নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গানের ভেলায় বেলা অবেলায়……

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৩

১৯৬২-৬৩ সালে আমরা ঢাকার কমলাপুরে থাকতাম। তখন আমার বয়স ৭/৮ বছর হবে। বাসার ঠিকানাটা এখনও মনে আছে-18, Republic Second Lane, Kamalapur, Dacca। আমরা ভাড়া বাসায় থকতাম। প্রতি মাসের ঠিক ২ তারিখে সন্ধ্যায় একজন টাকমাথা মধ্যবয়স্ক বাড়ীওয়ালা আসতেন। আব্বার কাছ থেকে গুণে গুণে ভাড়ার টাকা বুঝে নিয়ে একটা রসিদ লিখে দিতেন। তারপর বুকপকেট থেকে একটা রেভিনিউ স্ট্যাম্প বের করে জিহ্বার সাথে ঘসে রসিদটার উপর সেঁটে দিতেন। মাঝে মাঝে ইংরেজীতে লেখা রসিদটা আমার হাতে দিয়ে বলতেন, বাবু পড়তো! আমি ছোট ছোট শব্দগুলো আর টাকার অংকটা ছাড়া আর বেশী কিছু পড়তে পারতাম না, তবে পড়ার জন্য চেষ্টা ও আগ্রহ থাকতো প্রচুর। তিনি বলতেন, ভালোভাবে পড়াশুনা করবে। যেদিন তুমি সব লেখাগুলো ঝরঝর করে পড়তে পারবে, সেদিন আমি আমার পাওয়া এ টাকাগুলো সব তোমায় দিয়ে দেব। বলা বাহুল্য, তিনি যতদিন আমাদের বাড়ীওয়ালা ছিলেন, ততদিন পর্যন্ত আমার বিদ্যের দৌড় ঐ লেভেলে পৌঁছায়নি। তবে শেষ যেদিন তিনি আমাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে যান, সেদিন তিনি তা থেকে কিছুটা অংশ আব্বার হাতে দিয়ে বলেছিলেন আমাকে কিছু একটা কিনে দিতে। স্মল কাইন্ডনেস, বাট আই স্টিল রিমেম্বার!

বাসার ঠিকানাটার ঐ রকম কঠিন নাম কেন ছিল, তা ঐ সময় যেমন বুঝিনি, পরেও তেমন আর জানার চেষ্টা করিনি। আমাদের বাসা থেকে সামান্য একটু দূরে, এখন যেখানে কমলাপুর স্টেশনের মূল প্ল্যাটফর্ম, তখন ঐ জায়গাটার নাম ছিল ঠাকুরপাড়া। ওখানে আব্বার কয়েকজন কলীগ বাস করতেন, আমার বড়ভাইদের কিছু বন্ধু বান্ধবও ঐ এলাকা থেকে খেলতে আসতেন। আমাদের বাসাটা ছিল এখন যেখানে ট্রেনের বগী ধোয়া হয়, তার ঠিক পশ্চিমে। মতিঝিল কলোনী তখনো গড়ে উঠেনি। একটা বা দুটো বিল্ডিং হয়তো হয়েছিলো, তবে পুরো এলাকা জুড়ে অনেকগুলো ইটের স্তূপ ছিল। সদ্য কেনা কয়েকটা নতুন বিআরটিসি বাস (তখন নাম ছিল ইপিআরটিসি) কমলাপুর ডিপো থেকে গুলিস্তান আর মিরপুরে যাতায়াত করতো। কমলাপুর স্টেশনের সামনের বাঁকটাতে একটা বাস স্ট্যান্ডের সাইনবোর্ড ছিল, নাম “ঠাকুরপাড়া”। তখন বোধহয় একদিন কোলকাতায় হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে রায়ট শুরু হয়ে গিয়েছিল। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে একদিন দেখি হলুদ রঙের বাস স্ট্যান্ডটার নাম বদলে কে যেন কালো কালিতে লিখে দিয়েছে “মুসলিম পাড়া”। তখন হিন্দু এলাকাবাসীদেরকে সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক আক্রমণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো বলে বড়দের মুখে শুনেছিলাম।

এখনো মনে পড়ে, বর্ষা আসার আগে আগে আমাদের এলাকার অনতিদূরে মুগদাপাড়ার দিকে নৌকা বানানোর ধুম পড়ে যেত। বর্ষার সময় নৌকাই ঐসব এলাকায় যাতায়াতের জন্য একমাত্র বাহনে পরিণত হতো। দূর দূরান্ত থেকে নৌকা বোঝাই করে নানারকমের পণ্যসামগ্রী স্টেশনের ওপারে আসতো। পরে বিক্রেতারা মাথায় করে সেসব নিয়ে আমাদের এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রী করে বিকেলে নৌকা নিয়ে ফিরে যেত। অনেক বেদে বেদেনীরাও সে সময় এসে আমাদের সাপের খেলা দেখাতো আর মা খালাদের কাছে কাঁচের চুড়ি টুরি বিক্রয় করতো। পোকা খাওয়া দাঁতের ছেলেমেয়েদেরকে কাছে টেনে নিয়ে দাঁত থেকে জীবন্ত পোকা বের করে দেখাতো আর নানা ছলে বলে এটা ওটা বিক্রয় করতো। পরে অবশ্য জেনেছি এসব কিছুই ছিল স্রেফ ভাওতা। দাঁতে কখনো পোকা হয়না।

তখনো তিতাস গ্যাস ছিলনা। তাই নৌকার অন্যতম প্রধান পণ্য ছিল সুন্দরী গাছের চেরা কাঠ, যা রৌদ্রে শুকিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করার জন্য গৃহিণীরা বেশী করে কিনে স্টক করে রাখতেন। তখন রেলের লাইন বসানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। হাজার হাজার সেগুন কাঠের কালো কালো স্লিপার স্ট্যাক করে রাখা হতো। কালো, কারণ সেগুলোকে আলকাতরা মেখে রাখা হতো। সেই স্লিপারের গন্ধ এখনো যেন আমার নাকে লেগে আছে। যতদূর মনে পড়ে, আমাদের এলাকা ও তার আশে পাশে বেশ কিছু গুণী ও গণ্যমান্য ব্যক্তি বসবাস করতেন। তার মধ্যে একজন বয়স্ক অবসরপ্রাপ্ত রাশভারী ব্যক্তি ছিলেন, যাকে সবাই “ইন্সপেক্টর সাহেব” বলে ডাকতেন। তিনি মনে হয় রেলওয়ে এস্টেট অফিসের কোন ইন্সপেক্টর হয়ে থাকবেন। তাঁর অনেকগুলো ছেলেপুলে ছিলো। তাদের মধ্যে দুই একজন আমার ফুটবল খেলার সাথী ছিল। তারা প্রথমে আমার উপরের ক্লাসে পড়তো, পরে একসাথে আর তার পরে আমার নীচের ক্লাসে পড়তো। তাদের তুলনায় আমি একটু শার্প ছিলাম বলে হয়তো, খালা (ইন্সপেক্টর পত্নী) আমায় খুব আদর করতেন, আর তাদেরকে বলতেন, সব সময় আমার সাথে খেলতে। এতে, বয়সে ছোট হলেও ওদের কাছে আমার মর্যাদাটা একটু বেড়ে যেত।

অনতিদূরে থাকতেন বিখ্যাত বিল্লাহ পরিবার। শিমূল বিল্লাহ, তার ভাই দিনু বিল্লাহ এবং আরো কয়েকজন মিলে সবসময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি আয়োজন করতেন, গানের আসর বসাতেন। বাসার কাছেই থাকতেন কৌ্তুকাভিনেতা রবিউল। একটু দূরে শাহজাহানপুরে থাকতেন কবি বেনজীর আহমেদ এর পরিবার। কমলাপুর বাস ডিপোর কাছে থাকতেন পল্লীকবি জসিম উদ্দিন এর পরিবার। কমলাপুর বৌদ্ধমন্দিরে বুদ্ধ পূর্ণিমার সময় অনেক সুধী সমাবেশ ঘটতো। সন্ধ্যার পর সেখান থেকে ফানুস উড়ানো হতো। প্রখ্যাত লোকগীতি শিল্পী আব্দুল আলীমও সপরিবারে আমাদের এলাকায় থাকতেন। তাঁর দেহের রঙ খুব কালো ছিলো, তাই বোধহয় তিনি বেশীরভাগ সময় সাদা রঙের পাঞ্জাবী পাজামা পড়তেন। কাঁধে একটা চাদর ঝোলানো থাকতো। তাঁকে কখনো প্যান্ট শার্ট পড়তে দেখিনি। তিনি খুব নিরীহ প্রকৃতির এবং মিষ্টভাষী ছিলেন। তাঁর দেহের রঙ আর মিষ্টি গলার কারণে পাড়ার অনেকে তাঁকে নিজেদের মধ্যে “কোকিলা” নামে ডাকতেন। এক শ্রাবণ দিনে ক্রমাগত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে সামনের রাস্তায় অনেক পানি জমে গিয়েছিলো। প্রায় ঘরের দুয়ারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। জনাব আব্দুল আলীম তাঁর পাজামাটা হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে পানি মাড়িয়ে আসছিলেন। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, পাশের বাসার এক ন্যাংটো পিচ্চি তাদের বারান্দায় দাঁড়িয়েই জমা পানির মধ্যে সশব্দে মূত্রত্যাগ করে মজা পাচ্ছে। আলীম চাচা তাদের বাসাটা অতিক্রম করার সময় একটু থেমে বলে গেলেন, “হায় হায় ভাতিজা! সারাডা দ্যাশ পানিতে ভাইস্যা যাইতাছে, এর মধ্যে তুমি দিলা আরও খানিকডা বাড়াইয়া!”

এতকিছুর অবতারণা একটা গানের সূত্র ধরে। নীচে দেওয়া লিঙ্কের প্রথম গানটা তো জীবনে বহুবার শুনেছি। আজও সারাদিন ধরে লিঙ্কের সবগুলো গান কয়েকবার করে শুনলাম। প্রথম গানটা শুনতে শুনতে মনে ভাবের জোয়ার এসে গেল। মনে হলো, এসব ভক্তিগীতি যেন সারাটা জীবন উপেক্ষিতই থেকে গেল! অথচ কতোনা বিশুদ্ধ ও পবিত্র এসব গানের কথা! গান শুনে শুনেই আজ আমার সারাটা দিন কেটে গেল। মন ভারী হয়ে এলে কিছু পছন্দের রবীন্দ্র সঙ্গীতও শুনি। আল্লাহ’র প্রশংসার কথাগুলো মাঝে মাঝে চোখে জল নিয়ে এলো। আর গায়কের কথা স্মরণ করে ঘুরে বেড়ালাম স্মৃতির অলিগলিতে। স্মৃতিতাড়িত হয়ে এভাবেই লিখে ফেললাম শৈশবের কিছু এলোমেলো স্মৃতিকথা- আজকের এই লেখা।

আব্দুল আলীমের গানের লিঙ্কঃ Best of Abdul Aleem

আমার প্রিয় একটা গান যেখান থেকে শিরোনামটা নিয়েছি (ওটাও শুনেছি কয়েকবার): গানের ভেলায় বেলা অবেলায়……

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অাপনার স্মৃতিকথা পড়লাম । ভালো লাগলো ।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্মৃতিকথা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশী হ'লাম, রূপক বিধৌত সাধু। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে অনেকদিন ধরে ব্লগে দেখছিনা, রূপক বিধৌত সাধু। কোথায় আছেন, কেমন আছেন?

২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৯

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: আপনার লেখা যতই পড়ছি অনেক কিছু জানছি, শিখছি।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি এখানে ব্লগিং শুরু করেছি আজ থেকে চার মাস চার দিন আগে। আর আমার ব্লগে আপনার এ মন্তব্যটি ২০০০তম।
আমার পাতায় ২০০০তম মন্তব্যকারী হিসেবে আপনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
লেখার প্রশংসায় প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৮

ডার্ক ম্যান বলেছেন: বস, এভাবে আর পড়তে ভাল লাগছে না। তাড়াতাড়ি বই লিখেন

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: বই লেখার প্রেরণা দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, ডার্ক ম্যান। দেখা যাক, বই বের করার মত যথেষ্ট পরিমাণে এবং গুণগত মানে লেখা জমলে অবশ্যই চেষ্টা করে দেখবো।

৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: গুনীজনের লেখা পড়তে পারা, সে আমার সৌভাগ্য মনে করি। আপনার পাতায় আমার করা কমেন্টটি ২০০০ তম কমেন্ট জেনে ভীষণ খুশি হলাম।আশা করি ৩০০০, ৪০০০ ----- তম কমেন্টেও আমি থাকব।

প্রিয় লেখক, অনেক ভাল থাকুন। শুভ রাত্রি।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভেরী কাইন্ড, থ্যাঙ্ক ইউ, ভ্রমরের ডানা।

৫| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার এই লেখাটা কাল পড়েছিলাম। ভালো লেগেছে স্মৃতিচারণ। ছোটবেলায় আমিও একবার দাঁতের পোকা আমার দাঁত থেকে বের হতে দেখেছিলাম। কি জানি এক শেকড়ের মত কিছু দিয়ে মুখের ভেতর নাড়িয়ে তারা বের করে দেয়। হাহাহা :|

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্মৃতিচারণ ভালো লেগেছে জেনে প্রীত হ'লাম। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, অপর্ণা মম্ময়।
কয়টা পোকা আপনার দাঁত থেকে তারা বের করেছিলো?

৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সেটা তো মনে নেই কিন্তু কয়েকদিন খুব ভয় পেয়েছিলাম এই ভেবে দাঁতের ভেতর এত পোকা নিয়ে আমরা ঘুমাই কীভাবে! আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো আমার দাঁতে পোকা! :||

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতার কথা জেনে বেশ মজা পেলাম, অপর্ণা মম্ময়। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। :)
তবে ছোটবেলায় আমরা কত কিছু নিয়েই না দুশ্চিন্তা করে ভয়ে সময় কাটাই। আমি একবার পাকা আতা ফলের বিচি খেয়ে ফেলেছিলাম। পেটে আতা গাছ হবে এই ভয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় একটা রাত পার করেছিলাম।

৭| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমার নিজের ও কিভাবে যেন পুরানো ঢাকার ভাড়া বাসার ঠিকানা এখন ও মনে আছে
শুভ কামনা :)

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: তাই? তাহলে তো আমার মত আরেকজন শৈশবের স্মৃতিপ্রবণ ব্যক্তিকে পাওয়া গেল। :)
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, মনিরা সুলতানা।

৮| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:০৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: স্মৃতিরা জেগে থাকে অহর্নিশ, মনের বিশেষ অবস্থায় ওরা বেরিয়ে আসে ময়ূরের মত পেখম মেলে - তার অনুপম বর্ণনায় আমি পাঠক আপ্লুত।

লেখকের হাত ধরে ঘুরে এলাম আহসান ভাইয়ের স্মৃতির মন্দিরঃ

//অনতিদূরে থাকতেন বিখ্যাত বিল্লাহ পরিবার। শিমূল বিল্লাহ, তার ভাই দিনু বিল্লাহ এবং আরো কয়েকজন মিলে সবসময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি আয়োজন করতেন, গানের আসর বসাতেন। বাসার কাছেই থাকতেন কৌ্তুকাভিনেতা রবিউল। প্রখ্যাত লোকগীতি শিল্পী আব্দুল আলীমও সপরিবারে আমাদের এলাকায় থাকতেন। তাঁর দেহের রঙ খুব কালো ছিলো, তাই বোধহয় তিনি বেশীরভাগ সময় সাদা রঙের পাঞ্জাবী পাজামা পড়তেন। কাঁধে একটা চাদর ঝোলানো থাকতো। তাঁকে কখনো প্যান্ট শার্ট পড়তে দেখিনি। তিনি খুব নিরীহ প্রকৃতির এবং মিষ্টভাষী ছিলেন। তাঁর দেহের রঙ আর মিষ্টি গলার কারণে পাড়ার অনেকে তাঁকে নিজেদের মধ্যে “কোকিলা” নামে ডাকতেন।//

আরো সুন্দর হয়ে প্রস্ফুটিত হোক স্মৃতির ফুলেরা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার চমৎকার, কাব্যিক মন্তব্য পড়ে অভিভূত হ'লাম, শামছুল ইসলাম। এমন মন্তব্য আরও স্মৃতিচারণের প্রেরণা যোগাবে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৯| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৫৯

সোজা সাপটা বলেছেন: ভালোলাগলো।
তবে কষ্ট টা ঠিক অন্য জায়গায়
দাঁতের পোকার কথাটা স্মরন হয়ে গেলো, কত যে বোকামী করেছি । এখন শুধুই ভুলের খেসারৎ দিয়ে যাচ্ছি।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি এখনো ভুলের খেসারৎ দিয়ে যাচ্ছেন জেনে একটু খারাপই লাগছে, সোজা সাপটা।
দোয়া করি, আপনি দ্রুত দাঁতের ব্যথা থেকে আরোগ্য লাভ করুন।

১০| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৯

জুন বলেছেন: আপনার প্রতিবেশী শিমুল বিল্লাহ আমাদের আত্মীয় আর আবদুল আলীমের পরিবার আমাদেরও প্রতিবেশী ছিল ।
আপনার এসব খুটিনাটি ঘটনাগুলো পড়তে বেশ ভালোলাগে খায়রুল আহসান ।
সেসময় বেদেনীরা লাইন বেধে দাতের পোকা খসাতে আসতো আর কত চুড়ি যে পরেছি সেই লেস ফিতা ওয়ালাদের কাছ থেকে । কই গেল তারা তাই ভাবি । কত সহজ সরল ছিল আমাদের জীবন যাত্রা ।
অনেক ভালোলাগলো ।
+

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এত ব্যস্ততার মাঝেও আপনি এসে আমার এ লেখাটা পড়ে গেলেন, এজন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, জুন। লেখাটা পড়ে নিজের ছোটবেলার কথা শেয়ার করাতে বেশ ভাল লাগলো।
মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

১১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩২

মা.হাসান বলেছেন: আমার এক প্রিয় শিক্ষকের(আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসি করুক )কাছ থেকে শোনা বেদেদের কাহিনী সংক্ষেপে বলি--একজন লোকের প্রচণ্ড মাথাব্যথার রোগ ছিল । বেদেরা তাকে বলল- আপনার মাথায় অনেক পোকার আক্রমণ হয়েছে , অপারেশন করতে হবে। এরপর তাকে নেশা জাতীয় কিছু দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়, আর একটা ছাগলের মগজ জোগাড় করে। সন্ধ্যার পর গ্রাম দেশে অনেক পোকামাকড় বের হয়ে আসে। এই জাতীয় কিছু পোকামাকড় সম্ভবত বেদেদের স্টকেই থাকে। তো ছাগলের আঠালো মগজের মধ্যে কিছু পোকা আটকে দেয়া হয়, এরপর ওই লোকের জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হয় । এর পর বেদেরা বলে-- এই দেখেন আপনার মাথার মধ্যে কত পোকা। এরপর ওই মগজ ঐ লোকের সামনেই ধৌত করা হয়, এরপর আবারো ওনাকে ঘুম পাড়ানো হয়, এবং উঠিয়ে বলা বলা হয় এখন থেকে আর আপনার মাথা ব্যথা থাকবে না । আশ্চর্যের ব্যাপার পরবর্তীতে ঐ লোক ঠিকই মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেয়েছিল ।

আব্দুল আলীম সাহেবের রসভরা মন্তব্যর কথা জানতে পেরে খুব মজা লাগলো। এই সময় অধিকাংশ লোকই বাচ্চাদের কে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেবে। বাচ্চারা তো বড়দের থেকে শেখে । ঐ সময়ের চাকা সম্পর্কে অনেক আগ্রহ আছে। স্মৃতিচারণ মূলক আরো লেখা পোস্ট করার অনুরোধ রইলো।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: নিজের পুরনো কোন পোস্টে পাঠকের মন্তব্য পেলে সব লেখকেরাই খুশী হন। আমিও হয়েছি, আমার সোয়া চার বছরের একটি পুরনো পোস্টে আপনার এ মন্তব্যটি পেয়ে।
বেদেনীদের সম্পর্কে আরো অনেক কাহিনী আছে। ক্ষুধার তাগিদেই ওরা এসব প্রতারণার কাজগুলো করে থাকে বলে এ নিয়ে আমার খুব একটা ক্ষোভ নেই।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

১২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১৫

মা.হাসান বলেছেন: আসলে পুরাতন পোস্ট খুঁজতে খুঁজতে এখানে চলে আসা, এমনটা না; আমার কথা দ্বিতীয় পর্ব তে ২৪ নম্বর মন্তব্যের প্রতিমন্তব্যে আপনার লেখা একটা লিংক এর সূত্র ধরেই এখানে চলে আসা । লিংকটা রেখেছিলেন বলেই আসার সুযোগ হল, এজন্য অনেক ধন্যবাদ।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: পরে সেটা বুঝতে পেরেছি।
আবার এসে মন্তব্য করে যাবার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.