নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
মানুষের বয়স তো প্রতিদিনই কিছু কিছু করে বাড়ছে, প্রতি পলে পলে। তবে সবার বয়স বাড়াটা বাড়া নয়, একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে আসলে মানুষের বয়স কমতে থাকে। এই ‘নির্দিষ্ট বয়স’টা সবার জন্য এক নয়। কারো জন্য এটা পঞ্চাশ হতে পারে, কারো ষাট, কারো সত্তর বা তারও বেশি। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে আমরা যখন কোন কিছু উঁচুতে নিক্ষেপ করি, একটা নির্দিষ্ট উচ্চসীমায় উঠে সেটা আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। ভূপৃষ্ঠের যত নিকটবর্তী হয়, পতনের ত্বরণ তত বাড়তে থাকে, যদি না অন্য কোন শক্তি সেটাকে কিছুকাল ঠেকিয়ে রাখে। অন্য কথায় বলা যায়, বয়স যত বারে, আয়ু তত কমে।
এই যে যেটা বললাম, “একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে আসলে মানুষের বয়স কমতে থাকে”– এই কমার লক্ষণটা আমরা নানাভাবে অনুভব করতে পারি। আমাদের কর্মশক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে, দৃষ্টি শক্তি, শ্রবণ শক্তি, স্মরণ শক্তি, ধারণ শক্তি ইত্যাদিও এক এক করে কমতে থাকে। এটা সবার জন্য সত্য নাও হতে পারে, আবার সবগুলোই সবার জন্য একসাথে সত্য নাও হতে পারে। তবে একটা লক্ষণ বোধকরি পঞ্চাশোর্ধ্ব সকলের মধ্যেই কিছু না কিছু দেখা দিতেই থাকে, সেটা হচ্ছে ভুলো-মনা হওয়া আর স্মরণশক্তি ধীরে ধীরে লোপ পাওয়া। পরিচিত আত্মীয়-স্বজন, একটু কম ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব, জ্যেষ্ঠ-কনিষ্ঠ সহকর্মী, অতীতে নিবিড় সান্নিধ্যে কাজ করেছেন এমন কেউ, প্রমুখের নাম ভুলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হয়, কোন কোন সময় লজ্জাও পেতে হয়। একটা বয়সে এসে এমনটা হতেই পারে, এতটুকু ছাড় দিতেও অবশ্য অনেকেই উদারতা দেখান না।
যাহোক, আমার স্মরণ শক্তি এতকাল ভালোই ছিল, কিন্তু অধুনা আমারও প্রায়ই স্মৃতিভ্রম ঘটছে, অসাবধানতা বশতঃ বেশ বড় ভুলভ্রান্তিও ঘটছে। বছর তিনেক আগে দিল্লী থেকে শ্রীনগর যাবার সময় ট্যাক্সিচালকের অজ্ঞতা বশতঃ আমরা একটি ভুল টার্মিনালে উপস্থিত হয়েছিলাম। আসল টার্মিনালটির দূরত্ব সেখান থেকে ছিল দশ মিনিটের ড্রাইভ, কিন্তু ততক্ষণে দিল্লীর অফিস টাইম শুরু হয়ে যাওয়াতে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম শুরু হয়ে গিয়েছিল। ফলে দশ মিনিটের দূরত্বের পথ কমপক্ষে ত্রিশ মিনিটের পথে পরিণত হয়েছিল এবং বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই ব্যবধানও বাড়ছিল। আমাদের ট্যাক্সিচালক পুলিশের তাড়া খেয়ে গাড়ি একটানে বেশ খানিকটা সামনে নিয়ে যায়, আমিও হন্তদন্ত হয়ে দৌড়ে গিয়ে ট্যাক্সিতে উঠে বসি এবং চালককে পরের টার্মিনালে যেতে বলি। হৈ-হুল্লোরে সেই ভুল বহির্গমন টার্মিনালের মেঝেতে জরুরি কাগজপত্র রাখা আমার একটা কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ ফেলে রেখে আসি। পরের টার্মিনালে নামার সময় সেটা স্মরণ হওয়ায় আবার ঊর্ধ্বশ্বাসে ফিরে এসে সেই ব্যাগ উদ্ধার করতে রীতিমত গলদঘর্ম হই। নিরাপত্তার স্বার্থে দিল্লী পুলিশ ব্যাগটাকে ‘unclaimed baggage’ হিসেবে গণ্য করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দিচ্ছিল নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য। আমি ফিরে এসে ব্যাগটার খোঁজ করাতে পুলিশ ওয়াকি-টকি’র মাধ্যমে unclaimed baggage বাহী সেই ট্রেইলারটি কোয়ারেন্টাইনে প্রবেশ করার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে সেটাকে থামিয়ে ব্যাগটিকে নামিয়ে আনে। একবার কোয়ারেন্টাইনে প্রবেশ করলে দুই দিনের আগে সেটাকে কেউ বের করে আনতে পারতো না। ব্যাগটি উদ্ধারের ব্যাপারে দিল্লী পুলিশ অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল সেদিন। ব্যাগটি নিয়ে সেই একই ট্যাক্সিতে পুনরায় নতুন টার্মিনালে এসে একেবারে শেষ মুহূর্তে প্লেন ধরার শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনীর কথা স্মরণ করতে এখনো ভয় লাগে। তবে সেবারে শেষ পর্যন্ত সব দুশ্চিন্তার সুন্দরভাবে সমাপ্তি ঘটেছিল এবং সফরের বাকি অংশটা ভালোভাবে কেটেছিলো।
এবারে যেদিন আমরা মেলবোর্নে এলাম, তার পরদিন থেকেই রোযা শুরু হলো। তাই প্রথম একটা মাস বলতে গেলে আমরা ঘরেই ছিলাম, হাঁটাহাটি ছাড়া বাইরে খুব একটা যাওয়া হয়নি। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া ছেলের পক্ষে আমাদেরকে নিয়ে বাইরে বের হওয়া সম্ভব হয় না, তাই আমরা যাতে সহজেই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে আমাদের ইচ্ছেমত ঘোরাঘুরি করতে পারি, সেজন্য শুরুতেই সে আমাদের দু’জনের জন্য দুটো “মাইকি কার্ড” কিনে দিয়েছে। অন্যান্য উন্নত দেশের মত এখানেও একই নিয়ম, একই কার্ড দিয়ে আমরা ট্রেনে, বাসে ও ট্রামে যথেচ্ছা ভ্রমণ করতে পারি। এজন্য সারাদিনে সর্বোচ্চ নয়/দশ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মত কেটে নেয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে একটু কম কাটে, সাত/আট ডলারের মত, আর পাবলিক হলিডে তে এখানকার নাগরিকরা (এবং পর্যটকরাও) বিনামূল্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে পারে, অর্থাৎ একেবারে ফ্রীতে!
ডাক্তারের শিডিউল অনুযায়ী ২৬শে এপ্রিল তারিখে মেলবোর্নের “পেনিনসুলা প্রাইভেট হসপিটাল” এ সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে আমাদের নাতনির জন্ম হবার কথা ছিল। কিন্তু সে দু’দিন আগেই, অর্থাৎ ২৪ তারিখেই সেহেরীর সময় তার আগমনি বার্তা ঘোষণা করে। দিনটি ছিল রবিবার। ছুটির দিনে বিশষজ্ঞ ডাক্তারদেরকে হাতের কাছে পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। সৌভাগ্যক্রমে, তার মা যে বিশষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসাধীন ছিল, তাকে ফোন দেয়ার সাথে সাথে তিনি রোগীকে জরুরী বিভাগে রিপোর্ট করতে বলেন এবং সকাল নয়টায় অপারেশন হবে বলে জানান। জন্মের সময় মায়ের পাশে ওর বাবাও ছিল। আমরা দু’জন বাসাতেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। অপারেশনের পাঁচদিন পর, ছয় দিনের দিন মা, বাবা ও সন্তান নিজ গৃহে ফিরে আসে। এই ছয়দিনে আমরা চার দিন হাসপাতালে গিয়ে ওদেরকে দেখে আসি। এই দেখে আসতে গিয়েই আমরা পর পর দু’দিন দুটো ভুল করেছি, স্মরণশক্তি লোপ পাওয়ার কারণে। ভুলের প্রথমটা এখানে বলছি।
আমাদের বাসা থেকে হাসপাতালে যেতে হলে প্রথমে আমরা বাসার কাছ থেকে বাসে উঠে Lynbrook Station এ যাই। সেখান থেকে ট্রেনে করে Cranbourne Station এ যাই। সেখান থেকে আবার বাসে করে “পেনিনসুলা প্রাইভেট হসপিটাল” এ যাই। ট্রেন ও বাস ঘড়ির কাঁটা মেনে চলে। কোনটা কখন আসবে তা সেলফোনে সার্চ দিয়ে আগে থেকে জেনে নেয়া যায়। সময়ের হেরফের সাধারণতঃ হয় না, হলেও দুই-এক মিনিটের বেশি হয় না। সুতরাং বাসে ট্রেনে চলাচল করতে কোনই অসুবিধে হয় না। যদি কোন মাসে বাস ট্রেন চলাচলের সময়ানুবর্তিতা ৯০% এর নীচে নামে, সে মাসে “মাইকি কার্ড” ব্যবহারকারীদেরকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিয়ে কার্ডের ব্যালান্স সমন্বয় করা হয়, অবশ্য তার আগে কার্ড ব্যবহারকারীকে সেটা claim করতে হয়। নয় বছর আগে আমেরিকায় দুই মাস ছিলাম, তার মধ্যে নিউ ইয়র্কে ছিলাম এক মাসের কিছু বেশি। তখন সেখানে ট্রেনের যে সময়ানুবর্তিতা দেখেছি, তার চেয়ে মেলবোর্নের ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো পেয়েছি। যাহোক, একদিন আমরা দু’জন হাসপাতালে যাবার সময় স্ত্রী ভুলক্রমে তার সেলফোনটা ট্রেনের সীটে রেখে Cranbourne Station এ নেমে আসে। সাধারণতঃ বাস বা ট্রেন থেকে নামার সময় আমি একবার আসনের দিকে চোখ বুলিয়ে নিই। সেদিন সেটা করতে ভুলে গিয়েছিলাম। স্ত্রীও সেটা খেয়াল করেনি। হাসপাতালে এসে বাচ্চার ছবি তুলতে গিয়ে সে খেয়াল করে যে তার ব্যাগে সেলফোনটা নেই। তবুও মনে করতে পারছিল না, সেলফোনটা কখন, কোথায় সে ফেলে এসেছে। বাসায় ফিরে এসে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও সে যখন ফোনটা পেল না, তখন ভীষণ মর্মাহত হয়ে পড়ে। আমরা ঠিক করলাম, পরের দিন হাসপাতালে যাবার সময় Cranbourne Station এর কাস্টমার সার্ভিসে খোঁজ নেব। তবে পাওয়ার সম্ভাবনা যে প্রায় শূন্য, সেটা ধরেই নিয়েছিলাম।
ইতোমধ্যে আমি ফোনটা আসলেই Cranbourne Station এ রেখে আসা হয়েছে নাকি অন্য কোথাও, বিভিন্ন উপায়ে এবং স্মৃতি হাতড়িয়ে তা যাচাই করতে বসে গেলাম। Cranbourne Station এর কাস্টমার সার্ভিসে গুছিয়ে কথা বলার সুবিধার্থে ঘটনার টাইম টেবিলসহ একটা সামারী তৈরী করলাম। পরদিন আমরা রওনা হবার আগেই ছেলে ফোন করে জানালো, কাস্টমার সার্ভিসের সাথে কথা বলে সে জানতে পেরেছে যে ট্রেনে ফেলে যাওয়া একটি সেলফোন তাদের কাছে রক্ষিত আছে। কখন, কোথায়, কী মডেল এর ফোন পাওয়া গেছে, ফোন সম্পর্কে ইত্যাকার তথ্যাদি দিতে তারা অপারগ, আমাদেরকেই সেখানে গিয়ে ট্রেনের নাম, সময়, রুট, ফোনের মডেল, সনাক্তকরণ চিহ্ন ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে ফোনটি সংগ্রহ করতে হবে। ওগুলো নিয়ে কোন সমস্যাই ছিল না, সবগুলো তথ্যই আমি একটা কাগজে টুকে রেখেছিলাম এবং সেলফোনে তার ছবিও তুলে রেখেছিলাম।
আমরা হাতে সময় নিয়ে পরদিন রওনা হলাম। Cranbourne Station এর কাস্টমার সার্ভিসে গিয়ে একজন মধ্যবয়স্কা নারীকে ডিউটিরত পেলাম। তিনি আমাকে ট্রেনের নাম, রুট এবং হারানোর সময় জিজ্ঞেস করলেন। আমি প্রথম দুটোর সঠিক জবাব দিয়ে পনের মিনিটের একটা ব্রাকেট রেখে পরেরটার আনুমানিক সময় বললাম, কারণ একেবারে সঠিক সময়টা আমরা কেউই খেয়াল রাখিনি। আমাদের নিজেদের আইডেন্টিটি ডকুমেন্ট সাথে কী আছে তা জিজ্ঞেস করলেন। আমি বললাম, কোন হার্ড কপি সাথে নেই, তবে সেলফোনে আমাদের উভয়ের পাসপোর্টের কপি আছে। উনি জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে আমার সেলফোনটা হাতে নিয়ে পরীক্ষা করে বললেন, “সীমস প্রিটী গুড, হিয়ার ইজ ইয়োর ফোন”! এই বলে তিনি ফোনটা আমার হাতে ফেরৎ দিয়ে বললেন, “এনজয় ভিজিটিং অস্ট্রেলিয়া”! আমি আশ্চর্য হলাম এজন্য যে ওরা কোন ডকুমেন্টে কোথাও আমাদের কোন স্বাক্ষর রাখলো না, কিংবা ছবিও তুলে রাখলো না! সভ্য দেশ বলে কথা!
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
০৩ জুন ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ১২০৮
এর পরের পর্বটি পড়া যাবে এখানেঃ ভুলো মন..... (২)
০৩ রা জুন, ২০২২ দুপুর ১:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমিও ভালো স্মরণশক্তির জন্য খ্যাত ছিলাম এই কিছুদিন আগে পর্যন্ত। এখন অবস্থা আপনার মতই, যা দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলেছি।
প্রথম মন্তব্য এবং প্রথম প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।
২| ০৩ রা জুন, ২০২২ দুপুর ১:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লেখা। লেখায় অভিজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট। বয়স আসলে মানুষের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে দেয়।
০৩ রা জুন, ২০২২ দুপুর ১:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে মুগ্ধ হ'লাম।
৩| ০৩ রা জুন, ২০২২ বিকাল ৪:১৬
আরইউ বলেছেন:
চমৎকার সুখপাঠ্য পোস্ট, খায়রুল!
আমি বেশ কিছুদিন মেলবোনে থেকেছি। আমি ছিলাম টুরাকে। ল্যানসেল রোডের লুসিয়াস ক্যাফের উল্টোদিকে হচ্ছে ম্যাকমাস্টার কোর্ট—ওটা একটা ছোট কোল ডো স্যাক (বাংলায় কি “কানাগলি”?) ওখানেই আমার বাসা ছিল। মেলবোনের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অসাধারণ; সিটি লুপ এবং ফ্রি ট্রাম জোনতো সবার জন্য ফ্রি। আমি যখন ছিলাম তখন বেশ নিয়মিত ইন্ডাসট্রিয়াল একশন হচ্ছিল কোন কারণে, আর তার ফলে আমি বেশ কিছু ফ্রি কিছু ট্রাম রাইড পেয়েছিলাম।
ভুলো মনের কথা কী আর বলবো! ভুলে কত কী করেছিঃ এয়ারপোর্ট যাবার পথে ফোন ট্যাক্সিতে রেখে চলে গেছি ২,৫০০ কিমি দূরের আরেক শহরে। ট্যাক্সির অফিসে ফোন করার পর ওরা বলেছে চালক ইতিমধ্যে ওদের জানিয়েছে। আমি ওদের অফিস থেকে নিয়ে যেতে পারবো। এক সপ্তাহ পর ফিরে ট্যাক্সির অফিস থেকে ফোন ফিরে পেয়েছি।
একবার মেলবোন থেকে ড্রাইভ করে যাচ্ছিলাম লেক জিন্দাবাইন (নিউ সাউথ ওয়েলসে)। ওখান থেকে যাবো মাউন্ট কজিয়াসগো—অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ডের সর্বোচ্চ শৃংগ। তো লেক এনট্রেন্স থেকে দু’টো রাস্তা আছে জিন্দাবাইন যাবার—একটা হচ্ছে স্নোয়ি রিভার রোড আর বেরি ওয়ে হয়ে আরেকটা এ১, মোনারো হাইওয়ে, আর স্নোয়ি রিভার ওয়ে হয়ে। লেক এনট্রেন্স থেকে দুই রাস্তায় যেতে মোটামুটি একই সময় লাগে, সাড়ে তিন ঘন্টার মত। সমস্যা হচ্ছে বেরি ওয়ে যে রাস্তা সেটা খুবই পাহাড়ি, আল্পাইন রোড। আমি ফের হুইলার নিয়ে বের হইনি, আমার সাথে ফোকসভাগেনের গল্ফ। কিন্তু, আমি ভুলে এ১ না নিয়ে বেরি ওয়েতে উঠে গেলাম। মোটামুটি ২০০ কিমি আনসিলড গ্রাভেল রাস্তা। কোথাও কোথাও ১,০০০ মিটার+ ইলিভেশন; একপাশে পাহাড় আরেকপাশ একদম খালি; এমনকি কোন ফেন্সও নেই! শুধু একটা ছোট ভুলে ডানে না গিয়ে বায়ে গিয়ে নিজের সর্বনাশ করে ফেলেছিলাম সেদিন।
০৩ রা জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: "চমৎকার সুখপাঠ্য পোস্ট" - ধন্যবাদ, এ প্রশংসাটুকুর জন্য।
আপনার মন্তব্যটাও চমৎকার! পড়ে যুগপৎ মুগ্ধ এবং কৌতুহলী হ'লাম। কেন কৌতুহলী, সেটা একেবারে শেষে বলছি।
যতদূর জেনেছি, টুরাক মেলবোর্নের অন্যতম অভিজাত এলাকা, এবং নামটি আদিবাসীদের ভাষা থেকে নেয়া হয়েছে।
হ্যাঁ, কোল ডো স্যাক কে বোধহয় বাংলায় “কানাগলি” বলা যায়, অথবা 'শেষ প্রান্ত'। আপনার চমৎকার বর্ণনা পড়ে আপনার তৎকালীন বাসার অবস্থানটার একটা মোটামুটি ধারণা চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
ওহ, আবারও সেই 'ভুলো মনের কথা'? শুনুন তাহলে, আমার ভুলো মনের আরেকটা গল্পের কথা। সময়টা ছিল ২০১৯ এর মে মাস। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাকে দিল্লী নিয়ে যাবো, আমি ও ছোট ছেলে মেডিক্যাল এটেন্ড্যান্ট হিসেবে যাবো। সন্ধ্যায় মাগরিবের নামায পড়ে বের হবো, এমন সময় দেখি আকাশে খুব বিজলী চমকাচ্ছে। ইন্টারনেট কানেকশনের রাউটারটা চোখে পড়লো। ভাবলাম, এর আগে একবার বিজলী চমকানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন না করায় বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটের বড় ক্ষতিসাধন হয়েছিল। যেহেতু বাসায় কেউ থাকবে না, সেহেতু রাউটারের প্লাগটা ডিসকানেক্ট করার জন্য ড্রয়িং রুমে ঢুকলাম। সেখানকার একটি সকেটে রাউটারের প্লাগটি লাগানো ছিল। সুইচ বন্ধ করে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে এলাম।
বিমান বন্দরে পৌঁছে ট্যাক্সি থেকে লাগেজ নামানোর সময় খেয়াল হলো, সুইচ বন্ধ করার সময় স্ত্রীর চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি কাগজপত্র বহনকারী ব্যাগটা নেই। নিজের ভুলটা বুঝতে পারলাম। কাঁধে ঝোলানো ব্যাগটা মেঝেতে নামিয়ে রেখে নীচু হয়ে সুইচটা বন্ধ করেছিলাম, ঘর থেকে বের হবার সময় একটু তাড়াহুড়ো করাতে সেই ব্যাগটাকে আবার কাঁধে তুলে নেয়ার কথা একদমই স্মরণে ছিল না। তখন বাসায় ফিরে এসে দরজা খুলে ব্যাগ নিয়ে পুনরায় বিমান বন্দরে গিয়ে প্লেন ধরার সময় ছিল না। কি সর্বনাশ!
একটু ভরসা ছিল যে কাগজগুলোর স্ক্যানড কপি আমার সেলফোনে সেভ করে রেখেছিলাম। আল্লাহ'র উপর ভরসা রেখে যাত্রা অব্যাহত রাখলাম। দিল্লী পৌঁছে সবার আগে সফট কপি থেকে কাগজগুলোর হার্ড কপি প্রিন্ট নিয়ে তবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম!
এবারে আসছি সেই কৌতুহলী প্রশ্নেঃ "শুধু একটা ছোট ভুলে ডানে না গিয়ে বায়ে গিয়ে নিজের সর্বনাশ করে ফেলেছিলাম সেদিন" - কী সর্বনাশ করে ফেলেছিলেন?
৪| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ রাত ১:৫৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমারও স্মরণ শক্তি কমে যাচ্ছে।
বয়স বাড়লে নাকি শিশুদের আচরণ
ফিরে আসে বড়দের মাঝে!
০৪ ঠা জুন, ২০২২ দুপুর ১:৩৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমারও স্মরণ শক্তি কমে যাচ্ছে" - কমে তো যাবেই, বয়স বাড়ছে না?
"বয়স বাড়লে নাকি শিশুদের আচরণ ফিরে আসে বড়দের মাঝে!" - দুঃখজনক হলেও সেটাই সত্য, সেটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। একটা পরিপূর্ণ জীবন পার করে শেষ বয়সে এসে মানুষকে স্মরণ করানো হয়, প্রকৃ্তির কাছে সে কতটা অসহায়!
৫| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ রাত ২:১৮
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
চমৎকার লিখেছেন।
আমুও আপনার মত ভুলোমন।নিউইয়র্কের মত বিশৃক্ষল শহরে ওয়ালেট ও গাড়ীর চাবি হারিয়ে পাগলের মত হয়ে গেছিলাম।
পরে আপনার মত ফিরে পেয়ে আশ্চর্য হয়েছিলাম।
আসলে সিষ্টম আরোপ থাকলে বেশিরবাগ অসৎ হলেও কিছু না কিছু উপকার আছেই।
০৪ ঠা জুন, ২০২২ বিকাল ৩:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: সেটাই ঠিক কথা। সিস্টেম ঠিক থাকতে হবে, আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ বলবৎ থাকতে হবে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৬| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ ভোর ৬:৩০
আরইউ বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ যত্ন নিয়ে চমৎকার ও বিস্তারিত প্রতিমন্তব্য করার জন্য।
সর্বনাশটা হচ্ছে বায়ের টার্নটা নিয়ে স্নোয়ি রিভার রোড আর বেরি ওয়েতে ঢুকে গিয়েছিলাম। জিপিএস কাজ করছিলোনা তাই নেভিগেশন ছিল বন্ধ - ভরসা রাস্তায় থাকা সাইন পোস্ট। প্রায় দু'শো কিমি রাস্তা উচু পাহাড়ী গ্রাভেল রোডে চলতে হয়েছে। সাথে ছিল ফ্রন্ট হুইল ড্রাইভ কার যেটার গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স খুব একটা বেশি না। রাস্তা ছিল খানাখন্দে ভরা, খুবই ন্যারো, এবং একটু পরপরই রাস্তায় ব্লাইন্ড স্পট। আর গ্রাভেল রোড বলে চাকা স্কিড করছিলো খুব। সে এক ভয়ঙকর অভিজ্ঞতা, খায়রুল। কোন কোন জায়গায় গাড়ির স্পিড ছিল বেয়ারলি ১০ কিমি পার আওয়ার। পুরো জার্নিতে আমি উল্টো দিক থেকে একটা গাড়ি আসতে দেখিনি। একটা পর্যায়ে আমার পেছনে ছিল একটা গাড়ি; আমি কায়দা করে থেমে গিয়ে ওকে জায়গা দেয়ায় সে আমাকে ওভারটেক করে চলে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে ৪ ঘন্টার রাস্তায় ১ টা গাড়ি দেখতে পেয়েছিলাম সেদিন। একটা পর্যায়ে ভরসাই ছেড়ে দিয়েছিলাম যে রাস্তা শেষ হবে!
ডকুমেন্টের "সফট কপি" থাকায় খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলেন সেদিন।
টুরাক খুবই অ্যফ্লুয়েন্ট এরিয়া। আমার খরচাপাতি নিজের পকেট থেকে যায়নি; আমার প্রতিষ্ঠান আমাকে কিছু জরুরী একাডেমিক/এডমিন/লিগ্যাল কাজে ওখানে স্টেশনড করেছিল--বাড়ি, গাড়ি সবই ওদের খরচায়!! হ্যাঁ, উইকি বলছে টুরাক নামটা এসেছে "টুরাক হাইজ" থেকে যা সম্ভবত উইউরাং ভাষা থেকে এসেছে (ওদের ভাষায় মানে black crow বা reedy swamp)। এটা জানা ছিলোনা। আপনি বলায় জানা হলো।
উইকেন্ড (বাংলা কি হবে "সপ্তাহান্ত" বা "সপ্তাশেষ"?) চমৎকার কাটুক। ভালো থাকুন সবসময়।
০৫ ই জুন, ২০২২ সকাল ৮:৩২
খায়রুল আহসান বলেছেন: পুনঃমন্তব্যে এসে আমার জিজ্ঞাসার জবাব দিয়ে যাবার জন্য ধন্যবাদ। সত্যি, সেদিন আপনি ভীষণ একটি রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলেন, যা হয়তো জীবনেও ভুলবেন না।
ভালো থাকুন, শুভকামনা---
৭| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ সকাল ৯:১৭
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
০৫ ই জুন, ২০২২ সকাল ৯:৩৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: বিষয়'টি পাঠ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত।
৮| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ সকাল ৯:৪৫
শ্রাবণধারা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো পড়ে খায়রুল ভাই। আমি একবার সিংগাপুরের একটা শপিং মলে কেনাকাটা করতে গিয়ে পিঠে ঝোলানো ব্যাকপ্যাক থেকে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছিলাম। হোটেলে ফিরে যখন দেখি ব্যাগে পাসপোর্ট নেই তখন ঘেমে নেয়ে একাকার। অবশেষে ভাবলাম হোটেলের কাউন্টারে গিয়ে ওদের রিসিপশন ডেস্কে গিয়ে জানিয়ে আসি ঘটনাটা। সব শুনে আমার রুম নাম্বার জানার পড়ে বললো, সেই শপিং মল থেকে আমার হারানো পাসপোর্টের জন্য ইতিমধ্যে কল এসেছিলো। পরেরদিন সেখানে গিয়ে আমাকে পাসপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। আমার পাসপোর্টের ভিতরে হোটেলের কিছু কাগজপত্র ছিলো, সেখান থেকে তারা আমার হোটেলের নাম জেনে নিয়ে কল দিয়েছে।
আপনার মেলবর্ন সফর আনন্দদায়ক হোক এই কামনা করছি।
০৫ ই জুন, ২০২২ সকাল ১১:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার এ সামান্য লেখাটায়, যা মূলতঃ দিনলিপি প্রকৃতির, আপনি মন্তব্য করেছেন, নিজের প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন; অত্যন্ত প্রীত হ'লাম। সেই সূত্র ধরে কৌতুহলী হ'লাম আপনার লেখালেখির সাথে কিছুটা পরিচিত হতে। এখনকার তালিকা অনুযায়ী আপনার একেবারে প্রথম পোস্টটা দিয়েই পড়া শুরু করলাম। আপনার অসামান্য লেখাটি পড়ে অভিভূত হ'লাম, এবং সেটা পড়ে আপনার অন্যান্য লেখা পড়ার আগ্রহ বেড়ে গেল। সামনের দিনগুলোতে হয়তো সেগুলো পড়বো।
আপনার জন্যে, একজন সুলেখকের জন্যে, আন্তরিক শুভকামনা র'লো---
৯| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ সকাল ১০:৩৫
মিরোরডডল বলেছেন:
বয়সের কারনে হয়তো হয় কিন্তু কিছু মানুষই থাকে ভুলোমনা, নিঃসন্দেহে আমি তাদের একজন ।
সেসব কাহিনী লিখলে একটা পোষ্টেও হবে না
যাইহোক, সেইম ঘটনা আমারও ঘটেছিলো । সেই শুরুর দিকে, একবার ট্রেইনে ওয়ালেট রেখে নেমে গেছি ।
সাথে সাথেই সেই স্টেশনের কন্ট্রোল রুমে জানাই, তারা কন্টাক্ট করে এবং পেয়েও যায় । আমি ওটা আবার কালেক্ট করে নেই ।
আরেকবার আমরা কিছু ফ্রেন্ডস সিডনির বাইরে গিয়েছিলাম । সে বহুদূরে । অন দ্যা ওয়ে ব্যাক, অনেক খানি চলে আসার পর যে ফ্রেন্ড ড্রাইভ করছিলো তার মোবাইলে একটা কল আসে । যেখানে গিয়েছিলাম সেই লোকাল পুলিস স্টেশন থেকে । একজন টুরিস্ট একটা ওয়ালেট পেয়ে পুলিস স্টেশনে জমা দেয় । সেখান থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং আদার ডিটেইলস পেয়ে পুলিস ফ্রেন্ডকে কল করে । তারপর গাড়ী ঘোরানো হয়, আমরা আবার ওখানে ফিরে যাই ওটা কালেক্ট করতে । আজীব ! ফ্রেন্ড জানতোইনা যে সে ওয়ালেট হারিয়েছে যদি রাস্তায় ধরা খেতো লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভ করছে, কতো যে ফাইন দিতে হতো !
This is Australia’s beauty.
মানুষগুলোও ভালো হারানো জিনিস পেয়ে জমা দিয়ে যায় আর সবকিছুই মোটামুটি সিস্টেমের মধ্যে আছে ।
যদিও সম্প্রতি আমার কার এক্সিডেন্ট করে ড্রাইভার পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিস কেইস করা সত্ত্বেও এখনও ড্রাইভারকে ধরতে পারেনি বলে আমি পুলিসদের ওপর একটু আপসেট আছি
০৫ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১:৪৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: "কিন্তু কিছু মানুষই থাকে ভুলোমনা" - জ্বী, জ্বী, তা তো থাকেই। সহজাতভাবে আমিও হয়তো তাদেরই একজন, এখন বয়সের জন্য সেটা হয়তো আরও স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে।
"আর সবকিছুই মোটামুটি সিস্টেমের মধ্যে আছে" - সেটাই বড় কথা। দেশকে নাগরিকদের জন্য সুন্দর, বাসযোগ্য রাখতে হলে, এগিয়ে নিতে হলে, সিস্টেম ঠিক থাকতে হবে এবং আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ বলবৎ থাকতে হবে।
পোস্ট পড়ে, আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে এখানে মন্তব্য রেখে যাবার জন্য ধন্যবাদ। প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত।
১০| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ সকাল ১০:৪৬
মিরোরডডল বলেছেন:
আর ইউর অভিজ্ঞতা পড়লাম, স্কেয়ারি !
রিমোট এরিয়ায় গ্র্যাভেল রোডে এরকম হলে সত্যি ভয়াবহ । একা হলে আরও ।
যদি সাথে কেউ থাকে তাহলে এডভেঞ্চার বলা যায়
থ্যাংকস গড এমন হয়নি কখনও, কিন্তু ডে টু ডে লাইফে মনের ভুলে এক্সিট মিস করা অথবা পথ হারিয়ে ফেলা,
এক জায়গায় না যেয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়া এরকম কতবার যে হয়েছে ।
এই সেদিনের কথা, অফিস থেকে বাসায় ফিরছি, কখন কিভাবে যে বাসার দিকে না এসে শপিং মলের দিকে চলে গেছি নিজেও জানিনা । তারপর ভাবলাম যাক আসলাম যখন একটু দেখেই যাই । ফর নো রিজন উল্টাপাল্টা কিছু কেনাকাটা করে বাসায় ফিরলাম
০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:১৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: আসলেই তার অভিজ্ঞতাটা অত্যন্ত ভয়াবহ ছিল। সৌভাগ্যবশতঃ তিনি সেবারে সপরিবারে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসতে পেরেছিলেন।
"....পথ হারিয়ে ফেলা, এক জায়গায় না যেয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়া এরকম কতবার যে হয়েছে" - আমার এ রকম কিছু অভিজ্ঞতার কথা আগামী কোন একটা পর্বে পড়তে পারবেন বলে আশা করি।
পুনঃমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১১| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ রাত ৯:৩২
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,
গর্বিত দাদার লাজনম্র বয়ানে "ভুলোমন"য়ের কথিকা পড়লুম। বয়স বাড়ছে, বাড়ছে ভুলে যাবার পারিমানও। এ নিয়েও যে একখানা খাসা লেখা লেখা যায় তা আপনার এই পোস্টটি না পড়লে জানা হতোনা।
আমারও যে কতো ভুল হয়ে যায়! চোখে চশমা পড়েই কতোবার যে চশমা খুঁজে হয়রান হয়েছি! চা খাওয়ার কতোক্ষন পরেই চিন্তা করতে হয় , চা খেয়েছিলুম তো !!!!!!! নামাজে দাঁড়িয়ে মনে হয় দুইবার সেজদা দিয়েছি তো নাকি কম বেশি হয়েছে !!!!!! বয়স বেড়ে যাওয়ার যে কতো ঝকমারি ........................
০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: "চোখে চশমা পড়েই কতোবার যে চশমা খুঁজে হয়রান হয়েছি!" - এটা এখন আমার জন্য নিত্যনৈমৈিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। নামাযে সিজদার হিসেব রাখাটাও অনেক সময় গুলিয়ে ফেলি।
চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১২| ০৪ ঠা জুন, ২০২২ রাত ১০:৪৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতার বর্ণনা সব সময় সুখপাঠ্য !
অনেক অনেক শুভ কামনা আপনাদের পরিবারের নতুন সদস্যের জন্য।
০৫ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, পোস্টটা পড়ে আমাদের নতুন অতিথিকে শুভকামনা জানাবার জন্য। পোস্টের প্রশংসায় এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ভালো থাকুন সপরিবারে, সুস্বাস্থ্যে।
১৩| ০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১:১০
আখেনাটেন বলেছেন: আপনার এই চলতে-ফিরতে স্মৃতিগাঁথাগুলো বেশ; নানান বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।
এগুলোকে আর একটু পালিশ করে বই বের করতে পারেন। পাঠকের অভাব হবে না বোধ করি।
০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: রহস্যময়ী ফারাও সম্রাজ্ঞী নেফারতিতির কাহিনী নিয়ে ব্লগার আহমেদ জী এস এর লেখা "রূপকথার এক অভিশপ্ত রানী... সুন্দরী শ্রেষ্ঠা..." ব্লগটি পড়ছিলাম (১৬ জুলাই ২০১১ তারিখে লিখিত)। কাকতালীয়ভাবে ঠিক এমন সময়টাতেই নোটিফিকেশন পেলাম, স্বয়ং আখেনাটেন আমার একটা পোস্টে এসে হাজির হয়েছেন! তাই এখানে চলে এলাম!
দেখি, "পালিশ করার" সময় যদি বের করতে পারি, তবে একটা চেষ্টা নিয়ে দেখবো। এখনকার মত শুধু লিখে যাচ্ছি, যা কিছু মনে আসছে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
১৪| ০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৩৯
আখেনাটেন বলেছেন: হা হা;
লেখক বলেছেন: রহস্যময়ী ফারাও সম্রাজ্ঞী নেফারতিতির কাহিনী নিয়ে ব্লগার আহমেদ জী এস এর লেখা "রূপকথার এক অভিশপ্ত রানী... সুন্দরী শ্রেষ্ঠা..." ব্লগটি পড়ছিলাম (১৬ জুলাই ২০১১ তারিখে লিখিত)। কাকতালীয়ভাবে ঠিক এমন সময়টাতেই নোটিফিকেশন পেলাম, স্বয়ং আখেনাটেন আমার একটা পোস্টে এসে হাজির হয়েছেন! তাই এখানে চলে এলাম! -- কাক ও তাল তাহলে মাঝে মাঝে বাস্তবেও ঘটে...? মজা পেলুম।
ব্লগার আহমেদ জী এস- এর লেখাটার লিংকটা দিলে খুশি হতুম....দেখি উনি ফারাও সম্রাজ্ঞীরে নিয়ে কী লিখেছেন?
০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: ব্লগার আহমেদ জী এস- এর পোস্টঃ রূপকথার এক অভিশপ্ত রানী... সুন্দরী শ্রেষ্ঠা...
১৫| ০৭ ই জুন, ২০২২ সকাল ৭:৩৪
সোহানী বলেছেন: এই যা, আপনার হিসাব মতে তো আমার বয়স এখন কমার দিকে । যে ভুলোমনো দিন দিন হচ্ছি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।....হাহাহাহা
দিল্লির ঘটনাটা খুব টেনশানের ছিল। ভাগ্য ভালোই সহায় ছিল বোঝায় যাচ্ছে। তবে এর জন্য বয়স বাড়া কিংবা ভুলো মন কোনটাকেই দায়ী করবো না। কিংবা সেলফোন ট্রেনে রেখে আসাও তেমন কোন বড় ঘটনা নয়। এটা হতেই পারে। আর কারো নাম হঠাৎ মনে করতে না পারা নিয়ে টেনশান করাটার কোন মানে নেই আমার কাছে। কেউ যদি এটি নিয়ে অফেন্ডেড হয় সেটা তার হজম শক্তির সমস্যা ।
আম বলবো, বয়স বাড়ার সাথে সাথে বুদ্ধি বাড়ে, অভিজ্ঞতা বাড়ে, ধৈর্য্য বাড়ে, পজিটিভনেস বাড়ে আর মানিয়ে চলার ক্ষমতা বাড়ে। বয়স একটা সংখ্যা সবসময়ই আমার কাছে। ওটা বাড়লো না কমলো কখনো তা নিয়ে চিন্তা করি না। কিন্তু এ সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে এতো কিছু বাড়তি পাচ্ছি সেটাই আমার কাছে আনন্দের বিষয়........
ওহ আর নাতনীর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা। চমৎকার সময় কাটছে নি:সন্দেহে। (আবারো ইর্ষান্বিত )
০৭ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি যেকোন পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে পারেন এবং তা সেভাবেই বিশ্লেষণও করতে পারেন, এটা আপনার একটা বিশেষ গুণ। আশাকরি আপনার সন্তানেরাও এই গুণে গুণান্বিত হবে, ইন শা আল্লাহ।
নাতনির সাথে সময় বেশ ভালোই কাটছে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ওকে খুব সাবধানে রাখতে হচ্ছে।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৬| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:১৫
নীল-দর্পণ বলেছেন: পাবলিক হলিডে তে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ফ্রি শুনে অবাকই লাগল, আমাদের দেশে হলে ছুটির দিনে গাড়ীর ভাড়া আরো বেড়ে যায়!
বইমেলা চলছিল তখন, টিএসসি থেকে বাসায় ফেরার পথে কোন এক শনিবার কোনমতেই সিএনজি বা রিক্সা পাচ্ছিলাম না, ১টা সিএনজি খালি পেলে সেটাকে একাধিক ব্যক্তি ছেঁকে ধরছিল, ১২০-১৫০টাকার ভাড়া ২৫০টাকায় অবশেষে একজন রাজী হয়েছিলেন। রাস্তায় বের হলে কান্না পায় ভোগান্তিতে, খুব জরুরী না হলে এখন কন্যাদের নিয়ে বা রেখে বাইরে যাওয়া হয়না।
উন্নত দেশের সুযোগ সুবিধার কথা শুনতে পড়তে ভালো লাগে খুব।
আপনাদের এবারের বেড়ানোটা নিশ্চই আরো উপভোগ্য হচ্ছে ছোট্টমনিটার জন্যে। সুন্দর সময় কাটুক, সুস্থ রাখুন আল্লাহ আপনাদের।
০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ৯:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: "১২০-১৫০টাকার ভাড়া ২৫০টাকায় অবশেষে একজন রাজী হয়েছিলেন" - এটাই আমার সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে। যাত্রীরা বিপদে পড়েছে, এমনটা সামান্য আঁচ করতে পারলেই আমাদের চালক ভাইয়েরা মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া হাঁকিয়ে তাদেরকে আরও বিপদে ফেলে দেয়। সরকারী গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত হলে এদের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচা যেত, কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি!
"রাস্তায় বের হলে কান্না পায় ভোগান্তিতে" - আম জনতার এই দুর্ভোগের প্রতিকার করার কেউ নেই যেন। ভিআইপি চলাচলের অজুহাতে পুলিশ কর্তৃক ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তা আটকে রাখার মত গণবিরোধী সিস্টেম বোধহয় এখন শুধুমাত্র আমাদের দেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও নেই।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৭| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:৪৮
নীল-দর্পণ বলেছেন: ভুলো মন নিয়ে লেখায় কমেন্ট করতে করতে দেখলাম আমাকেও ভুলে মনে পেয়েছে, উপরের কমেন্টে এই কমেন্টের বিষয় লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভুলে গেছি।
একবার কারো লেখায় পড়েছিলাম জাপানে পাবলিক টয়লেটে ল্যাপটপের ব্যাগ রেখে চলে এসেছিলেন ভুলে, অনেক পরে সেখানে গিয়ে তা পেয়েছেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে এসব ভাবাই যায় না!
কিছুদিন আগে আমার এটিএম কার্ড কন্যাদের বাবাকে দিয়েছিলাম স্কুল থেকে ফেরার পথে টাকা তুলে আনবেন, তিনি নাকি ক্লাসে পড়ানোর সময় কোন এক পর্যায়ে পকেট থেকে বের করেছিলেন কিন্তু এরপর আর বলতে পারেন না। ক্লাসে তন্নতন্ন করে খুজে সেই কার্ড আর পাওয়া গেল না (পেলেই বরং অবাক হতাম)।
সিস্টেমগুলো এত সুন্দর অথচ আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে চিন্তাও করা যায় না যে এসব আমরা দেখতে পাবো। আবার কী করেই বলি যে কিছুই সম্ভব না...অনেক দিন আগে ক্যান্টনমেন্ট গিয়েছিলাম, পুরো এলাকা এত পরিচ্ছন্ন, গাড়ী স্পিড লিমিট অনুযায়ী লেন মেনে চলছে, মানুষ ঠিক জায়গায় রাস্তা পাড় হচ্ছে মনে হয় যেন ভিন্ন একপুরীতে চলে এসেছি অথচ একই দেশের মাঝে এই এলাকার বাইরে গেলেই উল্টো চিত্র!!
০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: বাংলাদেশে হারানো ক্রেডিট কার্ড খুঁজে না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কদাচিৎ পাওয়া যায়, যখন সেটা কোন সৎ, সহৃদয় ব্যক্তির হাতে পড়ে, তবে সেটা ব্যতিক্রম হিসেবেই গণ্য।
আমাদের দেশেও অনেক ভালো ভালো জনহিতৈষী আইন রয়েছে, কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যে সেই আইনের প্রয়োগটা যথাযথভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব হয় না। এটা আইন প্রয়োগকারীদের অদক্ষতার কারণেও হয়, আবার জাতিগত অবহেলার মানসিকতা থেকেও হয়।
আমিও ভুলোমনের কারণে আগের মন্তব্যের একটি প্রসঙ্গের উত্তর দিতে ভুলে গিয়েছিলাম, সেটা এখানে দিচ্ছি। হ্যাঁ, ছোট্টমনিটার জন্যে আমাদের সময় খুব ভালো কাটছে। গতকাল ওর মা বাবা একগাদা টিকা আর ইঞ্জেকশন দিয়ে এনেছে, তাই শরীরটা একটু খারাপ ছিল।
১৮| ০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ১২:২৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
প্রিয়তে তুলে রাখলাম ।
চোখের অবস্থা একটু ভাল হলে
বিন্তারিত ভাবে মন্তব্য লিখব ।
শুভেচ্ছা রইল
০৯ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্টটা "প্রিয়"তে তুলে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা!
আপনার শারীরিক কষ্ট এবং রোগ ব্যাধির আশু নিরাময় হোক! আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন সহায় হউন!
১৯| ১৩ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:৩৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: স্যার প্রথমেই আপনার নিউবর্ন নাতনির জন্য রইলো একরাশ শুভেচ্ছা।ওর জন্য নুতন বিশ্ব হয়ে উঠুক সুখ সমৃদ্ধিতে ভরপুর।
এবার আসি আপনার স্মৃতিভ্রম সম্পর্কে। আমার মনে হয় ভুলোমনা আমাদের প্রত্যেকেরই মধ্যে কম বেশি আছে তার জন্য নির্দিষ্ট কোনো বয়স লাগে না। তবে অ্যালজাইমার হলে সেটা অবশ্য খুবই দুঃখজনক। আমার এক বন্ধুর বাবা রাস্তায় বের হয়ে আর বাড়ি ফিরতে পারতেন না। সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে হতো ওনাকে। তার মধ্যেও একবার নিরুদ্দেশ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ওনাকে পাওয়া যায়।পরে অবশ্য বাড়িতে সারাক্ষণই তালা দিয়ে রাখতো।
এটাকে বাদ দিলে ব্যস্ততম জীবনে মাঝে মাঝে ভুলে যাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ভুলের কারণে খুঁজে পাওয়ার আবিষ্কার কখনোবা আনন্দে মনটা ভরিয়ে দেয়। আপনার দিল্লির ভ্রান্তিবিলাস যে কারণে রুদ্ধশ্বাস হলেও অ্যামাজিং লেগেছে। অ্যামাজিং লেগেছে একদম শেষে মধ্যবয়সী অস্ট্রেলিও স্টেশন মাস্টারের ফোন ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি।
ভালো লেগেছে মাইকি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধার কথা জেনে। সঙ্গে পরিবারে নতুন সদস্যের আগমন এমন সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে গেছে। আপনার গোটা পরিবারের জন্য রইলো নিরন্তর শুভেচ্ছা।
ভালো থাকবেন স্যার সবসময়।
১৪ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৪৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: নাতনির প্রতি দোয়া এবং শুভেচ্ছা প্রকাশের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
অ্যালজাইমার বা ডিমেনশিয়া রোগীদের ভোগান্তির জন্য কোন সমবেদনাই যথেষ্ট নয়। শারীরিক অন্যান্য দিক দিয়ে সুস্থ থেকেও তারা গুরুতর অসুস্থ জীবন যাপন করেন। তাদের যারা দেখভাল করে থাকেন, সেসব প্রিয়জনদেরকেও ভীষণ সতর্ক থাকতে হয়। একবার ঘর হতে বের হয়ে গিয়ে ফেরার পথ চিনতে না পারার কষ্ট, নিজের নাম ঠিকানা বলতে না পারার কষ্ট, প্রিয়জনদের চিনতে না পারার কষ্ট যে কতটা অসহনীয়, তা কেবলমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানেন।
আমার অবশ্য ভুলোমনা হবার প্রবণতা শুরু হয়েছে অতি সম্প্রতি। একজন তীক্ষ্ণ স্মৃতিধর ব্যক্তি হিসেবে আমি বন্ধু ও সতীর্থ মহলে সুপরিচিত ছিলাম। এখনও কোন স্মৃতি হাতড়াতে হলে বন্ধুরা আমার কাছে চলে আসে।
মনযোগ সহকারে পোস্ট পাঠ করে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। এমন কি এ পোস্ট পড়ে দিল্লীর সেই শ্বাসরুদ্ধকর অভিজ্ঞতার পোস্টটিকে স্মরণ করতে পেরেছেন দেখে অত্যন্ত প্রীত হলাম। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রাণিত।
২০| ২৪ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৩:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উন্নত দেশগুলির এত সুন্দর নিয়ম দেখলে মনে হয় আমরা কোন অরাজকতার মধ্যে বাস করছি। ওখানে জিনিস হারালে সহজেই পাওয়া যায় তাই জিনিস হারানো নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। খালি মনের ভুলে বনে জঙ্গলে কেউ হারিয়ে গেলে আমার মনে হয় সমস্যা হতে পারে।
আমার আম্মা শেষ জীবনে বলতেন যে তিনি নাকি অনেক কথা বেমালুম ভুলে যাচ্ছেন। কিছুতেই ঐ ব্যাপারে কোন কিছুই মনে করতে পারছেন না। খাবারের স্বাদও নাকি বয়স বাড়লে কম বোঝা যায় স্বাদ সংক্রান্ত স্নায়ুগুলি দুর্বল হয়ে যাওয়ার জন্য। আমার আম্মাও এরকম বলতেন।
২৪ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৫:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "মনের ভুলে বনে জঙ্গলে কেউ হারিয়ে গেলে আমার মনে হয় সমস্যা হতে পারে" - ভাগ্য ভালো যে এখানে কোন বন-জঙ্গল নেই; অন্ততঃ অদূরে কোথাও নেই!
গতবছর এ রকম সময়ে (১৫ জুন ২১ থেকে ২৩ জুলাই ২১) আমি সকল কাজ কর্ম থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে রংপুরে গিয়ে পাঁচ সপ্তাহ মায়ের সাথে ছিলাম। তখন ব্লগে আমার অনেক লেখায় মায়ের কিছু কিছু কথা উঠে এসেছিল। আমার মায়ের স্মৃতি লোপ পাওয়ার লক্ষণ প্রথমে ধরা পড়ে যখন মাঝে মাঝে তিনি আমাদের সাথে 'আপনি আপনি' করে কথা বলা শুরু করলেন। আমরা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করতাম, 'আম্মা, আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না'? উনি হেসে বলতেন, 'হ্যাঁ, চিনি তো, চিনবো না কেন?' "বলেন তো, আমি কে"? তখন উনি নিরুত্তর থাকতেন। আমার আমার মা পোস্টটা পড়ে থাকলে আপনি হয়তো ইতোমধ্যে জেনেছেন যে আমার মা আজ থেকে একমাস আগে, গত ২৫ মে ২০২২ তারিখে আমাদের থেকে চিরবিদায় নিয়ে পরপারে চলে গেছেন।
২১| ২৪ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: 'আমার মা' পোস্টে আমি ছোট একটা মন্তব্য করেছিলাম। তাই আপনার মায়ের মৃত্যু সংবাদ সম্পর্কে আমি অবগত। আল্লাহ ওনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।
আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স ৪০ বছর। আপনি সম্ভবত প্রায় আপনার ৭০ বছর বয়সে আপনার মাকে হারিয়েছেন। আমার চেয়ে ৩০ বছর মাকে পেয়েছেন।
২৬ শে জুন, ২০২২ সকাল ৭:৪৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ, আমি আমার মাকে দীর্ঘদিন পেয়েছি। তবুও তো মা তো, মনে হয় আরও কিছুদিন যদি থেকে যেতেন আমাদের মাথার উপর একটা স্থায়ী আশীর্বাদ হয়ে!! ঘরে উপস্থিত থাকলেই মনে হতো, তার আশীর্বাদ আমাদেরকে ঘিরে আছে।
৭০ বছর হতে অবশ্য আমাকে আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে হবে। হায়াতের মালিক আল্লাহ!
দোয়া করবেন।
২২| ২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ১১:৩৪
ঢুকিচেপা বলেছেন: এধরনের ঘটনা কম/বেশী সবার সাথেই ঘটে।
যাত্রা পথে বিভিন্ন বিষয় মাথায় থাকে তাই এমন হওয়া স্বাভাবিক।
ঘটনা দুটির পরিসমাপ্তি যেহেতু ভাল তাই এই স্মৃতি দুটি সুখ স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন।
২৬ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, পাঠকের মন্তব্যগুলো পড়ে এখন বেশ বুঝতে পারছি যে এধরনের ঘটনা শুধু আমার সাথেই নয়, বরং কম/বেশী সবার সাথেই ঘটে!
"যাত্রা পথে বিভিন্ন বিষয় মাথায় থাকে তাই এমন হওয়া স্বাভাবিক" - আরও অনেক কারণের মধ্যে এটাও অবশ্যই একটা সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
"ঘটনা দুটির পরিসমাপ্তি যেহেতু ভাল তাই এই স্মৃতি দুটি সুখ স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন" - ভালো বলেছেন। এ কথাটা আর কেউ বলেন নি, তবে কথাটা সত্য।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: নাতনির জন্য শুভেচ্ছা রইল স্যার। ভালো একটান টপিক নিয়ে লিখেছেন। আমার বয়স তো কমতে শুরু করেছে বেশ আগেই। আমার মেমোরি খুব ভালো - এরকম একটা সুনাম ছিল, কিন্তু এখন তো দেখি সকালে কী দিয়ে ভাত খেয়েছি তাই বলতে পারি না, কারো নাম বা চেহারা ভুলে যাচ্ছি স্বল্প সময়েই খুবই করুণ অবস্থা, যা খুব লজ্জা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।