নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
“এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার?
আজি প্রাতে সূর্য ওঠা সফল হল কার?
কাহার অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে
উষা কাহার আশিস বহি হল আঁধার পার?
বনে বনে ফুল ফুটেছে, দোলে নবীন পাতা-----
কার হৃদয়ের মাঝে হল তাদের মালা গাঁথা?
বহু যুগের উপহারে বরণ করি নিল কারে,
কার জীবনে প্রভাত আজি ঘুচায় অন্ধকার?”
কবিগুরুর এই গানের কথাগুলো দিয়েই আজকের লেখাটা শুরু করছি। আজ সকালে ব্লগার সুমন কর রচিত “ঘুরে এলাম কুমিল্লা-ছবি ব্লগ-০৬” শিরোনামে একটা ব্লগ দেখে ও পড়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লাম। চাকুরী জীবনের শুরুতে এক বছর এবং শেষে আড়াই বছর এই কুমিল্লাতেই কাটিয়ে এসেছি। আর কী আশ্চর্য! এই শুরুটা হয়েছিলো কাকতালীয়ভাবে আজ থেকে ঠিক ৪১ বছর আগে, আজকের এই দিনেই, ০৯ এপ্রিল ১৯৭৫ তারিখে!
১৯৭৪ সালে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও নিজের পছন্দের বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। তখনকার দিনে এখনকার মত ক খ ইত্যাদি ইউনিট ছিলো না। একেক বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা খবরের কাগজে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভাগীয় প্রধানের তত্ত্বাবধানে একেকদিনে অনুষ্ঠিত হতো। দৈবাৎ একই দিনে পরীক্ষার তারিখ না পড়লে যে কেউ ইচ্ছে করলে তার পছন্দের একাধিক বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারতো। সবগুলোতে উত্তীর্ণ হতে পারলে যে কোন একটা রেখে বাদবাকী গুলো সমর্পণ করতে হতো। এ ছাড়া মেরিন একাডেমীতেও ভর্তি পরীক্ষার ফরম জমা দিয়েছিলাম, কিন্তু পরীক্ষার দিনে ভয়ানক চোখ উঠায় আর পরীক্ষায় বসতে পারিনি। এর আগে সেনাবাহিনীর ভর্তি পরীক্ষায় আর প্রিলিমিনারী ইন্টারভিউ এ উত্তীর্ণ হয়ে ছিলাম। ইত্যবসরে আইএসএসবি এর কল আপ লেটার পেলাম। বন্ধুদের সাথে হৈ হৈ করতে করতে একদিন বিকেলে চারদিনের আইএসএসবি পরীক্ষার জন্য ঢাকা সেনানিবাসে হাজির হলাম। ঐ চারটে দিন ছিল আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়। কিছু আগে থেকে চেনা আর কিছু একেবারে অচেনা বন্ধুদের সাথে চারদিনে এমন বন্ধুত্ব হয়ে গেল যেন আমরা সহোদর ভাই। যাক, আমাদের ব্যাচ থেকে আমরা ৫ জন টিকেছিলাম, বাকীরা বিফল মনোরথ হয়ে বাড়ী ফিরে গেলো। নির্বাচিতদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত তিনজন সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিল। যাদের সাথে আমার একটু বেশী ঘনিষ্ঠতা হয়েছিলো, তারা সবাই বিফল হলো, কিন্তু আমাকে তারা সবাই শুদ্ধতম আবেগে অভিনন্দন জানালো। তাদের মধ্যে অবশ্য একজন পরের বছর পুনরায় আইএসএসবি দিয়ে চান্স পেয়েছিলো, যোগদানও করেছিলো, কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কারণে আগের মত সে হৃদ্যতা আর প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি।
বুয়েট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হতে কিছুটা দেরী হচ্ছিল। এদিকে বিএমএতে যোগদানের চিঠি এলো। নানা চিন্তা ভাবনা করতে করতে শেষে বিএমএতে যাওয়াই মনস্থির করলাম। ১৯৭৫ সালের এই দিনেই সকাল সাতটার কিছু আগে কমলাপুর স্টেশনে হাজির হ’লাম। সেখানে গিয়ে অনেক পরিচিত মুখের দেখা পেলাম। ইতোমধ্যে কলেজের কিছু বড়ভাই এবং সিএমএইচে মেডিক্যাল টেস্ট করানোর সময় সেখানে দেখা পাওয়া কিছু অচেনা কিন্তু সহৃদয় সেনা কর্মকর্তা আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন আমরা যেন জুতো না পড়ে কেডস পড়ে যাই, আর মোটা কাপড়ের ট্রাউজার্স পড়ি। তাঁরা আরও জানিয়েছিলেন যে বিএমএ তে প্রথম দিনের অভ্যর্থনাটা আমাদের পছন্দমাফিক নাও হতে পারে। কিন্তু এই ‘পছন্দমাফিক নাও হতে পারাটা’ যে কতটা ভয়ানক হতে পারে, সেটা বুঝতে পারলাম কেবলমাত্র সেখানে যাওয়ার পরই। সে কথায় পরে আসছি।
ঠিক সাতটা পাঁচ মিনিটে “উল্কা এক্সপ্রেস” ট্রেনটি ছেড়েছিলো। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনের ট্রেনগুলো মোটামুটি সঠিক সময় মেনেই চলাফেরা করতো। হৈ হুল্লোর করতে করতেই শুরু হলো আমাদের জীবনের এক অনিশ্চিত যাত্রা। গন্তব্য ছিল গোমতী বিধৌত “ময়নামতি সেনানিবাস”। সেখানেই তখন অবস্থিত ছিল বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী, যার মূলমন্ত্র লেখা ছিল ময়নামতি পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সেই তূর্যনিনাদ, “চির উন্নত মম শির”। ট্রেনে আমাদের সাথে একই কম্পার্টমেন্টে যহযাত্রী ছিলেন এক ভদ্রমহিলা, যিনি আমাদের আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখে মুখ টিপে হাসছিলেন। তিনি আমাদের সাথে টুকটাক আলাপ করে জেনে নিলেন আমরা কে কোথা থেকে আসছি আর কেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাচ্ছি। আমাদের সাথে এক বন্ধু ছিল, অস্বাভাবিক মোটা। মোটা, কিন্তু ভুড়িওয়ালা মোটা নয়, বেচারার বডির কাঠামোটাই ছিল মোটা। সেটা বিবেচনা করেই মেডিক্যাল বোর্ড তাকে মেডিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেছিলো। ভদ্রমহিলা বারবার তার দিকে তাকাচ্ছিলেন। ট্রেন যখন কুমিল্লার কাছাকাছি এলো, তখন তিনি আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা অবগত আছি কিনা আমাদের জন্য সেখানে কী ধরণের অভ্যর্থনা অপেক্ষা করছে। আমরা উচ্ছ্বাস নিয়েই বললাম, হ্যাঁ জানি। তিনি আমাদের সেই মোটা বন্ধুটির দিকে তাকিয়ে একটু করুণার স্বরে বললেন, আপনার জন্যেই আমার বেশী চিন্তা হচ্ছে। আপনি পারবেন, ট্রেনিং শেষ করতে? সে আনত মুখে মৃদু হেসে বললো, পারবো। ট্রেন কুমিল্লা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ালে তিনি তাকে রিসিভ করতে আসা একজন সেনাসদস্যের সাথে আমাদেরকে শুভকামনা জানিয়ে নেমে গেলেন। পরে জেনেছিলাম যে উনি ছিলেন বিএমএ’র একজন সিনিয়র প্রশিক্ষকের সহধর্মিণী। তাই তিনি সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন, আমাদের ভাগ্যে সেদিন বিকেলে কী অপেক্ষা করছিলো।
ট্রেন থেকে অবতরণের পর পরই উপর্যুপরি হুইসেলের শব্দে কানের পর্দা ফেটে যাচ্ছিলো। কয়েকজন খাকী পোষাক পরিহিত হাবিলদার/নায়েক পদবীর সেনাসদস্যকে দেখলাম হুইসেল বাজাচ্ছেন আর চিৎকার করে আমাদেরকে নিজেদের মালপত্র প্ল্যাটফর্মের বাইরে রাখা আর্মী লরীতে উঠাতে বলছেন। তাদের প্রত্যেকের বাহুতে “প্রশিক্ষক” আর্ম ব্যান্ড লাগানো, বুকে আড়াআড়িভাবে লাল স্যাশ টানা। ক্যাডেট কলেজে পড়াতে ওনাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আর মুখের ভাষার সাথে পূর্ব থেকেই পরিচিত ছিলাম। তাই ততটা ভড়কে যাইনি, নতুবা মাথা খারাপ হবারই যোগাড় হয়েছিলো। আমরা যার যার ব্যাগেজ ট্রাকে উঠালাম। কেউ বসে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলাম। ট্রাক আমাদের নিয়ে ধীর গতিতে ময়নামতি সেনানিবাস অভিমুখে চলতে থাকলো। তখনো আমাদের মধ্যে স্ফূর্তির কমতি নেই। প্রশিক্ষক সামনের সীটে বসা, তাই পেছনে আমরা কে কি বলাবলি করছি, তা তিনি শুনতে পাচ্ছিলেন না। কয়েকজন রসিক বন্ধু গলা ছেড়ে গানও গাইতে শুরু করলেন। টিপরা বাজারে এসে ট্রাকগুলো সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলো।
ঠিক বিএমএ’র গেটে এসে ট্রাকগুলো থেমে গেল। আবার শুরু হলো সেই গগনবিদারী হুইসেল আর কন্ঠ ফাটানো আওয়াজ। গেটের সামনে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া আরেকদল প্রশিক্ষক আমাদের আগমনের অপেক্ষা করছিলেন। আমরা নামার সাথে সাথেই শুরু হলো যার যেমন খুশী অর্ডার। ডাবল আপ, ফ্রন্টরোল, ফ্রগ জাম্প, সাইড রোল, ক্রল, ডিগবাজী, উল্লম্ফন, হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটা, ইত্যাদি ইত্যাদি। মুহূর্তের মধ্যে মনে হতে থাকলো, দ্য হেল হ্যাজ ব্রোকেন লুজ! এ সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেয়া নিষ্প্রয়োজন, কারণ আমাদের সবারই ছেলে মেয়ে, আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে কেউ না কেউ সশস্ত্র বাহিনীতে আছে এবং এ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি কম বেশী সবাই অবগত আছি। আমি শুধু এখানে এটুকুই বলে যাই যে প্রথম রাত থেকেই আমাদের কেউ কেউ বিএমএ থেকে পালিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিলো, এর ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে জানা থাকা সত্ত্বেও। আর এই পরিকল্পনার যিনি প্রস্তাবক এবং পরে দলের নেতা হয়েছিলেন, তিনি কিংবা দলের আর কেউও শেষ পর্যন্ত পালাতে পারেন নি। ধীরে ধীরে তারা এ্যডজাস্টেড হয়ে যান এবং কমিশন পান। পরবর্তী জীবনে ঐ নেতা প্রফেশনাল কোর্সগুলোতে উজ্জ্বল ফলাফল অর্জন করেন এবং সেনা বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে আরোহণ করে অবসর গ্রহণ করেন। আর আমার ঐ মোটা বন্ধুটির অবস্থা প্রথম ক’দিনে খুব কাহিল হয়ে পড়লেও তিনিও ধীরে ধীরে ধাতস্থ হয়ে উঠেন। তার সমস্যা হতো শুধু শর্ট ডিসট্যান্স দৌড় পরীক্ষায়। বাকি অন্যান্য বিষয়, যেখানে স্ট্যামিনা আর শক্তির প্রয়োজন হতো, সেখানে তিনি হাসতে হাসতে ওগুলোর বৈতরণী পার হতেন। যেমন, আমরা যখন এক্সারসাইজ গুলোতে এলএমজি বহন করতে করতে হাঁপিয়ে উঠতাম, তখন তিনি খেলনার মত ওগুলো ক্যারী করতেন, শুধু নিজেরটাই নয়, মাঝে মাঝে অন্যদেরটাও, প্রশিক্ষকদের নজর এড়িয়ে।
“কাহার অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে
উষা কাহার আশিস বহি হল আঁধার পার?
………………………………………………
বহু যুগের উপহারে বরণ করি নিল কারে,
কার জীবনে প্রভাত আজি ঘুচায় অন্ধকার?” –
সেদিন আমার অভিষেকটি মন্দ হয়নি। ভালোবেসে যে জীবনকে বেছে নিয়েছিলাম, সে জীবনও “সোনার ঘটে আলোক ভরে” আমাকে বরণ করে নিয়েছিলো। সে জীবন থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, পেয়েছি। আজকের দিনে তাই চলার পথের পূর্বসূরী, সতীর্থ আর উত্তরসূরীদের সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
আমার জন্য এটাও কাকতালীয় ব্যাপার যে, যে স্টেশন থেকে আমার সামরিক জীবন শুরু হয়, সেখান থেকেই তার অবসানও হয়। অবসর নেয়ার আগে আড়াই বছর পুনরায় ময়নামতি সেনানিবাসে কর্তব্য পালন করি। তখন আমার মনে হতো, ময়নামতি সেনানিবাসের প্রতিটি ঘাস আমার পরিচিত। মাঠে-ঘাটে, সড়কের প্রতিটি বাঁকে আমার প্রচুর ঘাম ঝরানো আছে। আমার কর্তব্য পালনের শেষদিনে আমার জন্য যে বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো, সেখানে আনুষ্ঠানিক ভাষণ দেয়ার সময় আমি তাই আবেগাপ্লুত হয়ে অনেক কথাই বলেছিলাম। আমি বলেছিলাম আমার প্রশিক্ষণের দিনগুলোর কথা, আমার প্রশিক্ষকদের কথা। একটা রক্তাক্ত যুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশে শূন্য থেকে প্রতিষ্ঠিত মিলিটারী একাডেমীতে কতটা আন্তরিকতার সাথে আমাদের প্রশিক্ষকগণ স্বাধীনতার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে আমাদেরকে গড়ে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন এবং সেজন্য প্রয়োজনবোধে তারা কতটা কঠোর হতেন, সেকথা। প্রশিক্ষণ শেষে যার যার ইউনিটে ফিরে গিয়ে কতটা আন্তরিকতার সাথে আমরা কর্তব্য পালন করেছিলাম, সেকথা। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মত কথাগুলো শুনেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে জিওসি মহোদয় আমাকে বলেছিলেন, ওটা ছিল তাঁর শোনা অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফেয়ারওয়েল স্পীচ। জীবনে আমি কখনোই সুবক্তা ছিলাম না। কিন্তু আবেগ যখন মনে ভর করে, কখনো তা ভাষাকে আটকে দেয়, আবার কখনো তাকে বেগবান করে। সেদিন আমার ক্ষেত্রে হয়েছিলো পরেরটা। হয়তো উনি কিছুটা বাড়িয়ে বলেছিলেন, তবে ভাষণ দেয়ার সময় আমার মনে হয়েছিলো, আমি কোন গল্প বলে যাচ্ছি আর সবাই তা মনযোগ দিয়ে শুনে যাচ্ছেন।
ঢাকা
০৯ এপ্রিল ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: এ লেখায় প্রথম মন্তব্য আর প্রথম লাইক এর জন্য বিশেষ শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি, মানবী।
জ্বী, ময়নামতি সেনানিবাস আমার দেখা মতে সবচেয়ে সুন্দর সেনানিবাস। আর আমরা যখন সেখানে প্রশিক্ষণ ণনিয়েছিলাম, তখন আশে পাশে খুব কমই জনবসতি ছিলো। ৩০ বছর পরে পুনরায় এসে চারিদিকে এত ঘর বাড়ী দেখে অবাক হয়েছিলাম। এখন তো মনে হয় জনবসতি আরো বেড়ে গেছে।
আমাদের সময় প্রশিক্ষকগণ অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। তারা প্রশিক্ষণের মানের সাথে কখনো আপোষ করতেন না। একটা মাদার ইন্সটিটিউশন হিসেবে বিএমএ কে আদর্শরুপে গড়ে তোলাটাকে তারা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন।
লেখার প্রশংসা পেয়ে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। আবারো ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
২| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৫২
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: পড়তে ভাল লাগল। অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতিটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। জানিনা আপনার সেই প্রিয় স্মৃতিবিজড়িত ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের মধ্যেই সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তনু হত্যার মতো অপ্রীতিকর ঘটনাটির কথা শুনে কেমন লেগেছে। অব্শ্য অপ্রীতি আমাদের সমগ্র দেশটা জুড়েই। আমাদের অবস্থাটা, কী অনুভব করব সেটিই যেন জানিনা। ভাল থাকুন।
১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ, সোজোন বাদিয়া। তনু হত্যার বিষয়টি তদন্তাধীন এবং বিচারাধীন বিষয়, তাই এ নিয়ে আপাততঃ কোন মন্তব্য করছি না। তবে এ হত্যাকান্ডটি হঠাৎ করে এতটা ফোকাসড হলো কেন, সেটা নিয়ে একটু চিন্তা ভাবনা করলেই অনেক কিছু বোঝা যাবে।
৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
ভালো স্মৃতি, ভালো জীবন।
১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:২৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালো মন্তব্য, ধন্যবাদ।
৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৫
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: স্মৃতিতাড়িত লেখা।। লেখার সময় না কয়বার ফিরে গিয়েছিলেন সেই দিন গুলির মাঝে?? থামতেও হয়েছে কয়েকবার।। স্মৃতিগুলি আসলেও আমাদের পিছনে টানে আর হাসায়-কাঁদায়।।
১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:১১
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি ঠিকই ধরেছেন, সচেতনহ্যাপী।
স্মৃতিগুলি আসলেও আমাদের পিছনে টানে আর হাসায়-কাঁদায়।। -- পেছন ফিরে স্মৃতি হাতড়াতে বড় ভালো লাগে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:২৩
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। স্মৃতি বড়ই ছলনাময়ী। আবেগকে জাগিয়ে তোলে।
১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: বেগ আর আবেগের বিষয়গুলোই স্মৃতি হয়ে থাকে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, রায়হানুল এফ রাজ।
৬| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:০৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: বাহ যেখান থেকে শুরু করেছিলেন পরবর্তিতে আবার সেখান থেকেই বিদায় নিয়ে এসেছেন।
ভালো লেগেছে আপনার স্মৃতিচারণ।
১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:২৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, অনেকটা সার্কেল কমপ্লিট করার মতই।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, ফেরদৌসা রুহী। সাদামাটা এই স্মৃতিচারণ আপনার ভালো লেগেছে জেনে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
৭| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:২৩
শামছুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ কর্মজীবনের, শুরুর বিশদ আর শেষের অল্প।
সেই অল্পই আমার কাছে গল্পের মতে মনে হয়েছে।
অসাধারণ একটা সমাপ্তি টেনেছেনঃ
//জীবনে আমি কখনোই সুবক্তা ছিলাম না। কিন্তু আবেগ যখন মনে ভর করে, কখনো তা ভাষাকে আটকে দেয়, আবার কখনো তাকে বেগবান করে। সেদিন আমার ক্ষেত্রে হয়েছিলো পরেরটা।//
ভাল থাকুন। সবসময়।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: শুরুর বিশদ আর শেষের অল্প -- শুরুর বিশদ কারণ স্মৃতিচারণটা শুরুর দিনটাকে নিয়েই। সেই দিনের ৪১ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে।
লেখাটি মন দিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, শামছুল ইসলাম। অনুপ্রাণিত হ'লাম।
আন্তরিক শুভেচ্ছা জানবেন।
৮| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৪২
আরজু পনি বলেছেন:
খুবই কাকতালীয় !
আজ যখন সেবা প্রকাশনীর সত্য ঘটনা অবলম্বেনে মেজর আনোয়ার হোসেন-এর "হেল কমান্ডো" পড়া শুরু করেছি আর প্রথম দিনের অভ্যর্থনা পড়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি এবঙ আপনার সাথে শেয়ার করতেই মূলত ব্লগে লগইন হ্ওয়া সেই আপনিই দেখি একই বিষয়ের উপর পোস্ট দিয়েছেন।
বিএনসিসি করার সুবাদে ওসি পরবর্তীতে স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুর রাজ্জাক স্যারের কাছ থেকে তাঁর ট্রেনিং সম্পর্কে শুনছিলাম, তাই অল্প বিস্তর ধারণা আছে।
মেজর আনোয়ারের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু শিখেছি তার পুরোটাই খালি গালি আর গালি
আমার খুব ইচ্ছে করছে শেয়ার করতে...কিন্তু আপনার এখানে সেটা ঠিক হবে না বোধ'য়।
নিজেই একটা পোস্ট দিয়ে শেয়ার করবো ভাবছি।
অবশ্য ফেসবুকে স্ট্যাটাসে গালিগুলো সব শেয়ার করে একা একাই হাসছি হাহাহাহা
আপনার ট্রেনিং বিস্তারিত পড়তে চাই।
জানিনা এর মধ্যেই আগে শেয়ার করে ফেলেছেন কি না। ইদানিং শরীরটা ঠিক যাচ্ছে না...ব্লগে মন দিতে পারছি না।
শুভেচ্ছা রইল।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: বিশ্বের সব সামরিক একাডেমীগুলোতে প্রাথমিক অভ্যর্থনার ধরণটা কম বেশী এরকমেরই হয়ে আসছে বলে শুনেছি। কারো মাথায় যদি শক্ত কোন অহংবোধ (ego) বাসা বেঁধে থাকে, সেটাকে ভেঙে চুরমার করে দিতে। প্রথম প্রথম এগুলোকে অসহনীয় মনে হলেও কিছুদিনের মধ্যেই এই bully গুলোকে পাখির বুলির মতই শ্রুতিমধুর মনে হয় এবং এ নিয়ে বেশ হাস্যরসও করা হয়ে থাকে।
কাকতালীয় সংযোগটি বেশ মজারই বটে।
আশাকরি এতদিনে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৯| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:০৮
জুন বলেছেন: কিন্তু আবেগ যখন মনে ভর করে, কখনো তা ভাষাকে আটকে দেয়, আবার কখনো তাকে বেগবান করে। অত্যন্ত সুলিখিত আপনার জীবন চরিত বই আকারে পড়ার ইচ্ছে রইলো খায়রুল আহসান।
সেনাবাহিনীর কঠোর সুশৃঙ্খলিত জীবনযাত্রা আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও মনে হয় গভীর ছাপ ফেলে গেছে তা আপনার লেখাতেই ফুটে উঠে।
অনেক ভালোলাগা রইলো আপনার এই লেখাটিতে।
+
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:১৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: দয়াময় আল্লাহতা'লা সুযোগ করে দিলে, ইচ্ছে আছে বই বের করার। দোওয়া করবেন, জুন।
সেনাবাহিনীর কঠোর সুশৃঙ্খলিত জীবনযাত্রা আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও মনে হয় গভীর ছাপ ফেলে গেছে তা আপনার লেখাতেই ফুটে উঠে। -- যেমন?
মন্তব্য এবং + এর জন্য ধন্যবাদ।
১০| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১৭
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অাপনার স্মৃতিকথা পড়তে খুব ভালো লাগে । অনেকসময় অবশ্য মন্তব্য করা হয় না ।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩২
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, রূপক বিধৌত সাধু। মন্তব্য করতে না পারলেও আশাকরি পড়ে যাবেন। এতেই আমার লেখা সার্থক হবে।
মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩১
মানবী বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার চাকরী জীবনের শুরু আর শেষের অভিজ্ঞতা পড়ে।
ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট এর পরিবেশ আসলেই সুন্দর যদিও খুব অল্প সময়ের জন্য দেখেছি।
বিএমএ এর প্রবেশপথেই আপনাদের প্রতি কঠোর আচরন নতুন ক্যাডেটদের জন্য দুঃসহ হলেও আপনার লেখার গুনে অধিকাংশ পাঠকই কৌতুকবোধ করবে :-)
সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ খায়রুল আহসান।