![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন ধারা বেশ লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সরকার, যারা একসময় কঠোর হাতে সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করত, এখন নিজেই জনমতের প্রবল চাপে পড়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার রিয়াকশন যেন এখন দেশের নীতি নির্ধারণের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। কোনো ঘটনা ফেসবুকে আলোচিত বা সমালোচিত হলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, আর এর ফলাফলস্বরূপ সৃষ্টি হচ্ছে এক নতুন ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা, যাকে অনেকে 'ফেসবুক নির্ভর সরকার' বলে আখ্যায়িত করছেন।
এই পরিস্থিতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ সম্ভবত বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশনা এবং তা প্রত্যাহারের ঘটনা। ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক নারী কর্মীদের জন্য ছোট হাতা ও স্বল্প দৈর্ঘ্যের পোশাক এবং লেগিংস পরা নিষিদ্ধ করে একটি নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু এই নির্দেশনা জারির মাত্র তিন দিনের মাথায়, অর্থাৎ ২৪ জুলাই, তীব্র সমালোচনার মুখে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এই ড্রেসকোড নিয়ে সারাদেশের মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদল, যারা নিজেদের রক্ষণশীল এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেন বলে দাবি করেন, তারা এই নির্দেশনার পক্ষে অবস্থান নেন। তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান, এবং সেখানে শালীন পোশাক পরা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নির্দেশনার বিরোধিতাকারীদের 'বাংগু পোগতিশিল' বলে কটাক্ষ করেন এবং বলেন যে অতিরিক্ত স্বাধীনতার কারণে তারা ফরমাল ড্রেসকোডের বিরোধিতা করছে। তাদের যুক্তি হলো, একজন নারীর কেন এমন পোশাক পরে অফিসে যেতে হবে যা শালীনতার মানদণ্ড অতিক্রম করে ?
অন্যদিকে, যারা নিজেদের প্রগতিশীল ও আধুনিক ভাবধারার সমর্থক মনে করেন, তারা এই নির্দেশনার তীব্র সমালোচনা করেন। তাদের মতে, এটি বাংলাদেশের সমাজকে ইউরোপ-আমেরিকার পথ থেকে সরিয়ে আফগানিস্তানের মতো রক্ষণশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আজ যদি বাংলাদেশ ব্যাংক ড্রেসকোড ঠিক করে দেয়, তাহলে কাল অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও একই পথে হাঁটবে, যা ultimately নারীদের ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার একটি অপচেষ্টা।
এই বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং তার পরিবার। গভর্নরের মেয়ে পশ্চিমা দেশে থাকায় তার পোশাকের ধরণ বাংলাদেশের সাধারণ নারীর মতো নাও হতে পারে—এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তাকেও সমালোচনার শিকার হতে হয়। একই ধরনের সমালোচনা আসে প্রফেসর ইউনুসের কন্যার ক্ষেত্রেও। ব্যক্তিগত জীবন এবং পেশাগত সিদ্ধান্তের এই মিশ্রণ পুরো বিতর্ককে আরও জটিল করে তোলে।
রাজনীতিবিদ এবং সমালোচকরা প্রশ্ন তুলছেন, "শালীন পোশাক" পরতে বলার পাশাপাশি কেন সুনির্দিষ্টভাবে কিছু পোশাকের তালিকা দেওয়া হলো যা পরা যাবে না? তারা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজের মূল কাজ বাদ দিয়ে কেন "মোরাল পুলিশিং" শুরু করেছে? ব্যাংকে যারা চাকরি করেন, তারা যথেষ্ট পরিণত এবং স্বাভাবিকভাবেই তারা পার্টি ড্রেস পরে অফিসে যাবেন না। অনেকের সন্দেহ, ৫ই আগস্টের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে এক ধরনের ডানপন্থী হাওয়া লেগেছে, যার প্রভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, সমালোচনার মুখে পড়ে দ্রুত নির্দেশনাটি বাতিল করে দেওয়া হয়, যা সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা এবং জনমতের চাপের কাছে নতিস্বীকারের প্রমাণ বহন করে। মিডিয়া ব্যক্তিত্বরাও এই ইস্যুতে সোচ্চার হন, আর এর পাল্টা হিসেবে রক্ষণশীল বুদ্ধিজীবীরা দেশের মানুষের 'মাথা খারাপ' করে দেওয়ার জন্য প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো গণমাধ্যমগুলোকে দায়ী করেন।
এই পুরো ঘটনা প্রবাহ একটি কথা সামনে নিয়ে আসে: "স্ট্যাটাস বা নোটিশ দেওয়ার চেয়ে উহার স্থায়িত্ব এবং ইজ্জত রক্ষা করা কঠিন।" বর্তমান সরকার, যাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তারা যেন এখন ফেসবুকের জনমত দেখে দেশ চালাচ্ছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নিজস্ব স্বকীয়তা এবং নীতি থাকা উচিত। জনমতকে গুরুত্ব দেওয়া ভালো, তবে শুধু জনমতের ভিত্তিতেই যদি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরে তা প্রত্যাহার করা হয়, তাহলে রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণী প্রক্রিয়ার ওপর মানুষের আস্থা কমে যেতে পারে। এটি শুধু সরকারের দুর্বলতাই প্রকাশ করে না, বরং দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার পেশাদারিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
এখন প্রশ্ন হলো, সরকার কি নিজস্ব একটি নীতি কাঠামো দাঁড় করাতে পারবে, নাকি ভবিষ্যতেও জনমতের ঢেউয়ের তালে তালে চলতে থাকবে?
২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৫৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ ।
২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৫৭
সুলাইমান হোসেন বলেছেন: জনমতকে বিচার বিশ্লেষণ করে যদি উপকারি প্রমানিত হয়, তাহলে অবশ্যই জনমতকে গুরুত্ব দিতে হবে,অন্যথায় সরকার চাপের মধ্যে পড়বে।আমরা লীগ আমলে দেখেছি জনমতকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি,জনগনের সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাজেট নিয়ে কোনো পরামর্শ ও করা হয়নি,জনগন এটাও জানতনা লীগ সরকার দেশকে এত কোটি কোটি ডলার ঋণের চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।জনগনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় না রাখার খারাপ পরিনতি শেষে লীগ সরকারকে ভুগতে হয়েছে।পদ্মাসেতু নির্মান,মডেল মসজিদ নির্মান এরকম বড় বড় প্রকল্পে জনমত গ্রহন করা সরকারের উচিত ছিল।সুতরাং, দেশটা যেহেতু জনগনের, অবশ্যই জনমতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
জনমতকে গুরুত্ব দেওয়ার অর্থ এটা নয় যে জনগনের সব মতই গ্রহন করে নেওয়া হবে,কারন জনগন অধিকাংশ সময় অতি কৌতুহলী থাকে,এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বার্থকে বড় করে দেখে,অন্যের দিকে খেয়াল থাকেনা।যেকারনে একটা অংশ লাভবান হলেও অন্য আরেকটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা থাকে।যেটা আমরা লীগ আমলে দেখেছি,একটা দলকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছিলো,যাদেরকে কোনো পাত্তা দেওয়া হয়নি।
২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৫৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ ।
৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:০২
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সরকারি অফিস-আদালতে অবশ্যই ড্রেসকোড থাকা উচিত। ছেলেরা জিন্সের প্যান্ট পড়ে কিংবা মহিলারা হাতা-কাটা ব্লাউজ পড়ে অফিসে আসবেন এটা প্রত্যাশিত নয়। ব্যক্তি জীবনে আপনি মোটাদাগে আপনার ইচ্ছেমত পোশাক পড়তেই পারেন কিন্তু অফিসে সেটা সবার কাছে সমান গ্রহণযোগ্যতা পাবে তা আশা করা সঠিক নয়। তাছাড়া পোশাকে শালীনতার সংজ্ঞা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে তাই এ প্রসঙ্গে সুর্নিদিষ্ট কিছু গাইডলাইন থাকা অবশ্যই প্রয়োজন।
২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:০৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ ।
৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৫৯
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমার মতামতের জন্য ধন্যবাদ দিবেন না?
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:১০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার মতামত না জানালেও লেখা যেহেতু পড়েছেন তাই ধন্যবাদ।
৫| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৪
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: ‘সমন্বয়কদের’ জ্বালায় কাজ করতে পারছে না পুলিশ : মোস্তফা ফিরোজ। ‘আমি নাম উল্লেখ করব না, কিন্তু রাজধানীর একটি থানার ওসি আমাকে বলেছেন— ভাই আমরা কোনো কাজ করতে পারছি না। সন্ধ্যার পর থেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কিছু তরুণ এমন প্রেশার (চাপ) সৃষ্টি করে; নানারকম তদবির, একে মারো, ওকে ধরো, তাকে ছেড়ে দাও এমন চাপ দিতে থাকে। আমরা কাজ করতে পারি না। তারা ফোন করতেই থাকে, ফোন না ধরলে দলবল নিয়ে থানায় চলে আসে।’
ঢাকার বাইরে সিরাজগঞ্জের এক থানার ওসি একই কথা বলেছেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ।
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:০৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দেখেছি। দিনে দিনে বাড়িতেসে দেনা শুধিতে হইবে ..।
৬| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশে আমার আর থাকতে ইচ্ছা করে না।
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:১০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমি যাবো না। বাংলাদেশেই থাকবো।
৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৮
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: যে ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো, এখন তাকে ৫ লাখ দিতে হচ্ছে: মির্জা ফখরুল। দেখুন মির্জা সাহেব কী বলেন। প্রশ্ন হলো এই ঘুষ কাকে দিতে হচ্ছে? এসব কাজে তো উনাদের লোকেরাই জড়িত। আওয়ামী লীগ তো পগারপার।
২৬ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৫০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সবাই মিলে মিশে খাইতেসে। আমলা-পুলিশ-নেতারা সুখে আছে ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৪৫
ঢাবিয়ান বলেছেন: উন্নত ও সভ্য দেশেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ড্রেস কোড আছে। তানাহলেতো মানুষ যা ইচ্ছা তাই পড়ে অফিস, আদালত বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজির হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শালীন পোষাকের ড্রেসকোড থাকলে অসুবিধা কি ? বরং এটাইতো স্বাভাবিক।