস্তারিতভাবে নয় ।

শুরু থেকে শুরু করলেও ভাবলাম যেগুলো প্রকাশিত হচ্ছে সেগুলো নগদে পড়ে ফেলি...
আগের গুলো সুযোগ মতো পড়ে ফেলবো...
খুব অনুপ্রেরণামূলক লেখা ।
পড়ে দারুণ লাগলো ।
আপনি বই আকারে প্রকাশ করতে পারেন এই সিরিজ ।
চলুক এই ধারাবাহিক...দারুণ জীবন্ত ।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজের প্রথম দিকের একাডেমিক ও প্রশাসনিক, উভয় কর্তৃৃপক্ষই দক্ষ ও করিৎকর্মা ছিলো বলে শুনেছি। আমার এক বন্ধু কলেজ শুরুর প্রথম দিকে ওখানে এডজুট্যান্ট এর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
শুরু থেকে শুরু করলেও ভাবলাম যেগুলো প্রকাশিত হচ্ছে সেগুলো নগদে পড়ে ফেলি... -- হ্যাঁ, ঠিক কাজটিই করেছেন। পরে ইচ্ছে হলে সময় সুযোগ মতো বাকী গুলো পড়ে নিতে পারবেন। আর তা ছাড়া ব্যস্ত ও যান্ত্রিক এ জীবনে পিছু হাঁটার সময় কোথায়?
খুব অনুপ্রেরণামূলক লেখা ।পড়ে দারুণ লাগলো । -- মন্তব্যটাও অনুপ্রেরণামূলক। অশেষ ধন্যবাদ।
সিরিজটা বই আকারে বের করলে অন্ততঃ ক্যাডেট কলেজের কিছু ছেলেপুলে বইটা কিনে পড়বে, সে আশা আছে, কেননা ক্যাডেটরা তাদের কলেজের ব্যাপারে ভীষণ নস্টালজিক হয়ে থাকে। কিন্তু একটা বই বের করা আমার কাছে খুবই ঝামেলার কাজ বলে মনে হয়।
চলুক এই ধারাবাহিক...দারুণ জীবন্ত -- ধন্যবাদ, চলবে ইনশা আল্লাহ!

৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: মানসপটে একটা কিশোর বালকের অসহায় ছবিটা দেখতে পাচ্ছিঃ
“ওয়াস-ওয়াটার-সাবুন-ক্লীন”!

আপনার বাঙলা শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল আমিন স্যারের কথা গুলো খুব ভাল লেগেছেঃ

//তিনি বলতেন, উপরের ক্লাসে উঠলে বাংলা মিডিয়ামের ছেলেরাই ইংরেজী মিডিয়ামে পড়া ছেলেদের চেয়ে ইংরেজীতে ভালো করে।//

কিছু মুহুর্ত সারা জীবনেও ভোলা যায় নাঃ

//"কংগ্রাচুলেশনস! ইউ হ্যাভ গট দ্য হাইয়েস্ট মার্ক্স ইন ম্যাথস ইন ইওর সেকশন”। আমি নিজের কান ও চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।//

আপনার অনুভূতিটাকে শ্রদ্ধা জানাইঃ

// টীচার আমাকে প্রশ্ন করলেন, “ইউ হ্যাভ কাম ফ্রম হুইচ স্কুল”? আমি জানালাম, "সেন্ট্রাল গভর্ণমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল স্যার”। তখনকার নামী দামী সেন্ট গ্রেগরী’জ হাই স্কুলের পাশে আমার পুরাতন স্কুলের নামটাকে সম্মানের আসনে বসাতে পেরেছিলাম বলে নিজেকে সেদিন খুব ধন্য মনে হয়েছিলো।//

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি ভালো আছেন তো, শামছুল ইসলাম?
আপনার মনযোগী পাঠ আর সুবিবেচিত বিশ্লেষণ বরাবরই আমাকে প্রণোদিত করে, উৎফুল্ল করে। প্রতিটি লেখার এমন সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ লেখকের জন্য অসামান্য প্রেরণা বৈকি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

প্রামানিক বলেছেন: খুব মনোযোগসহকারে পড়লাম। ভাল লাগল। ধন্যবাদ খায়রুল ভাই।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, প্রামানিক। লেখাটি ভালো লেগেছে জেনে খুশী হ'লাম।

৬| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: তখনকার নামী দামী সেন্ট গ্রেগরী’জ হাই স্কুলের পাশে আমার পুরাতন স্কুলের নামটাকে সম্মানের আসনে বসাতে পেরেছিলাম বলে নিজেকে সেদিন খুব ধন্য মনে হয়েছিলো।// এতদিন পরেও
আপনার এই লেখাটার মাধ্যমে আপনার সেদিনকার সেই অনুভূতি , যা এখনো আপনাকে দোলা দিয়ে যাচ্ছে , যাবে , তা টের পেলাম । আপনার এই ভাল লাগা আমাকেও ছুয়ে গেল । যেন অনুভব করতে পারছি সেদিন আপনার কেমন লেগেছে।
ত হয়ে যাক অভিনন্দন ! :)
ভাল থাকবেন।


২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: অভিনন্দন সাদরে গ্রহণ করলাম, ধন্যবাদ ও শুভেচ্চছা।
উদার মন্তব্যে প্রিত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি, মাহমুদ০০৭।
এইমাত্র আপনার 'সাকিন' গল্পটা পড়ে আসলাম। অসাধারণ হয়েছে। ওখানেও বলেছি, আবারো বললাম।

৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৮

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: ১১ থেকে পড়া হয়নি ব্যাস্ততায় । তাই আজ....।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, দৃষ্টিসীমানা।
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা রইলো।

৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬

রাতুল_শাহ বলেছেন: ওদের মুখে যখন ইংরেজীর খৈ ফুটতো, আমি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতাম, আর এ ব্যাপারে নিজের দৈন্যের কথা ভেবে কিছুটা লজ্জিত বোধ করতাম।

এই ব্যাপারটা এখনও আমার মাঝে ঘটে।

নীলক্ষেত আমি প্রায় ১০-১২ ইংরেজী গল্পের বই কিনে এনে পড়েছি। তার মধ্যে ৫-৬ ভারতীয় লেখকদের। কিন্তু কথা বলার সময় আটকে যায়।
একা একা কথা বলার সময় ইংরেজী ভালোই বলতে পারি, কিন্তু যখনই কোন চাইনিজ বা ভারতীয়দের সাথে কথা বলতে হয়, তখনই আর কথার বলার জন্য শব্দ খুঁজে পাই না।

তখনকার নামী দামী সেন্ট গ্রেগরী’জ হাই স্কুলের পাশে আমার পুরাতন স্কুলের নামটাকে সম্মানের আসনে বসাতে পেরেছিলাম বলে নিজেকে সেদিন খুব ধন্য মনে হয়েছিলো।
:) সত্যিই অনেক আনন্দের একটা ব্যাপার।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ে আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন, এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, রাতুল_শাহ। লেখাটা 'লাইক' করেছেন, সেজন্যেও। আর সেদিনের আমার সেই আনন্দটা সম্যক উপলব্ধি করেছেন, তাতেও বেশ প্রীত ও তৃপ্ত বোধ করছি।

৯| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//বুঝেছে তো ঠিকই, তবে বোঝাবে কি করে?//

দৈনন্দিন কথোপকথনে আমরা যে কত দার্শনিক সত্য আউড়ে যাই, তার হিসেব যদি করতাম অথবা যদি লিখে রাখতে পারতাম, তবে অন্তত সক্রেটিসের মননকে উপলব্ধিটুকু করতে পারতাম। ঠিকই বুঝি, কিন্তু বোঝাতে পারি না - একটি আদি সত্য এবং চিরন্তন মানবিক দুর্বলতা। এজন্যই সকল ভালো শিক্ষার্থী ভালো শিক্ষক হতে পারেন না।

বেশ কয়েক বছর আমি একটি বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলাম। (ব্যাপারটি ছিল এরকম যে, প্রকল্প প্রধান যাবতিয় শিক্ষাকর্মসূচির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করবেন।) সেখানে আমি বাধ্য হয়েছিলাম ঠিক করে দিতে যে, বিএড অথবা শিক্ষক নিবন্ধন ছাড়া কেউ শিক্ষক হতে পারবেন না। তাতে আমার অসুবিধা হয়েছিল, কারণ ভালো শিক্ষকেরা বেশিদিন টেকেন না। তবু আমি সন্তুষ্ট ছিলাম - দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। আমাদের সমাজে অন্তত ৫০% শিক্ষক আছেন বিএড ছাড়া। বাকিদের অধিকাংশই শিক্ষক হবার পর বিএড পড়েন। তাহলে বুঝুন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার নাজুক অবস্থা কেন, অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি কেন থাকবে না।



//বাংলা পরীক্ষাটা ছিলো জলবৎ তরলং। কিন্তু ওটা দিতে গিয়েই আমাদের ইংরেজী মিডিয়াম থেকে আগত বন্ধুদের নাভিশ্বাস উঠেছিলো। //

মফস্বলের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে আপনার বাঙলা শিক্ষক যথাযথভাবেই মূল্যায়ন করেছেন, কারণ শহরের ছেলেমেয়েদেরকে প্রাইভেট টিউশনি দিয়ে মানুষ করে মূলত গ্রামের ছেলেপেলেরাই। শহরেও মেধাবী আছে, কিন্তু গ্রাম্যদের মতো তাদেরকে এত জ্বলতে দেখা যায় না।



এ পর্বটি তো রীতিমতো সিনেমার কাহিনির মতো। ইংরেজি মাধ্যমে এসে প্রথম পরীক্ষাতেই গণিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, আমার ধারণা, কারণ আপনি Hall & Stevens এর জিওমেট্রিকে প্রথম দর্শনেই ভালোবেসেছিলেন।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: সকল ভালো শিক্ষার্থী ভালো শিক্ষক হতে পারেন না। - একদম পুরোপুরি সত্য কথা। পরবর্তীতেও বেশ কিছু নাম করা এবং প্রসিদ্ধ দিগ্রীধারী একাডেমিশিয়ানের ক্লাস করার সৌভাগ্য হয়েছিলো, কিন্তু তাদের দিগ্রীর তুলনায় তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি তেমন ইম্প্রেসিভ ছিলনা।
শহরের ছেলেমেয়েদেরকে প্রাইভেট টিউশনি দিয়ে মানুষ করে মূলত গ্রামের ছেলেপেলেরাই -- এটাও অকাট্য সত্য কথা। নিজের ছেলেদেরকে যারা টিউশনি পড়াতো (উচ্চতর ক্লাসে), তাদেরকে দেখেও আমার সেরকমই মনে হয়েছে।
কারণ আপনি Hall & Stevens এর জিওমেট্রিকে প্রথম দর্শনেই ভালোবেসেছিলেন -- এ কথাটাও আমার ক্ষেত্রে পরম সত্য ছিলো। জিওমেট্রি বই এর ভাষা যে এত প্রাঞ্জল হতে পারে, তা নিজে পড়ে না থাকলে বিশ্বাস করতে পারতাম না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার এই বিশদ মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকুন সর্বদা, মাঈনউদ্দিন মইনুল।

১০| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

কোন বিষয়কে আন্তরিকভাবে ভালো না বাসলে সেবিষয়ে ভালো করা কঠিন। অন্যদের চাপাচাপিতে হয়তো পরীক্ষা পাশ হয়, কিন্তু বিদ্যার্জন অন্য বিষয়।

অন্যদিকে, আত্মঅধ্যয়ন বা সেল্ফ স্টাডিকে অনুপ্রাণিত করতে না পারলে শিক্ষক ক্লাস লেকচার দিয়ে সব করতে পারেন না।

আপনাদের সময়ে ভালো শিক্ষার্থীর মানেই ছিল অনেকটা সেরকম। তারা ভালোবেসে পড়তেন। জ্ঞানার্জনের জন্য পড়তেন। এখন তো আমরা পড়ি চাকরির জন্য, অথবা স্ট্যাটাসের জন্য, অথবা বিয়ের বাজারে কাটতির জন্য। মোটিবেশনটুকু গেছে পুরোই বদলে! সেরকম শিক্ষকও তো পাই না, যারা বিএড না পড়লেও শিক্ষকতাকে ব্রত হিসেবে নিয়ে মানুষকে জ্ঞানের পথ দেখাবে।



শিক্ষা, শিক্ষাদান, শিক্ষা কর্মসূচি আমার ভালোবাসার একটি বিষয়। তাই আগ বাড়িয়ে একটু বেশি বলে দিলাম ;)

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: তাই আগ বাড়িয়ে একটু বেশি বলে দিলাম -- বলতেই থাকুন। আপনার কথা শুনতে তো সব সময়ই ভালো লাগে।
আপনাদের সময়ে ভালো শিক্ষার্থীর মানেই ছিল অনেকটা সেরকম। তারা ভালোবেসে পড়তেন - আমাদের ক্লাসে যে সবচেয়ে মেধাবী ছিলো, সে ঠিক ওরকম ছিলো। দুর্দান্ত মেধাবী, কিন্তু ক্লাসে দুই একবার ছাড়া প্রথম হতে পারেনি। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় স্ট্যান্ড করলেও প্রথম হতে পারেনি। কিন্তু বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলো, তবুও ভর্তি হয়নি, কারণ তার ইচ্ছে ছিলো ফিজিক্স বা ম্যাথস পড়ার। ঢাবি'র ফিজিক্স বিভাগে ভর্তি হয়ে খুব দ্রুতই শিক্ষকদেরকে তার প্রতিভা দ্বারা চমকে দিয়েছিলো। বেশীদিন সেখানে পড়েনি, তবুও তখনকার অনেক শিক্ষকই তার কথা এখনো জিজ্ঞেস করে থাকেন। প্রকৌশলী বাবার পীড়াপীড়িতে আমেরিকার ক্যালটেক ইউনিভার্সিটি থেকে বিশেষ কৃ্তিত্বের সাথে সিভিল ইঞ্জিনী্রিং পাশ করে বাবার কথা রাখে, কিন্তু ইঞ্জিনী্রিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেনি। পুনরায় পড়াশুনা করে তার প্রিয় বিষয় ম্যাথস আর ফিজিক্স নিয়ে। বর্তমানে সে ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির ম্যাথস এর প্রফেসর, এবং তার নিজস্ব বিষয়ে পান্ডিত্যের কারণে সারা একাডেমিক বিশ্ব তাকে এক নামে চেনে। বছর কয়েক আগে সে আর তার এক পোস্ট ডক্টোরাল ছাত্র মিলে যৌথভাবে একটা তত্ত্ব লিখে প্রায় আড়াই শত বছরের পুরনো ম্যাথস এর একটা জটিল সমস্যার সমাধান করেছে। ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটি ছাড়াও সে প্রায়ই লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজে “একাডেমিক ভিজিটর” হিসেবে শিক্ষাদান ও গবেষণা কর্ম তত্ত্বাবধান করে থাকে।
আমিও একটু আগ বাড়িয়েই আমার বন্ধুর কথা লিখে ফেললাম বলে আশাকরি মনে কিছু নেবেন না। আমার বিশ্বাস, বিশ্বকে দেয়ার মত আমার বন্ধুর এখনো অনেক কিছু করার আছে।
"আমার কথা - ১০" এ আপনার কোন মন্তব্য পড়েনি। ভাবছিলাম, লেখাটা পড়ে মন্তব্য করার মত কিছু পান নি বা ইচ্ছে হয় নি, নাকি জাস্ট স্লিপ হয়ে গেছে। বুঝতেই পারছেন, আপনার মত একজন বিদগ্ধ পাঠক ও শ্রোতা আমার সব কথা শুনুন, এটা আমি চাই।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ২০১২ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মো ইয়ান সম্পর্কে আপনার একটা আদি লেখায় মন্তব্য রেখে এসেছি। আশাকরি সময় করে দেখে নেবেন।

১১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৫৮

কালীদাস বলেছেন: ক্যাডেট কলেজ ইংলিশ মিডিয়াম ছিল তখন? এখন কি অবস্হা?

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, তখন ক্যাডেট কলেজগুলো (মাত্র চারটে, এখন বোধকরি ১৪টি) ইংলিশ মিডিয়াম ছিল। এখনকার কথা সঠিক বলতে পারছিনা। দেশ স্বাধীন হবার কিছুকাল পরে ওগুলোকে বাংলা মিডিয়ামে পরিণত করা হয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৬:৩৬

সোহানী বলেছেন: বুঝলাম হু ইজ খায়রুল আহসান :P

আচ্ছা, আমাদের সময় বা এখনো ক্যাডেট কলেজে ভয়াবহ শাস্তির কথা শোনা যায়। সেটা কি সত্য?? আমাদের সময়ে একবার শুনেছি বুলডোজারের নীচে ফেলে একটা ছেলেকে মেরে ফেলেছিল। তার উপর সিনিয়রদের অত্যাচার ছিল? এগুলো কি ঠিক??? জাস্ট কিউরিসিটি!!!!

তবে আপনি সত্যিই ইউনিক এটা মানতেই হয়.............।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা, আমাদের সময় বা এখনো ক্যাডেট কলেজে ভয়াবহ শাস্তির কথা শোনা যায়। সেটা কি সত্য?? - আমাদের সময় আমরা যা পেয়েছিলাম, সে কথা এখানে বলতে পারি। তখন আমাদের সিনিয়র ভায়েরা আমাদেরকে আপন ভাই এর মতই আগলে রাখতেন। আর সে কারণেই তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কটা গত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে এখনো অটুটই আছে বলা চলে। এখনো দেখা হলে পুরনো স্মৃতিচারণ হয়, লেগ পুলিং হয় বেশ আনন্দের সাথেই। শুধু পার্থক্যটা এই যে তখন আমরা তাদেরকে একটু ভয় ভয় করেই চলতাম, এখন আলাপ করি বাল্যবন্ধুর মত। তবে এখনো সমীহ করেই চলি, কথা বলি, যদিও বা ছোটদের সাফল্যের শিখরটা বড়দের চেয়ে অনেকটা উঁচুতেও থাকে।
তবে পরবর্তীকালে অবস্থার অবনতি হয় বলে শুনেছি। আমার চেয়ে ২৮ বছর পর আমার ছেলে একই কলেজে যায়। সে সময় কলেজের শৃঙ্খলা, ব্যবস্থাপনা আর শিক্ষার গুণগত মানের অধঃপতন দেখে আমি যারপরনাই ব্যথিত হয়েছি।

১৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:২৯

মাহবুব রোহমান বলেছেন: খাইরুল ভাই, অষ্টম শ্রেণী তে থাকতে একবার ইংলিশ টিচার জিজ্ঞেস করেছিলেন অনেকটা চেলেঞ্জ-এর সুরে এমন কেও কি আছো যে যেকুনো বাংলা বাক্য ইংরেজিতে অনুবাদ করতে পারবে? মাত্র দুজনের একজন ছিল বাংলা মাধ্যমের। ওকে পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম কি ভাবে এত ভাল ইংরেজি জানতো। ওর বাবা নাকি বাসায় অবজারভার রাখতেন, আর সব ভাইকে রাতের খাবার টেবিলে একটা করে খবরের বিশ্লেষণ ইংরেজি তে বলতে হতো।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: সবাই নানা কাজে এদিকে সেদিকে থাকার কারণে সাধারণতঃ আমাদের সমাজে দুপুরের খাবারটা সবার একসাথে বসে খাওয়া হয় না, তবে ইচ্ছে করলেই রাতের খাবারটা সবাই মিলে একসাথে বসে খাওয়া যায়। এ ব্যাপারে সাধারণতঃ মায়ের ভূমিকাটা মুখ্য। আজকাল অবশ্য শুনি, সন্তানেরা স্মার্টফোনে/ল্যাপটপে এতটাই ব্যস্ত থাকে যে তাদের ডাইনিং টেবিলে এসে সবার সাথে আহার গ্রহণের সময়ই হয় না। আর কিছু কিছু অতিস্নেহবৎসল মায়েরাও নিজগৃহকে হোটেলসম জ্ঞান করে তাদের খাবারটা তাদের কক্ষে পাঠিয়ে দিয়ে রুম সার্ভিস দেন, এটা অত্যন্ত ক্ষতিকর।
একসাথে খাবার সময় সবাই এটা ওটা নিয়ে আলাপ করলে দুটো লাভ হয়। এক, লেটেস্ট পরিস্থিতি নিয়ে আপডেটেড থাকা যায়। দুই, সবাই কিছু না কিছু কথা বলাতে, বিশেষ করে বাড়ীর ছোটদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। মানুষের সামনে কথা বলতে পারার প্রথম শিক্ষাটা এভাবে পরিবারের ডাইনিং টেবিল থেকেই শুরু হয়।
ইংরেজী ভালভাবে শিখতে হলে দুটো বিশেষ করণীয়ঃ এক, মানসম্মত, স্ল্যাং বিবর্জিত ইংরেজী পত্রিকা পড়া। দুই, বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সংবাদ এবং সংবাদ পর্যালোচনা শোনা। ব্যক্তিগতভাবে আমি এ দুটো থেকেই প্রভূত উপকৃ্ত হয়েছি।
পুরনো পোস্ট খুঁজে বের করে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। প্রীত হ'লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.