নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
(এই পোস্টটা গতকাল ফেইসবুকে আমার স্ট্যাটাসে এবং দুটি গ্রুপে পোস্ট করেছিলাম। পাঠকদের কাছ থেকে ফীডব্যাক পেয়ে মনে হলো, এটা এখানেও পোস্ট করা যায়। উল্লেখ্য, লেখাটাতে আলোচিত দু'জন ব্যক্তি সম্পর্কে আমার ধূলি থেকে এ ধরায়... (অনুবাদ কবিতা) কবিতার প্রারম্ভে এর আগেও কিছুটা আলোকপাত করেছিলাম।)
হাসি কান্নাঃ
আজ সকালে কিছু রুটিন পরীক্ষার ল্যাব রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য সিএমএইচে যাই। এই কাজটুকু করার পর হাতে তেমন কোন জরুরী কাজ ছিলনা। সম্প্রতি এটা আমি অভ্যাসে পরিণত করার চেষ্টা করছি যে সিএমএইচে গেলে এবং তেমন তাড়া না থাকলে দু’জন রোগীর সাথে দেখা করে আসি, যারা অনেকদিন ধরে সিএমএইচে ভর্তি হয়ে আছেন। তাদের সম্বন্ধে এর আগেও একটা পোস্টে লিখেছিলাম। তাদের একজন লেঃ কর্নেল এস এম আবু রেজা (অবঃ), যিনি ফুসুফুসের রোগে বেশ কয়েক মাস ধরে ভুগছেন এবং পুরোপুরি কৃ্ত্রিম অক্সিজেন সরবরাহের উপর নির্ভরশীল, অপরজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তাসনিম (অবঃ), যিনি প্রায় চার বছর আগে ঘুমের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছেন, মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের একপাশ অবশ অবস্থায় শয্যাশায়ী। প্রথমজন আমার সতীর্থ এবং চাকুরীতে এক বছরের কনিষ্ঠ হলেও বন্ধুপ্রতিম। আমরা একসাথে রংপুর ও সৈয়দপুর সেনানিবাসে চাকুরী করেছিলাম। আর দ্বিতীয়জন বয়সে ও চাকুরীতে যোগদানের হিসেবে বেশ কয়েক বছরের কনিষ্ঠ এবং তার সাথে আমি একত্রে কোথাও কখনো চাকুরী করি নাই। তবে তিনি আমার কলেজের (এমসিসি) ছাত্র ছিলেন, সেই হিসেবে অনুজপ্রতিম। প্রথমজনের অবস্থা তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো, কারণ তার নাকে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো থাকলে আর কোন সমস্যা নেই, তিনি কথাবার্তাও বলতে পারেন, একা একা হাঁটাহাঁটিও করতে পারেন। বসে বসে ল্যাপটপে টুকটাক কাজও করতে পারেন। আর অপরজন বাকশক্তিহীন, চলৎশক্তিহীন। চোয়াল ও গলার একপাশ অবশ বিধায় তার খাওয়া দাওয়া চলে সরাসরি পেটে ঢোকানো নলের মাধ্যমে। তার জন্য সার্বক্ষণিক একজন পরিচর্যাকারী প্রয়োজন। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়া ছাড়া তার আর অন্যান্য রিপোর্ট সব ভালো। তিনি শয্যায় শুয়ে শুয়ে টিভি দেখে দেখেই তার এই অন্তহীন সময় পার করেন।
ওনারা ভর্তি আছেন অফিসার্স ওয়ার্ডের চতুর্থ তলায়। অফিসার্স ওয়ার্ডে কাউকে দেখতে গেলে আমি সাধারণতঃ নীচ তলায় অবস্থিত আইসিইউ এর ওয়েটিং রুমে একবার ঢুঁ মেরে যাই। সেখানে অনেক সময় পরিচিত কোন মুখের দেখা পেলে কিছুটা সময় দিই। এখন অনেক সুবিধে হয়েছে, আইসিইউ এর ভেতরে যাওয়া লাগেনা। বাইরে দুটো বড় মনিটর লাগানো হয়েছে, সেখানে ভেতরের রোগীদের সবাইকে দেখা যায় এক এক করে। আজ সেখানে গিয়ে দেখি বাইরের মনিটরের সামনে রাখা সোফায় বসে নৌবাহিনীর সাদা পোষাক পড়া একজন মহিলা অফিসার দু’হাতে মাথা ঢেকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। আমি তার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনিও কান্না থামিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন, অনেকটা পরিচিত মানুষের মতই। হয়তো একজন বয়স্ক মানুষ হিসেবে আমাকে সম্মান দেখানোর জন্যই উনি উঠে দাঁড়ালেন, অপরিচিত হওয়া সত্তেও। কাঁধে পদবীর ব্যাজ আর নেম প্লেট দেখে বুঝলাম তিনি সাব লেফটেন্যান্ট ফাতেমা ই জান্নাত। তার এই ফুঁপিয়ে কাঁদাটা ছিল খুবই হৃদয়স্পর্শী। কী হয়েছে জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানালেন তার মা কয়েকমাস আগে একটা ত্রিচক্রযান (সিএনজি) আর মাইক্রবাসের সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন। সেটার চিকিৎসা চলতে চলতেই তার কিডনীর সমস্যা দেখা দেয় এবং গতরাতে তা মারাত্মক আকার ধারণ করাতে এখন আইসিইউ এ তার চিকিৎসা চলছে। তিনি বুঝতে পারছেন যে তার মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানালেন যে তিনি বর্তমানে এমআইএসটি তে ইইই বিভাগে গ্রাজুয়েশন করছেন। দু’বছর আগে আমার ছোট ছেলেও একই প্রতিষ্ঠানের একই বিভাগ থেকে গ্রাজুয়েশন করেছে। সে কথা মনে হওয়াতে তার প্রতি একটা আলাদা সহানুভূতি জাগলো। একবার আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন। তখন আইসিইউ এর বাইরে অপেক্ষমান আমার ছেলেদের, বিশেষ করে ছোট ছেলের, উৎকন্ঠিত চোখ মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে চোখ দুটোকে ঝাপসা করে দিয়ে গেলো। এরই মধ্যে মেয়েটির ভাই এসে তার পাশে দাঁড়ালো। তার পরণে দেখলাম অর্কার (ORCA) একটা টি শার্ট। পরিচয়ের পর টি শার্টটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানালেন যে তিনি আরসিসি’র ৩৮তম ব্যাচের মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি তিনি এমবিবিএস শেষ করে ইন্টার্নশীপও সম্পূর্ণ করেছেন। দুই ভাই বোনকে যতটুকু পারলাম, সান্ত্বনা সমবেদনা জানিয়ে উপরে ওঠার জন্য লিফটের সামনে এসে দাঁড়ালাম।
প্রথমে গেলাম কর্নেল রেজার কক্ষে। দরজা নক করে সাড়া না পেয়ে হাতল ঘুরিয়ে বুঝলাম দরজাটা বাইরে থেকে তালা লাগানো, কারণ রোগীদের কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বেশীক্ষণ আটকে রাখার নিয়ম নেই। তাকে না পেয়ে এলাম ব্রিঃ জেনাঃ তাসনীম এর কক্ষে। একজন মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট তখন তার পরিচর্যা করছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলাম রেজার কথা। তিনি জানালেন, দুই দিন আগে তার বুকে ব্যথা হওয়ায় তাকে সিসিইউ এ স্থানান্তর করা হয়েছে। মনে মনে একটা আশঙ্কা বোধ করলাম। তাসনিমের পরিচর্যা শেষ হবার পর ওর সাথে কিছুক্ষণ কথা বললাম। কথা একপক্ষীয়, ও শুধু মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে সে কথাগুলো বুঝতে পারছে। কমিউনিকেশন অবোধ্য হলে ওর সামনে ইংরেজী বর্ণমালা আর সংখ্যা লেখা একটা চার্ট ধরা হয়। ও ভালো হাতটার আঙুল চার্টের উপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একেকটা শব্দ বা সংখ্যা গঠন করে বুঝিয়ে দেয়।
এর পরে এলাম সিসিইউ এ। সেখানে রেজার শয্যাপাশে দেখা হলো তার ছেলে, যিনি সেনাবাহিনীর একজন মেজর, আর একজন অতিথির সাথে। ছেলেকে জিজ্ঞেস করে জানলাম দু’দিন আগে অর্থাৎ গত শুক্রবারে তার একটা মাইল্ড হার্ট এ্যাটাক (এম আই) হয়ে গেছে। সেজন্য পর্যবেক্ষণের জন্য তাকে সিসিইউ এ রাখা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও যখন তাকে দেখে এসেছিলাম, তখনও তিনি স্বাভাবিক কথাবার্তা বলেছিলেন। একসাথে আমরা ছবিও তুলেছিলাম। আজ তার ছেলে সেলফোনে সে হাস্যোজ্জ্বল ছবিটা বের করে দেখালেন। কিন্তু আজ আর তার সাথে আমার ইশারা ছাড়া মুখে কোন কথা হলো না, কারণ কথা বলা নিষেধ। এক সময় তার লাঞ্চ এলো। তাকে লাঞ্চ করার সুযোগ দিয়ে আমি বিদায় নিয়ে এলাম। বাসায় এসে ল্যাপটপ খুলেই দেখলাম, মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার (অবঃ), এক্স এডজুট্যান্ট আরসিসি ও বিএমএ, এবং এক্স ডিজি বিডিআর, ক্রনিক লিভারের রোগে (CLD) আক্রান্ত হয়ে সিএমএইচে ভর্তি আছেন। আফসোস হলো, একটু আগেই খবরটা জানতে পারলে তাকেও দেখে আসতে পারতাম।
বেঁচে আছি, এবং সুস্থ আছি, এটা যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কত বড় একটা নেয়ামত, সে কথাটা ভাবতে ভাবতে চলার পথেই দয়াময়ের কথা স্মরণ করে মাথাটা নুয়ে আসছিলো। সিসিইউ থেকে বের হয়ে করিডোর দিয়ে আসার সময় লক্ষ্য করলাম, বাইরে মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। সে বাতাসে লনের উপরে ছোট ছোট বেডে লাগানো রঙ বেরঙের ছোট ছোট ফুলগুলো মনের খেয়ালে নাচানাচি করছে। দুটো ছোট্ট চড়ুই একে অপরের সাথে জাপ্টাজাপ্টি করছে। চোখ জুড়িয়ে গেল এসব দেখে। হাসপাতালের ভেতরে শুধু দুঃখ আর হতাশা, আর একটু বের হয়েই হাসি আর আনন্দের দৃশ্য। মনে মনে ভাবলাম, কোথায় ফুল ফুটবে, কোথায় ঘাস নড়বে, পাখি উড়বে, সবই তো নিয়ন্ত্রিত হয় এক এবং অদ্বিতীয় স্রষ্টার নির্দেশে। তাঁর কাছেই মনে মনে নিবেদন করে আসলাম দেখে আসা সকল রোগীদের আশু রোগমুক্তির দরখাস্ত।
ঢাকা
১০ এপ্রিল ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
০৩ রা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার কোন লেখায় বোধকরি এটাই আপনার প্রথম পদচারণা এবং প্রথম মন্তব্য। আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম!
আপনার মন্তব্য থেকে বুঝতে পারছি যে আপনি তাসনিমকে ভালভাবে চেনেন। ওতো আজ প্রায় চার বছর ধরে শয্যাশায়ী। পরের দিন তাকে দেখতে গিয়েছিলেনি কি?
পোস্টটা পড়ার জন্য এবং পড়ে একটা মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আমিও আজ আপনার প্রথম দুটো পোস্ট পড়ে এলাম।
২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৫৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমারও হার্টসার্জারী হয়েছিলো বছর ৪/৫ আগে।। প্রবাসে থাকায় পাই কাছে কাউকেই।। তবে ৪দিন পর থেকে নিজের অদম্য ইচ্ছে শক্তির বলে (কারন সুস্থ হতে হলে নিজেকেই হতে হবে )১০/১৫ কদম করে হাটতাম ডাঃয়ের পরামর্শ মত।। ১১দিনের মাথায় বাসায় চলে এসেছিলাম।। রান্না করতে হয়েছে পরদিনই।। আমি জানি এর কষ্ট।। আজো কামনা করি আমার শত্রুরও যেন এই রোগ না হয়।।
আপনার দেখা রোগীদের প্রতি রইলো শুভকামনা।। আর আপনার সহৃদয়তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।।
০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১১:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: এ লেখায় ব্যক্ত আমার অনুভূতিটুকু আপনি হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন দেখে খুব খুশী হ'লাম। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হ'লাম, সহৃদয়তা স্পর্শ করে গেল। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:১৪
সুমন কর বলেছেন: বেঁচে আছি, এবং সুস্থ আছি, এটা যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কত বড় একটা নেয়ামত, সে কথাটা ভাবতে ভাবতে চলার পথেই দয়াময়ের কথা স্মরণ করে মাথাটা নুয়ে আসছিলো। -- মন খারাপ করার মতো লেখা।
শুভ সকাল।
০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১১:৫৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হয়েছি।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা, সুমন কর।
৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:২১
চাঁদগাজী বলেছেন:
"তাদের একজন লেঃ কর্নেল এস এম আবু রেজা (অবঃ), যিনি ফুসুফুসের রোগে বেশ কয়েক মাস ধরে ভুগছেন এবং পুরোপুরি কৃ্ত্রিম অক্সিজেন সরবরাহের উপর নির্ভরশীল, "
-বাংলাদেশ যেভাবে পলুটেড হয়েছে, কারো ফুসফুস দীর্ঘদিন কাজ করবে না।
০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ১২:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: একমত।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, চাঁদগাজী।
৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমার এই লেখার পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে লেঃ কর্নেল এস এম আবু রেজা (অবঃ), আজ দুপুর ০১-৪০ ঘটিকায় ইন্তেকাল করেছেন।আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে আরজ করছি, তিনি যেন মরহুমের জীবনের ছোট বড় সকল গুনাহ মাফ করে দেন, তার জীবনের সকল নেক আমল এবং নেক নিয়তসমূহকে কবুল করে নেন, তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সহায় হন এবং তাকে জান্নাত নসীব করেন।
মাত্র পরশুদিন যার শয্যাপাশে হাত ধরে দাঁড়িয়েছিলাম, তিনি এখন কবরস্থ- এক নবযাত্রার মোসাফির।
৬| ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ৯:৪৯
অঘ্রান প্রান্তরে বলেছেন: না ভাই, যেতে পারিনি, নিজে অনেক বড় একটা ঝামেলার মধ্য আছি। দোয়া করবেন, যেন মানুষের সৎ বুদ্ধির উদয় হয়। ভালো থাকুন ভাই সব সময়।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৩
অঘ্রান প্রান্তরে বলেছেন:
বেঁচে আছি, এবং সুস্থ আছি, এটা যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কত বড় একটা নেয়ামত, সে কথাটা ভাবতে ভাবতে চলার পথেই দয়াময়ের কথা স্মরণ করে মাথাটা নুয়ে আসছিলো। সিসিইউ থেকে বের হয়ে করিডোর দিয়ে আসার সময় লক্ষ্য করলাম, বাইরে মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। সে বাতাসে লনের উপরে ছোট ছোট বেডে লাগানো রঙ বেরঙের ছোট ছোট ফুলগুলো মনের খেয়ালে নাচানাচি করছে। দুটো ছোট্ট চড়ুই একে অপরের সাথে জাপ্টাজাপ্টি করছে। চোখ জুড়িয়ে গেল এসব দেখে। মনে মনে ভাবলাম, কোথায় ফুল ফুটবে, কোথায় ঘাস নড়বে, পাখি উড়বে, সবই তো নিয়ন্ত্রিত হয় এক এবং অদ্বিতীয় স্রষ্টার নির্দেশে। তাঁর কাছেই মনে মনে নিবেদন করে আসলাম দেখে আসা সকল রোগীদের আশু রোগমুক্তির দরখাস্ত।
বিশেষ করে এই লাইনটি ___
মনে মনে ভাবলাম, কোথায় ফুল ফুটবে, কোথায় ঘাস নড়বে, পাখি উড়বে, সবই তো নিয়ন্ত্রিত হয় এক এবং অদ্বিতীয় স্রষ্টার নির্দেশে।
সত্য এই একটাই ......
তাসমিন অসুস্থ জানতাম না; তার সুস্থ্যতার জন্য দোয়া রইলো অনেক... অশেষ, কাল গিয়ে দেখে আসবো যদি সৃষ্টিকর্তা সহায় হন।চারিদিকে এত ভালো বন্ধুদের অসুস্থতা, কান্না, কষ্ট দেখেও যে আপনি ভালো আছেন সে হয়তো আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। দোয়া ভালো থাকুন ভাই সর্বদা। তবে, তাসমিনের জন্য কেন জানি খুব খারাপ লাগছে।