নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
অভূতপূর্ব উদারতাঃ
মাস দুয়েক আগে আমি আর আমার স্ত্রী হাসপাতালে গিয়েছিলাম, এক্সরে করানোর জন্য। আমি এক্সরে বিভাগে প্রবেশ করে রিসেপশনে যখন জিজ্ঞেস করছিলাম কোথায় যেতে হবে, তখন লক্ষ্য করলাম আমাদের ঠিক পিছে পিছে আসা একজন প্রৌঢ় ভদ্রলোক সিঁড়ি দিয়ে উঠেই হাতের বাম দিকে চলে গেলেন। রিসেপশন থেকেও আমাদেরকে ঠিক সেই দিকেই যেতে বলা হলো। আমরা একটু এগিয়ে দেখতে পেলাম, একটা রুমের সামনে লেখা ‘এক্সরে রুম’। দরজাটা খোলাই ছিল, আমি তবুও একটু নক করে ভেতরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দেখতে পেলাম, একজন মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান এক্সরে ফিল্ম প্রস্তুত করছেন। আর দেখলাম সেই ভদ্রলোককে, যিনি আমাদের পিছু পিছু এসে সরাসরি সেখানে চলে এসেছেন। আমি নিশ্চিত হবার জন্য তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সেখানেই কি এক্সরে করানো হবে কিনা। উনি স্মিতহাস্যে হ্যাঁসূচক জবাব দিলেন। আমাদেরকে দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনারাও কি এক্সরে করাবেন’? আমি হ্যাঁসূচক জবাব দিলাম। উনি তখন একটু সরে এসে বললেন, ‘আমি বাইরে গিয়ে বসি, আপনারা আগে করান’। আমি ওনার বিনয় এবং উদারতায় রীতিমত বিস্ময় প্রকাশ করে বললাম, ‘না না, তা কেন হবে। আপনি আগে এসেছেন, আপনি আগে করান। তাছাড়া আমরা দু’জনই এক্সরে করাবো, তাই আপনার চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগবে’। উনি তবুও অনুরোধ করলেন, আমরা যেন আগে করাই এবং এ কথা বলেই তিনি কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে উদ্যত হলেন। আমি এতে খুবই বিব্রত বোধ করছিলাম, কেননা পরে এসে আগে করানোর এ প্রস্তাবে আমার বিবেক কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না। ঠিক সে সময়ে মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান জানালেন, ওনার নামে এক্সরে প্লেট প্রস্তুত করা হয়ে গেছে। সুতরাং এমতাবস্থায় ওনাকেই আগে করাতে হবে। এ কথা শুনে আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম এবং ওনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা দু’জনে রুমের বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম।
একটু পরেই ভদ্রলোক বের হয়ে এসে আমাদেরকে বললেন, ‘আমার হয়ে গেছে, এবারে আপনারা যান’। আমি তাকে তার সিরিয়াল ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে অগ্রাধিকার অফার করার জন্য আন্তরিকভাবে আবার ধন্যবাদ জানালাম। উনি আবার একটা স্মিত হাসি দিয়ে চলে গেলেন। আজকাল যেখানেই যাই সেখানেই দেখি লাইন কখনো সোজা থাকে না। লাইন একটু বড় হলেই পেছনের লোকজন নানা ওসিলায় একটু সামনে বা পাশে দাঁড়ানোর জন্য নানা কসরৎ শুরু করে। ফলে কাউন্টারের সামনে লাইনটা ইংরেজী ‘I’ অক্ষরের মত না হয়ে ‘T’ এর মত হয়ে যায়। এমন অবস্থা যখন সবখানে, তখন সেই ভদ্রলোকের এতটা উদার আচরণে আমি শুধু মুগ্ধই হইনি, যারপরনাই বিস্মিতও হয়েছিলাম। আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম না, কেন তিনি আমাকে এতটা উদারতা ও ভব্যতা দেখালেন। যে কারণেই হোক, আল্লাহ রাব্বুল ‘আ-লামীন নিশ্চয়ই ওনার মনের খবর জানেন। প্রার্থনা করি, ওনার সদিচ্ছাটুকু যেন আল্লাহতা’লা কবুল করে নেন এবং এ জন্য তাকে উত্তম বিনিময় দান করেন।
ক্ষণিকের (শেষ) হাসিঃ
মাসখানেক আগে একটি পারিবারিক ঘরোয়া অনুষ্ঠানের জন্য খুব ভোরে বনানী বাজারে গিয়েছিলাম একটা খাসি কেনার জন্য। দরদাম করে একটা কালো খাসি কিনে কসাইকে সেটাকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করে দিতে বললাম। সে কাজ শুরু করার পর দেখলাম, পাশের কসাইও কয়েকটা ছাগল নিয়ে এসেছে জবাই করার জন্য। তার মধ্যে তিনটা ছিল একটু বড় আর চতুর্থটা ছিল কচি। কসাই একাই সেগুলোর পাগুলো বেঁধে শুইয়ে দিয়ে হাঁটু দিয়ে ছাগলের বাঁধা পা এবং শরীরটাকে চেপে ধরে বাম হাত দিয়ে গলাটাকে টান টান করে ধরে ডান হাত দিয়ে ছুরি চালিয়ে দিল। প্রথমে বড় তিনটাকে জবাই করে সবশেষে সেই কচি ছাগলটাকে শুইয়ে দিল। ছুরি চালাতে যাবে, ঠিক এমন সময়ে বিকট শব্দে তার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো। সে ফোনে কথা বলতে বলতে একটু অন্যমনস্ক হওয়াতে ছাগলের বাচ্চাটা তার হাঁটুর চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিল। মুক্ত হয়েই সে দাঁড়িয়ে মাথাটা একটু ঝাড়া দিয়ে আমার দিকে তাকালো। মনে হলো নিজেকে মুক্ত করতে পেরে সে আমার দিকে তাকিয়ে বিজয়ীর হাসি হাসছে। ওকে দেখে আমার এত, এত মায়া হলো যা বলার নয়। মিনিট পাঁচেক পরে সে কসাইটা ফোনে তার কথা শেষ করে সেটাকে ধরে নিমেষেই জবাই করে ফেললো। আমি খুবই খারাপ বোধ করতে থাকলাম। ছাগল তো হাসে না, কিন্তু আমি কেন সেই বাদামী রঙের ছাগলের কচি বাচ্চাটার চোখে মুখে একটি শিশুর হাসি দেখতে পেলাম? এ দৃশ্যটা আমি বহুদিন ভুলতে পারবো না। হয়তো কোনদিনও না!
ঢাকা
০২ অক্টোবর ২০২১
শব্দ সংখ্যাঃ ৬১৪
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে একমত।
ধন্যবাদ।
২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৫১
ঢাবিয়ান বলেছেন: বিদেশে আপনার দেখা ওই ভদ্রলোকদের হরহামেশাই দেখা মেলে। বিদেশে বাসে ট্রেনে সর্বত্র অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সিট ছেড়ে দেয়ার আহবান জানানোর পোস্টার থাকে। মানুষের মাঝে তাই অটোমেটিকালিই সর্বত্র এই ব্যবহার প্রয়োগের প্রচেষ্টা দেখা যায়।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। হতে পারে, তিনি অনেকদিন বিদেশে ছিলেন, সেখান থেকেই এমন আচরণ রপ্ত করে এসেছেন। তবে আমি ভাবতে ভালবাসবো, এটা তার 'ডিএনএ' নির্দেশিত আচরণ। মুখে হাসি এবং আচরণে বিনয় ও উদারতা - এটা সহজে 'রপ্ত' করা যায় বলে মনে হয় না। এটা একটা 'অভ্যন্তরীণ' বিষয়।
৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:০৩
আরাফআহনাফ বলেছেন: শ্রদ্ধেয় - সালাম জানবেন।
১/ এখনো কিছু কিছু লোকের মাঝে এমন শিস্টতার দেখা মেলে - অথচ এটাই সবার জন্য স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিলো। সব ভালো কিছু বিসর্জন দেয়া জাতি আমরা, আজ এমন শিস্টচার দেখলে অবাক হয়ে যাই, অবাক হয়ে যেতে হয়!!!
২/ আপনার আবেগকে, কোমল হৃদয়কে ধন্যবাদ জানাতে হয়। নিজের কোন পোষা পশু-পাখীর ক্ষেত্রে এমনটা হয় সাধারনত:।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: ওয়া আলাইকুম আসসালাম!
"অথচ এটাই সবার জন্য স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিলো" - কথা সত্য। যেটা স্বাভাবিকভাবে পাওয়ার কথা ছিল, অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছে যে সেটা পেতে দেখলেই অবাক হয়ে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, মানুষ এত ভালোও হতে পারে?
"নিজের কোন পোষা পশু-পাখীর ক্ষেত্রে এমনটা হয় সাধারনত:।" - সেটা আমার পোষা প্রাণী ছিল না, কিন্তু সেটা খুবই একটা নিরীহ প্রাণী, যার জন্মই হয়েছে আমাদের উদর পূর্তির জন্য। শ্বাস বন্ধ হবার মত পরিস্থিতির মোকাবিলা করে সে নিজেকে মুক্ত করে হয়তো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল, কিন্তু তা মিনিট পাঁচেকের বেশি স্থায়ী হয়নি। মুক্ত হবার পর তার চেহারায় স্পষ্টতঃই একটা খুশির ভাব লক্ষ্য করেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম তার জীবনের শেষ মুহূর্ত ছিল সেটা। সে চেহারাটাই আমার মনে গেঁথে গেঁছে। ক্ষণিকের দেখা এমন সব ইম্প্রেশন নিয়েই আমার এ সিরিজটা।
৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:০৭
মেহেদি_হাসান. বলেছেন: দুটি ঘটনাই হৃদয় ছুয়ে যাবার মতো।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০০
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
৫| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:১৯
মিরোরডডল বলেছেন:
প্রথম অংশের ভদ্রলোক অনেক বিনয়ী আর ভালো মানুষ সন্দেহ নেই ।
আমাদের চারপাশের এখনও অনেক মানুষই আছেন এরকম আর তাইতো জীবন সুন্দর ।
ইনফ্যাক্ট আমরাও এই কাজটা প্রায়ই অনেক জায়গায় করে থাকি স্থান কাল পাত্র ভেদে ।
বিশেষ করে ডক্টরের চেম্বারে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অথবা সুপারমার্কেটে ।
দ্বিতীয় অংশটা করুণ ! মায়াই লাগছে
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৩২
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমাদের চারপাশের এখনও অনেক মানুষই আছেন এরকম আর তাইতো জীবন সুন্দর" - জ্বী, আপনার কথাটাও খুব সুন্দর।
"দ্বিতীয় অংশটা করুণ ! মায়াই লাগছে" - এটাও ঠিক বলেছেন, ভীষণ মায়ার!
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হয়েছি। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
৬| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:২১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার প্রথম অভিজ্ঞতায় ভালোলাগা, জীবনের এই সুন্দর অভিজ্ঞতা গুলো ই আমাদের সঞ্চয়।
আপনার দেখা দ্বিতীয় দৃশ্য , আমাকে যেন কখনো দেখতে না হয় আমাদের একটা বেড়াল আছে, এমন বোবা সব কিছুর মাঝেই আমি আজকাল পোকী কে দেখতে পাই।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২০
খায়রুল আহসান বলেছেন: "জীবনের এই সুন্দর অভিজ্ঞতা গুলো ই আমাদের সঞ্চয়" - জ্বী, ঠিক বলেছেন। এখন মাঝে মাঝেই আমার সে সঞ্চয়ের ঝাঁপি খুলে বসতে ইচ্ছে হয়।
আমার কোন পোষা প্রাণী নেই, কিন্তু আমি মুক্ত পাখির ওড়াউড়ি আর প্রাণবন্ত প্রাণীদের মুক্ত বিচরণ দেখতে ভালবাসি।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত।
৭| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:২৫
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রথম পর্বের নিজের সিরিয়াল আপনাকে দিতে আগ্রহী ভদ্রলোক সত্যিই অনেক ভালো মানুষ। তাঁর জন্য আন্তরিক দোআ। আপনার জন্যও।
দ্বিতীয় পর্বটি পড়িনি এখনও। পড়বো ইনশাআল্লাহ।
অনেক অনেক শুভকামনা এবং কল্যানের দোআ আপনাদের জন্য। দোআপ্রার্থী আমরাও।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপাততঃ মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য ধন্যবাদ। আশাকরি, সুবিধামত পরে কোন এক সময়ে এসে দ্বিতীয় পর্বটিও পড়ে যাবেন।
কল্যানের দোআ এবং শুভকামনার জন্য কৃতজ্ঞতা। জাযাকাল্লাহু খায়রাঁ।
আপনাদের জন্যেও দোয়া রইলো।
৮| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
ক্ষণিকের হাসির অংশটুকু না লিখলেই ভালো হতো।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: হয়তো তাই হতো। ধন্যবাদ।
৯| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:০০
হাবিব বলেছেন: বর্ণনার দক্ষতায় ঘটনার জীবন্ত ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: "বর্ণনার দক্ষতায় ঘটনার জীবন্ত ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠলো" - অনেক ধন্যবাদ। প্লাসে এবং মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
১০| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:০৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ইমোটা আর দিতে পারলাম না স্যার। আপনার বনানী বাজারে ছাগ শিশুর ঘটনাটা মনে রেখাপাত করার মতোই ঘটনা।আর একাএকা জবাই করা ভালো লাগলো না শুনে। আমাদের এখানে সব খাশির দোকানে একজন খাসিটিকে চেপে ধরে অপর ব্যক্তি ছুরি চালিয়ে দেয় বলে দেখে আসছি।
দ্বিতীয় ঘটনাটির সঙ্গে সম্পূর্ণ বৈপরীত্য বলে মনে হয়েছে প্রথম ঘটনাটা। ইমো দেওয়ার সুযোগ একটিমাত্র হওয়ায় এটাই আমার আজ ইমো দেওয়ার অক্ষমতা।
আজকাল পথেঘাটে সৈজন্য সদ্ব্যবহার দেখাই যায়না। কয়েকবছর আগের ঘটনা। ছুটে ট্রেনে উঠে দুজন বসে পড়ি এক মাত্র সিটে।কয়েক সেকেন্ড পর আমি উঠে ওনাকে অফার করতেই ভদ্রলোকও উঠে আমাকে বসার কথা বলতে থাকেন।আমি বলি,আপনি বসুন।উনি পাল্টা আমাকে বসার জন্য চাপ দেন। এমন সময় সামনে এক মহিলা এসে ধপাস করে বসে বলেন, বুঝতে পারছি আপনাদের কারও সিটের দরকার নেই। এমন বেয়াকুব শেষ কবে হয়েছি মনে পড়েনা।পাক্কা একঘন্টার বেশি ভদ্রমহিলার সামনে আমরা দুজন ঠাই দাঁড়িয়ে যাত্রা করি।
ব্লগের জন্য অবশ্য পোস্ট লাইকের অপশন থাকায় সুযোগটা কাজে লাগালাম। পোস্টে লাইক।
শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা স্যার আপনাকে।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:৫৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমাদের এখানে সব খাশির দোকানে একজন খাসিটিকে চেপে ধরে অপর ব্যক্তি ছুরি চালিয়ে দেয় বলে দেখে আসছি" - আমাদের এখানেও সেরকমটিই করা হয়। সেদিন সময়টা খুব ভোরে ছিল বলে হয়তো কসাই তার লোকজন আসার জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই যতটা পারে, কাজ এগিয়ে রাখছিল।
সৌজন্য, সদাচারণ ইত্যাদি সভ্য ভব্য লোকদের পারিবারিক পুঁজি। পরিবার থেকে এ পুঁজি না পেলে আর অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে তা লাভ করা প্রায় অসম্ভব। উনি সজ্জন ছিলেন। আচরণের দ্বারা তিনি পারিবারিক পরিচয় রেখে গেছেন (আমি বলবো, বিশেষ করে মায়ের অবদান)।
মহিলাদের আচরণে বা কথায় অসৌজন্য প্রকাশ পেলে তা তার আর সব গুণাবলীকে আড়াল করে ফেলে।
মন্তব্য এবং 'লাইক' এর জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অন্যজনকে যা দেবেন, ঠিক সেটাই পরবর্তীতে আবার আপনার কাছে ফিরে আসবে তা সেটা সম্মান হোক অথবা ঘৃণা ।
এক গ্রামে একজন সৎ ও দরিদ্র কৃষক ছিলেন.. তিনি দুধ থেকে দই ও মাখন তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতেন । একদিন কৃষকের স্ত্রী মাখন তৈরি করে কৃষককে দিলেন বিক্রি করতে । কৃষক মাখনগুলো বিক্রি করার জন্য গ্রাম থেকে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন । মাখন গুলো গোল-গোল রোল আকৃতিতে রাখা ছিল । যার প্রত্যেকটির ওজন ছিল ১ কেজি করে । শহরে পৌঁছে কৃষক প্রতিবারের ন্যায় পূর্ব নির্ধারিত দোকানে মাখন গুলো দিয়ে পরিবর্তে লবন, তেল, চিনি, মসলা ও তার সংসারের প্রয়জনীয় সদাই নিয়ে আসতেন ।
একদিন কৃষক দোকান থেকে চলে যাওয়ার পরে দোকানদার মাখনের বানানো রোল গুলো ফ্রিজে রাখার সময় ভাবলেন ওজন ঠিক আছে কিনা? একবার পরীক্ষা করে দেখা যাক, মাখনের রোল গুলো ওজন করতেই উনি দেখলেন মাখনের ওজন আসলে আছে ১০০০ গ্রাম নয়, প্রতিটা আছে ৯০০ গ্রাম করে । পরের সপ্তাহে যখন আবার কৃষক সেই দোকানে মাখন বিক্রি করতে গেলেন.. দোকানের সামনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে দোকানদার কৃষকের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলতে লাগলেন.. ‘বেরিয়ে যাও আমার দোকান থেকে.. এবার থেকে কোন বেঈমান চিটিংবাজের সাথে ব্যাবসা করব না । আমার দোকানে আর কোনদিন পা রাখবে না.. ৯০০ গ্রাম মাখন ১ কেজি বলে বিক্রি করা লোকটার মুখ আমি দেখতে চাইনা ।
কৃষক বিনম্র ভাবে কম্পিত স্বরে দোকানদারকে বললেন- দাদা! দয়া করে রাগ করবেন না.. আসলে আমি একজন খুবই গরিব মানুষ, দাড়িপাল্লা বা বাটখারা কেনার মতো পয়সা আমার নেই । তাই আপনার থেকে প্রতিবার যে এক কেজি করে চিনি নিয়ে যেতাম সেটাই দাড়িপাল্লার একপাশে রেখে অন্য পাশে মাখনের রোল উঠিয়ে মেপে নিয়ে আসতাম।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার একটি শিক্ষণীয় গল্প বলার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
১২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো স্মৃতিচারণ
০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ। প্রীত হ'লাম।
১৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৪১
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: মানুষের মহানুভবতাই এই পৃথিবীকে টিকিয়ে রেখেছে।একবার গুলিস্তানে এক বয়স্ক ভদ্রলোক আমাকে বলেছিলেন, "বাবা, আমারে একটু রাস্তাডা পার কইরা দিবা?" তিনি কাঁপছিলেন।শরীর অনেক দুর্বল ছিলো। তাঁকে বলেছিলাম, কাঁধে হাত দেন। তারপর সেভাবেই তাকে রাস্তা পার করে দিয়েছিলাম। ভদ্রলোক সেদিন এত খুশি হয়েছিলেন যে, তিনি আমাকে লাঞ্চ করিয়েছিলেন প্রায় জোর করে। আমার এই কাজের প্রতিদান আমি বছরখানেক পরেই পেয়েছিলাম। আমার বাবা অফিসে যাওয়ার পথে বাসের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখন আমারই বয়সী এক ছেলে নিজের কাজ বাদ দিয়ে আমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলো।
আপনার দ্বিতীয় ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। একবার এক সবে বরাতের দিনে কসাই যখন গরু জবাই করছিলো তখন সেই গরুর চোখে চোখ পড়েছিলো আমার। হয়তো বলতে চেয়েছিলো, "আমি বাঁচতে চাই।"
০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ দুটো অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো ও মন্দ, উভয় কাজের বিনিময় আমরা এ দুনিয়াতেই পেয়ে যাই, অন্ততঃ কিছুটা হলেও। সেটা আমরা কেউ বুঝি, কেউ বুঝি না।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ। প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
১৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:০৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: প্রথম অংশ সত্যিই বিরল এখনকার সময়ে। পরের অংশ পড়ে খুব খারাপ লাগল। আমি এক সময় দুটো মুরগীর বাচ্চা পালতাম। বাসার কাজের মেয়ের উপর রাগ করে জবাই করে দিয়েছিলাম সেই কথা মনে পড়ল। জবাই করার সময় একটুও শব্দ করেনি। মনে হয়েছিল যেন ওরা অবাক হয়েছে আমার উপর! জবাই করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে কেঁদেছিলাম।
০৬ ই অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২০
খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট পাঠ করে আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, এজন্য অনেক ধন্যবাদ।
এ পৃথিবীতে আমরা কত কিছুর সাথে মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে পড়ি!
মন্তব্য এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
আশাকরি আপনার কন্যাদ্বয় নিয়ে ভালো আছেন। ভালো থাকার শুভকামনা... সুস্বাস্থ্যে, সপরিবারে।
১৫| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:১৫
সোহানী বলেছেন: প্রথমে মন ভালো করলেন তারপর তার শতগুন খারাপ করে দিলেন। .......
০৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:৩৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: এইসব 'ভালো-খারাপ' খবর নিয়েই আমাদের যাপিত জীবন। চোখে যেটা যেভাবে ধরা পড়ে, সেটা সেভাবেই লিখি।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:২৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,
জীবনের গল্প।
১নং - বিনয় আজকাল ডুমুরের ফুল। আপনি ভাগ্যবান সেটাও এই কলিকালে দেখতে পেয়েছেন!
২ নং - কলজেতে টান ধরানো দৃশ্য। আপনার বর্ণনাতে দৃশ্যটি যেন চোখের সামনেই দেখতে পেলুম, একটি শিশুর চোখ-
মর্মান্তিক......
১০ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: "বিনয় আজকাল ডুমুরের ফুল" - আজকাল চারিদিকে দেখা যায় শুধু ঔদ্ধত্য, আস্পর্ধা, অহংবোধ এবং অসৌজন্যতার কুৎসিত প্রকাশ। তার মাঝে উল্লেখিত ঘটনাটি সত্যিই এক 'ডুমুরের ফুল' হয়ে ফুটে আছে। সেজন্যই সেটা 'ক্ষণিকের দেখা' স্মৃতির মণিকোঠায় ঠাঁই পেয়েছে।
"কলজেতে টান ধরানো দৃশ্য" - একই কথা! আমার কলজেতেও টান ধরেছিল বলেই সেটা 'ক্ষণিকের দেখা' স্মৃতির মণিকোঠায় ঠাঁই পেয়েছে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: পোস্টের প্রথম পর্ব সত্যিই ব্যতিক্রম। আর দ্বিতীয় পর্ব অত্যন্ত হৃদয়বিদারক!