নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শীত-বর্ষার এ মেল-বন্ধন, রেখে যায় কিছু মৃদু-কম্পন!

০৭ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২১


জানালার কাঁচে বৃষ্টির ফোঁটা চুম দিয়ে যায়,
ঝরা পাতাদল নীরবে কাঁদে ভূমিশয্যায়!

গত তিনদিন ধরে হাঁটা হচ্ছে না। গত পরশুদিন কয়েক স্তরে গরম কাপড় পরে আমরা দু’জনে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। অল্প কিছুদূর (৪০০ স্টেপ এর মত) যাওয়ার পর নাক দিয়ে কনকনে বাতাস ঢোকা শুরু করলে রণে ভংগ দেই। ভুলে মাস্ক না নেয়াতে ঠাণ্ডাটা একটু বেশিই কাঁপন ধরিয়েছিল। গতকাল হাল্কা বৃষ্টি আর ঠাণ্ডা বাতাস বইছে দেখে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও হাঁটার পরিকল্পনা বাদ দেই। আজ বারে বারে আকাশের দিকে তাকাচ্ছিলাম। এই ভালো তো এই মন্দ। দুপুর বারটার দিকে আকাশে ঝলমলে রোদ উঠেছে দেখে ব্যাকইয়ার্ডে কিছু ভেজা কাপড় নেড়ে দিয়ে বাইরে বের হবার জন্য মনে মনে তৈরী হচ্ছিলাম। গরম কাপড় বের করে হাতে নেয়ার আগেই দেখি এক পশলা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দৌড়ে গিয়ে শুকাতে দেয়া ভেজা কাপড়গুলো তুলে আনতে আনতে সেগুলো আরও ভিজে গেল।

একেতো খুবই ছোট দিন, তার উপরে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, এমন দিনে প্রকৃতি তার খেয়ালিপনা মানুষের মনেও বিস্তৃত করে। মনের অবস্থাটাকে ঠিক ‘বিষণ্ণ’ বলা যায় না; কেমন, তাও ঠিকভাবে প্রকাশ করা যায় না। বলা যায় না, লিখা যায় না, শুধু মনে মনে নিরন্তর ভাবা যায় আর গান শোনা যায়ঃ এই মেঘলা দিনে একেলা..... অথবা এমন দিনে তারে বলা যায়....। মন থাকে মাঝে মাঝে অস্থির, মাঝে মাঝে বাঁধনহারা। খুব ইচ্ছে হয়, সুন্দর করে কিছু একটা লিখি, কেননা লিখার মত কত কিছুই তো মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়! একবার লিখতে বসি, একবার উঠি; কিন্তু দিনশেষে তেমন কিছুই লিখা হয় না। বিকেলে মনে হলো, আবহাওয়ার এ বিষণ্ণতাকে ধরে রাখার জন্য আপাততঃ কয়েকটা ছবি তুলে রাখি। অন্ততঃ আকাশের এবং মনের এ অস্থিরতাটুকু ছবিতে তো স্মৃতি হয়ে থাকবে কিছুকাল!

আমাদের দেশে সাধারণতঃ শীতকালে বৃষ্টি হয়না; কদাচিৎ হলেও তা হয় হাল্কা, ঝিরঝিরে, ক্ষণিকের তরে। হাড়-হাড্ডিতে কাঁপন না ধরানো পর্যন্ত এমন বৃষ্টি বেশ উপভোগ্যই হয়ে থাকে। মেলবোর্নের বৃষ্টিও হাল্কাই হয়; খুব কম সময়ই তা প্রবল ধারায় ঝরে। কিন্তু বৃষ্টির সাথে এখানকার কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসটাই বড় মারাত্মক। তখন যেন শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জড় হয়ে আসে। ঘরে হীটারের উষ্ণতাও বেশিক্ষণ ভালো লাগে না। মনে হয় অস্থি-চর্ম শুকিয়ে আসছে। গরম কাপড় চোপড় আর হাত-মোজা পা-মোজা পড়ে আর কাঁহাতক বসে থাকা যায়! ল্যাপটপে যে কিছু লিখবো, হাত-মোজার কারণে তাও বিঘ্নিত হয়। এমতাবস্থায়, চা-কফি হাতে নিয়ে প্রিয় কোন লেখকের বই পড়াতেই বেশি আনন্দ পাওয়া যায়।

শীতকালে মেলবোর্নে দিন হয়ে যায় মাত্র সাড়ে নয় ঘণ্টার, আর রাত সাড়ে চৌদ্দ ঘণ্টার। এটা ২২শে জুন এর কাছাকাছি সময়ে হয়ে থাকে। দেখতে দেখতে দিন চলে যায়। এত ছোট দিন আমার ভালো লাগে না। একেতো এত ছোট দিন, তার উপর যদি সারাটা দিন আকাশ মেঘলা থাকে, সেই মেঘের ছায়া মনের মধ্যেও পড়ে। তার উপর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই! বৃষ্টির কারণে বোধহয়, গাছে কোন পাখি দেখা যায় না। আকাশেও না। আকাশের বিষণ্ণতা মানব মনেও সংক্রমণ করে। সে বিষণ্ণতা কাটাতে কেউ পুরনো দিনের গান শুনে, এতে তাদের মনটা ভালো হয়ে যায়। কেউ জানালা দিয়ে কাঁচের গায়ে বৃষ্টির ঝাপ্টা দেখে, বৃষ্টি না হলে মেঘলা আকাশটাকেই দেখে আর বাতাস উঠলে গাছের ডালপালার আন্দোলিত হওয়া দেখতে দেখতে মগ্ন চৈতন্যে হারিয়ে যায়। যাদের এসব কোন কিছুই ভালো লাগে না, তারা হয়তো নিজ নিজ শখের কিছু কাজ করে, নতুবা স্মৃতি রোমন্থন করে, নয়তো কোন প্রিয়জনের সাথে আলাপচারিতায় মগ্ন হয়। শীতের কাঁপন শরীরের সাথে সাথে মনের কোন গোপন কোণেও হয়তো থিরথির একটা কাঁপন তুলে যায়।

(বন্ধ জানালার এপাশ হতে ওপাশের ছবি তোলা হয়েছে বলে ছবিগুলোর মান ভালো হয় নাই, সেজন্য দুঃখিত)



"জানালায় বৃষ্টির ফোঁটা,
ভূমিতে পতিত পাতা
একসাথে সুরে সুরে গায়,
"বিদায় পৃথিবী, বিদায়"!

The raindrops on the window and the fallen leaves on the ground together sing a song of melancholy.
071632 June 2022

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অষ্ট্রেলিয়ার আকাশ আর বাতাসে কি কোন পাথ'ক্য
ধরা, পরেছে আপনার বাংলাদেশী দৃষ্টিতে!
নাকি একই রঙ পৃথিবীর সব'ত্র!

০৭ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: আকাশের রং তো একই পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র। তবে এখানকার আকাশ বায়ুদূষণমুক্ত, পরিবেশ শব্দদূষণমুক্ত। তাই আকাশ নির্মল থাকে, রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে প্রচুর নীল-সাদা মেঘের ভেলা আকাশে ভেসে বেড়ায়।

২| ০৭ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৪

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:

আপনার পোস্টটি পড়ে কেমন যেন ভাবালু হয়ে গেলাম।

০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ৭:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আকাশ, আবহাওয়া, প্রকৃতি ইত্যাদির প্রভাবে মানুষের মন মাঝে মাঝে 'ভাবালু'তায় আক্রান্ত হয়, এটা স্বাভাবিক।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

বিদায় পৃথিবী,বিদায় "

০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, ঝরাপাতাদের গান।

৪| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:০২

রাজীব নুর বলেছেন: দারুন আবেগময় লেখা।

০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:১৪

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: বাহ!

০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ১১:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ০৭ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:৩৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




দুইটি ছবিই সুন্দর হয়েছে। নেটের পেছনের দৃশ্যগুলো আর্ট পেইন্টিং মনে হচ্ছে। +++

০৮ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনার এ উদার প্রশংসার জন্য। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত।

৭| ০৮ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:১৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আবার আসছি স্যার।

০৮ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আচ্ছা।

৮| ০৮ ই জুন, ২০২২ রাত ৮:৫৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লাস্ট লাইনটা মনে ধরলো খুব। তবে একটু কনফিউশনে আছি। কয়েকটা ছবির কথা বলা হয়েছে। ছবি তো একটাই দেখতে পাচ্ছি দুইবার এসেছে!

মন বিষণ্ম হওয়া বা না হওয়ার কথাটা সুন্দর বলেছেন। আমারও এমন হয়। মনে কোনো দুঃখ, কষ্ট, বেদনা নেই। আবার ভালোও লাগছে না। কিয়েক্টবস্থার মতো :)

ভালো লেগেছে পোস্ট।

শুভেচ্ছা রইল স্যার।

০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: দুটো ছবি একই দৃশ্যের হলেও, দুটো দু'বারে তোলা ছিল। একটায় ভূমিতে ঝরা পাতা দেখা যাচ্ছে, অন্যটায় ততটা নয়।
পুনঃমন্তব্য এবং প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।

৯| ০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ১২:২৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
প্রিয়তে তুলে রাখলাম ।
চোখের অবস্থা ভাল হলে
বিন্তারিত ভাবে মন্তব্য লিখব ।
শুভেচ্ছা রইল

০৯ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্টটা "প্রিয়"তে তুলে নেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা!
আপনার শারীরিক কষ্ট এবং রোগ ব্যাধির আশু নিরাময় হোক! আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন সহায় হউন!
অনেক শুভকামনা রইলো.....

১০| ১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১৪

যরীন অদিতি বলেছেন: বৃষ্টি হলেই মনটা কেমন অবসাদে ভরে যায়- বিষাদ বিষাদ লাগে। কেমন একটা শূন্যতা কাজ করে ভেতরে। লেখাটার ভেতরে সেই অনুভূতির খোঁজ পেলাম। প্রকৃতি কি অদ্ভুত! তার খেয়ালী স্বভাবটা বিজ্ঞানের যুক্তিগুলো স্পর্শ করে আসে, আর যুক্তিহীনভাবেই মনকে প্রভাবিত করে যায়। ভালো লাগলো লেখাটা

১১ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: "লেখাটার ভেতরে সেই অনুভূতির খোঁজ পেলাম" - এতে আমার লেখাটা সার্থক হলো। আমি এই অনুভূতিটাকেই হাইলাইট করতে চেয়েছিলাম।

"প্রকৃতি কি অদ্ভুত! তার খেয়ালী স্বভাবটা বিজ্ঞানের যুক্তিগুলো স্পর্শ করে আসে, আর যুক্তিহীনভাবেই মনকে প্রভাবিত করে যায়" - চমৎকার বলেছেন এ কথাটা।

মন্তব্যে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

১১| ২৬ শে জুন, ২০২৩ রাত ৩:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: গত বছর এ রকম সময়ে, এই জুন মাসে ছিলাম অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। তখন সেখানে ছিল শীতকাল এবং দিনগুলো খুবই ছোট ছিল। সে সময়ের একটি দিনের কিছু বিক্ষিপ্ত ভাবনা নিয়ে লিখেছিলাম এ পোস্টটি। আজ কানাডায় বসে লেখাটা আবার পড়লাম। এখন কানাডায় দিনগুলো সবচেয়ে বড়। এখানে এখন সামার চলছে। এই বৈপরীত্য সত্ত্বেও আজ সকাল থেকে এখানে শীত শীত লাগছে, দূরে কোথাও বৃষ্টিও হচ্ছে বলে মাছ শিকারি কেউ একজন জানালো। মাছ ধরতে গিয়ে তারা ভিজে নাকাল হচ্ছে। এমন একটা পরিস্থি্তিতে নিজের এ লেখাটা পড়ে নিজের কাছেই খুব ভালো লাগল। নতুন কোন পাঠক এ পোস্টে যদি আসেন, আশাকরি লেখাটা তারও ভালো লাগবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.