নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতাঃ একটি দীর্ঘ চিঠি

১৬ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৩

মা,
তোমার শরীর অনেকদিন থেকেই খারাপ,
বছর তিনেক থেকেই একটু একটু করে
খারাপের মাত্রা বেড়ে চলেছে, আমরা তা
বুঝেছি এবং অসহায়ভাবে দেখে চলেছি।
আড়াই বছর আগেও তুমি সৈয়দপুর থেকে
ডমেস্টিক ফ্লাইটের প্লেনে সিঁড়ি বেয়ে উঠে,
ঢাকা থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলে। অথচ আজ
তুমি চলৎশক্তিহীন, একা বসতেও পার না।
তোমার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে ক্ষীণতর হচ্ছে।
বোধশক্তি বিলুপ্ত হচ্ছে অনিমিখ দু’আঁখির
অতলান্ত ভাবসায়রে, যেখানে আমাদের
নেই কোন প্রবেশাধিকার! নিত্যদিন তুমি
সেখান থেকে অনুক্ষণ কুড়িয়ে আনো,
কত কি মণিরত্ন তা কেবল তুমিই জানো!

তোমার বাকশক্তি এখনো সক্রিয়, কিন্তু সে
বাক দুর্বোধ্য। তোমার স্মৃতির বিশাল সম্ভার
ক্রমশঃ হ্রস্ব হতে হতে কেবলই খাবি খাচ্ছে
তোমার শৈশবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তান্ডবে
যা মন্বন্তর আর বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল!
তুমি এখন তোমার সে শৈশবের বান্ধবীদের
নাম ধরে ডাকো, অথচ তুমি তোমার নিজের
নামটি ভুলে গেছ, তোমার ছেলেমেয়েদেরও!

তোমার কথা জেনে আমার এক অশীতিপর
শিক্ষক, যিনি নিজে আজ বয়সের ভারে ন্যুব্জ
এবং যষ্ঠিনির্ভর, আমাকে ফোন করে বললেন,
‘তুমি তোমার মায়ের পদস্পর্শ করে দয়া মাগো
স্রষ্টার, সন্তানের দোয়া তিনি কখনো ফিরান না,
কোন প্রতিকার কিংবা শ্রেষ্ঠতর বিনিময় ছাড়া’।
তাঁর কথাটা আমার মনে স্থায়ীভাবে গেঁথে র’লো!
নিজস্ব পন্থায় তো অনেক দোয়াই করি প্রতিদিন,
এবারে তাঁর পন্থাটি অনুসরণ করার জন্য আজ
আমি রওনা হ’লাম তোমার পদপৃষ্ঠের সন্ধানে!

মা, তোমার ঘরের ঠিকানাটা আমি যদিও জানি,
তোমার মনের ঠিকানাটা, হালের বোধ-ঠিকানাটা
আমার জানা নেই। এ চিঠিটি তাই লিখে চলেছি
ঠিকানাবিহীন, জানি এটা তুমি কখনোই পাবে না।
যানজটের অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে আমি তোমায়
এ চিঠিটি লিখে চলেছি, সারাটা পথ তোমায় ভেবে।
শ্যাওড়া থেকে উত্তরা, ক্ষুদ্র এ পথটুকু পাড়ি দিতেই
পাঁচ পাঁচটি ঘন্টা পার হয়ে গেল স্থবির জটে বসে।
অথচ যেতে হবে আরো কত পথ, তিনশত কি.মি!
পথের যে অবস্থা, অন্যদিন হলে ফিরে চলে যেতাম।
কিন্তু আজ আমার মন বলছে, কষ্ট হলেও, এ পথ
এক সময় শেষ হয়ে আসবে, আমি ঠিকই পৌঁছাব
তোমার কাছে। হয়তো বিকেলে নয়, গভীর নিশীথে।
তোমার আশিসের কাছে সব দুর্ভোগই যে কত তুচ্ছ!


(ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অসহ্য যানজটে আটকে থাকা অবস্থায় রচিত। সাত/আট ঘন্টার যে পথ সতের ঘন্টায় শেষ হয়েছিল!)

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ থেকে....
১৫ জুন ২০২১

মন্তব্য ৩৩ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৩৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১১

কামাল১৮ বলেছেন: গদ্য কবিতার ভাষায় স্মৃতিচারন মনের আবেগকে ছুয়ে যায়।কবে যে এই যানজট থেকে মুক্তি পাবো আমরারা কেউ জানে না।

১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:৪১

খায়রুল আহসান বলেছেন: এই দুঃসহ যানজট থেকে সহসা কোন মুক্তি মিলবে বলে মনে হয় না, কারণ এ দেশের সরকার জনবান্ধব নয়। যারা এ সংকট নিরসনের ব্যাপারে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা কখনো যানজটের সম্মুখীন হন না, কারণ পুলিশ হুইসেল বাজিয়ে অন্যদেরকে থামিয়ে রেখে তাদেরকে পথ করে দেয়।

প্রথম মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:০৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



এক নজর দেখে প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
বাহুর উপর দিকে ষ্কন্ধে ভিষন ব্যথা অনুভব করছি ।
লিখতে বড় কষ্ট হচ্ছে । মায়ের অসুস্ততার কথা ও
ও তীব্র যানজটের কারণে আপনার প্রলম্বিত বেদনা
বিধুর অভিজ্ঞতার কথা শুনে খারাপ লাগছে ।
আমার মায়ের মৃত্যুকালীন সময়ে এমনই এক
যানযটে কারণে কি রকম অসহনীয় মানসিক কষ্ট
অনুভব করেছিলাম তার কিছু অংশ বিশেষ শেয়ার
করার ইচ্ছে ছিল । লিখতে কষ্ট হচ্ছে বলে এ যাত্রায়
লেখায় বিরতি দিতে হল । তবে যাওয়ার আগে
এই কবিতাটি প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।

মায়ের সাথে আপনার জন্যও দোয়া রইল ।
সকলেই সুস্থ থাকুন এই কামনা করি ।

১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:২৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন আপনার শরীরের সকল ব্যথা বেদনার দ্রুত উপশম করে দিন, এই দোয়া করছি।

"মায়ের সাথে আপনার জন্যও দোয়া রইল। সকলেই সুস্থ থাকুন এই কামনা করি" - অনেক ধন্যবাদ, আপনার এই দোয়া এবং শুভকামনার জন্য।

কবিতাটিকে "প্রিয়" তালিকায় তুলে নেয়াতে কৃতজ্ঞ বোধ করছি।

৩| ১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:৩৭

শেরজা তপন বলেছেন: যানজন না হলে এমন কবিতা রচনা হোত কিভাবে!!!

আপনার মায়ের হৃদয়ে পৌছে গেছে আপনার এই আর্তি!
ভাল থাকুন তিনি- ভাল থাকুন আপনিও

১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার মায়ের হৃদয়ে পৌছে গেছে আপনার এই আর্তি! - অনেক আশ্বস্ত বোধ করছি, আপনার এ চমৎকার বাক্যটি পড়ে।
অনেক, অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

৪| ১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৪২

হাবিব বলেছেন: বড় আবেগমাখা গদ্যকবিতা। আপনার লেখা মানেই নতুন কিছু। ভালো থাকবেন ভাইয়া

১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, নগণ্য এই আমি'র উপর এতটা আস্থা প্রকাশের জন্য, এতটা উদার মূল্যায়নের জন্য।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অত্যন্ত প্রীত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি। শুভকামনায় কৃতজ্ঞ বোধ করছি।
আপনিও ভাল থাকুন, সপরিবারে, সুস্বাস্থ্যে।

৫| ১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:৫১

সুদীপ কুমার বলেছেন: আপনার লেখা সবসময়ই ভাল লাগে।

১৭ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, সময় করে এসে আমার এ অকিঞ্চিৎকর লেখাগুলোর মধ্যে কিছু কিছু লেখা পড়ে যাবার জন্য। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।

৬| ১৭ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:৪৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



জগতে কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা অনেকটা পাখি প্রকৃতির হয়ে থাকেন। শত ঝড় ঝঞ্ঝাতেও তাঁরা নিজ নিজ আপন গৃহে আপন নীড়ে আপন গন্তব্যে পৌছাবেন। মা বাবাকে যারা ভালোবাসেন তাঁরাও সন্তানের কাছে ভালোবাসা পেয়ে থাকেন। আপনার চিঠিটি খুবেই ভালো লেগেছে তাই প্রিয়তে রাখছি।

শুভ কামনা রইলো।

১৭ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: পাখির এ স্বভাব মানুষেরও সহজাত, কিন্তু নানা বৈষয়িক প্রলোভনে মানুষ তার এ প্রাকৃতিক গুণটি হারিয়ে ফেলে।
পাখির সাথে মানুষের তুলনা করা আপনার মন্তব্যের এ চমৎকার পর্যবেক্ষণটি খুব ভাল লাগলো। পোস্টটি আপনি "প্রিয়" তুলে রাখায় কৃতজ্ঞ বোধ করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা---

৭| ১৭ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:১৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: মাকে নিয়ে খুব সুন্দর স্মৃতিচারনা++++++

১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: কবিতা পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হ'লাম।

৮| ১৭ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কবিতাটা অনেক ভালো লেগেছে স্যার। কিছু কিছু বাক্যগঠন ও শব্দবন্ধ অভিনব- যেমন 'যষ্ঠিনির্ভর'- এ শব্দটা দেখে আপনার স্বকীয়তায় মুগ্ধ হয়েছি।

কিছু ভালো লাগা পঙ্‌ক্তি তুলে দেবার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না :

তোমার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে ক্ষীণতর হচ্ছে।
বোধশক্তি বিলুপ্ত হচ্ছে অনিমিখ দু’আঁখির
অতলান্ত ভাবসায়রে, যেখানে আমাদের
নেই কোন প্রবেশাধিকার! নিত্যদিন তুমি
সেখান থেকে অনুক্ষণ কুড়িয়ে আনো,
কত কি মণিরত্ন তা কেবল তুমিই জানো!


--

তোমার বাকশক্তি এখনো সক্রিয়, কিন্তু সে
বাক দুর্বোধ্য। তোমার স্মৃতির বিশাল সম্ভার
ক্রমশঃ হ্রস্ব হতে হতে কেবলই খাবি খাচ্ছে
তোমার শৈশবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তান্ডবে
যা মন্বন্তর আর বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল!
তুমি এখন তোমার সে শৈশবের বান্ধবীদের
নাম ধরে ডাকো, অথচ তুমি তোমার নিজের
নামটি ভুলে গেছ, তোমার ছেলেমেয়েদেরও!


মা, তোমার ঘরের ঠিকানাটা আমি যদিও জানি,
তোমার মনের ঠিকানাটা, হালের বোধ-ঠিকানাটা
আমার জানা নেই। এ চিঠিটি তাই লিখে চলেছি
ঠিকানাবিহীন, জানি এটা তুমি কখনোই পাবে না।



সেই অশিতিপর শিক্ষকের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম রইল, যার নির্দেশে মায়ের পদাঙ্ক স্পর্শ করে দোয়া চাইতে রওনা হয়েছেন। অতুলনীয় শিক্ষকভক্তি আপনার। তেমনি অতুলনীয় মাতৃভক্তি- মায়ের পা ছুঁয়ে দোয়া না নিয়ে শান্তি নেই। এমন শিক্ষকভক্তি ও মাতৃভক্তি আজ কতই না বিরল। আর এই 'ভক্তি'র জন্যই আমরা পেলাম অতীব সুন্দর একটা কবিতা।

১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: 'যষ্ঠিনির্ভর' কথাটা হঠাৎ করেই আমার কলমের (আঙুলের) ডগায় চলে এসেছিল। ক'দিন আগে 'স্যার' (আমার সেই শিক্ষক) ফোন করে জানিয়েছিলেন, তিনি একটু বাসার নীচে নেমেছিলেন, লাঠি হাতে। হঠাৎ করে তিনি পড়ে গিয়ে তার পায়ের বুড়ো আঙুলের নখ উল্টিয়েছেন, কানের এক পাশে আঘাত পেয়েছেন এবং মাথার একটি ফেটে যাওয়া অংশে পাঁচটি সেলাই করিয়েছিলেন। তিনি নিজেই বলেছিলেন, তিনি এখন লাঠি নির্ভর, তবে বয়স হয়ে গেলে সে লাঠিও বিট্রে করে। তার কথাটিই কানে বাজছিল, আর সেই সাথে বাংলা বাগধারা 'অন্ধের যষ্ঠি'।

কবিতা থেকে বেশ একটা বড় অংশই উদ্ধৃত করেছেন- অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।

"সেই অশিতিপর শিক্ষকের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম রইল, যার নির্দেশে মায়ের পদাঙ্ক স্পর্শ করে দোয়া চাইতে রওনা হয়েছেন। অতুলনীয় শিক্ষকভক্তি আপনার" - আমার সেই শিক্ষক সম্বন্ধে ব্লগের পাঠকেরাও অনেকে জানেন, যারা আমার এ লেখাটি পড়েছিলেনঃ একজন শিক্ষকের কথাঃ আমাদের দোহা স্যার

চমৎকার একটি প্রেরণাদায়ক মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

৯| ১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:৫১

করুণাধারা বলেছেন: দুদিন আগে লেখা কবিতা; আশাকরি কষ্টকর যাত্রা শেষে মায়ের পদস্পর্শ করে অশেষ শান্তি পেয়েছেন...

আপনার মা এখন দ্বিতীয় শৈশবে পৌঁছেছেন। হয়ত আপনার মনে পড়ছে সেই সময়টা যখন আপনি চলতে পারতেন না, কথা বলতে বলতে শেখেননি কিন্তু আপনার মা পরম স্নেহে আপনাকে ঘিরে রেখেছিলেন... নিশ্চয়ই মাকে নিয়ে ফেলে আসা দিনের আরো অনেক স্মৃতি মনে ভিড় করছে।

আল্লাহ আপনার মাকে ভালো রাখুন, আপনার প্রার্থনা পূরণ করেন।

কবিতার আবেগ মন ছুঁয়ে গেছে।

১৮ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:০৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আশাকরি কষ্টকর যাত্রা শেষে মায়ের পদস্পর্শ করে অশেষ শান্তি পেয়েছেন..." - জ্বী, তা পেয়েছি এবং পাচ্ছি।

"আপনার মা এখন দ্বিতীয় শৈশবে পৌঁছেছেন। হয়ত আপনার মনে পড়ছে সেই সময়টা যখন আপনি চলতে পারতেন না, কথা বলতে বলতে শেখেননি কিন্তু আপনার মা পরম স্নেহে আপনাকে ঘিরে রেখেছিলেন... নিশ্চয়ই মাকে নিয়ে ফেলে আসা দিনের আরো অনেক স্মৃতি মনে ভিড় করছে" - এ কথাগুলো পড়ে মনে হলো, আপনি আপনার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সবকিছুই দেখতে পাচ্ছেন। আপনার কথাগুলো সবই ঠিক। এখানে এসে আমি মাকে খাওয়াচ্ছি, খাওয়ানোর সময় নানা রকমের গল্প করে তার স্মৃতিকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছি, তার বিড়বিড় করে বলে যাওয়া কথাগুলো কান পেতে শুনে তার মর্মোদ্ধারের চেষ্টা করছি। একটু আগে তাকে গোসল করানো হলো, গোসলের পর আমি তাকে নাশতা খাইয়ে এলাম। আমার তিন সন্তানের লালনের ব্যাপারে আমার অবদান যৎসামান্যই। আমার স্ত্রী স্বয়ং নিজের দু'হাতে তাদের শৈশবের লালনকার্য সব একাই পালন করেছেন বলা যায়। সে সময় প্রবাসে ছিলাম, তাই কোন ডমেস্টিক সাহায্যকারী ছিল না। তবে আমার নাতি ও নাতনিকে লালন করার কিছুটা সৌভাগ্য আমার হয়েছে। বিশেষ করে ওদেরকে গোসল করানোর কাজটা আমি নিষ্ঠার সাথে করে থাকি। আজ সকালে আম্মাকে গোসল করানোর সময় আমার ওদের কথা মনে পড়ছিলো। মায়ের জন্য আপনার দোয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

অন্য কারো একটা পোস্টে মন্তব্য/প্রতিমন্তব্যের মাধ্যমে আপনার ছেলের দুর্ঘটনার কথা জেনেছিলাম। যদিও অনেকটাই বিপদ কমে গেছে বলে জেনেছি, তবুও এ মুহূর্তে আপনার মানসিক অস্থিরতা সহজে অনুমেয়। আবার আরেক জায়গায় মনে হয় এটাও দেখেছিলাম যে আপনি অচিরেই ব্লগ ছেড়ে চলে যাবেন। আপনার ছেলের আশু এবং সম্পূর্ণ সুস্থতার জন্য দোয়া করছি। আর ব্লগে অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় হয়ে হলেও থাকুন, একেবারে চলে যাবেন না- এ দাবি তো বোধহয় করতেই পারি।

১০| ১৭ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:৫৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: নির্মল আকুতি। কবিতা তো নয় তীব্র যানজটে আটকে থাকা সন্তানের মায়ের আরোগ্য কামনায় তীব্র আকুতি++। আপনার দোয়া যেন মঞ্জুর হয়।ওনার সুস্থতা কামনা করছি।
শুভেচ্ছা জানবেন স্যার।

১৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আাপনার আন্তরিক মন্তব্যে এবং শুভকামনায় স্পর্শিত হ'লাম। মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১১| ১৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:২২

ঢুকিচেপা বলেছেন: আহা! কি কষ্টকর অবস্থায় আছেন আপনার মা।
সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো উনি হয়তো কষ্ট পাচ্ছেন কিন্তু বুঝতে বা বলতেও পারছেন না।
আপনার যাওয়া আসাতে কষ্ট হলেও মায়ের সাথে দেখা হওয়ার শান্তিটা অমূল্য।

অনেক অনেক দোয়া রইল আপনার মায়ের জন্য।

১৯ শে জুন, ২০২১ সকাল ৯:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার যাওয়া আসাতে কষ্ট হলেও মায়ের সাথে দেখা হওয়ার শান্তিটা অমূল্য" - ঠিক বলেছেন। কষ্টের কথা ভুলে গেছি। মায়ের সান্নিধ্যে 'অমূল্য শান্তিতে' আকন্ঠ ডুবে আছি।

দোয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত।

১২| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:১১

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,





মা বন্দনা।
মা'য়ের পা ছুঁয়ে আসার কাতরতায়, এক বিবেকবান সন্তানের আকুতির নিখাদ চিত্র রেখে গেলেন কবিতায়।

২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১০:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনিও অত্যন্ত মনছোঁয়া একটি মন্তব্য রেখে গেলেন কবিতায়। মন্তব্যে এবং 'লাইক' এ অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা....

১৩| ২০ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:২০

অদ্ভুত_আমি বলেছেন: প্রথমেই মায়ের জন্য দোয়া – আল্লাহ তায়ালা উনাকে হায়াতে তৈয়েবা দান করুক, সুস্থতা দান করুক। আমীন।

মা, তোমার ঘরের ঠিকানাটা আমি যদিও জানি,
তোমার মনের ঠিকানাটা, হালের বোধ-ঠিকানাটা
আমার জানা নেই। এ চিঠিটি তাই লিখে চলেছি
ঠিকানাবিহীন, জানি এটা তুমি কখনোই পাবে না।

---এই অনুভুতিটা আসলে অনেক কষ্টের, কোন কিছুই এই কষ্টটা Alleviate করতে পারবে না ।


পথের যে অবস্থা, অন্যদিন হলে ফিরে চরে যেতাম।
কিন্তু আজ আমার মন বলছে, কষ্ট হলেও, এ পথ
এক সময় শেষ হয়ে আসবে, আমি ঠিকই পৌঁছাব
তোমার কাছে।। হয়তো বিকেলে নয় গভীর নিশীথে।
তোমার আশিসের কাছে সব দুর্ভোগেই যে কত তুচ্ছ!

---মায়ের জন্য কোন কষ্টই স্বীকার করতে হলে, সন্তানের কাছে সেটা কোন কষ্টই না।

২১ শে জুন, ২০২১ সকাল ৮:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: মায়ের জন্য দোয়া - আপনার এ দোয়া আল্লাহতা'লা কবুল করে আমার মাকে সুস্থ করে দিন! (আমীন!)
দোয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা!

কবিতা থেকে দুটো উদ্ধৃতি এবং উদ্ধৃতির সাথে যথোপযুক্ত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম।

১৪| ২৪ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৫৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




খায়রুল আহসান ভাই, আপনাকে উৎসর্গ করে সামান্য একটি লেখা পোস্ট দিয়েছি আজ। পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো। আপনাকে ধন্যবাদ।

২৬ শে জুন, ২০২১ রাত ১১:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ে মন্তব্য করে আসলাম। চমৎকার, জনসচেতনতামূলক পোস্ট লিখার জন্য ধন্যবাদ। উৎসর্গ করে আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।

প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।

১৫| ০২ রা জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:৩৪

মলাসইলমুইনা বলেছেন: খায়রুল ভাই,
আপনার আম্মা কেমন আছেন এখন ? আশাকরি ভালো আছেন । ব্লগে একটু অনিয়মিত হয়ে যাওয়ায় আপনার কাছে যে জানতে চাইবো আপনার আম্মার কথা সেটাই আর হয়ে উঠে নি । আপনার আম্মার জন্য জন্য আমাদের দোয়া প্রতিদিন । ভালো থাকুন ।

০২ রা জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪১

খায়রুল আহসান বলেছেন: এখানে এসে আম্মাকে যে অবস্থায় দেখেছিলাম, তার চেয়ে তিনি সামান্য ভাল হয়েছেন। তিনি আরেকটু সুস্থ হয়ে উঠুন, এটুকুই প্রত্যাশা।

"আপনার আম্মার জন্য জন্য আমাদের দোয়া প্রতিদিন" - কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম, দূর দূরান্ত থেকে পাঠানো এ অকৃত্রিম দোয়ার জন্য।

আপনিও ভালো থাকুন, শুভকামনা....

১৬| ০২ রা জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: রাব্বিরহামহুমা কামা রাব্বায়িনি সাগিরা !
আপনার স্মৃতিকথায় বুঝেছি আপনি রংপুরে, এ লেখা টি পড়া হয় নি। এমন অসাধারণ মাতৃ বন্দনায় ভালোলাগা।

আগের মন্তব্যে দেখলাম আল্লাহর ইচ্ছায় অনেকটা সুস্থ্য, অনেক অনেক দোয়া ও শুভ কামনা। ভালো থাকুক আমাদের পিতামাতা।

০২ রা জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: রাব্বিরহামহুমা কামা রাব্বায়িনি সাগিরা!

লেখাটা পড়ে আগেই প্লাস দিয়ে গিয়েছিলেন। পুনরায় মন্তব্যে ফিরে এসে দোয়া এবং প্রশংসা করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন, শুভকামনা....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.