নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
সেদিন ছিল পহেলা ফাল্গুন, ঋতুরাজ বসন্তের শুরু হলো সেদিন থেকে। দিনটা এখন বাঙালীর এক অন্যতম উৎসবের দিন। নারীরা লাল পেড়ে হলুদ শাড়ী পড়ে দল বেঁধে বইমেলায় আসে। কেশ সজ্জায় থাকে তাদের তাজা ফুল। ছেলেরাও কেউ কেউ হলুদ রঙের পাঞ্জাবি, ফতুয়া কিংবা শার্ট পড়ে আসে। এমন উৎসব মুখর পরিবেশে আমি কালো প্যান্টের সাথে একটা সাদাকালো প্রিন্টের হাফহাতা শার্ট পড়ে জাগৃতি প্রকাশনীর স্টলের সামনে একটা কোণায় দাঁড়িয়েছিলাম। কোন এক সময়ে ভিড় একটু কমে এলে স্টলের একজন বিক্রেতা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “গোধূলীর স্বপ্নছায়া” আমার প্রথম বই কিনা। আমি হ্যাঁ সূচক জবাব দিলে তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, “অভিজ্ঞতা কেমন”? আমি বললাম, ভালো মন্দে মেশানো। ভালো, কারণ চোখের সামনে দেখতে পারছি, লোকজন কেউ কেউ আমার প্রথম বইটা কিনছেন। মন্দ, কারণ যেরকমটি আশা করেছিলাম, বইটি সেরকমটি যাচ্ছেনা। যারা বইটি কিনছেন, তারা প্রায় সবাই আমার পরিচিত। হয়তো খাতির করেই কিনছেন।
আমার এ কথাটি শুনে পাশে বসা একজন ভদ্রমহিলা যিনি বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, দাঁড়িয়ে আমাকে শুধোলেন, ‘আপনার প্রথম বই এটা’? হ্যাঁ সূচক জবাব দিলে তিনি বল্লেন, ‘তাহলে অবশ্যই আমি একটা কিনবো’। এই বলে তিনি একটা বই হাতে নিলেন এবং ক্রয়ের আদেশ দিলেন। বলা নিষ্প্রয়োজন, আমি এতে খুশী হলাম এবং তাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানালাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে পাশ করা এই ভদ্রমহিলা কোথায় যেন শিক্ষকতা করেন বলে জানালেন (তার প্রতিষ্ঠানের নামটা ঠিকমত বুঝতে পারিনি বলে দুঃখিত)। তার সাথে কথা বলতে বলতেই এক তরুণ শিক্ষার্থী এসে তার সাথে দেখা হওয়াতে তাকে ম্যাডাম ম্যাডাম করতে লাগলেন। তিনি হেসে আমাকে বললেন, ছেলেটা তার ছাত্র। তিনি যে শিক্ষকতা করেন, তার প্রমাণ হয়ে গেলো। আমিও সহাস্যে একমত হ’লাম। তিনি জানালেন, নতুন লেখকের প্রথম বইটা কেনা তার একটা প্রিয় শখ। এমন লেখকদের প্রেরণা দিয়ে তিনি নিজেই একটা ভালো কাজ করেছেন বলে অনুপ্রাণিত বোধ করেন। তার কথা শুনে আমি মুগ্ধ, সেই সাথে বিস্মিতও হ’লাম। মহিলার সাথে আলাপচারিতায় আরো কিছু রেফারেন্স বেরিয়ে গেলো যাদের আমরা উভয়ে চিনি। তিনি তার নিজের নামটুকু শুধু সংক্ষেপে ‘বন্যা’ বলে জানালেন।
সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতা শেষে তিনি আমাকে শুভকামনা জানিয়ে গেলেন। তার আগে বইটিতে শুভেচ্ছা স্বাক্ষর দিতে অনুরোধ জানালেন। আমি সানন্দে রাজী হ’লাম। তবে কথায় কথায় আর তার সাথে ছবি তোলা হলোনা।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কল্লোল পথিক, আপনার অভিনন্দনের জন্য। অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভেচ্ছা জানবেন।
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১২
মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম বলেছেন: আপনার সাবলীল উপস্থাপনা যতই পড়ছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি।
ভদ্রমহিলার আচরণ খুবই ভালো লেগেছে।
নিরন্তর শুভকামনা।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০০
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম, আপনার এই প্রশংসাব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য।
বইমেলায় প্রতিদিন ভালো, মন্দ, উভয় রকমের অভিজ্ঞতা হচ্ছে। আমি শুধু ভালোগুলোর কথাই এখানে বলে যাবো।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৮
কল্লোল পথিক বলেছেন: অভিন্দন লেখক।
আপনার বইয়ের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।