নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
আমাদের এ ক্ষুদ্র জীবনে আমরা কতজনের সাথেই স্নেহ ভালবাসা, মায়া মমতার অটুট বাঁধনে আবদ্ধ হই ও থাকি। কারো সাথে জন্ম থেকেই, যেমন বাবা মা, ভাই বোন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে, আবার কারো সাথে মায়া ভালবাসার ডোরে আবদ্ধ হই জীবন-পথে চলতে গিয়ে। কখনো সে বাঁধন চির অটুট থেকে যায়, আবার কখনো পারস্পরিক দৃষ্টির আড়ালে চলে গেলে সে বাঁধন ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে যায়।
সবচেয়ে অকৃত্রিম বন্ধন মা ও সন্তানের ভালবাসার বন্ধন। জন্ম দেয়া ও নেয়া থেকেই এ বন্ধনের শুরু। স্তন্যদান এবং পানের মাধ্যমে এ সম্পর্ক নিবিড় হয়। দিন যত গড়াতে থাকে, এ বন্ধন ততই দৃঢ় হতে থাকে। শিশু বড় হয়ে যখন প্রথম স্কুলে যায়, তখন থেকেই সাময়িক এই বিচ্ছেদকালে উভয়ে উভয়ের জন্য প্রথম মনে একটা হাল্কা ব্যথা অনুভব করে। কোন কোন শিশু স্কুলে যাবার সময় তীব্র কান্না জুড়ে দেয়, কিছু কিছু মা ও নীরবে অশ্রুপাত করেন। কেউ কেউ বাচ্চার সাথে স্কুলে গিয়ে সারাটা সময় সেখানেই কাটান, আবার স্কুল ছুটির পর উভয়ে হাসিমুখে বাসায় ফেরেন। যেসব শিশুর বড় বোন থাকে, স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে তৈরী করে দেয়ার কাজটা অনেক সময় বড় বোনও পালন করে থাকে- যেমন ঘুম থেকে তুলে মুখ ধুইয়ে দেয়া, কাপড় পরিয়ে দেয়া, গায়ে মুখে লোশন ক্রীম মাখিয়ে দেয়া, চুল আঁচড়িয়ে দেয়া আর তারপরে আদরে গালটা একটু টেনে দেয়া, ইত্যাদি। স্কুল চলাকালীন সময়ে দৃষ্টির আড়ালে থাকার ব্যাপারটি এক সময় গা সওয়া হয়ে যায়। তারপর দীর্ঘ বিচ্ছেদের পালা শুরু হয় শিশুটি যখন বড় হয়ে ক্যাডেট কলেজে যায় কিংবা এসএসসি পরীক্ষা পাশ করে ভাল কলেজে পড়ার জন্য দূরে কোথাও যায়। শহরের ছেলেমেয়ে কিংবা মা দের এই পরের অভিজ্ঞতাটুকু হয়না কারণ আশেপাশেই তারা ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারে, কিন্তু মফস্বলের ছেলেমেয়েদের তা হয়। আমি ঢাকা শহরে বড় হয়েছি। তৎকালীন সময়ে ঢাকার একটা ভাল স্কুলেই পড়ার সময় সপ্তম শ্রেণীতে উঠে ক্যাডেট কলেজে পড়ার সুযোগ অর্জন করি। আমার মনে আছে আমি যেদিন প্রথম ক্যাডেট কলেজে যাই, তার বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই আমার মা আমার জন্য আমার পছন্দের বেশ ভাল ভাল খাবার রান্না করে আমাকে খাওয়াতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু যাওয়ার দিন কোন খাবারই যেন আমার গলা থেকে নীচে নামছিল না। এরকম হতো প্রতিবারই, যখন ছুটিতে এসে কয়েক সপ্তাহ বাসায় থেকে আবার কলেজে ফিরে যেতাম। যেদিন কলেজে ফিরতাম, সেদিন যতদূর দেখা যায় মা আমার পথের দিকে তাকিয়ে থাকতেন, আমিও ফিরে ফিরে তাকাতাম। দৃষ্টির আড়াল হবার পরে হয়তো শূণ্য বুক নিয়ে মা আবার নিজ কাজে মন দিতেন। আমার এস এস সি পরীক্ষার আগের বছরে আমার বাবা সরকারী চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করে গ্রামের বাড়ীতে বসতি গড়েন। তখন কলেজ ছুটি হলে গ্রামের বাড়ীতে যেতাম। সে সময়ে, এবং আরও বড় হয়ে যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করি, তখন মাঝে মাঝে কোন খবর না দিয়ে বাড়ী ফিরতাম হঠাৎ হঠাৎ। ট্রেন বিলম্বে চলার কারণে কখনো কখনো অনেক রাত হয়ে যেত। অবাক হয়ে তখন দেখতাম, মধ্যরাতেও মা একডাকে দরজা খুলে দিতেন। এত রাতেও জাগা কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন, আমার মন বলছিল তুই আজ আসতে পারিস। এটাই ভালবাসার টেলিপ্যাথী।
গতকাল আমার মেজ বৌমাকে বিদায় জানানোর জন্য বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। ওর সাথে ওর ছোটভাই এর স্ত্রীও যাচ্ছিল। বৌমা এবং ওর ছোটভাই- ওরা দুই ভাইবোন একসাথে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করেছে। ভাইটি এখন সেখানেই চাকুরী করছে আর বৌমা মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে অপর একটি বিষয়ে মাস্টার্স করছে। ভাইটি কিছুদিন আগে দেশে এসে বিয়ে করে যায়, এখন তার স্ত্রীও তার সাথে যোগ দেয়ার জন্য বৌমার সঙ্গী হয়ে যাচ্ছে। ওদের তিন ভাই বোনের মধ্যে বৌমার ভ্রাতৃবধূ সবার বড়, মাঝে এক ভাই, সবার ছোট এক বোন। তবে দুই বোনের মধ্যে বয়সের ব্যবধান ১৩/১৪ বছরের। তা সত্তেও ওরা একে অপরের সাথে ভীষণভাবে এ্যাটাচড। বড় বোন শৈলীর বিয়ের সময় মহা ধুমধাম আর আনন্দ করার সময় ছোট বোন সুবহা মোটেই বুঝতে পারেনি যে তার এতদিনের নিকটতম সাথী তাদের বাড়ী ছেড়ে অন্য বাড়ীতে চলে যাবে। বিয়ের পর শৈলী যখন শ্বশুরবাড়ী চলে গেল, সুবহা তখন ভীষণ মুষড়ে পড়েছিল। পরিবারের সবাই ওকে স্নেহভরে আদর করে অনেকভাবে বুঝাতে চাইতো, কিন্তু ও কিছুতেই বুঝতে চাইতোনা, শৈলী কেন ওকে ছেড়ে অন্য বাড়ীতে চলে গেল। কেউ বেশী বুঝাতে চাইলে ও চুপ করে থাকতো। রাতে শুয়ে শুয়ে ও নীরবে কেঁদে চলতো। ওর মা সেটা টের পেয়ে ওকে নানাভাবে সান্তনা দিতেন, কিন্তু এতে তার কান্না আরও বেড়ে যেত। ওর বুকটা বড়বোনের জন্য শুধুই হাহাকার করতো। কচি মনে ও ভেবেই পেতনা, কেন ওর এত ভালবাসার বোনটা ওদেরকে ছেড়ে গৃহত্যাগ করে চলে গেল। এভাবে প্রায় বছরখানেক কেঁদে কেঁদে ও যখন এ পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসছিল, তখনই আবার আচমকা ওর বোন ও পরম বন্ধু ওকে ছেড়ে স্বামীর সাথে যোগ দেয়ার জন্য বিদেশ পাড়ি দিচ্ছিল। এটা ছিল তার জন্যে আরো বেশী দুঃখের। এতদিন তাও ও বোনের শ্বশুরবাড়ীতে যাওয়া আসা করে এবং সেখানে মাঝে মাঝে থেকে, কিংবা তার বোনও মাঝে মাঝে তাদের বাসায় এসে থেকে ওর সাথে সময় কাটাতো এবং ওরা উভয়ে সাময়িক বিচ্ছেদের ব্যথাটুকু ভুলে যেত। কিন্তু এখন তো বোন স্থায়ীভাবে বিদেশ চলে যাচ্ছে- এটা ভেবে সুবহা ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ছিল, বাহিরে দেখা যাচ্ছিল শুধু তার গাল বেয়ে নীরবে ঝরা অশ্রুফোঁটা। ওর বোন যখন চেক-ইন এর লাইনে দাঁড়িয়ে, ও তখন এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে ছিল এবং ওর কচি মনে না জানি কত কিছু ভাবছিল। ছোটবেলায় আমার দাদীমা (আমরা আমাদের দাদীকে ‘দাদীমা’ বলে ডাকতাম) আমাকে তার এমনি এক প্রিয় ছোটবোনের গল্প বলেছিলেন। অল্প বয়সে বিয়ের জন্য (দশ বছরে) বোনের কাছ থেকে সেই যে তিনি পৃথক হয়েছিলেন, আর তার সাথে জীবদ্দশায় কোনদিন তাঁর দেখা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, বোনেরা নদীর মত। একই উৎস থেকে জন্মলাভ করে তারা কিছুটা পথ একসাথে পাড়ি দেয়। তারপর কোন এক অদৃশ্য শক্তির টানে তাদের যাত্রাপথ পৃথক হয়ে যায়। জগতের বুকে তারা স্বাধীনভাবে ভিন্ন পথ মাড়িয়ে আবার মিলিত হয় কোন মোহনায় (বৃদ্ধ বয়সে), কিংবা সাগরে (মৃত্যুর পরে)। খুব ছোটবেলায় দাদীমার মুখে এ দর্শন বাক্যটি শুনেছিলাম, কিন্তু কথাটা আজীবন আমার মনে গেঁথে আছে। দুই কিশোরী বোনের মাঝে আমি যখনই খুব মিল দেখি, তখনই আমার এ কথাটি খুব মনে পড়ে। আজকের এই আধুনিক যুগে হয়তো কথাটা ততটা সত্য নয়, কিন্তু মূল দর্শন বোধকরি আজও ঠিকই ওরকমটি আছে। চেক-ইন শেষে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যাবার আগে শৈলী যখন শেষ বিদায় নিতে ওর কাছে এলো, তখন উভয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদলো। ওদের কান্না দেখে আমার গলা শুকিয়ে, বুকটা ভারী হয়ে আসছিল। ভাবছিলাম, স্নেহ-আদর-ভালবাসাকামী মানুষের মনকে বিচ্ছেদ কিভাবে ভেঙেচুরে তোলপাড় করে দেয়!
ওখানে দাঁড়িয়েই দেখছিলাম এক প্রৌঢ়া মা তার যুবক ছেলেকে ইমিগ্রেশনে ঢোকার আগে কিভাবে বুকে টেনে নিয়ে অশ্রুভেজা চোখে তার মাথায়, কপালে, গায়ে মুখে স্নেহচুম্বন দিয়ে যাচ্ছিলেন। ছেলেটিও মাকে বুকে চেপে ধরে রাখছিল। মানুষের গাল দুটো হচ্ছে ভালবাসার মাটি দিয়ে গড়া। কাউকে ভালবাসতে ইচ্ছে হলে, আদর করতে ইচ্ছে হলে আমরা গালে গাল স্পর্শ করি, গালে চুমু দেই। মা তাকে জড়িয়ে ধরে গালে গাল লাগিয়ে অনর্গল উপদেশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, ছেলেটাও নীরবে তা শুনে যাচ্ছিল। দুই একজন কাপলকেও দেখলাম তাদের স্পাউসকে (বোধকরি) বিদায় দেয়ার প্রাক্কালে নিবিড় আলিঙ্গণে একে অপরকে শেষ সময়ের কত কথা বলে যাচ্ছে! মনে পড়ে গেল আমেরিকার ডালাস বিমানবন্দরে দেখা এক সাদা যুগলের কথা। শেষ বিদায়ের সময় ওরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলো, কারো মুখে কোন কথা নেই। ছেলেটার মুখটা আমার দিক থেকে দেখা যাচ্ছিল। দেখলাম তার দুচোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছে। ওরা নীরবে নিশ্চুপ শুধু দাঁড়িয়েই থাকলো। মুখে কোন কথা না বললেও মনে মনে নিশ্চয়ই ওদের মাঝে ভাবের আদান প্রদান হচ্ছিল। ভাব প্রকাশের এটাও এক অপরূপ অভিব্যক্তি। অনেকক্ষণ পর ওরা আলিঙ্গণমুক্ত হয়ে একে অপরের দিকে তাকালো। উভয়ের মুখে একটা মলিন কিন্তু স্বর্গীয় হাসি, চোখে জলের চিকিমিকি। তারপর পরস্পরকে আলতো চুম্বন দিয়ে ওরা হাসিমুখেই বিদায় নিল। হাসিটুকুই হয়ে থাকলো শেষ মুহূর্তের স্মৃতি। আমার মনে একটা ভুল ধারণা ছিল, পশ্চিমী দুনিয়ার লোকেরা বোধহয় আবেগ অনুভূতির এতটা ধার ধারেনা। কিন্তু ওদেরকে দেখে আমার সে ভুল ভেঙেছিল। বিদায়লগ্নে এসব অকৃত্রিম ভালবাসার অভিব্যক্তির কথা ভাবতে ভাবতে বাড়ী ফিরে এলাম। তবে মনের কোণে একটা বিষণ্নতা চেপে বসলো। আর ৫/৬ সপ্তাহ পরে আমাকেও আমার ভীষণ আদরের এক ছোট্ট টুনটুনি পাখিকে শুভবিদায় জানাতে হবে। বাবা মায়ের সাথে সে শীতের দেশ কানাডা চলে যাবে, রেখে যাবে আমার শূন্য বুকে ব্যথার বরফ। অবুঝ সেই শিশু হয়তো আমার বুকের এ ব্যথাটা বুঝবেনা, কিন্তু আমি তার বিরহে এ ব্যথা সামলাবো কিভাবে?
(ছবিসূত্রঃ গুগল)
ঢাকা
২৩ জুলাই ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
২৫ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৪৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পাঠ এবং লেখা থেকে উদ্ধৃতির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, প্রামানিক। লেখার প্রশংসায় অনুপ্রাণিত হয়েছি।
অনেকদিন পরে এলেন, আশাকরি আপনি ভালই আছেন।
শুভকামনা রইলো...
২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:২০
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাইয়া লেখাটি পড়তে পড়তে বুকটা কেমন ভার হয়ে গেল।
আমিও বাড়ি থেকে দূরে একা থাকি। এই মূহুর্তে অনেক প্রিয় মুখের কথা মনে পড়ল।
প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরে থাকা আসলেই অনেক কষ্টের।
যে যেখানেই থাকুক সব সময় দোয়া করি যে যার স্থানে ভাল থাকুক।
২৫ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরে থাকা আসলেই অনেক কষ্টের - আজকের এ Skype, Viber, WhatsApp এর যুগেও সেটা "অনেক কষ্টের"ই রয়ে গেছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
৩| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:২৫
আখেনাটেন বলেছেন: বিদায় সবসময়ই বেদনাবিধুর। তারপরও সবকিছু ছেড়ে যেতে হয়, ছাড়তে হয়। অনেক সময় মেনে নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেকে পারে অনেকে পারে না এই কষ্টটা সইতে।
আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে চোখে জল এসে গেল। আমাকেও বিদায় নিতে হয়। খারাপ লাগে। ভীষণ খারাপ। জীবনের যাঁতাকলে হয়তো এটাই নিয়তি। মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
ভালোলাগা রইল সুন্দর পোষ্টে।
২৫ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: সময় করে লেখাটা পড়েছেন, সুন্দর মন্তব্য রেখে গেছেন- এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পোষ্টের প্রশংসায় উৎসাহিত হ'লাম। প্লাসে অনুপ্রাণিত।
শুভেচ্ছা জানবেন।
৪| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৫৭
চিটাগং এক্সপ্রেস বলেছেন: বৃদ্ধ বয়সে কাউকে বিদায় দেওয়ার মত কষ্টের আর কিছু নেই। তবুও দিতে হয়। কারণ জীবন তো চলছে প্রকৃতির নিয়মে ।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: শুধু বৃদ্ধ বয়সে নয়। সব বয়সেই কাউকে বিদায় দেওয়ার মত কষ্টের আর কিছু নেই।
জীবন তো চলছে প্রকৃতির নিয়মে - ঠিক তাই। সে নিয়মে আমরা সবাই বাঁধা!
৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:১৩
ওমেরা বলেছেন: আমার আপুর চেয়ে আমি ও ১৪ বছরের ছোট । আপুর যখন বিয়ে হয় আমার বয়স ৪ বছর ছিল ! বিদায় দেয়া - নেয়া সত্যি কষ্টকর।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: শৈলী ও সুবহা'র মতই আপনাদের অবস্থাটা ছিল তা বোঝা যাচ্ছে। তখন আপনার কেমন লেগেছিল?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা...
৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩
রাতু০১ বলেছেন: এধরনের কষ্ট কাউকে দেখানো যায় না , জীবনের অর্থ কি ভাবি।
ভবিষৎ ভাবনায় বর্তমান কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
জীবনের অর্থ বোধকরি একেকজনের কাছে একেক রকম।
৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:০৩
করুণাধারা বলেছেন: কদিন পর সন্তান চলে যাবে দূর দেশে- ভীষন মন খারাপ। সামুতে সবসময় আসা হয় না। হঠাৎ আসতেই আপনার এই পোস্ট চোখে পড়ল। পড়তে গিয়ে অশ্রুসজল হয়ে উঠলাম। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালবাসা, বিদায়বেলায় মায়ের যে কষ্ট হয় তার যেভাবে বর্ণনা করেছেন আমি মা হয়েও এত ভালভাবে লিখতে পারতাম না। একটির বেশি লাইক দেয়া গেলে আমি আপনার এ পোস্টে ৫ টি লাইক দিতাম।
ধন্যবাদ পোস্টের জন্য। ভাল থাকুন- আন্তরিক প্রার্থনা।
২৮ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৪৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: একটির বেশি লাইক দেয়া গেলে আমি আপনার এ পোস্টে ৫ টি লাইক দিতাম-- ধন্যবাদ, এতটা উদারভাবে উৎসাহ দিয়ে যাবার জন্য।
আপনি একটা পোস্টে লিখেছিলেন, আকাশ, মেঘ,গাছ কিংবা ফুল দেখার চাইতে আমার বেশি ভাল লাগে মানুষ দেখতে
(আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ) -- কথাটা আমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই মানুষের বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভূতির অভিব্যক্তি আমাকে নাড়া দিয়ে থাকে। অবশ্য আমি আকাশ, মেঘ,গাছ কিংবা ফুলও দেখি।
শুভেচ্ছা জানবেন। আপনার সন্তান দূর দেশে ভাল থাকুক, নিরাপদে থাকুক, এই শুভকামনা রেখে গেলাম।
৮| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২
রানা আমান বলেছেন: খুবই ভালো লাগলো । ধন্যবাদ পোস্টের জন্য। ভাল থাকুন , সুস্থ থাকুন ।
২৮ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৫১
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ উদার মন্তব্য মন ছুঁয়ে গেল। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
৯| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২
মৌমুমু বলেছেন: প্রিয় মানুষগুলোর কাছ থেকে দুরে থাকাটা খুব কষ্টের। বিদায় শব্দটাই অনেক কষ্টের।
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। ছবিটাও আমার খুব প্রিয় একটা ছবি।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
২৮ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: বিদায় শব্দটাই অনেক কষ্টের - ঠিক!
কবিতা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত।
শুভেচ্ছা জানবেন।
১০| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৫৯
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। +।
শেষ বিদায়ের সময় ওরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলো, কারো মুখে কোন কথা নেই। ছেলেটার মুখটা আমার দিক থেকে দেখা যাচ্ছিল। দেখলাম তার দুচোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছে। ওরা নীরবে নিশ্চুপ শুধু দাঁড়িয়েই থাকলো। মুখে কোন কথা না বললেও মনে মনে নিশ্চয়ই ওদের মাঝে ভাবের আদান প্রদান হচ্ছিল। ভাব প্রকাশের এটাও এক অপরূপ অভিব্যক্তি। অনেকক্ষণ পর ওরা আলিঙ্গণমুক্ত হয়ে একে অপরের দিকে তাকালো। -- অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
৩০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখা থেকে উদ্ধৃতির জন্য ধন্যবাদ।
অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল - আশাকরি, সেসব স্মৃতি থেকে নতুন কোন লেখা বেরিয়ে আসবে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভেচ্ছা...
১১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:২৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সময়করে এসে আবার লেখাটি পড়ব।
ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম ।
শুভেচ্ছা রইল ।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:২৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা। অনেক ধন্যবাদ।
আপনার জন্যেও শুভেচ্ছা...
১২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৩৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
বর্তমান বিশ্ব মানুষকে আপনজন থেকে টেনে দুরে নিয়ে যাচ্ছে; কিছুটা কস্টকর।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:১১
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, অনেক কষ্টকর। ৪৭ বছরে দেশটা ঠিকমত এগিয়ে গেলে মানুষ আজ দেশত্যাগ করতে চাইতো না।
মন্তব্যেও জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮
রিএ্যাক্ট বিডি বলেছেন: আমার Youtube Channel ভিডিও দেখুন ভালো লাগলে Subscribe করুন
Link: ReactBd
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:১২
খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা।
১৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭
ধ্রুবক আলো বলেছেন: কিন্তু আমি তার বিরহে এ ব্যথা সামলাবো কিভাবে?
....তবুও নিজেকে সামলাতে হয় ভাই!! এই জগৎ সংসার এই জীবন বড়ই মায়াবী। মায়ার বাঁধনের গিট খুব শক্ত ও কঠিন!!
মানুষ মানুষকে ভালোবাসে কাছে আসে আবার সাময়িক সময়ের জন্য দূরে সরে যায়; জগৎ সংসারের নিয়ম।
এই চক্রাকার জীবনে ঘূর্ণনে আমাদের বেঁচে থাকতে হয়।
লেখাটা খুব হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া খুব ভারী একটা লেখা। মায়া ভালোবাসা মানুষের জীবনের বাধন।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: এই জগৎ সংসার এই জীবন বড়ই মায়াবী। মায়ার বাঁধনের গিট খুব শক্ত ও কঠিন!! - ঠিক বলেছেন, সত্যিই বড় কঠিন এ মায়ার বাঁধন, মানুষ এ বাঁধনে আটক থাকে আজীবন।
চমৎকার, সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হয়েছি, প্লাসে অনুপ্রাণিত।
শুভেচ্ছা রইলো...
১৫| ২৭ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:০৭
সোহানী বলেছেন: হাঁ এর চেয়ে বড় বন্ধন আর নেই। যার নেই সেই বুঝে জীবনে কি হারিয়েছে.........
০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার এ লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। পড়ে নিজস্ব ভাবনার কথাটুকু জানিয়েছেন, এতে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভেচ্ছা জানবেন।
১৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪৮
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: বিদায় দেয়া - নেয়া কষ্টকর।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, দুটোই কষ্টকর। তবে বৃদ্ধ বৃদ্ধা আর শিশুদের বিদায় দেয়াটা আরো বেশী কষ্টকর।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্রীত হ'লাম।
১৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:১৫
উম্মে সায়মা বলেছেন: বিদায়কাল সবসময়ই ভীষণ কষ্টের। এয়ারপোর্টে গেলে আমিও সবসময় এমন আশেপাশের মানুষদের দেখি। বিশেষ করে যারা প্রথমবার বিদেশে যাচ্ছে তাদের প্রিয়জনদের মাঝে কষ্ট আর কান্নার ঝড় বয়ে যায়। খারাপ লাগে।
আল্লাহ আপনাকে বিরহ ব্যথা সামলানোর তৌফিক দিক....
১২ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্যে প্রীত হ'লাম, প্লাসে অনুপ্রাণিত।
১৮| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০৩
রওশন_মনি বলেছেন: যেতে নাহি দিব হায়
তবু যেতে দিতে হয়
তবু চলে যায়। --- কবিগুরুর এই লেখাটিই শান্তনা ।
১২ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, অমোঘ সত্য বাণী। প্রিয়জনদের বিদায়ের ক্ষণে কবিগুরুর সেই বিখ্যাত কবিতার এই চরণগুলোই বেশী বেশী করে মনে পড়ে এবং অনুভূত হয়।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৭
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: সময়ের পিঠে মানুষের জীবন । তা মানুষ চাইলেও বদলাতে পারে না । আর স্নেহ, মায়া, ভালোবাসা, প্রেম, আবেগ, অনুভুতি- এই ব্যাপারগুলো মানূষের মনের জীবন । সময় এবং এই উপসর্গ অনুসর্গগুলো একসাথে চলা কঠিন । দূরত্ব মানুষকে দূরে ঠেলে দেয় সত্য কিন্তু সত্য অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা থেকে যায় আজীবন।
অনেক আবেগজড়িত লেখা । ভাল লেগেছে ।
১২ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: কবিতা পড়ে আপনার সুচিন্তিত ও সুবিবেচিত অভিমত এখানে রেখে যাওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
অনেক আবেগজড়িত লেখা -- জ্বী, প্রিয়জনদের বিদায়ের সময় আমি খুব আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। সেরকম একটা বিদায় ক্ষণের কথা ভেবেই পোস্টটা লেখা হয়েছে।
প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:০৪
প্রামানিক বলেছেন: ওখানে দাঁড়িয়েই দেখছিলাম এক প্রৌঢ়া মা তার যুবক ছেলেকে ইমিগ্রেশনে ঢোকার আগে কিভাবে বুকে টেনে নিয়ে অশ্রুভেজা চোখে তার মাথায়, কপালে, গায়ে মুখে স্নেহচুম্বন দিয়ে যাচ্ছিলেন। ছেলেটিও মাকে বুকে চেপে ধরে রাখছিল। মানুষের গাল দুটো হচ্ছে ভালবাসার মাটি দিয়ে গড়া। কাউকে ভালবাসতে ইচ্ছে হলে, আদর করতে ইচ্ছে হলে আমরা গালে গাল স্পর্শ করি, গালে চুমু দেই। মা তাকে জড়িয়ে ধরে গালে গাল লাগিয়ে অনর্গল উপদেশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, ছেলেটাও নীরবে তা শুনে যাচ্ছিল।
বিদায় বেলার করুণ দৃশ্য আপনার লেখায় চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই।